শুল্ক নিয়ে দর-কষাকষি
পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপ বিষয় দর-কষাকষি চলছে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে। ইতোমধ্যেই দুই দেশের প্রতিনিধিরা এই সংকট সমাধানে নানা উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন। তবে পাল্টা শুল্ক কমাতে ট্রেড বাস্কেট বা বাণিজ্য পরিসীমা বৃদ্ধিতেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। অর্থাৎ বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে পরিমান বাণিজ্য ঘাটতি আছে সেটা কমানোর উপর নির্ভর করবে বাংলাদেশের ওপর কতটুকু শুল্কারোপ হবে। এর আগে একটা লিখিত প্রস্তাব দিতে হবে যেটার ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চয়তা পেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বাংলাদেশ তৃতীয় কোনো দেশ থেকে আমদানি করে। সেই পণ্যগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করার সুপারিশ করেছে দেশটি
লিখিত প্রস্তাব পাওয়ার
পরই আলোচনা শুরু
করবে যুক্তরাষ্ট্র
এ জন্য বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনকে ৭ মে লেখা এক চিঠিতে এ কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার। এর আগে গত মাসে বাণিজ্য উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য-ঘাটতি কমাতে পদক্ষেপ নেওয়া এবং আলোচনার আগ্রহের কথা জানিয়ে জেমিসন গ্রিয়ারকে চিঠি দিয়েছিলেন।
রোববার,(১১ মে ২০২৫) কথা হয় বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপের পরই আমরা প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা শুরু করি। সেই আলোচনা এখনও চলমান। আমরা ভালো কিছুর আশা করছি। যুক্তরাষ্ট্র মূলত ‘ট্রেড বাস্কেট’ বাড়ানোয় গুরুত্ব দিচ্ছে। দেশটি বলছে, বাংলাদেশ বাইরে থেকে যেসব পণ্য আমদানি করে সেগুলোই যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে পারে। এতে দুই দেশের জন্যেই ভালো হবে।’
এর জন্য অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা একটা কৌশলও উল্লেখ করে দিয়েছেন যেটা বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে। বাণিজ্য সচিব
বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এমন কিছু পণ্য আছে যেগুলো যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন হয়। সেই পণ্য বাংলাদেশ তৃতীয় দেশ থেকে আমদানি করে। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য অন্য দেশ থেকে আমদানি করে বাংলাদেশ। সেই পণ্য বাংলাদেশ যদি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করে তাহলে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমে। তখন বাংলাদেশের উপর পাল্টা শুল্ক কমাতে পারে।’
এছাড়াও আরও কিছু পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। যেমন, মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ এপ্রিল জেমিসন গ্রিয়ারকে চিঠি দেয় বাণিজ্য উপদেষ্টা। সেই চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশের শুল্ক তালিকায় বর্তমানে ১৯০টি পণ্যের ওপর শুল্কহার শূন্য অর্থাৎ কোনো শুল্ক নেই। বাংলাদেশের ট্যারিফ লাইনের আরও ১০০টি পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক কমানোর প্রস্তাবও দিয়েছে বাংলাদেশ।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র আরও জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর থেকে সরকার ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিশেষ গুরুত্ব সহকারে এই বিষয়ে কাজ করছে। সম্প্রতি আমাদের একটি প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে ইউএসটিআরসহ (যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তর) সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য-ঘাটতি কমাতে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে মন্ত্রণালয়। এটি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসটিআরকে জানানো হবে বলে জানান বাণিজ্য সচিব।
সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সংস্কার উদ্যোগের জন্য নেয়া ইতিবাচক পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে দেশটি। বাংলাদেশ সরকারকে শ্রম অধিকার লঙ্ঘন এবং ডিজিটাল বাণিজ্যে বাধার মতো অন্য অবৈধ বাণিজ্য চর্চাগুলো সমাধান করার উৎসাহ দিচ্ছে। লিখিত প্রস্তাব পাওয়ার পরই দেশটি আলোচনা শুরু করবে।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান সংবাদকে বলেন, ‘পাল্টা শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছে বাংলাদেশ। এভাবেই এগোতে হবে। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে কী ‘অফার’ করবে আর দেশটির কাছ থেকে কী চাইবে, সেটি আগে চূড়ান্ত করতে হবে। তারপরই আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করা দরকার। বাংলাদেশ অতিরিক্ত শুল্ক বাতিল, যুক্তরাষ্ট্রের তুলা ব্যবহারে উৎপাদিত পোশাক রপ্তানিতে শুল্কছাড় এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনা শুরুর দাবি করতে পারে।’
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণার পাঁচ দিন পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেন। এতে পাল্টা শুল্ক তিন মাস স্থগিত করার অনুরোধ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশে শুল্ক-সুবিধা দেওয়া হবে।’ গ্যাস টারবাইন, সেমিকন্ডাক্টর, চিকিৎসাসামগ্রীর মতো বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান রপ্তানি পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কমানোর কথাও বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
যুক্তরাষ্ট্র যেসব দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে, সেসব দেশের ওপর গত ২ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক বা রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ আরোপ করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বের ৫৭টি দেশের ওপর বিভিন্ন হারে বাড়তি পাল্টা শুল্ক বসানো হয়। তাতে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক দাঁড়াত ৩৭ শতাংশ। তবে ৯ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন প্রেসিডেন্ট। যদিও সব দেশের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্কের প্রভাব বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের ওপর এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে। অনেক মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাড়তি শুল্কের অর্ধেকটা রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে কেটে নিচ্ছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্কের পুরোটা নেওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিপ্রেক্ষিতে চীন, ভারত, ভিয়েতনাম, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ১৮টি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দর-কষাকষি চলছে। আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি কাঠামোও দাঁড় করিয়েছে তারা।
শুল্ক নিয়ে দর-কষাকষি
রোববার, ১১ মে ২০২৫
পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপ বিষয় দর-কষাকষি চলছে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে। ইতোমধ্যেই দুই দেশের প্রতিনিধিরা এই সংকট সমাধানে নানা উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন। তবে পাল্টা শুল্ক কমাতে ট্রেড বাস্কেট বা বাণিজ্য পরিসীমা বৃদ্ধিতেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। অর্থাৎ বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে পরিমান বাণিজ্য ঘাটতি আছে সেটা কমানোর উপর নির্ভর করবে বাংলাদেশের ওপর কতটুকু শুল্কারোপ হবে। এর আগে একটা লিখিত প্রস্তাব দিতে হবে যেটার ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চয়তা পেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বাংলাদেশ তৃতীয় কোনো দেশ থেকে আমদানি করে। সেই পণ্যগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করার সুপারিশ করেছে দেশটি
লিখিত প্রস্তাব পাওয়ার
পরই আলোচনা শুরু
করবে যুক্তরাষ্ট্র
এ জন্য বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনকে ৭ মে লেখা এক চিঠিতে এ কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার। এর আগে গত মাসে বাণিজ্য উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য-ঘাটতি কমাতে পদক্ষেপ নেওয়া এবং আলোচনার আগ্রহের কথা জানিয়ে জেমিসন গ্রিয়ারকে চিঠি দিয়েছিলেন।
রোববার,(১১ মে ২০২৫) কথা হয় বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপের পরই আমরা প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা শুরু করি। সেই আলোচনা এখনও চলমান। আমরা ভালো কিছুর আশা করছি। যুক্তরাষ্ট্র মূলত ‘ট্রেড বাস্কেট’ বাড়ানোয় গুরুত্ব দিচ্ছে। দেশটি বলছে, বাংলাদেশ বাইরে থেকে যেসব পণ্য আমদানি করে সেগুলোই যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে পারে। এতে দুই দেশের জন্যেই ভালো হবে।’
এর জন্য অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা একটা কৌশলও উল্লেখ করে দিয়েছেন যেটা বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে। বাণিজ্য সচিব
বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এমন কিছু পণ্য আছে যেগুলো যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন হয়। সেই পণ্য বাংলাদেশ তৃতীয় দেশ থেকে আমদানি করে। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য অন্য দেশ থেকে আমদানি করে বাংলাদেশ। সেই পণ্য বাংলাদেশ যদি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করে তাহলে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমে। তখন বাংলাদেশের উপর পাল্টা শুল্ক কমাতে পারে।’
এছাড়াও আরও কিছু পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। যেমন, মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ এপ্রিল জেমিসন গ্রিয়ারকে চিঠি দেয় বাণিজ্য উপদেষ্টা। সেই চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশের শুল্ক তালিকায় বর্তমানে ১৯০টি পণ্যের ওপর শুল্কহার শূন্য অর্থাৎ কোনো শুল্ক নেই। বাংলাদেশের ট্যারিফ লাইনের আরও ১০০টি পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক কমানোর প্রস্তাবও দিয়েছে বাংলাদেশ।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র আরও জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর থেকে সরকার ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিশেষ গুরুত্ব সহকারে এই বিষয়ে কাজ করছে। সম্প্রতি আমাদের একটি প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে ইউএসটিআরসহ (যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তর) সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য-ঘাটতি কমাতে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে মন্ত্রণালয়। এটি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসটিআরকে জানানো হবে বলে জানান বাণিজ্য সচিব।
সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সংস্কার উদ্যোগের জন্য নেয়া ইতিবাচক পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে দেশটি। বাংলাদেশ সরকারকে শ্রম অধিকার লঙ্ঘন এবং ডিজিটাল বাণিজ্যে বাধার মতো অন্য অবৈধ বাণিজ্য চর্চাগুলো সমাধান করার উৎসাহ দিচ্ছে। লিখিত প্রস্তাব পাওয়ার পরই দেশটি আলোচনা শুরু করবে।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান সংবাদকে বলেন, ‘পাল্টা শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছে বাংলাদেশ। এভাবেই এগোতে হবে। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে কী ‘অফার’ করবে আর দেশটির কাছ থেকে কী চাইবে, সেটি আগে চূড়ান্ত করতে হবে। তারপরই আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করা দরকার। বাংলাদেশ অতিরিক্ত শুল্ক বাতিল, যুক্তরাষ্ট্রের তুলা ব্যবহারে উৎপাদিত পোশাক রপ্তানিতে শুল্কছাড় এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনা শুরুর দাবি করতে পারে।’
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণার পাঁচ দিন পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেন। এতে পাল্টা শুল্ক তিন মাস স্থগিত করার অনুরোধ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশে শুল্ক-সুবিধা দেওয়া হবে।’ গ্যাস টারবাইন, সেমিকন্ডাক্টর, চিকিৎসাসামগ্রীর মতো বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান রপ্তানি পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কমানোর কথাও বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
যুক্তরাষ্ট্র যেসব দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে, সেসব দেশের ওপর গত ২ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক বা রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ আরোপ করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বের ৫৭টি দেশের ওপর বিভিন্ন হারে বাড়তি পাল্টা শুল্ক বসানো হয়। তাতে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক দাঁড়াত ৩৭ শতাংশ। তবে ৯ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন প্রেসিডেন্ট। যদিও সব দেশের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্কের প্রভাব বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের ওপর এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে। অনেক মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাড়তি শুল্কের অর্ধেকটা রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে কেটে নিচ্ছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্কের পুরোটা নেওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিপ্রেক্ষিতে চীন, ভারত, ভিয়েতনাম, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ১৮টি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দর-কষাকষি চলছে। আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি কাঠামোও দাঁড় করিয়েছে তারা।