অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষকে নানা দাবিতে পথে নামতে দেখা গেছে। দাবি-দাওয়া নিয়ে পথে নামা অনেককে বিক্ষুব্ধ হতে দেখা গেছে। কোনো কোনো বিক্ষোভ-আন্দোলন থেকে হামলা, সংঘাত-সংঘর্ষ হচ্ছে।
সাভার-আশুলিয়া ও গাজীপুর শিল্পাঞ্চলে গত কয়েকদিন ধরে শ্রমিক বিক্ষোভ হচ্ছে। শ্রমিক বিক্ষোভ থেকে কোনো কোনো কারখানায় হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনেক পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। ওষুধ কারখানায়ও অস্থিরতা চলছে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে ব্যবসায়ী নেতারা শিল্পকারখানায় নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।
কোথাও কোথাও চাকরি স্থায়ীকরণ, ছাঁটাই বন্ধ, নির্দিষ্ট সময়ে বেতন প্রদান, হাজিরা বোনাস, নারী শ্রমিকদের নৈশকালীন ডিউটি বাতিল ও নতুন শ্রমিক নিয়োগের দাবি জানানো হয়েছে। কোনো কোনো কারখানার শ্রমিকরা ভারতীয় কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবি তুলেছেন। আবার অনেকে শ্রমিক নিয়োগে নারী-পুরষ বৈষম্যের অবসান চেয়েছেন। তাদের অভিযোগ, কারখানাগুলোতে নারী শ্রমিকের তুলনায় কমসংখ্যক পুরুষ শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয়।
প্রশ্ন হচ্ছে শ্রমিক বিক্ষোভকে অন্তর্বর্তী সরকার কোন চোখে দেখছে, এই বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে কী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে গত বুধবার সচিবালয়ে বৈঠক করেছেন পাঁচ উপদেষ্টা। দায়িত্বশীলদের কেউ কেউ বলছেন, কারখানা ভাঙচুরের পেছনে ‘ভাড়াটে’ ও ‘টোকাইরা’ রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ‘বলপ্রয়োগের বার্তাও’ দেয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা বলেছেন, ‘কারখানা, শ্রমিক ও দেশের অর্থনীতি বাঁচাতে গেলে কিছুসংখ্যকের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।’
অতীতেও দেশে শ্রমিকদের মধ্যে অনেক অসন্তোষ দেখা গেছে। তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে পথে নেমেছে, অনেক সময় কারখানায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। সে সময় ক্ষমতাসীন সরকারগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শ্রমিক বিক্ষোভের পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে। তবে ষড়যন্ত্রটা কী বা কারা এর পেছনে রয়েছে সেটা কখনোই স্পষ্ট করা হয়নি। কথিত সেই ষড়যন্ত্র দমনে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। পদক্ষেপ বলতে শ্রমিকদের ওপর বলপ্রয়োগই করতে দেখা গেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দেশে সংস্কার আনার কথা বলছে, নতুন বাংলাদেশ গড়ার কথা বলছে। তবে চলমান শ্রমিক আন্দোলন নিয়ে তারা যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে অতীত সরকারগুলোর কথারই প্রতিধ্বনি ফুটে উঠছে। বিক্ষোভ দমনে প্রকাশ্যেই বলপ্রয়োগের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এটা কোন ধরনের পরিবর্তন সেটা একটা প্রশ্ন।
সব ধরনের বৈষম্য দূর করার অঙ্গীকার করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। শ্রমিকরা বলছেন তারা নানা ধরনের বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। তাদের বক্তব্য শোনা, তাদের সঙ্গে আলোচনা করা জরুরি। কোনো যৌক্তিক দাবি থাকলে তা আমলে নিতে হবে। কেউ দাবি নিয়ে পথে নামলেই তার মধ্যে ষড়যন্ত্র খোঁজা, বিক্ষোভ দমনে বলপ্রয়োগ করতে চাওয়া দায়িত্বশীলতার পরিচায়ক নয়।
শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষকে নানা দাবিতে পথে নামতে দেখা গেছে। দাবি-দাওয়া নিয়ে পথে নামা অনেককে বিক্ষুব্ধ হতে দেখা গেছে। কোনো কোনো বিক্ষোভ-আন্দোলন থেকে হামলা, সংঘাত-সংঘর্ষ হচ্ছে।
সাভার-আশুলিয়া ও গাজীপুর শিল্পাঞ্চলে গত কয়েকদিন ধরে শ্রমিক বিক্ষোভ হচ্ছে। শ্রমিক বিক্ষোভ থেকে কোনো কোনো কারখানায় হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনেক পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। ওষুধ কারখানায়ও অস্থিরতা চলছে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে ব্যবসায়ী নেতারা শিল্পকারখানায় নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।
কোথাও কোথাও চাকরি স্থায়ীকরণ, ছাঁটাই বন্ধ, নির্দিষ্ট সময়ে বেতন প্রদান, হাজিরা বোনাস, নারী শ্রমিকদের নৈশকালীন ডিউটি বাতিল ও নতুন শ্রমিক নিয়োগের দাবি জানানো হয়েছে। কোনো কোনো কারখানার শ্রমিকরা ভারতীয় কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবি তুলেছেন। আবার অনেকে শ্রমিক নিয়োগে নারী-পুরষ বৈষম্যের অবসান চেয়েছেন। তাদের অভিযোগ, কারখানাগুলোতে নারী শ্রমিকের তুলনায় কমসংখ্যক পুরুষ শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয়।
প্রশ্ন হচ্ছে শ্রমিক বিক্ষোভকে অন্তর্বর্তী সরকার কোন চোখে দেখছে, এই বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে কী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে গত বুধবার সচিবালয়ে বৈঠক করেছেন পাঁচ উপদেষ্টা। দায়িত্বশীলদের কেউ কেউ বলছেন, কারখানা ভাঙচুরের পেছনে ‘ভাড়াটে’ ও ‘টোকাইরা’ রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ‘বলপ্রয়োগের বার্তাও’ দেয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা বলেছেন, ‘কারখানা, শ্রমিক ও দেশের অর্থনীতি বাঁচাতে গেলে কিছুসংখ্যকের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।’
অতীতেও দেশে শ্রমিকদের মধ্যে অনেক অসন্তোষ দেখা গেছে। তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে পথে নেমেছে, অনেক সময় কারখানায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। সে সময় ক্ষমতাসীন সরকারগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শ্রমিক বিক্ষোভের পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে। তবে ষড়যন্ত্রটা কী বা কারা এর পেছনে রয়েছে সেটা কখনোই স্পষ্ট করা হয়নি। কথিত সেই ষড়যন্ত্র দমনে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। পদক্ষেপ বলতে শ্রমিকদের ওপর বলপ্রয়োগই করতে দেখা গেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দেশে সংস্কার আনার কথা বলছে, নতুন বাংলাদেশ গড়ার কথা বলছে। তবে চলমান শ্রমিক আন্দোলন নিয়ে তারা যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে অতীত সরকারগুলোর কথারই প্রতিধ্বনি ফুটে উঠছে। বিক্ষোভ দমনে প্রকাশ্যেই বলপ্রয়োগের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এটা কোন ধরনের পরিবর্তন সেটা একটা প্রশ্ন।
সব ধরনের বৈষম্য দূর করার অঙ্গীকার করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। শ্রমিকরা বলছেন তারা নানা ধরনের বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। তাদের বক্তব্য শোনা, তাদের সঙ্গে আলোচনা করা জরুরি। কোনো যৌক্তিক দাবি থাকলে তা আমলে নিতে হবে। কেউ দাবি নিয়ে পথে নামলেই তার মধ্যে ষড়যন্ত্র খোঁজা, বিক্ষোভ দমনে বলপ্রয়োগ করতে চাওয়া দায়িত্বশীলতার পরিচায়ক নয়।