ইসরায়েলের হামলায় নিহত প্যালেস্টাইনিদের মরদেহ দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গাজা নগরী -এএফপি
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চলার মধ্যেই গাজাজুড়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সর্বশেষ হামলায় অন্তত তিন প্যালেস্টাইনিনিহত হয়েছে। এ দিকে ২৫ মাস আগে শুরু হওয়া যুদ্ধের পর এ পর্যন্ত ভূখ-টিতে মোট মৃত্যুও ৬৯ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ।
গতকাল শনিবার নিহতদের মধ্যে এক প্যালেস্টাইনিমধ্যাঞ্চলীয় বুরেজি শরণার্থী শিবিরে হামলায় মারা পড়েছেন বলে চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো আল জাজিরাকে জানিয়েছে।গাজার উত্তর ও দক্ষিণ অংশে তথাকথিত ‘ইয়েলো লাইন’ অতিক্রম করার অভিযোগে বাকি দুইজনকে হত্যা করা হয়েছে, বলেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর এ পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ২৪০ জনের বেশি প্যালেস্টাইনি নিহত হয়েছে।২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ভূখ-টিতে মোট মৃত্যু ৬৯ হাজার ১৬৯ জনে দাঁড়িয়েছে।অনেক মৃতদেহ শনাক্ত হওয়ার পর এবং ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে আরও মৃতদেহ উদ্ধারের পর সংখ্যাটা এখানে দাঁড়িয়েছে বলে ভাষ্য তাদের।
খান ইউনিসে ইসরায়েলি বাহিনীর ফেলে যাওয়া একটি বিস্ফোরক ডিভাইস বিস্ফোরিত হয়ে এক প্যালেস্টাইনি শিশু মারা পড়েছে বলে জানিয়েছে নাসের হাসপাতাল।দখলকৃত পশ্চিম তীরেও প্যালেস্টাইনিদের ওপর হামলা, গুলি অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।তুবাস শহরের কাছে আল ফার’আ শরণার্থী শিবিরে অভিযানের সময় ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে গুলিবিদ্ধ আহমেদ দাআউশেহ নামে এক ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
হামাস বলেছে তারা ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তা হাদার গোল্ডিনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। গাজায় ২০১৪ সালে ইসরায়েলি এক অভিযানের সময় তিনি ধরা পড়েন ও পরে নিহত হন বলে খবর পাওয়া যায়।গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী ইসরায়েলকে আরও যে ৫ জনের মৃতদেহ ফিরিয়ে দেয়ার কথা, গোল্ডিন তার একজন।যেখান থেকে গোল্ডিনের মৃতদেহ মিলেছে সেখানে ছয় প্যালেস্টাইনির মৃতদেহও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে হামাস।
গাজার মধ্যাঞ্চলের দেইর আল বালাহ থেকে খবর পাঠানো আল জাজিরার তারেক আবু আজুম বলছেন, গোল্ডিনের মৃতদেহ মিলেছে রাফা শহর থেকে, যা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘তার মৃতদেহ একটি টানেলে মিলেছে বলে আমরা খবর পেয়েছি, গত এক বছরে ইসরায়েলি বাহিনী ওই টানেলটি একাধিকবার পরিদর্শন করেছে। যেটা নিয়ে বিতর্ক সেটা হচ্ছে, ইসরায়েলি বাহিনী আগে বলেছিল গোল্ডিন যুদ্ধের মধ্যে মারা গেছেন, যদিও তার দেহ এখন পর্যন্ত ইসরায়েলে যায়নি। এখন আল-কাসেম ব্রিগেডের প্রতিবেদনে সেখানে যে ৬ নিরাপত্তারক্ষীর মৃতদেহ পাওয়া গেছে তারা গোল্ডিনের মৃতদেহ বহন করছিলেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তারা ওই এলাকায় ইসরায়েলি অভিযানে নিহত হয়েছেন কিনা তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।’
এমন এক সময় হামাস গোল্ডিনের মৃতদেহ উদ্ধারের কথা জানাল যখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন এমন প্যালেস্টাইনিদের সরিয়ে নিতে গাজা ও মিশরের মধ্যে থাকা রাফা সীমান্ত ক্রসিং যত দ্রুত সম্ভব পুনরায় খুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।মিশর ও অন্যত্র চিকিৎসা নিতে এরই মধ্যে প্রায় ৪ হাজার প্যালেস্টাইনি রোগী রাফা ক্রসিং দিয়ে গাজা ছেড়েছেন, আরও ১৬ হাজার ৫০০ জন যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ইসরায়েলের হামলায় নিহত প্যালেস্টাইনিদের মরদেহ দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গাজা নগরী -এএফপি
রোববার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চলার মধ্যেই গাজাজুড়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সর্বশেষ হামলায় অন্তত তিন প্যালেস্টাইনিনিহত হয়েছে। এ দিকে ২৫ মাস আগে শুরু হওয়া যুদ্ধের পর এ পর্যন্ত ভূখ-টিতে মোট মৃত্যুও ৬৯ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ।
গতকাল শনিবার নিহতদের মধ্যে এক প্যালেস্টাইনিমধ্যাঞ্চলীয় বুরেজি শরণার্থী শিবিরে হামলায় মারা পড়েছেন বলে চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো আল জাজিরাকে জানিয়েছে।গাজার উত্তর ও দক্ষিণ অংশে তথাকথিত ‘ইয়েলো লাইন’ অতিক্রম করার অভিযোগে বাকি দুইজনকে হত্যা করা হয়েছে, বলেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর এ পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ২৪০ জনের বেশি প্যালেস্টাইনি নিহত হয়েছে।২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ভূখ-টিতে মোট মৃত্যু ৬৯ হাজার ১৬৯ জনে দাঁড়িয়েছে।অনেক মৃতদেহ শনাক্ত হওয়ার পর এবং ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে আরও মৃতদেহ উদ্ধারের পর সংখ্যাটা এখানে দাঁড়িয়েছে বলে ভাষ্য তাদের।
খান ইউনিসে ইসরায়েলি বাহিনীর ফেলে যাওয়া একটি বিস্ফোরক ডিভাইস বিস্ফোরিত হয়ে এক প্যালেস্টাইনি শিশু মারা পড়েছে বলে জানিয়েছে নাসের হাসপাতাল।দখলকৃত পশ্চিম তীরেও প্যালেস্টাইনিদের ওপর হামলা, গুলি অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।তুবাস শহরের কাছে আল ফার’আ শরণার্থী শিবিরে অভিযানের সময় ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে গুলিবিদ্ধ আহমেদ দাআউশেহ নামে এক ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
হামাস বলেছে তারা ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তা হাদার গোল্ডিনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। গাজায় ২০১৪ সালে ইসরায়েলি এক অভিযানের সময় তিনি ধরা পড়েন ও পরে নিহত হন বলে খবর পাওয়া যায়।গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী ইসরায়েলকে আরও যে ৫ জনের মৃতদেহ ফিরিয়ে দেয়ার কথা, গোল্ডিন তার একজন।যেখান থেকে গোল্ডিনের মৃতদেহ মিলেছে সেখানে ছয় প্যালেস্টাইনির মৃতদেহও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে হামাস।
গাজার মধ্যাঞ্চলের দেইর আল বালাহ থেকে খবর পাঠানো আল জাজিরার তারেক আবু আজুম বলছেন, গোল্ডিনের মৃতদেহ মিলেছে রাফা শহর থেকে, যা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘তার মৃতদেহ একটি টানেলে মিলেছে বলে আমরা খবর পেয়েছি, গত এক বছরে ইসরায়েলি বাহিনী ওই টানেলটি একাধিকবার পরিদর্শন করেছে। যেটা নিয়ে বিতর্ক সেটা হচ্ছে, ইসরায়েলি বাহিনী আগে বলেছিল গোল্ডিন যুদ্ধের মধ্যে মারা গেছেন, যদিও তার দেহ এখন পর্যন্ত ইসরায়েলে যায়নি। এখন আল-কাসেম ব্রিগেডের প্রতিবেদনে সেখানে যে ৬ নিরাপত্তারক্ষীর মৃতদেহ পাওয়া গেছে তারা গোল্ডিনের মৃতদেহ বহন করছিলেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তারা ওই এলাকায় ইসরায়েলি অভিযানে নিহত হয়েছেন কিনা তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।’
এমন এক সময় হামাস গোল্ডিনের মৃতদেহ উদ্ধারের কথা জানাল যখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন এমন প্যালেস্টাইনিদের সরিয়ে নিতে গাজা ও মিশরের মধ্যে থাকা রাফা সীমান্ত ক্রসিং যত দ্রুত সম্ভব পুনরায় খুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।মিশর ও অন্যত্র চিকিৎসা নিতে এরই মধ্যে প্রায় ৪ হাজার প্যালেস্টাইনি রোগী রাফা ক্রসিং দিয়ে গাজা ছেড়েছেন, আরও ১৬ হাজার ৫০০ জন যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।