অভ্যুত্থান দমানোর চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামিদের ফাঁসাতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ‘প্ররোচিত’ করা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইনজীবী আমির হোসেন।
জেরায় এই আইনজীবীর এমন দাবির জবাবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীর তা অস্বীকার করেছেন।
সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জেরা করেন। জেরা শেষ না হওয়ায় মঙ্গলবারও তা অব্যাহত থাকবে।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এর অপর দুই বিচারক হলেন মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
দিনের প্রথমার্ধে বেঞ্চের তিন সদস্যই উপস্থিত ছিলেন। তবে বিকালে শুধু বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ট্রাইব্যুনাল পরিচালনা করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা আলমগীর এ মামলার ৫৪তম এবং সর্বশেষ সাক্ষী।
এ মামলার তিন আসামির মধ্যে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।
আমির হোসেন সাক্ষীকে বলেন, “আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে চেয়েছেন বলে আপনি জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন–এটা সত্য নয়। আসামিদের ফাঁসানোর জন্য তাকে স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে তদন্ত সংস্থার অন্য কর্মকর্তারা প্ররোচিত করেছেন।”
এর জবাবে আলমগীর বলেন, এটা সত্য নয়; তিনি নিজের ‘ইচ্ছায়’ জবানবন্দি দিয়েছেন।
আমার দেশ পত্রিকায় ‘শত্রুতাবশত’ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অসত্য প্রতিবেদন ছাপানো হয়েছে বলেও আমির হোসেন জেরায় দাবি করেছেন, যা সাক্ষী অস্বীকার করেছেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবীর জিজ্ঞাসায় তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৬ অগাস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন পত্রিকার যেসমস্ত প্রতিবেদন তিনি (তদন্ত কর্মকর্তা) সংগ্রহ করেছেন সেগুলোর বিষয়ে পত্রিকার কোনো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনি কথা বলেননি।
আমার দেশ পত্রিকার প্রতিবেদন বিষয়ে আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত ৫৪টি প্রতিবেদনের তথ্য ‘অসত্য’ ছিল। শেখ হাসিনা সরকারের সময় এ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বিভিন্ন মামলায় কারাভোগ করেছেন বিধায় ‘শত্রুতাবশত’ তার পত্রিকায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘অসত্য’ প্রতিবেদন ছাপিয়েছেন।
আইনজীবীর এ বক্তব্যও অস্বীকার করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা আলমগীর।
শেখ হাসিনার আইনজীবীর আরেক প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে ১৫০০ জনের মতো নিহত এবং ২৫ হাজারের মতো ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন। তাদের সব পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি তিনি। তবে অনেকের সঙ্গে কথা বলেছেন। এর মধ্যে শহীদ পরিবারের ১০ জন এবং আহত পরিবারের ২২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।
প্রসিকিউশনের পক্ষে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এম এইচ তামিম, বি এম সুলতান মাহমুদ, তানভীর হাসান জোহা, ফারুক আহাম্মদ ও আবদুস সাত্তার পালোয়ান।
জেরার সময় আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
গত ১০ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে আন্দোলন দমনে ১৪০০ জনকে হত্যার উসকানি, প্ররোচনা ও নির্দেশ দান, ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’ এবং ‘জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজের’ মোট পাঁচ অভিযোগে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
গেল ৩ অগাস্ট বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
এর মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রথম মামলার বিচার শুরু হয়। আর তা শুরু হয় সেই আদালতে, যে আদালত তার সরকার গঠন করেছিল একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য।
সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫
অভ্যুত্থান দমানোর চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামিদের ফাঁসাতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ‘প্ররোচিত’ করা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইনজীবী আমির হোসেন।
জেরায় এই আইনজীবীর এমন দাবির জবাবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীর তা অস্বীকার করেছেন।
সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জেরা করেন। জেরা শেষ না হওয়ায় মঙ্গলবারও তা অব্যাহত থাকবে।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এর অপর দুই বিচারক হলেন মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
দিনের প্রথমার্ধে বেঞ্চের তিন সদস্যই উপস্থিত ছিলেন। তবে বিকালে শুধু বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ট্রাইব্যুনাল পরিচালনা করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা আলমগীর এ মামলার ৫৪তম এবং সর্বশেষ সাক্ষী।
এ মামলার তিন আসামির মধ্যে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।
আমির হোসেন সাক্ষীকে বলেন, “আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে চেয়েছেন বলে আপনি জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন–এটা সত্য নয়। আসামিদের ফাঁসানোর জন্য তাকে স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে তদন্ত সংস্থার অন্য কর্মকর্তারা প্ররোচিত করেছেন।”
এর জবাবে আলমগীর বলেন, এটা সত্য নয়; তিনি নিজের ‘ইচ্ছায়’ জবানবন্দি দিয়েছেন।
আমার দেশ পত্রিকায় ‘শত্রুতাবশত’ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অসত্য প্রতিবেদন ছাপানো হয়েছে বলেও আমির হোসেন জেরায় দাবি করেছেন, যা সাক্ষী অস্বীকার করেছেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবীর জিজ্ঞাসায় তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৬ অগাস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন পত্রিকার যেসমস্ত প্রতিবেদন তিনি (তদন্ত কর্মকর্তা) সংগ্রহ করেছেন সেগুলোর বিষয়ে পত্রিকার কোনো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনি কথা বলেননি।
আমার দেশ পত্রিকার প্রতিবেদন বিষয়ে আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত ৫৪টি প্রতিবেদনের তথ্য ‘অসত্য’ ছিল। শেখ হাসিনা সরকারের সময় এ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বিভিন্ন মামলায় কারাভোগ করেছেন বিধায় ‘শত্রুতাবশত’ তার পত্রিকায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘অসত্য’ প্রতিবেদন ছাপিয়েছেন।
আইনজীবীর এ বক্তব্যও অস্বীকার করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা আলমগীর।
শেখ হাসিনার আইনজীবীর আরেক প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে ১৫০০ জনের মতো নিহত এবং ২৫ হাজারের মতো ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন। তাদের সব পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি তিনি। তবে অনেকের সঙ্গে কথা বলেছেন। এর মধ্যে শহীদ পরিবারের ১০ জন এবং আহত পরিবারের ২২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।
প্রসিকিউশনের পক্ষে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এম এইচ তামিম, বি এম সুলতান মাহমুদ, তানভীর হাসান জোহা, ফারুক আহাম্মদ ও আবদুস সাত্তার পালোয়ান।
জেরার সময় আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
গত ১০ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে আন্দোলন দমনে ১৪০০ জনকে হত্যার উসকানি, প্ররোচনা ও নির্দেশ দান, ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’ এবং ‘জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজের’ মোট পাঁচ অভিযোগে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
গেল ৩ অগাস্ট বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
এর মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রথম মামলার বিচার শুরু হয়। আর তা শুরু হয় সেই আদালতে, যে আদালত তার সরকার গঠন করেছিল একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য।