alt

জাতীয়

বীরঙ্গানারা কেমন আছেন কেউ জানতেও চায়না, অভিযোগ নারীপক্ষের

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক : মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩

‘একশ বীরঙ্গনাকে জানি। যাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ হয়। তারা কেউ ভালো নেই। তাদের সাথে কেউ যোগাযোগ করে না। তারা কেমন আছে কেউ জানতেও চায় না’ বলে অভিযোগ করেন নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন নারী পক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরিন হক।

আজ বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত ’একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ: স্মৃতিতে ও ইতিহাসে’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, আজ মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এতো এতো কথা হয় কিন্তু বীরঙ্গনাদের নিয়ে হয়না। তারা সমাজে পরিবারে রাষ্ট্রে সব জায়গা থেকেই বঞ্চিত। এইসব বীরঙ্গনাদের নিয়ে অনেক বেশী কথা বলা দরকার। তারা আজো সমাজে ধিকৃত হয় বলে নিজেদের করুন পরিণতি আজো লুকিয়ে রাখে।

বীরঙ্গনাদের নিয়ে কাজ করা বা তাদেরকে সামনে আনা আজো অনেক ঝুঁকির উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, চচিত্র নির্মাতা তানভির মোকাম্মেল বলেন, ডকুমেন্টারি (প্রামাণ্য চিত্র) বানাতে গিয়ে তাদের সাথে অনেক বুঝে কয়ে দুএকজন রাজী হলেও বাকিরা ছেলে মেয়ের ভবিষ্যতের কথা বলে কথা বলতে চান না। সামনে আসতে চান না।’

এক বীরঙ্গনার কথা জানতে পেরে তার মেয়েকে শ্বশুড় বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে এই গবেষক বলেন, ধর্ষিতারাও মুক্তিযোদ্ধা এ বিষয়টা আমাদের বোঝাতে হবে সাধারণ মানুষকে। তারা কেউ ইচ্ছে করে এই অবস্থা তৈরি করেনি। তাদের নিয়ে আমাদের আরো অনেক কাজ করতে হবে বলেও জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক এম এম আকাশ বলেন, আজো মনের যুদ্ধে আমরা অস্পষ্ট আছি। মুক্তিযুদ্ধকে গ্লোরিফাই করা এক জিনিস আর তাকে ধারন করে কাজ করা অন্য জিনিস। পার্থক্য বুঝে আমাদের কাজ করা এগিয়ে যাওয়া মুক্তিযুদ্ধকে সঠিক তুলে ধরতে হবে। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধকে সসম্মানে তুলে ধরতে পারবো না।

স্বাধীনতা পদক পাওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা লে. কর্ণেল (অব) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীর প্রতিক মুক্তিযুদ্ধের সময়ের স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে এক সন্ধ্যার কথা বলেন। কিভাবে আপামর মানুষ মুক্তিযুদ্ধে নিজেদের যুক্ত করেছিল।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার দিতো সাধারণ মানুষ, প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ। সাধারণত লোক চক্ষুকে আড়াল করেই এ ধরনের কাজ করা হতো।

এক সনধ্যায় সিলেটের আঁকাবাকা সরু পথ ধরে আমরা কয়েকজন হাঁটছি। সিগারেট খাবো আর একটু আলাদা করে ভাবনা আসায় ল থেকে কিছুটা ূরত্ব রেখে হাটছিলাম। এমন সময় দেখি একজন মাঝবয়সী নারী একটা কিশোর ছেলের হাত ধরে এগিয়ে আসছেন। আমি থামলাম। ওই নারী কিশোর ছেলেটাকে নিয়ে একদম কাছে চলে আসে। বলে, আমি জানি তোমরা মুক্তিযোদ্ধা। তোমাদের কিছু দিতে চাই।

এ কথা শুনে আমি ভাবলাম হয়তো খাবার দিতে চায়। তাই বল্লাম, ঠিক আছে মা। কখন দেবেন। সে বলে ‘এখুনি দেবো’। আমি বলি কই? নারী তার হাতে ধরা কিশারের হাতটা দিয়ে বলে, এর দিতে আসছি। আমি গরীব মানুষ কিছু করতে পারি না। শ্যাখের ব্যটা কইছে যার যা আছে তাই নিয়া যুদ্ধ করবার। আমি আমার ছেলেরে দিতে আসছি। তুমি এর তোমাদের সাথে নেও বাবা।

আমি বিস্ময়ের সাথে তখন ভালো করে তাকিয়ে দেখি দুজনেই খালি পা। নারীর পরনের শাড়ীটা মলিন ছেলেটারও তাই। পুষ্টিহীন শরীর। বল্লাম এ বা”চা ছেলে কি করবে, ওকে নিয়ে যান এ কথা শুনে ওই নারী বেশ জোর দিয়ে বলেন আমার ছেলে সাঁতার জানে, গাছে উঠতে পারে, পাখি মারতে পারে বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন’।

ভারতের পদ্মশ্রী পাওয়া এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, আজ যারা ধনী যারা লেখাপড়া জানে তাদের নিয়ে যেভাবে কথা হয় স্মৃতি আওড়ানো হয় সাধারণ মানুষ যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে তাদের নিয়ে এমনটা হয় না। অথচ মুক্তিযুদ্ধে গেছে সাধারণ অশিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত মানুষই বেশী। তাদের অনেকেই মার গেছেন এটা যেমন ঠিক। তেমনি অনেকেই তো বেচেও আছেন তাদের কাছে যেতে হবে। তারা কিছু চায় না। তারা আজো একটু ভালোবাসাই চায়।

অনুষ্ঠানের সভাপতি, সঞ্চালক বিআইডিএস এর মহাপরিচালক বিনায়েক সেন বলেন, সংখ্যালঘুরা যতোটা নির্যাতিত হয়েছেন ততোটা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন নি। হিন্দু জনগোষ্ঠি ভারতে প্রশিক্ষণে কম ছিল। তারা ভয়ে ছিল। তবে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে নির্যাতিত হয়েছে এটা সত্য।

তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের ওপর দিয়ে যেভাবে ঝড় ঝাপটা গেছে সেভাবে সবটুকু লিপিবদ্ধ হয় নাই। নির্যাতিত পরিবারগুরোর বর্তমান অব¯’া কেমন তা নিয়ে গবেষণা করা উচিত। মুক্তিযুদ্ধের ১৬ খন্ডের মধ্যে শুধুমাত্র ১ খন্ডে নির্যাতনের কথা বলা হয়েছে। এতো বিভৎস আর নৃশংস ছিল যে লেখক নির্যাতনের লেখা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এই নির্যাতন এই কষ্টের কথা শেষ হয় নাই।

বীরঙ্গনা নারীরা কে কেমন আছেন, তাদের বর্তমান আর্থিক অব¯’া বর্তমানে কেমন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কিছু কাজ করবে বলেও জানান বিআইডিএস মহা পরিচালক বিনায়েক সেন।

ছবি

ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর উদ্বোধন, র‍্যালি, আলোচনা সভা

ছবি

নারী স্পিকারদের সম্মেলন বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর অনবদ্য প্লাটফর্ম: ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী

ছবি

আম নিয়ে সিন্ডিকেট হতে দেয়া হবে না : কৃষিমন্ত্রী

সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই আজ একাত্তরের চেয়েও কঠিন

ছবি

কেরাণীগঞ্জে ক্যালিগ্রাফি কর্মশালা

ছবি

রুবেল আবারও আয়ারল্যান্ডের পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা কমিটিতে

ছবি

আজ শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

ছবি

বিদেশি অর্থায়নের প্রকল্প দ্রুত শেষ করার নির্দেশ: প্রধানমন্ত্রীর

ছবি

পরিবেশবান্ধব, জ্বালানি সাশ্রয়ী গ্রীণ ভবন করা সময়ের দাবী: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

ছবি

বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সংসদীয় কূটনীতি কার্যকর হাতিয়ার-- স্পীকার

ছবি

পর্যটন খাতে তুরস্ককে বিনিয়োগের আহ্বান জানালেন মন্ত্রী

ছবি

শেয়ার হস্তান্তরে স্থিতাবস্থায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ বন্ধ

ছবি

‘অনিয়ম, দুর্নীতি আড়াল করতেই’ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা, সাংবাদিক নেতাদের অভিমত

ছবি

শিক্ষক নিবন্ধনের ফল প্রকাশ

ছবি

২ দিনের সতর্কবার্তা, গরম বাড়ারও আভাস: আবহাওয়া অফিস

ছবি

রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে না: কাদের

ছবি

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আমি এসেছি : ডোনাল্ড লু

ছবি

বিএনপির সময় স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় স্থবিরতা নেমে আসে: প্রধানমন্ত্রী

ছবি

মডেল ঘরে ফসল সংরক্ষণ

ছবি

হজযাত্রীদের কাছ থেকে কুরবানির টাকা নেয়ার বিষয়ে সতর্ক করলো মন্ত্রণালয়

ছবি

মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো কবে নিজ অর্থ নিতে পারবে, জানতে চেয়েছেন লু

ছবি

সারাদেশে ৫ বছরে ৩৪ হাজার ধর্ষনের মামলা : ৬ হাজার মামলায় ৯ হাজার ধর্ষককে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট

ছবি

ঢাকায় এসেছেন ডোনাল্ড লু

ছবি

আজ ঢাকায় আসছেন ডোনাল্ড লু

ছবি

৫৬ হাজার টন চুনাপাথর নিয়ে এসেছে এমভি আবদুল্লাহ

ছবি

হজযাত্রীর ভিসার সময় বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

গরম কমলেও আছে লোডশেডিং, ভুক্তভোগী গ্রাম

ছবি

শ্রম আইন সংশোধনে আইএলও’র সঙ্গে আলোচনা চলছে : আইনমন্ত্রী

ছবি

ঢাকায় নগর বনায়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে : পরিবেশমন্ত্রী

ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড.মনোয়ার হোসেন ‘জাতীয় পরিবেশ পদক ২০২৩’-এর জন্য মনোনীত

ছবি

‘সংখ্যায় ছেলেরা কম’ এবং ‘ফলাফলে পিছিয়ে’ কেন, খুঁজে দেখতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি

পাসের হার কমেছে এসএসসি ভোকেশনালে

ছবি

শিক্ষার্থীরা স্মার্ট বাংলাদেশের সৈনিক হিসেবে গড়ে উঠবে: প্রধানমন্ত্রী

ছবি

কুমিল্লা বোর্ডে বেড়েছে পাসের হার ও জিপিএ-৫

ছবি

এসএসসিতে পাসের হার ৮৩.০৪ শতাংশ

ছবি

প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসএসসির ফল হস্তান্তর

tab

জাতীয়

বীরঙ্গানারা কেমন আছেন কেউ জানতেও চায়না, অভিযোগ নারীপক্ষের

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩

‘একশ বীরঙ্গনাকে জানি। যাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ হয়। তারা কেউ ভালো নেই। তাদের সাথে কেউ যোগাযোগ করে না। তারা কেমন আছে কেউ জানতেও চায় না’ বলে অভিযোগ করেন নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন নারী পক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরিন হক।

আজ বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত ’একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ: স্মৃতিতে ও ইতিহাসে’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, আজ মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এতো এতো কথা হয় কিন্তু বীরঙ্গনাদের নিয়ে হয়না। তারা সমাজে পরিবারে রাষ্ট্রে সব জায়গা থেকেই বঞ্চিত। এইসব বীরঙ্গনাদের নিয়ে অনেক বেশী কথা বলা দরকার। তারা আজো সমাজে ধিকৃত হয় বলে নিজেদের করুন পরিণতি আজো লুকিয়ে রাখে।

বীরঙ্গনাদের নিয়ে কাজ করা বা তাদেরকে সামনে আনা আজো অনেক ঝুঁকির উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, চচিত্র নির্মাতা তানভির মোকাম্মেল বলেন, ডকুমেন্টারি (প্রামাণ্য চিত্র) বানাতে গিয়ে তাদের সাথে অনেক বুঝে কয়ে দুএকজন রাজী হলেও বাকিরা ছেলে মেয়ের ভবিষ্যতের কথা বলে কথা বলতে চান না। সামনে আসতে চান না।’

এক বীরঙ্গনার কথা জানতে পেরে তার মেয়েকে শ্বশুড় বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে এই গবেষক বলেন, ধর্ষিতারাও মুক্তিযোদ্ধা এ বিষয়টা আমাদের বোঝাতে হবে সাধারণ মানুষকে। তারা কেউ ইচ্ছে করে এই অবস্থা তৈরি করেনি। তাদের নিয়ে আমাদের আরো অনেক কাজ করতে হবে বলেও জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক এম এম আকাশ বলেন, আজো মনের যুদ্ধে আমরা অস্পষ্ট আছি। মুক্তিযুদ্ধকে গ্লোরিফাই করা এক জিনিস আর তাকে ধারন করে কাজ করা অন্য জিনিস। পার্থক্য বুঝে আমাদের কাজ করা এগিয়ে যাওয়া মুক্তিযুদ্ধকে সঠিক তুলে ধরতে হবে। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধকে সসম্মানে তুলে ধরতে পারবো না।

স্বাধীনতা পদক পাওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা লে. কর্ণেল (অব) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীর প্রতিক মুক্তিযুদ্ধের সময়ের স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে এক সন্ধ্যার কথা বলেন। কিভাবে আপামর মানুষ মুক্তিযুদ্ধে নিজেদের যুক্ত করেছিল।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার দিতো সাধারণ মানুষ, প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ। সাধারণত লোক চক্ষুকে আড়াল করেই এ ধরনের কাজ করা হতো।

এক সনধ্যায় সিলেটের আঁকাবাকা সরু পথ ধরে আমরা কয়েকজন হাঁটছি। সিগারেট খাবো আর একটু আলাদা করে ভাবনা আসায় ল থেকে কিছুটা ূরত্ব রেখে হাটছিলাম। এমন সময় দেখি একজন মাঝবয়সী নারী একটা কিশোর ছেলের হাত ধরে এগিয়ে আসছেন। আমি থামলাম। ওই নারী কিশোর ছেলেটাকে নিয়ে একদম কাছে চলে আসে। বলে, আমি জানি তোমরা মুক্তিযোদ্ধা। তোমাদের কিছু দিতে চাই।

এ কথা শুনে আমি ভাবলাম হয়তো খাবার দিতে চায়। তাই বল্লাম, ঠিক আছে মা। কখন দেবেন। সে বলে ‘এখুনি দেবো’। আমি বলি কই? নারী তার হাতে ধরা কিশারের হাতটা দিয়ে বলে, এর দিতে আসছি। আমি গরীব মানুষ কিছু করতে পারি না। শ্যাখের ব্যটা কইছে যার যা আছে তাই নিয়া যুদ্ধ করবার। আমি আমার ছেলেরে দিতে আসছি। তুমি এর তোমাদের সাথে নেও বাবা।

আমি বিস্ময়ের সাথে তখন ভালো করে তাকিয়ে দেখি দুজনেই খালি পা। নারীর পরনের শাড়ীটা মলিন ছেলেটারও তাই। পুষ্টিহীন শরীর। বল্লাম এ বা”চা ছেলে কি করবে, ওকে নিয়ে যান এ কথা শুনে ওই নারী বেশ জোর দিয়ে বলেন আমার ছেলে সাঁতার জানে, গাছে উঠতে পারে, পাখি মারতে পারে বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন’।

ভারতের পদ্মশ্রী পাওয়া এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, আজ যারা ধনী যারা লেখাপড়া জানে তাদের নিয়ে যেভাবে কথা হয় স্মৃতি আওড়ানো হয় সাধারণ মানুষ যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে তাদের নিয়ে এমনটা হয় না। অথচ মুক্তিযুদ্ধে গেছে সাধারণ অশিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত মানুষই বেশী। তাদের অনেকেই মার গেছেন এটা যেমন ঠিক। তেমনি অনেকেই তো বেচেও আছেন তাদের কাছে যেতে হবে। তারা কিছু চায় না। তারা আজো একটু ভালোবাসাই চায়।

অনুষ্ঠানের সভাপতি, সঞ্চালক বিআইডিএস এর মহাপরিচালক বিনায়েক সেন বলেন, সংখ্যালঘুরা যতোটা নির্যাতিত হয়েছেন ততোটা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন নি। হিন্দু জনগোষ্ঠি ভারতে প্রশিক্ষণে কম ছিল। তারা ভয়ে ছিল। তবে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে নির্যাতিত হয়েছে এটা সত্য।

তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের ওপর দিয়ে যেভাবে ঝড় ঝাপটা গেছে সেভাবে সবটুকু লিপিবদ্ধ হয় নাই। নির্যাতিত পরিবারগুরোর বর্তমান অব¯’া কেমন তা নিয়ে গবেষণা করা উচিত। মুক্তিযুদ্ধের ১৬ খন্ডের মধ্যে শুধুমাত্র ১ খন্ডে নির্যাতনের কথা বলা হয়েছে। এতো বিভৎস আর নৃশংস ছিল যে লেখক নির্যাতনের লেখা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এই নির্যাতন এই কষ্টের কথা শেষ হয় নাই।

বীরঙ্গনা নারীরা কে কেমন আছেন, তাদের বর্তমান আর্থিক অব¯’া বর্তমানে কেমন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কিছু কাজ করবে বলেও জানান বিআইডিএস মহা পরিচালক বিনায়েক সেন।

back to top