রাজশাহীতে রাজবাড়ী ভাঙার সময় নিচে পাওয়া গেল সুড়ঙ্গ -সংবাদ
ভাঙনের শব্দ যখন কেবল ইট-চুনের, তখন হঠাৎই ইতিহাস নীরবতা ভেঙে মুখ খুললো সুড়ঙ্গের অন্ধকারে। পদ্মা নদীর তীর ধরে গড়ে ওঠা রাজশাহী শহর যেন ইতিহাসের স্তরে স্তরে সাজানো এক প্রাচীন পাণ্ডুলিপি। প্রতিটি ইটের ফাঁকে, প্রতিটি ভগ্নপ্রাচীরের চিরে লুকিয়ে আছে অগণিত স্মৃতি ও গোপন রহস্য। দিঘাপতিয়ার জমিদার পরিবার রাজশাহীর উন্নয়ন, সংস্কৃতি ও শিক্ষায় রেখেছে গভীর ছাপ। কিন্তু আজ সেই ঐতিহ্যেরই এক নিঃশব্দ অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছে দরগাপাড়ার পুরনো বাড়ির নিচে পাওয়া রহস্যময় সুড়ঙ্গের মাধ্যমে।
রাজশাহী মহানগরীর দরগাপাড়া এলাকায় দিঘাপতিয়ার রাজপরিবারের একটি পুরনো বাড়ি ভাঙার সময় নিচ থেকে একটি সুড়ঙ্গ পাওয়া গেছে। বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন দিঘাপতিয়ার রাজা হেমেন্দ্র কুমার রায়ের ছেলে সন্দীপ কুমার রায়। স্থাপনাটির দুই পাশে দুটি একতলা ভবন, পিছনে একটি দোতলা ভবন এবং সামনে একটি ফুলের গাছ রয়েছে।
সরকারি কাগজপত্রে এটি বর্তমানে অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে নথিভুক্ত। জরাজীর্ণ হওয়ায় জেলা প্রশাসন এটি নিলামে বিক্রি করে এক লাখ ৫২ হাজার টাকায়। ক্রেতা ১০-১৫ দিন ধরে ভাঙার কাজ শুরু করলে নিচ থেকে সুড়ঙ্গ দেখা যায়। সুড়ঙ্গের পানি বের হয়ে আসায় সেচযন্ত্র বসিয়ে পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে। একটি সুড়ঙ্গের সঙ্গে আরেকটির সংযোগও রয়েছে।
বোয়ালিয়া ভূমি অফিস জানায়, দরগাপাড়া মৌজার ৫২৪ খতিয়ানের এই জমির দাগ নম্বর ৪৭। ১৯৮১ সালে এটি অর্পিত সম্পত্তি ঘোষণা করা হলেও সুপ্রিম কোর্ট ১৯৭৪ সালের পর কোনো সম্পত্তি অর্পিত ঘোষণা করতে নিষেধ করেছিল।
স্থানীয় ইতিহাসবিদরা বলছেন, প্রত্নতাত্ত্বিক মূল্য যাচাই না করেই বাড়িটি ভাঙার জন্য নিলামে তোলা হয়েছে।
কবি ও গবেষক তসিকুল ইসলাম জানান, স্বাধীনতার পর সরকার এটি ভাষাসৈনিক মনোয়ারা রহমানকে ইজারা দিয়েছিল। তিনি এখানে ‘মহিলা কুটিরশিল্প প্রতিষ্ঠান’ চালু করেন। এছাড়া ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, তেভাগা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এম. আতাউর রহমান মনোয়ারার স্বামী এখানে বসবাস করতেন।
হেরিটেজ রাজশাহীর প্রতিষ্ঠাতা মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, ‘রাজশাহীর পরতে পরতে দিঘাপতিয়ার জমিদারদের অবদান আছে। এমন স্থাপনা ভাঙার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত দুঃখজনক। ইতিহাস চর্চাকারীদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল।’
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মহিনুল ইসলাম বলেন, ‘বাড়িটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সুড়ঙ্গের বিষয়ে সহকারী কমিশনারকে পাঠানো হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেলে তা সংরক্ষণ করা হবে।’
# তিন দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান
রাজশাহী নগরের দরগাপাড়া মৌজায় অবস্থিত দিঘাপতিয়ার রাজা হেমেন্দ্র কুমার রায়ের ছেলে সন্দীপ কুমার রায়ের নির্মিত রাজবাড়িসহ ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন স্থাপনা সংরক্ষণের দাবিতে তিন দফা দাবির স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। বুধবার, (০৩ ডিসেম্বর ২০২৫) বেলা ১২টায় রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এতে সই করেন রাজশাহীর নাগরিক সমাজ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনকর্মী এবং ইতিহাস ঐতিহ্য গবেষকরা।
সাক্ষাৎকালে পঞ্চকবির অন্যতম কান্তকবি রজনীকান্ত সেনের বসতভিটা, মিঞাপাড়ায় অবস্থিত রাজা হেমেন্দ্র কুমারের বসতভিটা, উপমহাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋত্বিক কুমার ঘটকের গুঁড়িয়ে দেয়া বসতভিটা, তালন্দ ভবনসহ বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা সংরক্ষণে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, রাজশাহী বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মহানগরী। প্রাচীন বাংলার বিখ্যাত নগরগুলোর কয়েকটি এই অঞ্চলে অবস্থিত ছিল। প্রাচীন ও মধ্যযুগে রাজশাহী ছিল পুন্ড্র সাম্রাজ্যের অংশ। সেন বংশের রাজা বিজয় সেনের রাজধানী ‘বিজয়পুর’ বর্তমান রাজশাহী শহর থেকে মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরে ছিল। মধ্যযুগে বর্তমান রাজশাহীর নাম ছিল রামপুর-বোয়ালিয়া, যার সূত্র ধরে আজও একটি থানার নাম বোয়ালিয়া।
এমন ঐতিহ্যম-িত শহরে অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি বসবাস করেছেন এবং তাদের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িঘর রয়েছে। দিঘাপতিয়ার নির্মিত এই বাড়িটিও তেমনই একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। জনশ্রুতি আছে, মহারানি হেমন্তকুমারী (১৮৬৯-১৯৪২) পুঠিয়া থেকে রাজশাহী শহরে এলে এই বাড়িতে অবস্থান করতেন। বাড়িটির সামনে রয়েছে নাগলিঙ্গম ফলের একটি গাছ। প্রত্নতাত্ত্বিক মূল্য যাচাই না করেই এটি ভাঙার জন্য নিলামে তোলা হয়েছে যা মোটেও সঠিক সিদ্ধান্ত নয় বলে উল্লেখ করা হয়।
# স্মারকলিপির দাবি
১. ঐতিহ্যবাহী এই বাড়ি ভাঙার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
২. নাগলিঙ্গম গাছ ও বাড়িটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে এবং বাড়িটিকে হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করতে হবে।
৩. রাজশাহী জেলা ও বিভাগে প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ করে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো ক্যাটাগরি অনুযায়ী সংরক্ষণের উদ্যোগ নিতে হবে।
৪. রজনীকান্ত সেনের বসতভিটা, মিঞাপাড়ায় অবস্থিত রাজা হেমেন্দ্র কুমারের বসতভিটা (বর্তমানে একটি বিশেষ বাহিনীর দখলে), তালন্দ ভবন (একইভাবে দখলে) সহ অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা সংরক্ষণে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
একই দাবিসম্বলিত স্মারকলিপির অনুলিপি রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার বরাবরও প্রেরণ করা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- হেরিটেজ রাজশাহীর সভাপতি লেখক ও গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, গবেষক ও নৃবিজ্ঞানী শহিদুল ইসলাম, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান আতিক, ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোশ্যাল চেঞ্জ ইয়্যাসের সভাপতি শামীউল আলীম শাওন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনকর্মী নাদিম সিনা, হাসিবুল হাসনাত রিজভি প্রমুখ।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রাজশাহীতে রাজবাড়ী ভাঙার সময় নিচে পাওয়া গেল সুড়ঙ্গ -সংবাদ
বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
ভাঙনের শব্দ যখন কেবল ইট-চুনের, তখন হঠাৎই ইতিহাস নীরবতা ভেঙে মুখ খুললো সুড়ঙ্গের অন্ধকারে। পদ্মা নদীর তীর ধরে গড়ে ওঠা রাজশাহী শহর যেন ইতিহাসের স্তরে স্তরে সাজানো এক প্রাচীন পাণ্ডুলিপি। প্রতিটি ইটের ফাঁকে, প্রতিটি ভগ্নপ্রাচীরের চিরে লুকিয়ে আছে অগণিত স্মৃতি ও গোপন রহস্য। দিঘাপতিয়ার জমিদার পরিবার রাজশাহীর উন্নয়ন, সংস্কৃতি ও শিক্ষায় রেখেছে গভীর ছাপ। কিন্তু আজ সেই ঐতিহ্যেরই এক নিঃশব্দ অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছে দরগাপাড়ার পুরনো বাড়ির নিচে পাওয়া রহস্যময় সুড়ঙ্গের মাধ্যমে।
রাজশাহী মহানগরীর দরগাপাড়া এলাকায় দিঘাপতিয়ার রাজপরিবারের একটি পুরনো বাড়ি ভাঙার সময় নিচ থেকে একটি সুড়ঙ্গ পাওয়া গেছে। বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন দিঘাপতিয়ার রাজা হেমেন্দ্র কুমার রায়ের ছেলে সন্দীপ কুমার রায়। স্থাপনাটির দুই পাশে দুটি একতলা ভবন, পিছনে একটি দোতলা ভবন এবং সামনে একটি ফুলের গাছ রয়েছে।
সরকারি কাগজপত্রে এটি বর্তমানে অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে নথিভুক্ত। জরাজীর্ণ হওয়ায় জেলা প্রশাসন এটি নিলামে বিক্রি করে এক লাখ ৫২ হাজার টাকায়। ক্রেতা ১০-১৫ দিন ধরে ভাঙার কাজ শুরু করলে নিচ থেকে সুড়ঙ্গ দেখা যায়। সুড়ঙ্গের পানি বের হয়ে আসায় সেচযন্ত্র বসিয়ে পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে। একটি সুড়ঙ্গের সঙ্গে আরেকটির সংযোগও রয়েছে।
বোয়ালিয়া ভূমি অফিস জানায়, দরগাপাড়া মৌজার ৫২৪ খতিয়ানের এই জমির দাগ নম্বর ৪৭। ১৯৮১ সালে এটি অর্পিত সম্পত্তি ঘোষণা করা হলেও সুপ্রিম কোর্ট ১৯৭৪ সালের পর কোনো সম্পত্তি অর্পিত ঘোষণা করতে নিষেধ করেছিল।
স্থানীয় ইতিহাসবিদরা বলছেন, প্রত্নতাত্ত্বিক মূল্য যাচাই না করেই বাড়িটি ভাঙার জন্য নিলামে তোলা হয়েছে।
কবি ও গবেষক তসিকুল ইসলাম জানান, স্বাধীনতার পর সরকার এটি ভাষাসৈনিক মনোয়ারা রহমানকে ইজারা দিয়েছিল। তিনি এখানে ‘মহিলা কুটিরশিল্প প্রতিষ্ঠান’ চালু করেন। এছাড়া ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, তেভাগা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এম. আতাউর রহমান মনোয়ারার স্বামী এখানে বসবাস করতেন।
হেরিটেজ রাজশাহীর প্রতিষ্ঠাতা মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, ‘রাজশাহীর পরতে পরতে দিঘাপতিয়ার জমিদারদের অবদান আছে। এমন স্থাপনা ভাঙার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত দুঃখজনক। ইতিহাস চর্চাকারীদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল।’
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মহিনুল ইসলাম বলেন, ‘বাড়িটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সুড়ঙ্গের বিষয়ে সহকারী কমিশনারকে পাঠানো হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেলে তা সংরক্ষণ করা হবে।’
# তিন দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান
রাজশাহী নগরের দরগাপাড়া মৌজায় অবস্থিত দিঘাপতিয়ার রাজা হেমেন্দ্র কুমার রায়ের ছেলে সন্দীপ কুমার রায়ের নির্মিত রাজবাড়িসহ ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন স্থাপনা সংরক্ষণের দাবিতে তিন দফা দাবির স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। বুধবার, (০৩ ডিসেম্বর ২০২৫) বেলা ১২টায় রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এতে সই করেন রাজশাহীর নাগরিক সমাজ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনকর্মী এবং ইতিহাস ঐতিহ্য গবেষকরা।
সাক্ষাৎকালে পঞ্চকবির অন্যতম কান্তকবি রজনীকান্ত সেনের বসতভিটা, মিঞাপাড়ায় অবস্থিত রাজা হেমেন্দ্র কুমারের বসতভিটা, উপমহাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋত্বিক কুমার ঘটকের গুঁড়িয়ে দেয়া বসতভিটা, তালন্দ ভবনসহ বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা সংরক্ষণে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, রাজশাহী বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মহানগরী। প্রাচীন বাংলার বিখ্যাত নগরগুলোর কয়েকটি এই অঞ্চলে অবস্থিত ছিল। প্রাচীন ও মধ্যযুগে রাজশাহী ছিল পুন্ড্র সাম্রাজ্যের অংশ। সেন বংশের রাজা বিজয় সেনের রাজধানী ‘বিজয়পুর’ বর্তমান রাজশাহী শহর থেকে মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরে ছিল। মধ্যযুগে বর্তমান রাজশাহীর নাম ছিল রামপুর-বোয়ালিয়া, যার সূত্র ধরে আজও একটি থানার নাম বোয়ালিয়া।
এমন ঐতিহ্যম-িত শহরে অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি বসবাস করেছেন এবং তাদের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িঘর রয়েছে। দিঘাপতিয়ার নির্মিত এই বাড়িটিও তেমনই একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। জনশ্রুতি আছে, মহারানি হেমন্তকুমারী (১৮৬৯-১৯৪২) পুঠিয়া থেকে রাজশাহী শহরে এলে এই বাড়িতে অবস্থান করতেন। বাড়িটির সামনে রয়েছে নাগলিঙ্গম ফলের একটি গাছ। প্রত্নতাত্ত্বিক মূল্য যাচাই না করেই এটি ভাঙার জন্য নিলামে তোলা হয়েছে যা মোটেও সঠিক সিদ্ধান্ত নয় বলে উল্লেখ করা হয়।
# স্মারকলিপির দাবি
১. ঐতিহ্যবাহী এই বাড়ি ভাঙার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
২. নাগলিঙ্গম গাছ ও বাড়িটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে এবং বাড়িটিকে হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করতে হবে।
৩. রাজশাহী জেলা ও বিভাগে প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ করে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো ক্যাটাগরি অনুযায়ী সংরক্ষণের উদ্যোগ নিতে হবে।
৪. রজনীকান্ত সেনের বসতভিটা, মিঞাপাড়ায় অবস্থিত রাজা হেমেন্দ্র কুমারের বসতভিটা (বর্তমানে একটি বিশেষ বাহিনীর দখলে), তালন্দ ভবন (একইভাবে দখলে) সহ অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা সংরক্ষণে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
একই দাবিসম্বলিত স্মারকলিপির অনুলিপি রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার বরাবরও প্রেরণ করা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- হেরিটেজ রাজশাহীর সভাপতি লেখক ও গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, গবেষক ও নৃবিজ্ঞানী শহিদুল ইসলাম, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান আতিক, ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোশ্যাল চেঞ্জ ইয়্যাসের সভাপতি শামীউল আলীম শাওন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনকর্মী নাদিম সিনা, হাসিবুল হাসনাত রিজভি প্রমুখ।