যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে কাজ করে ঝুঁকিতে থাকা হাজার হাজার আফগানকে ওই দেশ থেকে সরিয়ে নিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি মার্কিন প্রশাসন- একদিকে সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে আফগানিস্তান জুড়ে নিরাপত্তাহীনতা ও রসদের বড় ধরনের ঘাটতি।
যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বিশেষ অভিবাসন ভিসার (এসআইভি) মাধ্যমে আগ্রহীদের আফগানিস্তান থেকে বের করে আনার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ‘আরো অনেক বিষয়ে শতভাগ সঠিকভাবে কাজ করতে হবে’।
পেন্টাগনের লক্ষ্য হচ্ছে এসআইভি আবেদনকারী, তাদের পরিবারের সদস্য ও ঝুঁকিতে থাকা অন্যদের মিলিয়ে ২২ হাজারের মতো ব্যক্তিকে সরিয়ে আনা।
কিন্তু বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং শরণার্থী পুনর্বাসন নিয়ে কাজ করা গোষ্ঠীগুলোর ভাষ্য, এই সংখ্যা প্রশংসাযোগ্য হলেও তালেবান দেশের বেশিরভাগ এলাকার দখলে নেওয়ায় লক্ষ্য অর্জন এখন অনেক বেশি কঠিন।
শরণার্থী নিয়ে কাজ করা গোষ্ঠীগুলো সোমবার বাইডেনের দেওয়া বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছে। ওই বক্তব্যে বাইডেন দাবি করেন, যে অনেক আবেদনকারী আগেই আফগানিস্তান ছাড়তে রাজি হয়নি।
ঝুঁকির মুখে থাকা আফগানদের ওই দেশ থেকে বের করে আনার আগ্রহ জুলাইয়ে প্রকাশ করেন বাইডেন। অথচ আইনপ্রণেতা ও শরণার্থীদের পক্ষে থাকা গোষ্ঠীগুলো কয়েক মাস আগেই এই ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছিল। জুলাই থেকে এ পর্যন্ত মাত্র দুই হাজার আফগানকে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হয়েছে।
২২ হাজার মানুষকে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে আনার লক্ষ্য প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা জানান, এমন একটি লক্ষ্য থাকা খুবই ভালো, তবে বাস্তবতা হল এটা একটি কঠিন কাজ।
কাবুলে পেন্টাগনের ছয় হাজার সেনা পৌঁছানোর পর দৈনিক পাঁচ থেকে নয় হাজার লোককে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের চার হাজার সেনা পৌঁছেছে।
কর্মকর্তারা জানান, এতো বেশি সংখ্যক আফগানকে সরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে তাদের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাবুলে পৌঁছাতে হবে এবং এরপর বিমানবন্দরে যেতে হবে। আর এর মাঝে পার করতে হবে তালেবানের অনেকগুলো তল্লাশি চৌকি।
ফ্লাইট নিরাপদে ওঠানামার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীকে কাবুল বিমানবন্দরে স্থিতিশীল অবস্থা বজায় রাখতে হবে এবং আবহাওয়াও অনুকূলে থাকতে হবে।
কাবুল বিমানবন্দরে গত (১৬ আগস্ট) সোমবার দেশ ছাড়তে মরিয়া আফগানদের মধ্যে পাঁচ জনের মৃত্যুর পর সেখানে শৃঙ্খলা ফিরেছে। বিমান চলাচল স্বাভাবিক করতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী সেখানে ফ্লাইট ওঠানামা সাময়িক বন্ধ রেখেছে। আগ্রহী আফগানদের সরিয়ে নেওয়ার এই কাজ ৩১ অগাস্টের মধ্যে শেষ করার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েশন অব ওয়ারটাইম অ্যালাইসের নির্বাহী পরিচালক কিম স্টাফিরি জানান, কাবুলের বাইরে ‘আতঙ্কে’ থাকা তাদের তথ্যদাতারা জানিয়েছেন, কিছু এলাকায় তালেবান যোদ্ধারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে লোকজনকে বের করে আনছে এবং তাদের আর সন্ধান মিলছে না।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক শরণার্থী পুনর্বাসন সংস্থা ওয়ার্ল্ড রিলিফের প্রেসিডেন্ট জেনি ইয়াং বলেন, এখন যেহেতু দেশটি তালেবানের নিয়ন্ত্রণে, সেখান থেকে আফগানদের বের হয়ে আসা ক্রমান্বয়ে কঠিন হয়ে উঠছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, হোয়াইট হাউজ কয়েক সপ্তাহ আগেই পেন্টাগনকে অনুমতি দিতে পারত আফগানিস্তান থেকে সামরিক বিমানে করে সেখানকার লোকদের সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাঘাঁটিগুলোতে রাখার জন্য। সেটা না করে গত সপ্তাহ পর্যন্ত এসআইভি আবেদনকারীদেরকে ধীরগতিতে বেসামরিক বিমানে করে বের করে আনা হয় এবং শুধু ভার্জিনিয়ার ঘাঁটিকেই তাদের আবাস হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়।
আরেক কর্মকর্তা জানান, এই কাজে ব্যবহারের জন্য পররাষ্ট্র দপ্তর রবিবারের আগ পর্যন্ত হোয়াইট হাউজের কাছে অন্য ঘাঁটিগুলো ব্যবহারের অনুমতি পেতে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানায়নি, কিন্তু এরইমধ্যে তালেবান কাবুলে পৌঁছে গেছে।
পুনর্বাসন সংস্থাগুলো কয়েক মাস ধরেই বলে আসছে, কমপক্ষে ৮০ হাজার এসআইভি আবেদনকারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেওয়া দরকার।
দুই জন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, বিপুল সংখ্যক আফগান শরণার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রে উড়িয়ে নিয়ে আসার রাজনৈতিক প্রতিঘাত নিয়ে বাইডেন উদ্বিগ্ন ছিলেন এবং তৃতীয় কোনো দেশে তাদের পাঠানোর উপায় খুঁজছিলেন তিনি।
অভিবাসন সংকট নিয়ে বাইডেন প্রতিপক্ষ রিপাবলিকানদের প্রচ- চাপের মুখে রয়েছেন। বিশেষ করে যখন সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার, ১৮ আগস্ট ২০২১
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে কাজ করে ঝুঁকিতে থাকা হাজার হাজার আফগানকে ওই দেশ থেকে সরিয়ে নিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি মার্কিন প্রশাসন- একদিকে সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে আফগানিস্তান জুড়ে নিরাপত্তাহীনতা ও রসদের বড় ধরনের ঘাটতি।
যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বিশেষ অভিবাসন ভিসার (এসআইভি) মাধ্যমে আগ্রহীদের আফগানিস্তান থেকে বের করে আনার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ‘আরো অনেক বিষয়ে শতভাগ সঠিকভাবে কাজ করতে হবে’।
পেন্টাগনের লক্ষ্য হচ্ছে এসআইভি আবেদনকারী, তাদের পরিবারের সদস্য ও ঝুঁকিতে থাকা অন্যদের মিলিয়ে ২২ হাজারের মতো ব্যক্তিকে সরিয়ে আনা।
কিন্তু বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং শরণার্থী পুনর্বাসন নিয়ে কাজ করা গোষ্ঠীগুলোর ভাষ্য, এই সংখ্যা প্রশংসাযোগ্য হলেও তালেবান দেশের বেশিরভাগ এলাকার দখলে নেওয়ায় লক্ষ্য অর্জন এখন অনেক বেশি কঠিন।
শরণার্থী নিয়ে কাজ করা গোষ্ঠীগুলো সোমবার বাইডেনের দেওয়া বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছে। ওই বক্তব্যে বাইডেন দাবি করেন, যে অনেক আবেদনকারী আগেই আফগানিস্তান ছাড়তে রাজি হয়নি।
ঝুঁকির মুখে থাকা আফগানদের ওই দেশ থেকে বের করে আনার আগ্রহ জুলাইয়ে প্রকাশ করেন বাইডেন। অথচ আইনপ্রণেতা ও শরণার্থীদের পক্ষে থাকা গোষ্ঠীগুলো কয়েক মাস আগেই এই ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছিল। জুলাই থেকে এ পর্যন্ত মাত্র দুই হাজার আফগানকে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হয়েছে।
২২ হাজার মানুষকে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে আনার লক্ষ্য প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা জানান, এমন একটি লক্ষ্য থাকা খুবই ভালো, তবে বাস্তবতা হল এটা একটি কঠিন কাজ।
কাবুলে পেন্টাগনের ছয় হাজার সেনা পৌঁছানোর পর দৈনিক পাঁচ থেকে নয় হাজার লোককে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের চার হাজার সেনা পৌঁছেছে।
কর্মকর্তারা জানান, এতো বেশি সংখ্যক আফগানকে সরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে তাদের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাবুলে পৌঁছাতে হবে এবং এরপর বিমানবন্দরে যেতে হবে। আর এর মাঝে পার করতে হবে তালেবানের অনেকগুলো তল্লাশি চৌকি।
ফ্লাইট নিরাপদে ওঠানামার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীকে কাবুল বিমানবন্দরে স্থিতিশীল অবস্থা বজায় রাখতে হবে এবং আবহাওয়াও অনুকূলে থাকতে হবে।
কাবুল বিমানবন্দরে গত (১৬ আগস্ট) সোমবার দেশ ছাড়তে মরিয়া আফগানদের মধ্যে পাঁচ জনের মৃত্যুর পর সেখানে শৃঙ্খলা ফিরেছে। বিমান চলাচল স্বাভাবিক করতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী সেখানে ফ্লাইট ওঠানামা সাময়িক বন্ধ রেখেছে। আগ্রহী আফগানদের সরিয়ে নেওয়ার এই কাজ ৩১ অগাস্টের মধ্যে শেষ করার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েশন অব ওয়ারটাইম অ্যালাইসের নির্বাহী পরিচালক কিম স্টাফিরি জানান, কাবুলের বাইরে ‘আতঙ্কে’ থাকা তাদের তথ্যদাতারা জানিয়েছেন, কিছু এলাকায় তালেবান যোদ্ধারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে লোকজনকে বের করে আনছে এবং তাদের আর সন্ধান মিলছে না।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক শরণার্থী পুনর্বাসন সংস্থা ওয়ার্ল্ড রিলিফের প্রেসিডেন্ট জেনি ইয়াং বলেন, এখন যেহেতু দেশটি তালেবানের নিয়ন্ত্রণে, সেখান থেকে আফগানদের বের হয়ে আসা ক্রমান্বয়ে কঠিন হয়ে উঠছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, হোয়াইট হাউজ কয়েক সপ্তাহ আগেই পেন্টাগনকে অনুমতি দিতে পারত আফগানিস্তান থেকে সামরিক বিমানে করে সেখানকার লোকদের সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাঘাঁটিগুলোতে রাখার জন্য। সেটা না করে গত সপ্তাহ পর্যন্ত এসআইভি আবেদনকারীদেরকে ধীরগতিতে বেসামরিক বিমানে করে বের করে আনা হয় এবং শুধু ভার্জিনিয়ার ঘাঁটিকেই তাদের আবাস হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়।
আরেক কর্মকর্তা জানান, এই কাজে ব্যবহারের জন্য পররাষ্ট্র দপ্তর রবিবারের আগ পর্যন্ত হোয়াইট হাউজের কাছে অন্য ঘাঁটিগুলো ব্যবহারের অনুমতি পেতে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানায়নি, কিন্তু এরইমধ্যে তালেবান কাবুলে পৌঁছে গেছে।
পুনর্বাসন সংস্থাগুলো কয়েক মাস ধরেই বলে আসছে, কমপক্ষে ৮০ হাজার এসআইভি আবেদনকারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেওয়া দরকার।
দুই জন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, বিপুল সংখ্যক আফগান শরণার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রে উড়িয়ে নিয়ে আসার রাজনৈতিক প্রতিঘাত নিয়ে বাইডেন উদ্বিগ্ন ছিলেন এবং তৃতীয় কোনো দেশে তাদের পাঠানোর উপায় খুঁজছিলেন তিনি।
অভিবাসন সংকট নিয়ে বাইডেন প্রতিপক্ষ রিপাবলিকানদের প্রচ- চাপের মুখে রয়েছেন। বিশেষ করে যখন সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেছে।