ডেঙ্গুতে আরও ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার, (০৪ ডিসেম্বর ২০২৫) পর্যন্ত হাসপাতালে মোট ৯৬ হাজার ৬২৭ জন ভর্তি হয়েছে। তার মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তিকৃতদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৪৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০১ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৫৩ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৬৭ জন, খুলনা বিভাগে ৩৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৫৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৮ জন, রংপুর বিভাগে ৪ জন ও সিলেট বিভাগে ৫ জন। নিহত ৩ জনের মধ্যে ১ জন ঢাকা উত্তর সিটিতে ও ২ জন ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে মারা গেছেন।
হাসপাতালে ভর্তিকৃতদের মধ্যে ৫ বছর বয়সের ২৩ জন, ৬-১০ বছর বয়সের ২২ জন, ১১-১৫ বছর বয়সের ৩৬ জন, ১৬-২০ বছর বয়সের ৬৮ জন, ২১-২৫ বছরের ৭৫ জন, ২৬-৩০ বছর বয়সের ৮৬ জন, ৩১-৩৫ বছর বয়সের ৬২ জন, ৩৬-৪০ বছর বয়সের ৬৫ জন, ৪১-৪৫ বছর বয়সের ৩৫ জন, ৭৬-৮০ বছর বয়সের ১ জন, ৭১-৭৫ বছর বয়সের ৬ জন। সারাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এখনও ১,৮৩৫ জন ভর্তি আছে।
কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভেক্টরবাহিত রোগ ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাসের বিস্তার ঘটছে। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত ও আদ্রতার পরিবর্তন এ রোগগুলোর সংক্রমণ পরিধি ও মৌসুমী ধরন আমূল বদলে দিচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে সতর্ক করেছে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকার শহরাঞ্চলগুলোতে এডিস ইজিপ্টি ও এডিস অ্যালবোপিকটাস মশার প্রজনন ও টিকে থাকার হার দ্রুত বাড়ছে।
এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ এখন একটি আদর্শ কেস স্টাডি। এক সময় জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকা ডেঙ্গু সংক্রমণ এখন জানুয়ারি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর বা নারায়ণগঞ্জের মতো ঘনবসতিপূর্ণ নগর এলাকায় অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ন, নির্মাণ বর্জ্য এবং সঠিকভাবে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাব জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে আরও তীব্র করছে।
ফলে বাংলাদেশে ডেঙ্গু এখন আর বর্ষাকালের রোগ নয়, এটি রূপ নিয়েছে বছরব্যাপী জনস্বাস্থ্য দুযোর্গে। যেখানে প্রতিটি মৌসুমই নতুন সংক্রমণের ঝুঁকি বহন করছে।
ডেঙ্গুর বিস্তার জলবায়ু উপাদানের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের আবহাওয়ার ধরন বদলে গেছে। বর্ষাকাল দীর্ঘায়িত হয়েছে। এতে এডিস মশা বৃষ্টিপাতের সুবিধা নিয়ে প্রজননচক্র চালিয়ে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে শতকরা ৭০-৮০ ভাগ প্রজনন স্থানই আবাসিক ভবনের ভেতরে বা চারপাশে। কিন্তু নাগরিকদের অনেকেই এখনও মনে করে মশা নিয়ন্ত্রণ সরকারের দায়িত্ব।
অথচ প্রতিটি পরিবারের উচিত সপ্তাহে অন্তত একদিন জমে থাকা পানি পরিষ্কার করা। কারণ এডিস মশার জীবনচক্র মাত্র ৫-৭দিন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে একক কোনো ব্যবস্থা কার্যকর নয়, বরং দরকার সমন্বিত ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট।
এটি একটি বহুমাত্রিক কৌশল। যেখানে বিজ্ঞান, প্রশাসন, পরিবেশ এবং সমাজ একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
ডেঙ্গুতে আরও ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার, (০৪ ডিসেম্বর ২০২৫) পর্যন্ত হাসপাতালে মোট ৯৬ হাজার ৬২৭ জন ভর্তি হয়েছে। তার মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তিকৃতদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৪৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০১ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৫৩ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৬৭ জন, খুলনা বিভাগে ৩৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৫৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৮ জন, রংপুর বিভাগে ৪ জন ও সিলেট বিভাগে ৫ জন। নিহত ৩ জনের মধ্যে ১ জন ঢাকা উত্তর সিটিতে ও ২ জন ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে মারা গেছেন।
হাসপাতালে ভর্তিকৃতদের মধ্যে ৫ বছর বয়সের ২৩ জন, ৬-১০ বছর বয়সের ২২ জন, ১১-১৫ বছর বয়সের ৩৬ জন, ১৬-২০ বছর বয়সের ৬৮ জন, ২১-২৫ বছরের ৭৫ জন, ২৬-৩০ বছর বয়সের ৮৬ জন, ৩১-৩৫ বছর বয়সের ৬২ জন, ৩৬-৪০ বছর বয়সের ৬৫ জন, ৪১-৪৫ বছর বয়সের ৩৫ জন, ৭৬-৮০ বছর বয়সের ১ জন, ৭১-৭৫ বছর বয়সের ৬ জন। সারাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এখনও ১,৮৩৫ জন ভর্তি আছে।
কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভেক্টরবাহিত রোগ ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাসের বিস্তার ঘটছে। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত ও আদ্রতার পরিবর্তন এ রোগগুলোর সংক্রমণ পরিধি ও মৌসুমী ধরন আমূল বদলে দিচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে সতর্ক করেছে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকার শহরাঞ্চলগুলোতে এডিস ইজিপ্টি ও এডিস অ্যালবোপিকটাস মশার প্রজনন ও টিকে থাকার হার দ্রুত বাড়ছে।
এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ এখন একটি আদর্শ কেস স্টাডি। এক সময় জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকা ডেঙ্গু সংক্রমণ এখন জানুয়ারি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর বা নারায়ণগঞ্জের মতো ঘনবসতিপূর্ণ নগর এলাকায় অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ন, নির্মাণ বর্জ্য এবং সঠিকভাবে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাব জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে আরও তীব্র করছে।
ফলে বাংলাদেশে ডেঙ্গু এখন আর বর্ষাকালের রোগ নয়, এটি রূপ নিয়েছে বছরব্যাপী জনস্বাস্থ্য দুযোর্গে। যেখানে প্রতিটি মৌসুমই নতুন সংক্রমণের ঝুঁকি বহন করছে।
ডেঙ্গুর বিস্তার জলবায়ু উপাদানের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের আবহাওয়ার ধরন বদলে গেছে। বর্ষাকাল দীর্ঘায়িত হয়েছে। এতে এডিস মশা বৃষ্টিপাতের সুবিধা নিয়ে প্রজননচক্র চালিয়ে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে শতকরা ৭০-৮০ ভাগ প্রজনন স্থানই আবাসিক ভবনের ভেতরে বা চারপাশে। কিন্তু নাগরিকদের অনেকেই এখনও মনে করে মশা নিয়ন্ত্রণ সরকারের দায়িত্ব।
অথচ প্রতিটি পরিবারের উচিত সপ্তাহে অন্তত একদিন জমে থাকা পানি পরিষ্কার করা। কারণ এডিস মশার জীবনচক্র মাত্র ৫-৭দিন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে একক কোনো ব্যবস্থা কার্যকর নয়, বরং দরকার সমন্বিত ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট।
এটি একটি বহুমাত্রিক কৌশল। যেখানে বিজ্ঞান, প্রশাসন, পরিবেশ এবং সমাজ একসঙ্গে কাজ করতে হবে।