গাজীপুরের পরিবেশগত অবস্থা দিন দিন নাজুক হয়ে উঠছে। গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এই জেলার বনভূমি এবং জলাভূমির দুই-তৃতীয়াংশ হারিয়ে গেছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, ২০০০ সালে গাজীপুরে প্রায় ৩৯,৯৪৩ হেক্টর বনভূমি ছিল, যা ২০২৩ সালে এসে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৬,১৭৪ হেক্টরে। এই সময়ের মধ্যে জলাভূমির পরিমাণ ১১,৪৬২ হেক্টর থেকে কমে ৫৫৬৮ হেক্টরে এসে ঠেকেছে। এই পরিসংখ্যান শুধু বন-জলাশয়ের ক্ষতি নয়, বরং অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং শিল্পায়নের করুণ পরিণতিও প্রকাশ করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাজীপুরের এই সংকটের পেছনে রয়েছে অসংযত শিল্পায়ন, নগরায়ণ এবং অপরিকল্পিত উন্নয়ন। এক সময়কার সবুজে ঘেরা জেলা এখন শুধু ইটের দেয়াল এবং কারখানার কুয়াশায় ঢেকে গেছে। গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বনাঞ্চল দখল, গাছ কাটা এবং জলাশয় ভরাট এখন গাজীপুরের নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে গাজীপুর ক্রমেই তার প্রাকৃতিক পরিবেশ হারিয়ে ফেলছে।
গাজীপুরে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হারও পরিবেশগত এই সংকটের অন্যতম কারণ। ২০১১ সালে যেখানে জেলার জনসংখ্যা ছিল ৩০ লাখের কাছাকাছি, সেখানে ২০২২ সালে তা বেড়ে ৫০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এই অতিরিক্ত জনসংখ্যা যে শুধু পরিবেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে তা নয়, বরং অপরিকল্পিত বসতি এবং শিল্প স্থাপন এই সংকটকে আরও প্রকট করে তুলছে।
জলাশয়গুলোর অবস্থাও ভয়াবহ। ২০০০ সালে মোট আয়তনের ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ ছিল জলাভূমি, যা বর্তমানে ৩ দশমিক ২৭ শতাংশে নেমে এসেছে। জলাভূমি কমে যাওয়ার পাশাপাশি জেলার নদীগুলোও দূষণের শিকার হয়েছে। তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা এবং বংশী নদীগুলোর পানি শিল্পবর্জ্য দ্বারা মারাত্মকভাবে দূষিত হয়েছে। এর ফলে কৃষি জমি, খোলা জায়গা এবং বসবাসের অনুকূল পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এই বিপর্যয়ের মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেয়া দরকার। এই সমস্যার মূলে রয়েছে পরিকল্পনার অভাব। উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে পরিকল্পিত নগরায়ণ এবং শিল্পায়নের বিকল্প নেই। উন্নয়ন প্রয়োজন, কিন্তু সেটা হতে হবে পরিবেশকে সংরক্ষণ করেই। গাজীপুরের বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের এই বার্তা দিচ্ছে যে, অপরিকল্পিত উন্নয়ন দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশগত বিপর্যয় ডেকে আনে।
 ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                        ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                           	                                            বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪
গাজীপুরের পরিবেশগত অবস্থা দিন দিন নাজুক হয়ে উঠছে। গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এই জেলার বনভূমি এবং জলাভূমির দুই-তৃতীয়াংশ হারিয়ে গেছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, ২০০০ সালে গাজীপুরে প্রায় ৩৯,৯৪৩ হেক্টর বনভূমি ছিল, যা ২০২৩ সালে এসে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৬,১৭৪ হেক্টরে। এই সময়ের মধ্যে জলাভূমির পরিমাণ ১১,৪৬২ হেক্টর থেকে কমে ৫৫৬৮ হেক্টরে এসে ঠেকেছে। এই পরিসংখ্যান শুধু বন-জলাশয়ের ক্ষতি নয়, বরং অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং শিল্পায়নের করুণ পরিণতিও প্রকাশ করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাজীপুরের এই সংকটের পেছনে রয়েছে অসংযত শিল্পায়ন, নগরায়ণ এবং অপরিকল্পিত উন্নয়ন। এক সময়কার সবুজে ঘেরা জেলা এখন শুধু ইটের দেয়াল এবং কারখানার কুয়াশায় ঢেকে গেছে। গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বনাঞ্চল দখল, গাছ কাটা এবং জলাশয় ভরাট এখন গাজীপুরের নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে গাজীপুর ক্রমেই তার প্রাকৃতিক পরিবেশ হারিয়ে ফেলছে।
গাজীপুরে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হারও পরিবেশগত এই সংকটের অন্যতম কারণ। ২০১১ সালে যেখানে জেলার জনসংখ্যা ছিল ৩০ লাখের কাছাকাছি, সেখানে ২০২২ সালে তা বেড়ে ৫০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এই অতিরিক্ত জনসংখ্যা যে শুধু পরিবেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে তা নয়, বরং অপরিকল্পিত বসতি এবং শিল্প স্থাপন এই সংকটকে আরও প্রকট করে তুলছে।
জলাশয়গুলোর অবস্থাও ভয়াবহ। ২০০০ সালে মোট আয়তনের ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ ছিল জলাভূমি, যা বর্তমানে ৩ দশমিক ২৭ শতাংশে নেমে এসেছে। জলাভূমি কমে যাওয়ার পাশাপাশি জেলার নদীগুলোও দূষণের শিকার হয়েছে। তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা এবং বংশী নদীগুলোর পানি শিল্পবর্জ্য দ্বারা মারাত্মকভাবে দূষিত হয়েছে। এর ফলে কৃষি জমি, খোলা জায়গা এবং বসবাসের অনুকূল পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এই বিপর্যয়ের মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেয়া দরকার। এই সমস্যার মূলে রয়েছে পরিকল্পনার অভাব। উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে পরিকল্পিত নগরায়ণ এবং শিল্পায়নের বিকল্প নেই। উন্নয়ন প্রয়োজন, কিন্তু সেটা হতে হবে পরিবেশকে সংরক্ষণ করেই। গাজীপুরের বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের এই বার্তা দিচ্ছে যে, অপরিকল্পিত উন্নয়ন দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশগত বিপর্যয় ডেকে আনে।
