অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথের বৈধতা প্রশ্নে দায়ের করা রিট মামলায় আপিলের অনুমতির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। ফলে মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের শপথের বৈধতা নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন থাকছে না। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারকের পূর্ণাঙ্গ আপিল বিভাগ বৃহস্পতিবার, (০৪ ডিসেম্বর ২০২৫) রিটকারীপক্ষের লিভ টু আপিল পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দিয়েছে।
লিভ টু আপিলে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক, আদালতকে সহায়তা করেন (ইন পারসন) জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল, শরীফ ভুঁইয়া, শিশির মনির, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেনসহ আরও কয়েকজন।
পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা বলেছি যে রাষ্ট্রপতি যে চিঠি পাঠালেন, প্রেক্ষাপটটা কেমন ছিল, যেটা মহসিন রশিদ সাহেব তার পিটিশনেও বলেছেন। একটা দেশ যেভাবেই নির্বাচিত, যেভাবেই দাবি করুক না কেন, প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্য দিয়ে পরিচালনা করছিলেন। ইন এ ফাইন মর্নিং বা দুপুরে উনি নিজে পালিয়ে গেলেন। তার আগে উনার আত্মীয়স্বজন পালালেন। তার গোটা ক্যাবিনেট পালালেন। তার গোটা পার্লামেন্ট পালিয়ে গেলেন বা লুকিয়ে থাকলেন।
‘এই পরিস্থিতিতে একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন রাষ্ট্রপতি। আমাদের অনীক হক (অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল) সাহেব বলেছেন- রাষ্ট্রপতির এইটা এক্সিকিউটিভ চ্যাপ্টারের মধ্যে আছে, রাষ্ট্রপতি কনস্টিটিউশনের এক্সিকিউটিভ চ্যাপ্টারের মধ্যে। উনি এই পরিস্থিতিতে দেখলেন এই সংকটকালীন সময়ে জনগণকে অরক্ষিত অবস্থায় তিনি একটা অপিনিয়ন নিয়েছেন। সেই অপিনিয়নটা উনার ফরমালিটিজের জন্য নিয়েছেন, ভালো কথা। সুপ্রিম কোর্টও অপিনিয়ন দিয়েছেন। এইটা নিয়ে প্রশ্ন করার আর এইটার সঙ্গে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের বৈধতা-অবৈধতা নির্ভর করে না। এটা আমাদের সাবমিশন।’
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আপিল বিভাগ সর্বসম্মতক্রমে বলেছেন, তারা হাইকোর্টের রায়ের মধ্যে কোনো ভ্রান্তি, ভুল, বেআইনি কোনো কিছু পাননি। সুতরাং উনার (আইনজীবী মহসিন রশীদ) সিপিটা রিজেক্ট করেছেন উইথ অবজারভেশনস।’
রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘আপিল বিভাগের আদেশটা হচ্ছে আদালত বলেছেন যে, হাইকোর্ট বিভাগ জনাব মহসিন রশিদের রিট পিটিশন যে সরাসরি খারিজ করে দিয়েছিলেন, উনারা বলেছেন যে সেই খারিজটি আইন এবং ফ্যাক্ট অনুযায়ী সেটা যথার্থ ছিল এবং এই আদালতের কোনো ইন্টারফেয়ারেন্সের প্রয়োজন নেই বিধায় কোনো লিভ গ্র্যান্ট করা হলো না। এই কারণে আপিল বিভাগেও তার এই আবেদনটি, লিভ পিটিশনটি সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে।
‘ফলে যেটা হলো, প্রকারান্তরে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈধতা নিয়ে জনাব মহসিন রশিদ যে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করেছিলেন, তার কোনো সারবত্তা ছিল না, থাকলো না। প্রকারান্তরে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যে পরিচালিত হচ্ছে জনগণের মতামতের, ঐক্যমতের ভিত্তিতে, সেটিই প্রকারান্তরে স্থায়ী হলো কিংবা স্থাপিত হলো।’
অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে পাঠানো রেফারেন্স ও মতামতের প্রক্রিয়া নিয়ে গত বছরের ডিসেম্বরে রিট আবেদনটি করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ। শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১৩ জানুয়ারি আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে আদেশ দেয়। হাইকোর্টের দেয়া পূর্ণাঙ্গ আদেশ পরে প্রকাশিত হয়।
এতে বলা হয়, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কোনো আইনি দলিল দিয়ে সমর্থিত নয় বলে রিট আবেদনকারীর বক্তব্যে এসেছে। ‘উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক যে, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এক অনন্য পরিস্থিতিতে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী উপদেষ্টামূলক মতামত গ্রহণ করেন। মতামত অনুযায়ী কাজ করেছেন। তাই এটি আইনি দলিল দিয়ে সমর্থিত, বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার দ্বারা সমর্থিত।’
আদালত পর্যবেক্ষণে আরও বলেছিল, ‘২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্টে যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল, তা আমাদের ইতিহাসের অংশ এবং আশা করি আগামী অনেক বছর ধরে জনগণ যত্নে থাকবে।’ রিটটি ভ্রান্ত ধারণা, বিদ্বেষপ্রসূত ও হয়রানিমূলক বলে উল্লেখ করে তা সরাসরি খারিজ করা হয়। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে সুপ্রিম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ারের বিষয়ে বলা আছে।
অনুচ্ছেদটিতে বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হয়, আইনের এরূপ কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে বা উত্থাপনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা এমন ধরনের ও এমন জনগুরুত্বসম্পন্ন যে, সেই সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণ করা প্রয়োজন, তাহলে তিনি (রাষ্ট্রপতি) প্রশ্নটি আপিল বিভাগের বিবেচনার জন্য প্রেরণ করতে পারবেন। ওই বিভাগ স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত শুনানির পর প্রশ্নটি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে স্বীয় মতামত জ্ঞাপন করতে পারবেন।’
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। গত বছরের ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেন। তার দুদিন পর ৮ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার সদস্যরা শপথ নেয়। অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথের আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন অন্তর্বর্তী সরকার গঠন বিষয়ে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত চেয়ে রেফারেন্স পাঠান।
রাষ্ট্রপতির বিশেষ রেফারেন্সের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ গত বছরের ৮ আগস্ট মতামত দেয়, অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য শোনা হয়। আদালতের মতামতে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রের সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে জরুরি প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্যপরিচালনার নিমিত্ত অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টা নিযুক্ত করতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি ওইরূপ নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করাতে পারবেন।’
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথের বৈধতা প্রশ্নে দায়ের করা রিট মামলায় আপিলের অনুমতির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। ফলে মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের শপথের বৈধতা নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন থাকছে না। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারকের পূর্ণাঙ্গ আপিল বিভাগ বৃহস্পতিবার, (০৪ ডিসেম্বর ২০২৫) রিটকারীপক্ষের লিভ টু আপিল পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দিয়েছে।
লিভ টু আপিলে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক, আদালতকে সহায়তা করেন (ইন পারসন) জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল, শরীফ ভুঁইয়া, শিশির মনির, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেনসহ আরও কয়েকজন।
পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা বলেছি যে রাষ্ট্রপতি যে চিঠি পাঠালেন, প্রেক্ষাপটটা কেমন ছিল, যেটা মহসিন রশিদ সাহেব তার পিটিশনেও বলেছেন। একটা দেশ যেভাবেই নির্বাচিত, যেভাবেই দাবি করুক না কেন, প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্য দিয়ে পরিচালনা করছিলেন। ইন এ ফাইন মর্নিং বা দুপুরে উনি নিজে পালিয়ে গেলেন। তার আগে উনার আত্মীয়স্বজন পালালেন। তার গোটা ক্যাবিনেট পালালেন। তার গোটা পার্লামেন্ট পালিয়ে গেলেন বা লুকিয়ে থাকলেন।
‘এই পরিস্থিতিতে একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন রাষ্ট্রপতি। আমাদের অনীক হক (অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল) সাহেব বলেছেন- রাষ্ট্রপতির এইটা এক্সিকিউটিভ চ্যাপ্টারের মধ্যে আছে, রাষ্ট্রপতি কনস্টিটিউশনের এক্সিকিউটিভ চ্যাপ্টারের মধ্যে। উনি এই পরিস্থিতিতে দেখলেন এই সংকটকালীন সময়ে জনগণকে অরক্ষিত অবস্থায় তিনি একটা অপিনিয়ন নিয়েছেন। সেই অপিনিয়নটা উনার ফরমালিটিজের জন্য নিয়েছেন, ভালো কথা। সুপ্রিম কোর্টও অপিনিয়ন দিয়েছেন। এইটা নিয়ে প্রশ্ন করার আর এইটার সঙ্গে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের বৈধতা-অবৈধতা নির্ভর করে না। এটা আমাদের সাবমিশন।’
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আপিল বিভাগ সর্বসম্মতক্রমে বলেছেন, তারা হাইকোর্টের রায়ের মধ্যে কোনো ভ্রান্তি, ভুল, বেআইনি কোনো কিছু পাননি। সুতরাং উনার (আইনজীবী মহসিন রশীদ) সিপিটা রিজেক্ট করেছেন উইথ অবজারভেশনস।’
রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘আপিল বিভাগের আদেশটা হচ্ছে আদালত বলেছেন যে, হাইকোর্ট বিভাগ জনাব মহসিন রশিদের রিট পিটিশন যে সরাসরি খারিজ করে দিয়েছিলেন, উনারা বলেছেন যে সেই খারিজটি আইন এবং ফ্যাক্ট অনুযায়ী সেটা যথার্থ ছিল এবং এই আদালতের কোনো ইন্টারফেয়ারেন্সের প্রয়োজন নেই বিধায় কোনো লিভ গ্র্যান্ট করা হলো না। এই কারণে আপিল বিভাগেও তার এই আবেদনটি, লিভ পিটিশনটি সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে।
‘ফলে যেটা হলো, প্রকারান্তরে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈধতা নিয়ে জনাব মহসিন রশিদ যে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করেছিলেন, তার কোনো সারবত্তা ছিল না, থাকলো না। প্রকারান্তরে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যে পরিচালিত হচ্ছে জনগণের মতামতের, ঐক্যমতের ভিত্তিতে, সেটিই প্রকারান্তরে স্থায়ী হলো কিংবা স্থাপিত হলো।’
অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে পাঠানো রেফারেন্স ও মতামতের প্রক্রিয়া নিয়ে গত বছরের ডিসেম্বরে রিট আবেদনটি করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ। শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১৩ জানুয়ারি আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে আদেশ দেয়। হাইকোর্টের দেয়া পূর্ণাঙ্গ আদেশ পরে প্রকাশিত হয়।
এতে বলা হয়, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কোনো আইনি দলিল দিয়ে সমর্থিত নয় বলে রিট আবেদনকারীর বক্তব্যে এসেছে। ‘উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক যে, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এক অনন্য পরিস্থিতিতে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী উপদেষ্টামূলক মতামত গ্রহণ করেন। মতামত অনুযায়ী কাজ করেছেন। তাই এটি আইনি দলিল দিয়ে সমর্থিত, বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার দ্বারা সমর্থিত।’
আদালত পর্যবেক্ষণে আরও বলেছিল, ‘২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্টে যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল, তা আমাদের ইতিহাসের অংশ এবং আশা করি আগামী অনেক বছর ধরে জনগণ যত্নে থাকবে।’ রিটটি ভ্রান্ত ধারণা, বিদ্বেষপ্রসূত ও হয়রানিমূলক বলে উল্লেখ করে তা সরাসরি খারিজ করা হয়। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে সুপ্রিম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ারের বিষয়ে বলা আছে।
অনুচ্ছেদটিতে বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হয়, আইনের এরূপ কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে বা উত্থাপনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা এমন ধরনের ও এমন জনগুরুত্বসম্পন্ন যে, সেই সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণ করা প্রয়োজন, তাহলে তিনি (রাষ্ট্রপতি) প্রশ্নটি আপিল বিভাগের বিবেচনার জন্য প্রেরণ করতে পারবেন। ওই বিভাগ স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত শুনানির পর প্রশ্নটি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে স্বীয় মতামত জ্ঞাপন করতে পারবেন।’
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। গত বছরের ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেন। তার দুদিন পর ৮ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার সদস্যরা শপথ নেয়। অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথের আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন অন্তর্বর্তী সরকার গঠন বিষয়ে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত চেয়ে রেফারেন্স পাঠান।
রাষ্ট্রপতির বিশেষ রেফারেন্সের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ গত বছরের ৮ আগস্ট মতামত দেয়, অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য শোনা হয়। আদালতের মতামতে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রের সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে জরুরি প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্যপরিচালনার নিমিত্ত অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টা নিযুক্ত করতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি ওইরূপ নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করাতে পারবেন।’