ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর শিবপুর
বৃহস্পতিবার, (০৪ ডিসেম্বর ২০২৫) সকালে আবারও ভূমিকম্পে কাঁপলো বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবারসকাল ৬টা ১৪ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডে এ ভূমিকম্প হয় বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রুবাঈয়্যাৎ কবীর। তিনি বলেন, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে নরসিংদীর শিবপুরে। এটি ছিল হালকা মাত্রার ভূমিকম্প, রিখটার স্কেলে ছিল ৪ দশমিক ১ মাত্রা।
ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমসিএস) বলছে, নরসিংদী থেকে ৩ কিলোমিটার উত্তরে ছিল এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। এর আগে গত ২৭ নভেম্বর বিকেল সোয়া ৪টায় দেশে ভূমিকম্প হয়, যার উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীরই ঘোড়াশাল। সেটি ছিল ৪ মাত্রার ভূমিকম্প।
মাঝে গত সোমবার রাতে মায়ানমারের ফালামে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়, যা অনুভূত হয়েছে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকেও। যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৪ দশমিক ৯।
তারও আগে গত ২১ নভেম্বর কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্প আঘাত হানে বাংলাদেশে। ওই ভূমিকম্পে তিন জেলায় অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয় এবং ছয় শতাধিক মানুষ আহত হন। রিখটার স্কেলে ৫.৭ মাত্রার এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে তে এবং এর কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে।
পরদিন সকালে নরসিংদীর পলাশে ৩.৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। তার রেশ না কাটতেই সন্ধ্যায় সেকেন্ডের ব্যবধানে দুটি ভূমিকম্প হয়, যার একটি উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার বাড্ডা, অন্যটি সেই নরসিংদীতেই। বারবার ভূমিকম্পের পর এখনই করণীয় ঠিক করতে তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বুয়েটের পুরাকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদি আহমেদ আনসারী সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে গত ২১ নভেম্বর বলেন, ‘আজকের ভূমিকম্পটা বলা যেতে পারে ‘ফোরশক’। বড় ভূমিকম্পের আগে ছোট ছোট যে ভূমিকম্প, এটা সেগুলোর একটি।’ ভূ-তত্ত্ববিদ অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার মনে করেন, বড় ধরনের একটি ভূমিকম্পের বিপদ বাংলাদেশের সামনে অপেক্ষা করছে। ওই ঝুঁকি বিপদজনক মাত্রায় পৌঁছেছে জনগণের সচেতনতা, সরকারের পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতির অভাবে।
তার ভাষ্য, ভূমিকম্প ঠেকানো যাবে না, প্রতিরোধ করা সম্ভব না, আগাম সংকেতও দেয়া যাবে না, কিন্তু এর ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব যদি সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। ‘সব কথার শেষ কথা যেটা হচ্ছে, আমাদের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে এবং ভূমিকম্প প্রতিরোধ বা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা।’ ভূমিকম্প নিয়ে জনমনে আতঙ্কের মধ্যে গত ২৪ নভেম্বর বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। ওই বৈঠক একটি টাস্কফোর্স গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
# ভূমিকম্পের সময়, আগে ও পরে করণীয়
ভূমিকম্পের সময় ও আগে-পরে কী করবেন এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান শিকদার বলেন, ‘ভূমিকম্প একটি বহুমাত্রিক বিপর্যয়।’ ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়া এখনও সম্ভব হয়নি। কম্পন সাধারণত ১০-৩০ সেকেন্ড স্থায়ী হয়। এত অল্প সময়ে ভবন থেকে বের হওয়া প্রায় অসম্ভব। তাই আতঙ্কে তাড়াহুড়ো করে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে বা জানালা থেকে লাফ দিয়ে অনেকেই আহত বা নিহত হন। সঠিক প্রস্তুতি ও শান্ত মাথায় করণীয় জানা থাকলে প্রাণহানি অনেক কমানো যায়।
# ভূমিকম্পের আগে যা করবেন
বাড়ি তৈরি করার সময় বাংলাদেশ ‘ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি)’ কঠোরভাবে মানুন। ভূমিকম্পসহনশীল ভবনই প্রথম সুরক্ষা। গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির লাইন নিয়মিত পরীক্ষা করুন। ‘ফ্লেক্সিবল পাই ‘ ব্যবহার করলে গ্যাস লিকের ঝুঁকি কমে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভূমিকম্প মহড়া করুন। কে কোথায় আশ্রয় নেবে, তা আগে থেকেই ঠিক করে রাখুন। জরুরি প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যাগ তৈরি করুন, পানি, শুকনা খাবার, প্রাথমিক চিকিৎসার ওষুধ, টর্চ, হুইসেল, হেলমেট, পাওয়ার ব্যাংক, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রের কপি থাকতে পারে এই ব্যাগে। ভারী আসবাব, আলমারি, বুকশেলফ দেওয়ালের সঙ্গে শক্ত করে আটকে রাখুন যাতে পড়ে না যায়।
# ভূমিকম্পের সময় যা করবেন
ঘরের ভেতরে থাকলে ‘ড্রপ, কভার অ্যান্ড হোল্ড অন’ এই তিন শব্দই জীবন রক্ষা করে। ড্রপ-মেঝেতে হাঁটু গেড়ে বসুন। কভার-শক্ত টেবিল বা ডেস্কের নিচে ঢুকে যান, মাথা ও ঘাড় হাত দিয়ে ঢেকে রাখুন। হোল্ড অন-টেবিলের পা শক্ত করে ধরে রাখুন। বিকল্প উপায়-কলাম বা বিমের পাশে শুয়ে পড়ুন। জানালা, বারান্দা, লিফট, সিঁড়ি থেকে দূরে থাকুন। চুলা ও মেইন সুইচ বন্ধ করার চেষ্টা করবেন না, নিজের নিরাপত্তাই আগে। বাইরে থাকলে খোলা মাঠে চলে যান। উঁচু ভবন, বিদ্যুতের খুঁটি, গাছ, সাইনবোর্ড থেকে দূরে থাকুন। গাড়িতে থাকলে নিরাপদ জায়গায় গাড়ি পার্ক করে হ্যান্ডব্রেক টানুন, ইঞ্জিন বন্ধ করুন এবং গাড়ির ভিতরেই থাকুন।
# ভূমিকম্পের পরে যা করবেন
প্রথমে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। ‘আফটার শক’য়ের জন্য প্রস্তুত থাকুন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে গেলে শান্ত থাকুন। ধুলা থেকে মুখ ঢেকে রাখুন। হুইসেল বাজান বা দেওয়ালে টোকা দিয়ে অবস্থান জানান। অযথা চিৎকার করবেন না, অক্সিজেন বাঁচান। ফোনের চার্জ ও নেটওয়ার্ক বাঁচিয়ে রাখুন। শুধু জরুরি কলে ব্যবহার করুন। প্রশিক্ষণ ছাড়া কেউ ধ্বংসস্তূপ সরানোর চেষ্টা করবেন না। উদ্ধারকারী দলের পথ পরিষ্কার রাখুন, গুজব ছড়াবেন না। ভূমিকম্প আসবেই, তবে প্রস্তুতি থাকলে আমরা বেঁচে ফিরতে পারি। এখন থেকেই শুরু করুন একটু সচেতনতা হাজারো প্রাণ বাঁচাতে পারে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর শিবপুর
বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
বৃহস্পতিবার, (০৪ ডিসেম্বর ২০২৫) সকালে আবারও ভূমিকম্পে কাঁপলো বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবারসকাল ৬টা ১৪ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডে এ ভূমিকম্প হয় বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রুবাঈয়্যাৎ কবীর। তিনি বলেন, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে নরসিংদীর শিবপুরে। এটি ছিল হালকা মাত্রার ভূমিকম্প, রিখটার স্কেলে ছিল ৪ দশমিক ১ মাত্রা।
ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমসিএস) বলছে, নরসিংদী থেকে ৩ কিলোমিটার উত্তরে ছিল এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। এর আগে গত ২৭ নভেম্বর বিকেল সোয়া ৪টায় দেশে ভূমিকম্প হয়, যার উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীরই ঘোড়াশাল। সেটি ছিল ৪ মাত্রার ভূমিকম্প।
মাঝে গত সোমবার রাতে মায়ানমারের ফালামে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়, যা অনুভূত হয়েছে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকেও। যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৪ দশমিক ৯।
তারও আগে গত ২১ নভেম্বর কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্প আঘাত হানে বাংলাদেশে। ওই ভূমিকম্পে তিন জেলায় অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয় এবং ছয় শতাধিক মানুষ আহত হন। রিখটার স্কেলে ৫.৭ মাত্রার এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে তে এবং এর কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে।
পরদিন সকালে নরসিংদীর পলাশে ৩.৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। তার রেশ না কাটতেই সন্ধ্যায় সেকেন্ডের ব্যবধানে দুটি ভূমিকম্প হয়, যার একটি উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার বাড্ডা, অন্যটি সেই নরসিংদীতেই। বারবার ভূমিকম্পের পর এখনই করণীয় ঠিক করতে তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বুয়েটের পুরাকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদি আহমেদ আনসারী সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে গত ২১ নভেম্বর বলেন, ‘আজকের ভূমিকম্পটা বলা যেতে পারে ‘ফোরশক’। বড় ভূমিকম্পের আগে ছোট ছোট যে ভূমিকম্প, এটা সেগুলোর একটি।’ ভূ-তত্ত্ববিদ অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার মনে করেন, বড় ধরনের একটি ভূমিকম্পের বিপদ বাংলাদেশের সামনে অপেক্ষা করছে। ওই ঝুঁকি বিপদজনক মাত্রায় পৌঁছেছে জনগণের সচেতনতা, সরকারের পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতির অভাবে।
তার ভাষ্য, ভূমিকম্প ঠেকানো যাবে না, প্রতিরোধ করা সম্ভব না, আগাম সংকেতও দেয়া যাবে না, কিন্তু এর ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব যদি সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। ‘সব কথার শেষ কথা যেটা হচ্ছে, আমাদের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে এবং ভূমিকম্প প্রতিরোধ বা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা।’ ভূমিকম্প নিয়ে জনমনে আতঙ্কের মধ্যে গত ২৪ নভেম্বর বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। ওই বৈঠক একটি টাস্কফোর্স গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
# ভূমিকম্পের সময়, আগে ও পরে করণীয়
ভূমিকম্পের সময় ও আগে-পরে কী করবেন এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান শিকদার বলেন, ‘ভূমিকম্প একটি বহুমাত্রিক বিপর্যয়।’ ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়া এখনও সম্ভব হয়নি। কম্পন সাধারণত ১০-৩০ সেকেন্ড স্থায়ী হয়। এত অল্প সময়ে ভবন থেকে বের হওয়া প্রায় অসম্ভব। তাই আতঙ্কে তাড়াহুড়ো করে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে বা জানালা থেকে লাফ দিয়ে অনেকেই আহত বা নিহত হন। সঠিক প্রস্তুতি ও শান্ত মাথায় করণীয় জানা থাকলে প্রাণহানি অনেক কমানো যায়।
# ভূমিকম্পের আগে যা করবেন
বাড়ি তৈরি করার সময় বাংলাদেশ ‘ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি)’ কঠোরভাবে মানুন। ভূমিকম্পসহনশীল ভবনই প্রথম সুরক্ষা। গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির লাইন নিয়মিত পরীক্ষা করুন। ‘ফ্লেক্সিবল পাই ‘ ব্যবহার করলে গ্যাস লিকের ঝুঁকি কমে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভূমিকম্প মহড়া করুন। কে কোথায় আশ্রয় নেবে, তা আগে থেকেই ঠিক করে রাখুন। জরুরি প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যাগ তৈরি করুন, পানি, শুকনা খাবার, প্রাথমিক চিকিৎসার ওষুধ, টর্চ, হুইসেল, হেলমেট, পাওয়ার ব্যাংক, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রের কপি থাকতে পারে এই ব্যাগে। ভারী আসবাব, আলমারি, বুকশেলফ দেওয়ালের সঙ্গে শক্ত করে আটকে রাখুন যাতে পড়ে না যায়।
# ভূমিকম্পের সময় যা করবেন
ঘরের ভেতরে থাকলে ‘ড্রপ, কভার অ্যান্ড হোল্ড অন’ এই তিন শব্দই জীবন রক্ষা করে। ড্রপ-মেঝেতে হাঁটু গেড়ে বসুন। কভার-শক্ত টেবিল বা ডেস্কের নিচে ঢুকে যান, মাথা ও ঘাড় হাত দিয়ে ঢেকে রাখুন। হোল্ড অন-টেবিলের পা শক্ত করে ধরে রাখুন। বিকল্প উপায়-কলাম বা বিমের পাশে শুয়ে পড়ুন। জানালা, বারান্দা, লিফট, সিঁড়ি থেকে দূরে থাকুন। চুলা ও মেইন সুইচ বন্ধ করার চেষ্টা করবেন না, নিজের নিরাপত্তাই আগে। বাইরে থাকলে খোলা মাঠে চলে যান। উঁচু ভবন, বিদ্যুতের খুঁটি, গাছ, সাইনবোর্ড থেকে দূরে থাকুন। গাড়িতে থাকলে নিরাপদ জায়গায় গাড়ি পার্ক করে হ্যান্ডব্রেক টানুন, ইঞ্জিন বন্ধ করুন এবং গাড়ির ভিতরেই থাকুন।
# ভূমিকম্পের পরে যা করবেন
প্রথমে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। ‘আফটার শক’য়ের জন্য প্রস্তুত থাকুন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে গেলে শান্ত থাকুন। ধুলা থেকে মুখ ঢেকে রাখুন। হুইসেল বাজান বা দেওয়ালে টোকা দিয়ে অবস্থান জানান। অযথা চিৎকার করবেন না, অক্সিজেন বাঁচান। ফোনের চার্জ ও নেটওয়ার্ক বাঁচিয়ে রাখুন। শুধু জরুরি কলে ব্যবহার করুন। প্রশিক্ষণ ছাড়া কেউ ধ্বংসস্তূপ সরানোর চেষ্টা করবেন না। উদ্ধারকারী দলের পথ পরিষ্কার রাখুন, গুজব ছড়াবেন না। ভূমিকম্প আসবেই, তবে প্রস্তুতি থাকলে আমরা বেঁচে ফিরতে পারি। এখন থেকেই শুরু করুন একটু সচেতনতা হাজারো প্রাণ বাঁচাতে পারে।