ডেঙ্গু এখন আর শহর-গ্রামের সীমারেখায় আটকে নেই। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও দুই রোগীর মৃত্যু হয়। জেলার বিভিন্ন উপজেলা, বিশেষ করে পুঠিয়ায়, স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গু সংক্রমন হয়েছে। দীর্ঘদিন কোথাও ভ্রমণ না করেও আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা তুলে ধরছে ডেঙ্গু।
এদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের ওয়ার্ড ও নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউতে) তাদের মৃত্যু হয়। মৃতরা হলেন, রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার মিঠু (৩০) ও নওগাঁর সাবিহা (৫৬)। গতকাল শুক্রবার দুপুরে রামেক হাসপাতাল থেকে পাঠানো ডেঙ্গুর প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার সকালে রামেক হাসপাতালে মিঠুকে ভর্তি করেন তার স্বজনরা। সে পাঁচ দিনের জ্বরে ভুগছিলেন। গতকাল শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ডেঙ্গু ওয়ার্ডের চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। অপরদিকে, গেল ৬ নভেম্বর ডেঙ্গ আক্রান্ত হয়ে রামেক হাসপাতালের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হন সাবিহা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে একইদিন সকালে তাকে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালে বর্তমানে ৪১ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। চিকিৎসাধীনদের মধ্যে পাঁচজন শিশু, ২৪ জন পুরুষ ও ১২ জন নারী। তারা সবাই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৬ জন ডেঙ্গু রোগি ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। এ বিষয়ে রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, ২৪ ঘণ্টায় দুই জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের বিভিন্ন কার্যক্রম শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রাজশাহীর পুঠিয়ায় দিন দিন বাড়ছে ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু খবর পাওয়া গেছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তি ঢাকায় গার্মেন্টে কাজ করতে গিয়েছিলেন। সেখান হতে অসুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেন তিনি, তবে ঢাকার কোথায় হতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হিসেব মতে, শুধু ২০২৫ সালেই চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন ৭০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। অনেকে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন, আবার যাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক তাদেরকে পাঠানো হয়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অপরদিকে ডেঙ্গু থেকে প্রতিরোধে পুঠিয়া পৌরসভা এলাকায় মাঝে মধ্যে স্প্রে ছিটানো হলেও, উপজেলার অন্য কোথাও আর এই কাজটি চোখে পড়েনি।
এদিকে পুঠিয়া উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের ধোপাপাড়া গ্রামের একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত নারী রোগীর দেখা মিলেছে। আক্রান্ত ওই নারী গত প্রায় দু’বছর ধরে অন্য কোথাও যাননি বলে ওই পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। এছাড়াও পুঠিয়া সদর ইউনিয়নের আরেকজন নারী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনিও গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে উপজেলার বাহিরে কোথাও যায়নি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সূচনা মনোহরা বলেন, আমরা বর্তমানে অনেক সচেতন। আমাদের পর্যাপ্ত পরীক্ষার কিট আছে। আগে পরীক্ষা করতে কিছু টাকা নেওয়া হতো এখন সম্পূর্ণ ফ্রিতে পরিক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়াও আমাদের এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে পার্শ্ববর্তী উপজেলার লোকজনও চিকিৎসা নিতে আসেন।
রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. এস, আই, এম রাজিউল করিম বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা সচেতনামূলক কাজ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আসলে ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে হলে মানুষকে সচেতন হতে হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
ডেঙ্গু এখন আর শহর-গ্রামের সীমারেখায় আটকে নেই। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও দুই রোগীর মৃত্যু হয়। জেলার বিভিন্ন উপজেলা, বিশেষ করে পুঠিয়ায়, স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গু সংক্রমন হয়েছে। দীর্ঘদিন কোথাও ভ্রমণ না করেও আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা তুলে ধরছে ডেঙ্গু।
এদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের ওয়ার্ড ও নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউতে) তাদের মৃত্যু হয়। মৃতরা হলেন, রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার মিঠু (৩০) ও নওগাঁর সাবিহা (৫৬)। গতকাল শুক্রবার দুপুরে রামেক হাসপাতাল থেকে পাঠানো ডেঙ্গুর প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার সকালে রামেক হাসপাতালে মিঠুকে ভর্তি করেন তার স্বজনরা। সে পাঁচ দিনের জ্বরে ভুগছিলেন। গতকাল শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ডেঙ্গু ওয়ার্ডের চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। অপরদিকে, গেল ৬ নভেম্বর ডেঙ্গ আক্রান্ত হয়ে রামেক হাসপাতালের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হন সাবিহা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে একইদিন সকালে তাকে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালে বর্তমানে ৪১ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। চিকিৎসাধীনদের মধ্যে পাঁচজন শিশু, ২৪ জন পুরুষ ও ১২ জন নারী। তারা সবাই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৬ জন ডেঙ্গু রোগি ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। এ বিষয়ে রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, ২৪ ঘণ্টায় দুই জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের বিভিন্ন কার্যক্রম শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রাজশাহীর পুঠিয়ায় দিন দিন বাড়ছে ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু খবর পাওয়া গেছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তি ঢাকায় গার্মেন্টে কাজ করতে গিয়েছিলেন। সেখান হতে অসুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেন তিনি, তবে ঢাকার কোথায় হতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হিসেব মতে, শুধু ২০২৫ সালেই চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন ৭০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। অনেকে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন, আবার যাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক তাদেরকে পাঠানো হয়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অপরদিকে ডেঙ্গু থেকে প্রতিরোধে পুঠিয়া পৌরসভা এলাকায় মাঝে মধ্যে স্প্রে ছিটানো হলেও, উপজেলার অন্য কোথাও আর এই কাজটি চোখে পড়েনি।
এদিকে পুঠিয়া উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের ধোপাপাড়া গ্রামের একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত নারী রোগীর দেখা মিলেছে। আক্রান্ত ওই নারী গত প্রায় দু’বছর ধরে অন্য কোথাও যাননি বলে ওই পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। এছাড়াও পুঠিয়া সদর ইউনিয়নের আরেকজন নারী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনিও গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে উপজেলার বাহিরে কোথাও যায়নি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সূচনা মনোহরা বলেন, আমরা বর্তমানে অনেক সচেতন। আমাদের পর্যাপ্ত পরীক্ষার কিট আছে। আগে পরীক্ষা করতে কিছু টাকা নেওয়া হতো এখন সম্পূর্ণ ফ্রিতে পরিক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়াও আমাদের এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে পার্শ্ববর্তী উপজেলার লোকজনও চিকিৎসা নিতে আসেন।
রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. এস, আই, এম রাজিউল করিম বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা সচেতনামূলক কাজ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আসলে ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে হলে মানুষকে সচেতন হতে হবে।