কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না পৌঁছানোয় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি পিছিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শুক্রবার আসছে না। সব ঠিক থাকলে সেটা শনিবার পৌঁছাতে পারে।
মির্জা ফখরুল বলেন, “ম্যাডামের শরীর যদি যাত্রার উপযুক্ত থাকে এবং মেডিকেল বোর্ড যদি সিদ্ধান্ত দেয়, তাহলে ইনশাল্লাহ ৭ তারিখ (রোববার) ফ্লাই করবেন।“
খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যেতে ঢাকায় এসেছেন তার পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান। শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তিনি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
জুবাইদা বিমানবন্দর থেকে সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
গত ২৩ নভেম্বর থেকে ঢাকার বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। সরকার তাকে রাষ্ট্রের ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করায় পুরো এভারকেয়ার হাসপাতালজুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয় এসএসএফ ও পিজিআর।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় এভারকেয়ার হাসপাতালে বৈঠকে বসে খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ড। যুক্তরাজ্য ও চীন থেকে আসা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠক শেষে বেলা ২টা ৪০ মিনিটে এভারকেয়ারের সামনে সংবাদ সম্মেলনে খালেদার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন জানান, তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা অনেক দোয়া করেছেন, সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। আপনাদের এই দোয়া ইনশাআল্লাহ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সুস্থ করে তুলবে।”
একজন সাংবাদিক এসময় জানতে চান, খালেদা জিয়ার পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে কি না।
জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ বলেন, “পরিস্থিতি আগের থেকে উন্নতি হয়েছে। আমরা আপনাদেরকে আগেও বলেছি, মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শের বাইরে কোনো অবস্থাতেই উনার পরিবার অথবা আমরা দল কোনো অবস্থাতেই কোনো চিন্তা করছি না।
“আমরা এখনো আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অশেষ মেহেরবানিতে অনেক অনেক আশাবাদী। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, উনার নামের আগে আমরা সবাই আপসহীন বলি। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে উনি অনেক প্রতিকূলতার মাঝেও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। এবারও ইনশাআল্লাহ উনি আমাদের মাঝে ফেরত আসবেন, এ আশাবাদ ব্যক্ত করছি।”
তিন বাহিনীর প্রধান মঙ্গলবার রাতে এভারকেয়ারে গিয়ে খালেদা জিয়াকে দেখে আসেন। এরপর বুধবার রাতে সেখানে যান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘ দিন থেকে আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার, ফুসফুস, হৃদযন্ত্র, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। ২০২০ সালে কারাগার থেকে মুক্তির পর দলের কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তিনি সরাসরি অংশ নেননি।
এর মধ্যে গত ২৩ নভেম্বর রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তাকে ভর্তি করে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে নেওয়া হয় ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে।
চলতি বছরের শুরুতে লন্ডনে চিকিৎসা নিয়ে মে মাসে দেশে ফেরেন খালেদা জিয়া। আগামী ফেব্রুয়ারির ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে তাকে তিনটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি।
অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে এভারকেয়ার হাসপাতালের ১২ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসার তদারক করছিলেন। চীন ও যুক্তরাজ্য থেকেও কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গত কয়েক দিনে দেশে আসেন চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার জন্য।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না পৌঁছানোয় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি পিছিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শুক্রবার আসছে না। সব ঠিক থাকলে সেটা শনিবার পৌঁছাতে পারে।
মির্জা ফখরুল বলেন, “ম্যাডামের শরীর যদি যাত্রার উপযুক্ত থাকে এবং মেডিকেল বোর্ড যদি সিদ্ধান্ত দেয়, তাহলে ইনশাল্লাহ ৭ তারিখ (রোববার) ফ্লাই করবেন।“
খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যেতে ঢাকায় এসেছেন তার পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান। শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তিনি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
জুবাইদা বিমানবন্দর থেকে সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
গত ২৩ নভেম্বর থেকে ঢাকার বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। সরকার তাকে রাষ্ট্রের ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করায় পুরো এভারকেয়ার হাসপাতালজুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয় এসএসএফ ও পিজিআর।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় এভারকেয়ার হাসপাতালে বৈঠকে বসে খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ড। যুক্তরাজ্য ও চীন থেকে আসা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠক শেষে বেলা ২টা ৪০ মিনিটে এভারকেয়ারের সামনে সংবাদ সম্মেলনে খালেদার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন জানান, তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা অনেক দোয়া করেছেন, সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। আপনাদের এই দোয়া ইনশাআল্লাহ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সুস্থ করে তুলবে।”
একজন সাংবাদিক এসময় জানতে চান, খালেদা জিয়ার পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে কি না।
জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ বলেন, “পরিস্থিতি আগের থেকে উন্নতি হয়েছে। আমরা আপনাদেরকে আগেও বলেছি, মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শের বাইরে কোনো অবস্থাতেই উনার পরিবার অথবা আমরা দল কোনো অবস্থাতেই কোনো চিন্তা করছি না।
“আমরা এখনো আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অশেষ মেহেরবানিতে অনেক অনেক আশাবাদী। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, উনার নামের আগে আমরা সবাই আপসহীন বলি। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে উনি অনেক প্রতিকূলতার মাঝেও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। এবারও ইনশাআল্লাহ উনি আমাদের মাঝে ফেরত আসবেন, এ আশাবাদ ব্যক্ত করছি।”
তিন বাহিনীর প্রধান মঙ্গলবার রাতে এভারকেয়ারে গিয়ে খালেদা জিয়াকে দেখে আসেন। এরপর বুধবার রাতে সেখানে যান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘ দিন থেকে আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার, ফুসফুস, হৃদযন্ত্র, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। ২০২০ সালে কারাগার থেকে মুক্তির পর দলের কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তিনি সরাসরি অংশ নেননি।
এর মধ্যে গত ২৩ নভেম্বর রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তাকে ভর্তি করে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে নেওয়া হয় ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে।
চলতি বছরের শুরুতে লন্ডনে চিকিৎসা নিয়ে মে মাসে দেশে ফেরেন খালেদা জিয়া। আগামী ফেব্রুয়ারির ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে তাকে তিনটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি।
অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে এভারকেয়ার হাসপাতালের ১২ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসার তদারক করছিলেন। চীন ও যুক্তরাজ্য থেকেও কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গত কয়েক দিনে দেশে আসেন চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার জন্য।