আঠারো বছরের অপেক্ষা! একে একে পেরিয়ে গেছে এক যুগেরও বেশি সময়, কিন্তু শিরোপা অধরাই ছিল। সেই অপেক্ষার প্রহর এবার গুণতেই হলো না আর। আইপিএলের ইতিহাসে প্রথমবার চ্যাম্পিয়নের স্বাদ পেল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। ভিরাট কোহলি—যিনি শুরু থেকে আছেন দলটির সঙ্গে, অবশেষে গাঁথলেন ট্রফির মালা। আর শ্রেয়াস আইয়ারের নেতৃত্বাধীন পাঞ্জাব কিংসের ভাগ্যে জুটল কেবল হতাশা আর আফসোস।
মঙ্গলবার রাতে আহমেদাবাদে অনুষ্ঠিত আইপিএলের অষ্টাদশ আসরের ফাইনালে ৬ রানে জয় পায় বেঙ্গালুরু। ১৯০ রানের লক্ষ্য রক্ষা করতে গিয়ে তারা দেখিয়ে দেয় দারুণ বোলিংয়ের মুন্সিয়ানা। পাঞ্জাব কিংস শেষ পর্যন্ত থেমে যায় ১৮৪ রানে।
ম্যাচ শেষে ভিরাট কোহলি হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন মাটিতে, আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। দলীয় সতীর্থদের আনন্দমুখর চেহারা, মাঠে নেমে কোহলিকে জড়িয়ে ধরেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। দৃশ্যটা যেন ছিল ইতিহাসের সাক্ষী!
বেঙ্গালুরুর ইনিংসে কারও ফিফটি না থাকলেও ছোট ছোট অবদানে গড়ে ওঠে লড়াকু সংগ্রহ। কোহলি করেন ৩৫ বলে ৪৩, আগারওয়াল ২৪, পাতিদার ২৬ ও লিভিংস্টোন ২৫ রান করেন। শেষদিকে অবশ্য আর ঝড় তুলতে পারেননি কেউ। আর্শদিপের দুর্দান্ত শেষ ওভারে মাত্র ৩ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারায় বেঙ্গালুরু।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে পাঞ্জাব শুরুটা ভালোই করে। ইংলিস ঝড় তোলেন মাঝ পথে, আর শেষদিকে শাশাঙ্ক সিংয়ের ৩০ বলে ৬১ রানের ইনিংস পাঞ্জাবকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু চাপের মুখে নুয়ে পড়ে শ্রেয়াসদের দল। শেষ চার বলে শাশাঙ্ক মেরে ফেলেন তিন ছক্কা ও এক চার, কিন্তু তা যথেষ্ট হয়নি—দলের হার ঠেকানো গেল না।
বেঙ্গালুরুর হয়ে ম্যাচের সেরা পারফরমার ছিলেন ক্রুনাল পান্ডিয়া। ৪ ওভারে ১৭ রানে ২ উইকেট নিয়ে জেতেন ম্যাচ-সেরার পুরস্কার। আসরজুড়ে আলো ছড়ানো অস্ট্রেলিয়ান পেসার হেইজেলউড নেন আসরে দলের সর্বোচ্চ ২২ উইকেট।
শিরোপার পথে এত বছর ধরে রাহুল দ্রাবিড়, কুম্বলে, কোহলি, ফাফ ডু প্লেসির মতো তারকারা সফল না হলেও এবারের নেতৃত্বে ছিলেন তুলনামূলক অখ্যাত রাজাত পাতিদার। আর তিনিই এনে দিলেন দলের বহু প্রতীক্ষিত সাফল্য।
শ্রেয়াস আইয়ারের নেতৃত্বে দুর্দান্ত এক মৌসুম কাটালেও শেষ মুহূর্তে এসে থেমে গেল পাঞ্জাব কিংস। প্রথম কোয়ালিফায়ারে বড় ব্যবধানে হারের পর ফাইনালেও ব্যর্থতা তাদের ঘিরে রাখল।
আর বেঙ্গালুরুর ইতিহাসে লেখা হলো সোনার অধ্যায়—ভিরাট কোহলি ও তাঁর দল অবশেষে উঠলেন চূড়ায়, উড়ল রঙিন পতাকা আইপিএলের মঞ্চে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু: ২০ ওভারে ১৯০/৯ (সল্ট ১৬, কোহলি ৪৩, আগারওয়াল ২৪, পাতিদার ২৬, লিভিংস্টোন ২৫, জিতেশ ২৪, শেফার্ড ১৭, ক্রুনাল পান্ডিয়া ৪, ভুবনেশ্বর ১, দায়াল ১*; আর্শদিপ ৪-০-৪০-৩, জেমিসন ৪-০-৪৮-৩, ওমারজাই ৪-০-৩৫-১, ভিজায়কুমার ৪-০-৩০-১, চেহেল ৪-০-৩৭-১)
পাঞ্জাব কিংস: ২০ ওভারে ১৮৪/৭ (আরিয়া ২৪, প্রাভসিমরান ২৬, ইংলিস ৩৯, শ্রেয়াস ১, ওয়াধেরা ১৫, শাশাঙ্ক ৬১*, স্টয়নিস ৬, ওমারজাই ১, জেমিসন ০*; ভুবনেশ্বর ৪-০-৩৮-২, দায়াল ৩-০-১৮-১, হেইজেলউড ৪-০-৫৪-১, ক্রুনাল পান্ডিয়া ৪-০-১৭-২, সুয়াশ ২-০-১৯-০, শেফার্ড ৩-০-৩০-১)
ফল: বেঙ্গালুরু ৬ রানে জিতে চ্যাম্পিয়ন
ম্যান অব দা ম্যাচ: ক্রুনাল পান্ডিয়া
ম্যান অব দা টুর্নামেন্ট: সুরিয়াকুমার ইয়াদাভ
বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫
আঠারো বছরের অপেক্ষা! একে একে পেরিয়ে গেছে এক যুগেরও বেশি সময়, কিন্তু শিরোপা অধরাই ছিল। সেই অপেক্ষার প্রহর এবার গুণতেই হলো না আর। আইপিএলের ইতিহাসে প্রথমবার চ্যাম্পিয়নের স্বাদ পেল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। ভিরাট কোহলি—যিনি শুরু থেকে আছেন দলটির সঙ্গে, অবশেষে গাঁথলেন ট্রফির মালা। আর শ্রেয়াস আইয়ারের নেতৃত্বাধীন পাঞ্জাব কিংসের ভাগ্যে জুটল কেবল হতাশা আর আফসোস।
মঙ্গলবার রাতে আহমেদাবাদে অনুষ্ঠিত আইপিএলের অষ্টাদশ আসরের ফাইনালে ৬ রানে জয় পায় বেঙ্গালুরু। ১৯০ রানের লক্ষ্য রক্ষা করতে গিয়ে তারা দেখিয়ে দেয় দারুণ বোলিংয়ের মুন্সিয়ানা। পাঞ্জাব কিংস শেষ পর্যন্ত থেমে যায় ১৮৪ রানে।
ম্যাচ শেষে ভিরাট কোহলি হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন মাটিতে, আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। দলীয় সতীর্থদের আনন্দমুখর চেহারা, মাঠে নেমে কোহলিকে জড়িয়ে ধরেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। দৃশ্যটা যেন ছিল ইতিহাসের সাক্ষী!
বেঙ্গালুরুর ইনিংসে কারও ফিফটি না থাকলেও ছোট ছোট অবদানে গড়ে ওঠে লড়াকু সংগ্রহ। কোহলি করেন ৩৫ বলে ৪৩, আগারওয়াল ২৪, পাতিদার ২৬ ও লিভিংস্টোন ২৫ রান করেন। শেষদিকে অবশ্য আর ঝড় তুলতে পারেননি কেউ। আর্শদিপের দুর্দান্ত শেষ ওভারে মাত্র ৩ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারায় বেঙ্গালুরু।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে পাঞ্জাব শুরুটা ভালোই করে। ইংলিস ঝড় তোলেন মাঝ পথে, আর শেষদিকে শাশাঙ্ক সিংয়ের ৩০ বলে ৬১ রানের ইনিংস পাঞ্জাবকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু চাপের মুখে নুয়ে পড়ে শ্রেয়াসদের দল। শেষ চার বলে শাশাঙ্ক মেরে ফেলেন তিন ছক্কা ও এক চার, কিন্তু তা যথেষ্ট হয়নি—দলের হার ঠেকানো গেল না।
বেঙ্গালুরুর হয়ে ম্যাচের সেরা পারফরমার ছিলেন ক্রুনাল পান্ডিয়া। ৪ ওভারে ১৭ রানে ২ উইকেট নিয়ে জেতেন ম্যাচ-সেরার পুরস্কার। আসরজুড়ে আলো ছড়ানো অস্ট্রেলিয়ান পেসার হেইজেলউড নেন আসরে দলের সর্বোচ্চ ২২ উইকেট।
শিরোপার পথে এত বছর ধরে রাহুল দ্রাবিড়, কুম্বলে, কোহলি, ফাফ ডু প্লেসির মতো তারকারা সফল না হলেও এবারের নেতৃত্বে ছিলেন তুলনামূলক অখ্যাত রাজাত পাতিদার। আর তিনিই এনে দিলেন দলের বহু প্রতীক্ষিত সাফল্য।
শ্রেয়াস আইয়ারের নেতৃত্বে দুর্দান্ত এক মৌসুম কাটালেও শেষ মুহূর্তে এসে থেমে গেল পাঞ্জাব কিংস। প্রথম কোয়ালিফায়ারে বড় ব্যবধানে হারের পর ফাইনালেও ব্যর্থতা তাদের ঘিরে রাখল।
আর বেঙ্গালুরুর ইতিহাসে লেখা হলো সোনার অধ্যায়—ভিরাট কোহলি ও তাঁর দল অবশেষে উঠলেন চূড়ায়, উড়ল রঙিন পতাকা আইপিএলের মঞ্চে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু: ২০ ওভারে ১৯০/৯ (সল্ট ১৬, কোহলি ৪৩, আগারওয়াল ২৪, পাতিদার ২৬, লিভিংস্টোন ২৫, জিতেশ ২৪, শেফার্ড ১৭, ক্রুনাল পান্ডিয়া ৪, ভুবনেশ্বর ১, দায়াল ১*; আর্শদিপ ৪-০-৪০-৩, জেমিসন ৪-০-৪৮-৩, ওমারজাই ৪-০-৩৫-১, ভিজায়কুমার ৪-০-৩০-১, চেহেল ৪-০-৩৭-১)
পাঞ্জাব কিংস: ২০ ওভারে ১৮৪/৭ (আরিয়া ২৪, প্রাভসিমরান ২৬, ইংলিস ৩৯, শ্রেয়াস ১, ওয়াধেরা ১৫, শাশাঙ্ক ৬১*, স্টয়নিস ৬, ওমারজাই ১, জেমিসন ০*; ভুবনেশ্বর ৪-০-৩৮-২, দায়াল ৩-০-১৮-১, হেইজেলউড ৪-০-৫৪-১, ক্রুনাল পান্ডিয়া ৪-০-১৭-২, সুয়াশ ২-০-১৯-০, শেফার্ড ৩-০-৩০-১)
ফল: বেঙ্গালুরু ৬ রানে জিতে চ্যাম্পিয়ন
ম্যান অব দা ম্যাচ: ক্রুনাল পান্ডিয়া
ম্যান অব দা টুর্নামেন্ট: সুরিয়াকুমার ইয়াদাভ