alt

সাগরতলে বাড়ছে পৃথিবীর বিপদ

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম : শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

মিথেন এমন এক শক্তিশালী গ্রিনহাউস গ্যাস, যা পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। মিথেন গ্যাস পৃথিবীর স্থিতিশীল জলবায়ুর জন্য হুমকি মনে করা হয় এ জন্য যে, এটি বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের চেয়ে প্রতি অণুতে বেশি তাপ আটকে রাখে। ধারণা করা হচ্ছে, একবিংশ শতাব্দীতে এই মিথেনই হয়ে উঠবে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের অন্যতম প্রধান কারণ।

ধারণা করা হতো, সাধারণত এটি প্রাকৃতিক গ্যাস। জলাভূমি, পচনশীল জৈব পদার্থ এবং গবাদি পশুর হজম প্রক্রিয়া থেকে মিথেন নির্গত হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিজ্ঞানীরা অ্যান্টার্কটিকার চারপাশের সমুদ্রের নিচ থেকে উদ্বেগজনক এমন কিছু নিঃসৃত হতে দেখেছেন, যা বিশেষজ্ঞদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। তারা দেখেছেন, অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চলের উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে এই অঞ্চলের সমুদ্রের তলদেশের ফাটল থেকে গ্রহকে উত্তপ্তকারী মিথেন নির্গত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে নতুন নতুন মিথেন নির্গমনস্থলগুলো বিস্ময়কর হারে আবিষ্কৃত হচ্ছে, তাতে ভবিষ্যতের উষ্ণায়ন-সংক্রান্ত অনুমানগুলো নিয়ে আবার ভাবতে হবে।

বিশ্বজুড়ে সমুদ্রের তলদেশের নিচে সহস্রাব্দ ধরে গঠিত হওয়া আধারগুলোতে বিশাল পরিমাণ মিথেন জমা আছে। জলবায়ুকে দূষিত করা এই অদৃশ্য গ্যাসটি সমুদ্রের তলদেশের ফাটল দিয়ে পানির মধ্যে বেরিয়ে আসতে পারে, যা প্রায়ই সমুদ্রের পৃষ্ঠ পর্যন্ত বুদ্বুদের স্রোত তৈরি করে।

পানির নিচের নির্গমনস্থল, কীভাবে এগুলো কাজ করে, কতগুলো আছে এবং কতটুকু মিথেন বায়ুমণ্ডলে পৌঁছায়; সমুদ্রের নিচে বসবাসকারী মিথেন ভক্ষণকারী অণুজীব দ্বারা কতটুকু শোষিত হয়, সে সম্পর্কে গতকাল শুক্রবার সিএনএনে এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, সাগরতলে আবিষ্কৃত মিথেন নির্গমন স্থানগুলো সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা আরও ভালোভাবে বুঝতে আগ্রহী। কারণ অতি দূষণকারী এই গ্যাস বায়ুমণ্ডলে তার প্রথম ২০ বছরে কার্বন ডাইঅক্সাইডের চেয়ে প্রায় ৮০ গুণ তাপ ধরে রাখে।

জানা গেছে, অ্যান্টার্কটিকার মিথেন নির্গমনস্থলগুলো নিয়ে সবচেয়ে কম নিরীক্ষা হয়েছে।

সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা সেগুলো খুঁজে বের করতে অ্যান্টার্কটিকার দক্ষিণ মহাসাগরের একটি উপসাগর রস সাগরের ১৬ থেকে ৭৯০ ফুট গভীরতার মধ্যে বিভিন্ন স্থানে নমুনা সংগ্রহ করেন। চলতি মাসে নেচার কমিউনিকেশনসে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, রস সাগরের অগভীর পানিতে ৪০টিরও বেশি মিথেন নির্গমনস্থল শনাক্ত হয়েছে।

আর্থ সায়েন্সেস নিউজিল্যান্ডের সামুদ্রিক জলবায়ু বিশেষজ্ঞ সারাহ সিব্রুক বলেন, আগে অ্যান্টার্কটিকায় শুধু একটি সক্রিয় মিথেন নির্গমনস্থল শনাক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এখন বিশ্বব্যাপী মিথেন নির্গমনস্থলগুলো তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। মিথেনের এই প্রবাহকে আগে বিরল বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু এখন এটি ব্যাপক।

সিব্রুক আরও বলেন, ভয় হলো এই নির্গমনস্থলগুলো থেকে মিথেন দ্রুত বায়ুমণ্ডলে স্থানান্তর হতে পারে। সে ক্ষেত্রে এগুলো হয়ে উঠবে গ্রহকে উত্তপ্ত করার মতো দূষণের এমন একটি উৎস, যা ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তন পূর্বাভাসে আমরা গণনার মধ্যেই ধরিনি।

সিব্রুক বলেন, আর্কটিকে, মাটির নিচে মিথেন নির্গমন বৃদ্ধির সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলোর যোগসূত্র পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে উষ্ণ তাপমাত্রা, সমুদ্রপৃষ্ঠের স্তরের পরিবর্তন এবং শেষ বরফযুগে হিমবাহ গলে যাওয়ার পর ভূমির অব্যাহত ধীর উত্থান। এটি একটি ‘প্রতিক্রিয়া চক্র’ তৈরি করতে পারে, যেখানে জলবায়ু পরিবর্তন মিথেন নির্গমন বাড়িয়ে দেয়, এবং সেই নির্গমনগুলো নিজেরাই আবার জলবায়ু পরিবর্তনের হারকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

ছবি

গাজায় ত্রাণ প্রবেশ শুরু, বন্দি মুক্তি প্রক্রিয়া সোমবার থেকে

ছবি

শান্তি প্রস্তাব মানলেও অস্ত্র জমা দেবে না হামাস

ছবি

ভারতে বিদেশিদের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যায় শীর্ষে পশ্চিমবঙ্গ

ছবি

পাকিস্তানে তালেবানের হামলা নিয়ে মুখ খুলল ‘বন্ধু’ সৌদি!

ছবি

আফগান-পাকিস্তান সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ: দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি দাবি

ছবি

আল্টিমেটামের জবাবে ট্রাম্পকে সতর্কবার্তা দিলো বেইজিং

ছবি

গাজা থেকে জিম্মিমুক্তি শুরু কখন, কীভাবে

ছবি

পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের কারণ কী?

ছবি

সীমান্তে রাতভর গোলাগুলিতে ৫৮ পাকিস্তানি সেনা নিহতের দাবি কাবুলের

ছবি

আফগানিস্তান আগুন ও রক্তের খেলা খেলছে,” বলছেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

ছবি

শান্তিতে নোবেল পাওয়া ভেনেজুয়েলার মাচাদোকে নিয়ে সমালোচনা

ছবি

বোমা-ড্রোনের শব্দ ছাড়া গাজাবাসীর প্রথম রাত

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি শাটডাউনে ব্যাপক ছাঁটাই শুরু, ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটদের দায়ী করলেন

ছবি

‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করলো উত্তর কোরিয়া

ছবি

মাচাদোকে বললে আমাকে নোবেলটা দিয়ে দিত: ট্রাম্প

ছবি

চীনা পণ্যে বাড়তি ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের

ছবি

পাকিস্তানের সঙ্গ ছেড়ে ভারতের দিকে ঝুঁকছে আফগানিস্তান!

ছবি

কীভাবে ফিরছে গাজাবাসী, যা বলছে তারা

ছবি

নোবেল শান্তি পুরস্কার না পেয়ে ক্ষুব্ধ ট্রাম্প শিবির, সমালোচনায় হোয়াইট হাউস

ছবি

গাজা থেকে আংশিক ইসরায়ে‌লি সেনা প্রত্যাহার, কার্যকর হয়েছে যুদ্ধবিরতি চুক্তি

ছবি

ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার শুরু, ঘরে ফিরছে গাজাবাসী

ছবি

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি: স্বস্তি, আশাবাদ ও শঙ্কা

ছবি

মধ্য এশিয়ার পাঁচ দেশকে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির আহ্বান পুতিনের

ছবি

মরুর বুকে ফুলের বাগান

ছবি

ইসরায়েলে ২০০ সেনা মোতায়েন করবে যুক্তরাষ্ট্র

ছবি

রুশ হামলা, ইউক্রেনের রাজধানীতে বিদ্যুৎ-পানির সরবরাহ বিচ্ছিন্ন

ছবি

আফগানিস্তানে বিমান হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান

ছবি

শান্তিতে নোবেল পেলেন ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো

ছবি

গাজায় ২০০ মার্কিন সেনা মোতায়েন কর‌বে যুক্তরাষ্ট্র

ছবি

ফিলিপিন্সে ৭.৪ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা জারি ইন্দোনেশিয়াতেও

ছবি

গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হামাস ও ইসরায়েল, এরপর কী

ছবি

তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম ভারত সফর, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে আলোচনা

ছবি

সাহিত্যে নোবেল পেলেন হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই

ছবি

ইসরায়েল-হামাস চুক্তি, গাজায় ও তেল আবিবে আনন্দোল্লাস

ছবি

নেতানিয়াহুর প্রশংসায় পঞ্চমুখ মোদি

ছবি

অস্থির ফ্রান্সে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন ম্যাখোঁ

tab

সাগরতলে বাড়ছে পৃথিবীর বিপদ

বিদেশী সংবাদ মাধ্যম

শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

মিথেন এমন এক শক্তিশালী গ্রিনহাউস গ্যাস, যা পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। মিথেন গ্যাস পৃথিবীর স্থিতিশীল জলবায়ুর জন্য হুমকি মনে করা হয় এ জন্য যে, এটি বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের চেয়ে প্রতি অণুতে বেশি তাপ আটকে রাখে। ধারণা করা হচ্ছে, একবিংশ শতাব্দীতে এই মিথেনই হয়ে উঠবে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের অন্যতম প্রধান কারণ।

ধারণা করা হতো, সাধারণত এটি প্রাকৃতিক গ্যাস। জলাভূমি, পচনশীল জৈব পদার্থ এবং গবাদি পশুর হজম প্রক্রিয়া থেকে মিথেন নির্গত হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিজ্ঞানীরা অ্যান্টার্কটিকার চারপাশের সমুদ্রের নিচ থেকে উদ্বেগজনক এমন কিছু নিঃসৃত হতে দেখেছেন, যা বিশেষজ্ঞদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। তারা দেখেছেন, অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চলের উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে এই অঞ্চলের সমুদ্রের তলদেশের ফাটল থেকে গ্রহকে উত্তপ্তকারী মিথেন নির্গত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে নতুন নতুন মিথেন নির্গমনস্থলগুলো বিস্ময়কর হারে আবিষ্কৃত হচ্ছে, তাতে ভবিষ্যতের উষ্ণায়ন-সংক্রান্ত অনুমানগুলো নিয়ে আবার ভাবতে হবে।

বিশ্বজুড়ে সমুদ্রের তলদেশের নিচে সহস্রাব্দ ধরে গঠিত হওয়া আধারগুলোতে বিশাল পরিমাণ মিথেন জমা আছে। জলবায়ুকে দূষিত করা এই অদৃশ্য গ্যাসটি সমুদ্রের তলদেশের ফাটল দিয়ে পানির মধ্যে বেরিয়ে আসতে পারে, যা প্রায়ই সমুদ্রের পৃষ্ঠ পর্যন্ত বুদ্বুদের স্রোত তৈরি করে।

পানির নিচের নির্গমনস্থল, কীভাবে এগুলো কাজ করে, কতগুলো আছে এবং কতটুকু মিথেন বায়ুমণ্ডলে পৌঁছায়; সমুদ্রের নিচে বসবাসকারী মিথেন ভক্ষণকারী অণুজীব দ্বারা কতটুকু শোষিত হয়, সে সম্পর্কে গতকাল শুক্রবার সিএনএনে এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, সাগরতলে আবিষ্কৃত মিথেন নির্গমন স্থানগুলো সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা আরও ভালোভাবে বুঝতে আগ্রহী। কারণ অতি দূষণকারী এই গ্যাস বায়ুমণ্ডলে তার প্রথম ২০ বছরে কার্বন ডাইঅক্সাইডের চেয়ে প্রায় ৮০ গুণ তাপ ধরে রাখে।

জানা গেছে, অ্যান্টার্কটিকার মিথেন নির্গমনস্থলগুলো নিয়ে সবচেয়ে কম নিরীক্ষা হয়েছে।

সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা সেগুলো খুঁজে বের করতে অ্যান্টার্কটিকার দক্ষিণ মহাসাগরের একটি উপসাগর রস সাগরের ১৬ থেকে ৭৯০ ফুট গভীরতার মধ্যে বিভিন্ন স্থানে নমুনা সংগ্রহ করেন। চলতি মাসে নেচার কমিউনিকেশনসে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, রস সাগরের অগভীর পানিতে ৪০টিরও বেশি মিথেন নির্গমনস্থল শনাক্ত হয়েছে।

আর্থ সায়েন্সেস নিউজিল্যান্ডের সামুদ্রিক জলবায়ু বিশেষজ্ঞ সারাহ সিব্রুক বলেন, আগে অ্যান্টার্কটিকায় শুধু একটি সক্রিয় মিথেন নির্গমনস্থল শনাক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এখন বিশ্বব্যাপী মিথেন নির্গমনস্থলগুলো তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। মিথেনের এই প্রবাহকে আগে বিরল বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু এখন এটি ব্যাপক।

সিব্রুক আরও বলেন, ভয় হলো এই নির্গমনস্থলগুলো থেকে মিথেন দ্রুত বায়ুমণ্ডলে স্থানান্তর হতে পারে। সে ক্ষেত্রে এগুলো হয়ে উঠবে গ্রহকে উত্তপ্ত করার মতো দূষণের এমন একটি উৎস, যা ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তন পূর্বাভাসে আমরা গণনার মধ্যেই ধরিনি।

সিব্রুক বলেন, আর্কটিকে, মাটির নিচে মিথেন নির্গমন বৃদ্ধির সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলোর যোগসূত্র পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে উষ্ণ তাপমাত্রা, সমুদ্রপৃষ্ঠের স্তরের পরিবর্তন এবং শেষ বরফযুগে হিমবাহ গলে যাওয়ার পর ভূমির অব্যাহত ধীর উত্থান। এটি একটি ‘প্রতিক্রিয়া চক্র’ তৈরি করতে পারে, যেখানে জলবায়ু পরিবর্তন মিথেন নির্গমন বাড়িয়ে দেয়, এবং সেই নির্গমনগুলো নিজেরাই আবার জলবায়ু পরিবর্তনের হারকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

back to top