alt

স্বাধীনতা যুদ্ধ ভুলিয়ে দিতে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে বড় করে দেখানো হচ্ছে’: ফখরুল

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫

স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসকে আড়াল করতে পরিকল্পিতভাবে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’কে বড় করে দেখানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ‘মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে’ তিনি বলেন, “একটি শক্তি চেষ্টা করছে—যারা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, তারা এখন সেই ইতিহাসকে নিচে নামিয়ে দিতে চায়। তারা ২০২৪ সালের জুলাইয়ের আন্দোলনকে বড় করে তুলে ধরছে।”

ফখরুলের দাবি, বিএনপির গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন চলমান রয়েছে টানা ১৫ বছর ধরে। “আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের জন্য লড়ছি। কিন্তু কিছু মহল বিভক্তি সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে,” বলেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “১৯৭১ সাল আমাদের অস্তিত্বের প্রতীক। এটা আমাদের জন্মের ঠিকানা, স্বাতন্ত্র্যের প্রতিচ্ছবি। যেদিন স্বাধীনতার ঘোষণা হয়েছিল, সেটি ছিল নতুন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের মুহূর্ত।”

তিনি আরও বলেন, “যারা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকে ‘গোলমাল’ বলেছিল, তারা আজও সেই মানসিকতা বহন করছে। সেদিন যারা আমাদের হত্যা করেছিল, বুদ্ধিজীবীদের বধ্যভূমিতে ফেলে দিয়েছিল, তাদের আমরা ভুলিনি।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রে গণতান্ত্রিক সংস্কার আনেন। তিনি একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় ব্যবস্থায় ফিরিয়ে আনেন এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।”

তার ভাষায়, “শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে সব পত্রিকা বন্ধ করে চারটি রাখেন, যেগুলো সরকারি নিয়ন্ত্রণে ছিল। জিয়াউর রহমান সেই পরিস্থিতি বদলে দেন। পরে বেগম খালেদা জিয়া সংসদীয় শাসনব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করেন।”

নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীকে আক্রমণ করে ফখরুল বলেন, “তারা মিথ্যা কথা বলে জনগণকে প্রতারণা করছে। বিএনপি নাকি নির্বাচন পেছাতে চায়—এমন অভিযোগ সত্য নয়। আমরা বরাবরই দ্রুত নির্বাচনের পক্ষে। নির্বাচন বিলম্বিত করার কথা আমরা কখনও বলিনি।”

তিনি জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহেরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “তাহের সাহেব আমাদের ওপর দোষ চাপিয়েছেন, কিন্তু বাস্তবে আপনারাই নির্বাচনের পথে বাধা তৈরি করেছেন। পিআর পদ্ধতির দাবি তুলে আন্দোলনে নেমেছেন, মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন।”

সরকারের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “তিনি বলেছেন, নির্বাচন বানচালে দেশি-বিদেশি শক্তি কাজ করবে। কিন্তু তিনি স্পষ্ট করে বলেননি, কারা হামলা চালাতে পারে।”

ফখরুল বলেন, “এই দেশের মানুষ ভয় পায় না। হামলা বা ভয় দেখিয়ে তাদের পরাজিত করা যায় না। জনগণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই চায়।”

জুলাই সনদ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, “সনদে আমরা যেসব বিষয়ে একমত হয়েছিলাম, সেখানে আমাদের ‘নোট অব ডিসেন্ট’ লিপিবদ্ধ করার কথা ছিল। কিন্তু নতুন প্রস্তাবে সেই অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে। এটা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা।”

তিনি বলেন, “আমরা দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিবাদ না করে প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছি। কিন্তু অন্যরা জোট বেঁধে রাস্তায় নেমেছে, সরকারকে চাপ দিচ্ছে। আমরা বলেছি, যেটায় সই করেছি তার দায় নেব, কিন্তু যেটায় সই করিনি, সেটা আমাদের নয়। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান দরকার।”

ফখরুল জানান, “প্রধান উপদেষ্টা যে প্রস্তাব দিয়েছেন—২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হতে হবে। পিআর থাকবে কি না, তা পরবর্তী সংসদ নির্ধারণ করবে।”

গণভোট প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, “আমরা গণভোটের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছি, যদিও প্রয়োজন ছিল না। তবে আমরা বলেছি, নির্বাচনের দিনই গণভোট করতে হবে। কারণ আলাদাভাবে করলে হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হবে। এখন তারা বলছেন, আগে গণভোট পরে নির্বাচন—এই কথা তারাই বলছেন, বিএনপি নয়।”

সভায় উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারাই স্বাধীনতার যোদ্ধা, এই দেশের ভিত্তি আপনাদের লড়াই। এখনো দেশের শত্রুরা চক্রান্ত করছে—আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করব, ইনশাআল্লাহ।”

ফখরুল বলেন, “শেখ হাসিনা ভারতে বসে মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন, অথচ একবারও অনুশোচনা প্রকাশ করেননি। সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করেছিল—তিনি কি ক্ষমা চাইবেন? তিনি বলেছেন ‘না’। সেই ব্যক্তি আজও অপপ্রচার চালাচ্ছেন।”

তিনি বলেন, “ভারত সরকারকে আমরা বলতে চাই—হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত দিন। তাকে আইনের মুখোমুখি করুন। বাংলাদেশের জনগণের বিরোধিতা করবেন না; মানুষ তা মেনে নেবে না।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নজমুল হক নান্নু, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন ও নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান।

ছবি

গণভোটের আদেশ দিতে হবে মুহাম্মদ ইউনূসকে, অধ্যাদেশ নয়–হাসনাত আব্দুল্লাহ

ছবি

ঐকমত্য কমিশনসহ কয়েকটি দল বিএনপির ওপর মত চাপিয়ে দিতে চায়: আমীর খসরু

ছবি

বিএনপি অন্যায়ভাবে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে: জামায়াত নেতা তাহের

ছবি

বিদেশে যেতে দেয়া হলো না কেন, সরকারের ব্যাখ্যা চান মিলন

ছবি

ঝটিকা মিছিল থেকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ৪৬ জন গ্রেপ্তার: ডিএমপি

ছবি

সরকারে তিন দলের প্রভাব, জামায়াতের কর্তৃত্ব সবচেয়ে বেশি: আনু মুহাম্মদ

ছবি

অন্তর্বর্তী সরকার ও ঐক্যমত্য কমিশন ‘সংকট সৃষ্টি’ করেছে: মির্জা ফখরুল

ছবি

বিএনপি সরকারের ওপর ‘অন্যায়ভাবে চাপ সৃষ্টি’ করছে: জামায়াত নেতা তাহের

ঢাকায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলে পুলিশের অভিযান, আটক ৩০ নেতা-কর্মী

ছবি

বিদেশে যেতে না দেওয়ায় সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চাইলেন বিএনপি নেতা মিলন

ছবি

অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে: মির্জা ফখরুল

ছবি

সনদ বাস্তবায়নে প্রথম প্রস্তাবটি গ্রহণ করতে হবে: সরকারকে এনসিপি

ছবি

ক্ষমা চাইতে নারাজ, সমর্থকদের ভোট বর্জনের হুঁশিয়ারি হাসিনার

ছবি

ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ: হতাশ বিএনপি, বললো ‘প্রতারণা’

ছবি

উখিয়া-টেকনাফে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধ হোন

ছবি

জুলাই সনদে সইয়ে যেসব শর্ত দিলো এনসিপি

ছবি

গণভোট আয়োজনের প্রস্তাবসহ নির্বাচন কমিশনকে জামায়াতের ১৮ দফা সুপারিশ

ছবি

আইসিসিতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর ‘সহিংসতা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের’ অভিযোগ

ছবি

জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের সুযোগ নেই: আমীর খসরু

ছবি

ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে ‘বহির্ভূত বিষয়’ যুক্তের অভিযোগ বিএনপির সালাহউদ্দিনের

ছবি

বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট: নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে

ছবি

এনসিপির শর্তে জুলাই সনদে সইয়ের ঘোষণা

ছবি

গণভোটে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ, সাংবিধানিক আদেশ চায় ঐকমত্য কমিশন

ছবি

অস্ত্র মামলায় যুবলীগের সাবেক নেতা সম্রাটের যাবজ্জীবন

ছবি

নির্বাচন: ভোটকেন্দ্রে থাকবে ১৩ জন আনসার, প্রিজাইডিং কর্মকর্তার নিরাপত্তায় থাক‌বে একজন সশস্ত্র আনসার

ছবি

ইসলামী ব্যাংক কর্মীদের নির্বাচনী দায়িত্ব না দিতে ‘বিএনপির আহ্বানে’ জামায়াতের উদ্বেগ

ছবি

সমাবেশে বক্তাদের হুঁশিয়ারি, বিদেশিদের বন্দর দেয়ার সিদ্ধান্ত না পাল্টালে তীব্র আন্দোলন

ছবি

রংপুর বিভাগের ৩৩ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে তারেকের রুদ্ধদ্বার বৈঠক

ছবি

রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির শতাধিক নেতা কর্মীর বিএনপিতে যোগদান

ছবি

নির্বাচনী জোট নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি এনসিপি: সারজিস

ছবি

বিএনপি যুবকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সুযোগ্য করে গড়ে তুলতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ : ডঃ মঈন খান

ছবি

বিএনপি ক্ষমতায় এলে বিলুপ্ত হবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ: আমীর খসরু

ছবি

ঘিওরে বিএনপির ৩১ দফা প্রচারে পথসভা

ছবি

বিএনপির লক্ষ্য ‘বৃহৎ জোট গঠন’, বললেন সালাহউদ্দিন আহমদ

ছবি

মাহফুজ আলমের বক্তব্যে বিভ্রান্তি এড়াতে অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি

ছবি

ভবিষ্যতে প্রশ্ন উঠতে পারে, এমন কিছুতে যাওয়া ঠিক হবে না: সালাহউদ্দিন আহমদ

tab

স্বাধীনতা যুদ্ধ ভুলিয়ে দিতে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে বড় করে দেখানো হচ্ছে’: ফখরুল

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫

স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসকে আড়াল করতে পরিকল্পিতভাবে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’কে বড় করে দেখানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ‘মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে’ তিনি বলেন, “একটি শক্তি চেষ্টা করছে—যারা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, তারা এখন সেই ইতিহাসকে নিচে নামিয়ে দিতে চায়। তারা ২০২৪ সালের জুলাইয়ের আন্দোলনকে বড় করে তুলে ধরছে।”

ফখরুলের দাবি, বিএনপির গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন চলমান রয়েছে টানা ১৫ বছর ধরে। “আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের জন্য লড়ছি। কিন্তু কিছু মহল বিভক্তি সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে,” বলেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “১৯৭১ সাল আমাদের অস্তিত্বের প্রতীক। এটা আমাদের জন্মের ঠিকানা, স্বাতন্ত্র্যের প্রতিচ্ছবি। যেদিন স্বাধীনতার ঘোষণা হয়েছিল, সেটি ছিল নতুন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের মুহূর্ত।”

তিনি আরও বলেন, “যারা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকে ‘গোলমাল’ বলেছিল, তারা আজও সেই মানসিকতা বহন করছে। সেদিন যারা আমাদের হত্যা করেছিল, বুদ্ধিজীবীদের বধ্যভূমিতে ফেলে দিয়েছিল, তাদের আমরা ভুলিনি।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রে গণতান্ত্রিক সংস্কার আনেন। তিনি একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় ব্যবস্থায় ফিরিয়ে আনেন এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।”

তার ভাষায়, “শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে সব পত্রিকা বন্ধ করে চারটি রাখেন, যেগুলো সরকারি নিয়ন্ত্রণে ছিল। জিয়াউর রহমান সেই পরিস্থিতি বদলে দেন। পরে বেগম খালেদা জিয়া সংসদীয় শাসনব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করেন।”

নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীকে আক্রমণ করে ফখরুল বলেন, “তারা মিথ্যা কথা বলে জনগণকে প্রতারণা করছে। বিএনপি নাকি নির্বাচন পেছাতে চায়—এমন অভিযোগ সত্য নয়। আমরা বরাবরই দ্রুত নির্বাচনের পক্ষে। নির্বাচন বিলম্বিত করার কথা আমরা কখনও বলিনি।”

তিনি জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহেরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “তাহের সাহেব আমাদের ওপর দোষ চাপিয়েছেন, কিন্তু বাস্তবে আপনারাই নির্বাচনের পথে বাধা তৈরি করেছেন। পিআর পদ্ধতির দাবি তুলে আন্দোলনে নেমেছেন, মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন।”

সরকারের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “তিনি বলেছেন, নির্বাচন বানচালে দেশি-বিদেশি শক্তি কাজ করবে। কিন্তু তিনি স্পষ্ট করে বলেননি, কারা হামলা চালাতে পারে।”

ফখরুল বলেন, “এই দেশের মানুষ ভয় পায় না। হামলা বা ভয় দেখিয়ে তাদের পরাজিত করা যায় না। জনগণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই চায়।”

জুলাই সনদ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, “সনদে আমরা যেসব বিষয়ে একমত হয়েছিলাম, সেখানে আমাদের ‘নোট অব ডিসেন্ট’ লিপিবদ্ধ করার কথা ছিল। কিন্তু নতুন প্রস্তাবে সেই অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে। এটা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা।”

তিনি বলেন, “আমরা দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিবাদ না করে প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছি। কিন্তু অন্যরা জোট বেঁধে রাস্তায় নেমেছে, সরকারকে চাপ দিচ্ছে। আমরা বলেছি, যেটায় সই করেছি তার দায় নেব, কিন্তু যেটায় সই করিনি, সেটা আমাদের নয়। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান দরকার।”

ফখরুল জানান, “প্রধান উপদেষ্টা যে প্রস্তাব দিয়েছেন—২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হতে হবে। পিআর থাকবে কি না, তা পরবর্তী সংসদ নির্ধারণ করবে।”

গণভোট প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, “আমরা গণভোটের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছি, যদিও প্রয়োজন ছিল না। তবে আমরা বলেছি, নির্বাচনের দিনই গণভোট করতে হবে। কারণ আলাদাভাবে করলে হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হবে। এখন তারা বলছেন, আগে গণভোট পরে নির্বাচন—এই কথা তারাই বলছেন, বিএনপি নয়।”

সভায় উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারাই স্বাধীনতার যোদ্ধা, এই দেশের ভিত্তি আপনাদের লড়াই। এখনো দেশের শত্রুরা চক্রান্ত করছে—আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করব, ইনশাআল্লাহ।”

ফখরুল বলেন, “শেখ হাসিনা ভারতে বসে মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন, অথচ একবারও অনুশোচনা প্রকাশ করেননি। সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করেছিল—তিনি কি ক্ষমা চাইবেন? তিনি বলেছেন ‘না’। সেই ব্যক্তি আজও অপপ্রচার চালাচ্ছেন।”

তিনি বলেন, “ভারত সরকারকে আমরা বলতে চাই—হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত দিন। তাকে আইনের মুখোমুখি করুন। বাংলাদেশের জনগণের বিরোধিতা করবেন না; মানুষ তা মেনে নেবে না।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নজমুল হক নান্নু, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন ও নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান।

back to top