দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পুরোপুরি অংশগ্রহণমূলক হয়নি বলেই মনে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। কারণ হিসেবে তিনি বললেন, একটি বড় অংশ নির্বাচনকে শুধু বর্জনই করেননি, প্রতিরোধেরও ঘোষণা দিয়েছিল।
সিইসির মতে, শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন শেষ হওয়ায় একটি ‘সংকট এড়ানো গেছে’ তবে নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা যে ‘অনেকটা হ্রাস পেয়েছে’। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে প্রতি পাঁচ বছর পর পর যদি সংকট সৃষ্টি হয়, তাহলে দেশের উন্নয়নও বাধাগ্রস্ত হবে।’ তাই নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কারের আহ্বান জানান তিনি।
সেজন্য রাজনৈতিক নেতাদের একটি গ্রহণযোগ্য ‘পদ্ধতি’ খোঁজার তাগিদ দিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচন পদ্ধতিতে সংস্কার আনা সম্ভব হলে আগামীতে নির্বাচন আরও বেশি গ্রহণযোগ্য হবে।’
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও সফলভাবে সম্পন্ন করায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সিইসি। ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবন মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অনুষ্ঠানে অন্য চার নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন।
বড় দল বিএনপি ও সমমনাদের বর্জনের মধ্যে গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। ভোটে জয়লাভ করে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ইসির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এবার ভোট পড়ে ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ।
ভোট আয়োজন সফলভাবে সমাপ্ত হওয়ায় অনুষ্ঠানে কমিশন ও সংশ্লিষ্ট কর্মীরা একে অন্যকে ধন্যবাদ জানান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ভোটরদেরকেও ধন্যবাদ জানায় কমিশন। ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ইসি সচিবালয়ের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘সরকারের সহায়তা ছাড়া এত বড় কর্মযজ্ঞ সফল করা সম্ভব হয় না। আমাদের অপবাদ, বদনাম দুটোই নিতে হবে।’
এবারের নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও খুব যে অংশগ্রহণমূলক হয়েছে, তা মনে করেন না সিইসি। তিনি বলেন, ‘একটি বড় দল শুধু বর্জন করেনি, প্রতিহত করতে চেয়েছিল। নির্বাচন উঠিয়ে আনায় জাতি স্বস্তিবোধ করছে, আমরা স্বস্তিবোধ করছি।’
এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ‘জাতি উদ্বেগ ও সংকট থেকে ওঠে এসেছে’ বলেও মন্তব্য করেন সিইসি।
ভোট বর্জন করা দলগুলোর নানা অভিযোগের দিকে ইঙ্গিত করে সিইসি বলেন, ‘সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার অজুহাতে সরকারের গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেনি ইসি। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অবশ্যই ছিল, তবে নির্বাচন থামিয়ে রাখাও সম্ভব ছিল না।’
নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান বলেন, ‘ঈমানের সঙ্গে কাজ করে সফল হয়েছি। যে স্ট্যান্ডার্ডে পৌঁছেছি, সেই স্ট্যান্ডার্ড থেকে নামতে পারবে না। আমরা দেখিয়ে দেব কীভাবে এই কমিশন কাজ করে, যা ভবিষ্যতের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।’
নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আমরা ভালো একটা নির্বাচন করতে চেয়েছিলাম। না করতে পারলে হয়ত আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিতাম। আমাদের সরকার সহায়তা দিয়েছে। না হলে একসুরে একভাবে কাজ করা সম্ভব হতো না। আশা করি, মানসম্মানের সঙ্গে চলে যেতে পারব।’
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘দলগুলো যারা অংশগ্রহণ করেছে এবং সরকার, সকলেই আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেছে। আনসার থেকে শুরু করে সকলেই সহায়তা করেছে। সরকার একটি বিরাট শক্তি, তাদের সহযোগিতা যদি না পেতাম, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করতে পারতাম না। সব দল অংশগ্রহণ করলে আরও গ্রহণযোগ্য হতো।’
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৪
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পুরোপুরি অংশগ্রহণমূলক হয়নি বলেই মনে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। কারণ হিসেবে তিনি বললেন, একটি বড় অংশ নির্বাচনকে শুধু বর্জনই করেননি, প্রতিরোধেরও ঘোষণা দিয়েছিল।
সিইসির মতে, শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন শেষ হওয়ায় একটি ‘সংকট এড়ানো গেছে’ তবে নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা যে ‘অনেকটা হ্রাস পেয়েছে’। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে প্রতি পাঁচ বছর পর পর যদি সংকট সৃষ্টি হয়, তাহলে দেশের উন্নয়নও বাধাগ্রস্ত হবে।’ তাই নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কারের আহ্বান জানান তিনি।
সেজন্য রাজনৈতিক নেতাদের একটি গ্রহণযোগ্য ‘পদ্ধতি’ খোঁজার তাগিদ দিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচন পদ্ধতিতে সংস্কার আনা সম্ভব হলে আগামীতে নির্বাচন আরও বেশি গ্রহণযোগ্য হবে।’
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও সফলভাবে সম্পন্ন করায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সিইসি। ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবন মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অনুষ্ঠানে অন্য চার নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন।
বড় দল বিএনপি ও সমমনাদের বর্জনের মধ্যে গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। ভোটে জয়লাভ করে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ইসির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এবার ভোট পড়ে ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ।
ভোট আয়োজন সফলভাবে সমাপ্ত হওয়ায় অনুষ্ঠানে কমিশন ও সংশ্লিষ্ট কর্মীরা একে অন্যকে ধন্যবাদ জানান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ভোটরদেরকেও ধন্যবাদ জানায় কমিশন। ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ইসি সচিবালয়ের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘সরকারের সহায়তা ছাড়া এত বড় কর্মযজ্ঞ সফল করা সম্ভব হয় না। আমাদের অপবাদ, বদনাম দুটোই নিতে হবে।’
এবারের নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও খুব যে অংশগ্রহণমূলক হয়েছে, তা মনে করেন না সিইসি। তিনি বলেন, ‘একটি বড় দল শুধু বর্জন করেনি, প্রতিহত করতে চেয়েছিল। নির্বাচন উঠিয়ে আনায় জাতি স্বস্তিবোধ করছে, আমরা স্বস্তিবোধ করছি।’
এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ‘জাতি উদ্বেগ ও সংকট থেকে ওঠে এসেছে’ বলেও মন্তব্য করেন সিইসি।
ভোট বর্জন করা দলগুলোর নানা অভিযোগের দিকে ইঙ্গিত করে সিইসি বলেন, ‘সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার অজুহাতে সরকারের গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেনি ইসি। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অবশ্যই ছিল, তবে নির্বাচন থামিয়ে রাখাও সম্ভব ছিল না।’
নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান বলেন, ‘ঈমানের সঙ্গে কাজ করে সফল হয়েছি। যে স্ট্যান্ডার্ডে পৌঁছেছি, সেই স্ট্যান্ডার্ড থেকে নামতে পারবে না। আমরা দেখিয়ে দেব কীভাবে এই কমিশন কাজ করে, যা ভবিষ্যতের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।’
নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আমরা ভালো একটা নির্বাচন করতে চেয়েছিলাম। না করতে পারলে হয়ত আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিতাম। আমাদের সরকার সহায়তা দিয়েছে। না হলে একসুরে একভাবে কাজ করা সম্ভব হতো না। আশা করি, মানসম্মানের সঙ্গে চলে যেতে পারব।’
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘দলগুলো যারা অংশগ্রহণ করেছে এবং সরকার, সকলেই আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেছে। আনসার থেকে শুরু করে সকলেই সহায়তা করেছে। সরকার একটি বিরাট শক্তি, তাদের সহযোগিতা যদি না পেতাম, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করতে পারতাম না। সব দল অংশগ্রহণ করলে আরও গ্রহণযোগ্য হতো।’