alt

সম্পাদকীয়

উন্নয়ন করতে হবে পরিবেশ রক্ষা করে

: শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

উন্নয়ন একটি সমাজ বা দেশের অগ্রগতির মূল ভিত্তি, তবে উন্নয়নের সঙ্গে প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা এবং পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীলতা সমান গুরুত্বপূর্ণ। সমন্বয়হীনতা বা অব্যবস্থাপনা যদি উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে প্রবেশ করে, তাহলে তা বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। সাম্প্রতিক পটুয়াখালীর উপকূলীয় অঞ্চলে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি তারই একটি উদাহরণ।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে পটুয়াখালীর সমুদ্র সৈকতের বেড়িবাঁধে একটি পাকা সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের আওতায় সংরক্ষিত বনের অংশ থেকে বেআইনিভাবে বালু উত্তোলনের মাধ্যমে সড়ক নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। গঙ্গামতি ও মম্বিপাড়া এলাকার সংরক্ষিত বনভূমি উজাড় করে ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে বালু উত্তোলন করা হয়েছে। শত শত গাছ ধ্বংস করা হয়েছে।

বনভূমি উজাড়ের মাধ্যমে বালু উত্তোলন কেবলমাত্র পরিবেশগত বিপর্যয় সৃষ্টি করছে না, এটি দীর্ঘমেয়াদে উপকূলীয় এলাকার বিপর্যয় ডেকে আনছে। এই বনভূমি ঝড়, বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে উপকূলীয় অঞ্চলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে। বনের গাছগুলো উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য প্রাকৃতিক বাধা হিসেবে কাজ করে, যা দুর্যোগের সময় গ্রামগুলোকে সুরক্ষা দেয়।

স্থানীয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যবহৃত সংস্থার উদাসীনতা পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করেছে। বন কর্মকর্তারা নিষেধাজ্ঞা দিলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তা মানছে না। প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে অভিযোগ করেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এমনকি বন বিভাগ, ভূমি প্রশাসন এবং জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করা সত্ত্বেও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন যে, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তাদের দাবির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলার হুমকি দিয়েছে।

এ উদাহরণটি স্পষ্টভাবে দেখায় যে, উন্নয়ন প্রকল্পের সময় সমন্বয়হীনতা এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণে কিভাবে পরিবেশগত ও সামাজিক ক্ষতি হতে পারে। সরকারের দায়িত্ব শুধুমাত্র উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করাই নয়, বরং প্রকল্পগুলো যাতে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব না ফেলে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা। বন উজাড়ের মতো ঘটনা যদি দমন না করা হয়, তাহলে আগামী দিনের জন্য বিপর্যয় অনিবার্য হয়ে দাঁড়াবে।

সরকারের প্রতিটি সংস্থাকে দায়িত্বশীল হতে হবে এবং উন্নয়ন প্রকল্পে যারা পরিবেশবিধ্বংসী কার্যক্রমে লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়াও প্রশাসনের সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাদেরও জবাবদিহিতার মুখোমুখি করা প্রয়োজন। একটি দেশের উন্নয়নের জন্য অবকাঠামোগত প্রকল্প অপরিহার্য, তবে তা অবশ্যই পরিবেশ রক্ষার শর্তে হতে হবে। শুধুমাত্র উন্নয়নের নামেই পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি করা উচিত নয়।

প্লাস্টিক বোতলের ব্যবহার : স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য বাড়তে থাকা ঝুঁকি

উখিয়ার আশ্রয়শিবিরে অগ্নিকা-

নির্বিচারে কাটা হচ্ছে সড়কের গাছ, প্রশাসন কী করছে

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণার কার্যকারিতা ও চ্যালেঞ্জ

অবৈধ ইটভাটা বন্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ জরুরি

সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন : নাগরিকদের ভোগান্তি

অপরিকল্পিত খাল খনন : ঝুঁকিতে হরিণাকু-ুর কৃষি ও জনজীবন

সড়ক ব্যবস্থার দুর্বলতা দূর হবে কবে?

নিপাহ ভাইরাস মোকাবিলায় সতর্ক হতে হবে

চাল-তেলে অস্থিরতা, ক্রেতার স্বস্তি কোথায়?

আমন-বীজ নিয়ে প্রতারণা

অগ্নিকা-ের ঝুঁকি কমাতে চাই উন্নত নগর ব্যবস্থাপনা

খেজুর গাছ গবেষণা ক্ষেত্রের বিপর্যয় : রক্ষার পথে পদক্ষেপ জরুরি

ইজতেমা ময়দানে সংঘাত : কেন ব্যর্থ হলো সমঝোতা প্রচেষ্টা?

ফেরি চালু করে জনদুর্ভোগ দূর করুন

শীতের তীব্রতা বাড়ছে, বাড়ছে রোগের প্রকোপ

ময়ূর নদ রক্ষায় পরিকল্পিত পদক্ষেপ নিন

কেঁচো সার : কৃষকের ভাগ্য বদলানোর শক্তিশালী উপকরণ

ফসলি জমিতে কেন চালকল

মহান বিজয় দিবস

মহান বিজয় দিবস

শীতে অসহায়দের পাশে দাঁড়ান

বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকট : কবে মিলবে স্বস্তি?

সচেতনতামূলক পদক্ষেপে বাল্যবিবাহ নিরোধ : আশা এবং করণীয়

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস

কেশবপুরে জলাবদ্ধতা : বোরো আবাদের পথে বাধা দূর করুন

বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক ২০২৪ : প্রাপ্তি ও চ্যালেঞ্জ

সেতু নির্মাণে আর কত অপেক্ষা

আশ্রয়ণ প্রকল্প : দুর্নীতি, অসামঞ্জস্যতা এবং সেবা নিয়ে প্রশ্ন

সংরক্ষিত বন রক্ষায় উদাসীনতা কেন

শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য : শিক্ষার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন চ্যালেঞ্জ

কক্সবাজারের সংরক্ষিত বনে কেন পশুর হাট

যুব ক্রিকেটের আরেকটি সাফল্য

খুলনা মেডিকেলের সংকট : ব্যাহত স্বাস্থ্যসেবা

ভৈরব নদী বিপর্যয়ের দায় কার

বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট : কারণ কী

tab

সম্পাদকীয়

উন্নয়ন করতে হবে পরিবেশ রক্ষা করে

শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

উন্নয়ন একটি সমাজ বা দেশের অগ্রগতির মূল ভিত্তি, তবে উন্নয়নের সঙ্গে প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা এবং পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীলতা সমান গুরুত্বপূর্ণ। সমন্বয়হীনতা বা অব্যবস্থাপনা যদি উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে প্রবেশ করে, তাহলে তা বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। সাম্প্রতিক পটুয়াখালীর উপকূলীয় অঞ্চলে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি তারই একটি উদাহরণ।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে পটুয়াখালীর সমুদ্র সৈকতের বেড়িবাঁধে একটি পাকা সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের আওতায় সংরক্ষিত বনের অংশ থেকে বেআইনিভাবে বালু উত্তোলনের মাধ্যমে সড়ক নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। গঙ্গামতি ও মম্বিপাড়া এলাকার সংরক্ষিত বনভূমি উজাড় করে ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে বালু উত্তোলন করা হয়েছে। শত শত গাছ ধ্বংস করা হয়েছে।

বনভূমি উজাড়ের মাধ্যমে বালু উত্তোলন কেবলমাত্র পরিবেশগত বিপর্যয় সৃষ্টি করছে না, এটি দীর্ঘমেয়াদে উপকূলীয় এলাকার বিপর্যয় ডেকে আনছে। এই বনভূমি ঝড়, বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে উপকূলীয় অঞ্চলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে। বনের গাছগুলো উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য প্রাকৃতিক বাধা হিসেবে কাজ করে, যা দুর্যোগের সময় গ্রামগুলোকে সুরক্ষা দেয়।

স্থানীয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যবহৃত সংস্থার উদাসীনতা পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করেছে। বন কর্মকর্তারা নিষেধাজ্ঞা দিলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তা মানছে না। প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে অভিযোগ করেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এমনকি বন বিভাগ, ভূমি প্রশাসন এবং জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করা সত্ত্বেও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন যে, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তাদের দাবির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলার হুমকি দিয়েছে।

এ উদাহরণটি স্পষ্টভাবে দেখায় যে, উন্নয়ন প্রকল্পের সময় সমন্বয়হীনতা এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণে কিভাবে পরিবেশগত ও সামাজিক ক্ষতি হতে পারে। সরকারের দায়িত্ব শুধুমাত্র উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করাই নয়, বরং প্রকল্পগুলো যাতে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব না ফেলে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা। বন উজাড়ের মতো ঘটনা যদি দমন না করা হয়, তাহলে আগামী দিনের জন্য বিপর্যয় অনিবার্য হয়ে দাঁড়াবে।

সরকারের প্রতিটি সংস্থাকে দায়িত্বশীল হতে হবে এবং উন্নয়ন প্রকল্পে যারা পরিবেশবিধ্বংসী কার্যক্রমে লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়াও প্রশাসনের সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাদেরও জবাবদিহিতার মুখোমুখি করা প্রয়োজন। একটি দেশের উন্নয়নের জন্য অবকাঠামোগত প্রকল্প অপরিহার্য, তবে তা অবশ্যই পরিবেশ রক্ষার শর্তে হতে হবে। শুধুমাত্র উন্নয়নের নামেই পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি করা উচিত নয়।

back to top