alt

সম্পাদকীয়

অপরিকল্পিত উন্নয়নে বন-জলাশয়ের বিপর্যয়

: বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

গাজীপুরের পরিবেশগত অবস্থা দিন দিন নাজুক হয়ে উঠছে। গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এই জেলার বনভূমি এবং জলাভূমির দুই-তৃতীয়াংশ হারিয়ে গেছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, ২০০০ সালে গাজীপুরে প্রায় ৩৯,৯৪৩ হেক্টর বনভূমি ছিল, যা ২০২৩ সালে এসে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৬,১৭৪ হেক্টরে। এই সময়ের মধ্যে জলাভূমির পরিমাণ ১১,৪৬২ হেক্টর থেকে কমে ৫৫৬৮ হেক্টরে এসে ঠেকেছে। এই পরিসংখ্যান শুধু বন-জলাশয়ের ক্ষতি নয়, বরং অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং শিল্পায়নের করুণ পরিণতিও প্রকাশ করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাজীপুরের এই সংকটের পেছনে রয়েছে অসংযত শিল্পায়ন, নগরায়ণ এবং অপরিকল্পিত উন্নয়ন। এক সময়কার সবুজে ঘেরা জেলা এখন শুধু ইটের দেয়াল এবং কারখানার কুয়াশায় ঢেকে গেছে। গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বনাঞ্চল দখল, গাছ কাটা এবং জলাশয় ভরাট এখন গাজীপুরের নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে গাজীপুর ক্রমেই তার প্রাকৃতিক পরিবেশ হারিয়ে ফেলছে।

গাজীপুরে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হারও পরিবেশগত এই সংকটের অন্যতম কারণ। ২০১১ সালে যেখানে জেলার জনসংখ্যা ছিল ৩০ লাখের কাছাকাছি, সেখানে ২০২২ সালে তা বেড়ে ৫০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এই অতিরিক্ত জনসংখ্যা যে শুধু পরিবেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে তা নয়, বরং অপরিকল্পিত বসতি এবং শিল্প স্থাপন এই সংকটকে আরও প্রকট করে তুলছে।

জলাশয়গুলোর অবস্থাও ভয়াবহ। ২০০০ সালে মোট আয়তনের ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ ছিল জলাভূমি, যা বর্তমানে ৩ দশমিক ২৭ শতাংশে নেমে এসেছে। জলাভূমি কমে যাওয়ার পাশাপাশি জেলার নদীগুলোও দূষণের শিকার হয়েছে। তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা এবং বংশী নদীগুলোর পানি শিল্পবর্জ্য দ্বারা মারাত্মকভাবে দূষিত হয়েছে। এর ফলে কৃষি জমি, খোলা জায়গা এবং বসবাসের অনুকূল পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এই বিপর্যয়ের মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেয়া দরকার। এই সমস্যার মূলে রয়েছে পরিকল্পনার অভাব। উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে পরিকল্পিত নগরায়ণ এবং শিল্পায়নের বিকল্প নেই। উন্নয়ন প্রয়োজন, কিন্তু সেটা হতে হবে পরিবেশকে সংরক্ষণ করেই। গাজীপুরের বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের এই বার্তা দিচ্ছে যে, অপরিকল্পিত উন্নয়ন দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশগত বিপর্যয় ডেকে আনে।

কর্ণফুলী নদীর সাম্পান মাঝিদের অভিযোগ আমলে নিন

নওগাঁয় আমন ধানে পচন, কৃষকদের পাশে দাঁড়ান

কিশোরকে গাছে বেঁধে নির্যাতন : নৈতিক অবক্ষয়ের প্রতিচ্ছবি

সংরক্ষিত বনভূমিতে অবৈধ বালু উত্তোলন

মতপ্রকাশের কারণে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি!

আর্সেনিকমুক্ত নিরাপদ পানির প্রকল্প : একটি ভালো উদ্যোগ

মা ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা : জেলেদের খাদ্য সহায়তার ঘাটতি ও সমাধানের পথ

দারিদ্র্যের উদ্বেগজনক চিত্র

চড়া বাজারের চাপে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস

স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন জনবল সংকট দূর করুন

উন্নয়ন করতে হবে পরিবেশ রক্ষা করে

নদীর পাড় দখল : পরিবেশ এবং সমাজের জন্য এক মারাত্মক হুমকি

বিচার বিভাগের ওপর চাপ প্রয়োগ করা কাম্য নয়

অবৈধ ইটভাটা : আইনের অমান্যতা ও প্রশাসনের নীরবতা

ভবদহের জলাবদ্ধতা ও আত্মঘাতী প্রকল্পের বিপর্যয়

চায়না দুয়ারী জাল : জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি

চাল সংরক্ষণের সাইলো : অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

ইরামতি খাল ও রক্তদহ বিলের জলাবদ্ধতা : কৃষকদের দুর্দশার শেষ কোথায়?

মা ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা : টেকসই মৎস্যসম্পদ রক্ষার চ্যালেঞ্জ ও বাস্তবতা

জলাবদ্ধতার প্রভাব ও শিক্ষার ধারাবাহিকতা রক্ষা : জরুরি সমাধান প্রয়োজন

ডেঙ্গুর ভয়াবহতা ও প্রয়োজনীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা

ডিএনডি এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে টেকসই পদক্ষেপ নিন

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি : সমাধান কোন পথে

উত্তরা মেইল ট্রেন পুনরায় চালু করুন

হাটবাজারে অবৈধ দখলের অবসান চাই

পশু জবাইয়ে অবকাঠামোর অভাব ও তদারকির ঘাটতি : স্বাস্থ্যঝুঁকিতে মানুষ

খাল রক্ষার সংকট : সমন্বয়হীনতা ও দায়িত্বহীনতা

টাঙ্গাইল পৌরসভার জলাবদ্ধতার সমাধান করুন

সুন্দরবনে বেড়েছে বাঘের সংখ্যা, এ সাফল্য ধরে রাখতে হবে

গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ : ক্রমবর্ধমান হুমকি

বন্যার্তদের ত্রাণ সহায়তা বাড়ান

চশমা পরা ও মুখপোড়া হনুমান রক্ষায় উদ্যোগ চাই

উন্মুক্ত স্থানে মলমূত্র ত্যাগ বন্ধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়ান

নির্বাচনের সময়সীমা স্পষ্ট করা দরকার

শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ দিন

tab

সম্পাদকীয়

অপরিকল্পিত উন্নয়নে বন-জলাশয়ের বিপর্যয়

বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

গাজীপুরের পরিবেশগত অবস্থা দিন দিন নাজুক হয়ে উঠছে। গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এই জেলার বনভূমি এবং জলাভূমির দুই-তৃতীয়াংশ হারিয়ে গেছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, ২০০০ সালে গাজীপুরে প্রায় ৩৯,৯৪৩ হেক্টর বনভূমি ছিল, যা ২০২৩ সালে এসে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৬,১৭৪ হেক্টরে। এই সময়ের মধ্যে জলাভূমির পরিমাণ ১১,৪৬২ হেক্টর থেকে কমে ৫৫৬৮ হেক্টরে এসে ঠেকেছে। এই পরিসংখ্যান শুধু বন-জলাশয়ের ক্ষতি নয়, বরং অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং শিল্পায়নের করুণ পরিণতিও প্রকাশ করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাজীপুরের এই সংকটের পেছনে রয়েছে অসংযত শিল্পায়ন, নগরায়ণ এবং অপরিকল্পিত উন্নয়ন। এক সময়কার সবুজে ঘেরা জেলা এখন শুধু ইটের দেয়াল এবং কারখানার কুয়াশায় ঢেকে গেছে। গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বনাঞ্চল দখল, গাছ কাটা এবং জলাশয় ভরাট এখন গাজীপুরের নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে গাজীপুর ক্রমেই তার প্রাকৃতিক পরিবেশ হারিয়ে ফেলছে।

গাজীপুরে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হারও পরিবেশগত এই সংকটের অন্যতম কারণ। ২০১১ সালে যেখানে জেলার জনসংখ্যা ছিল ৩০ লাখের কাছাকাছি, সেখানে ২০২২ সালে তা বেড়ে ৫০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এই অতিরিক্ত জনসংখ্যা যে শুধু পরিবেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে তা নয়, বরং অপরিকল্পিত বসতি এবং শিল্প স্থাপন এই সংকটকে আরও প্রকট করে তুলছে।

জলাশয়গুলোর অবস্থাও ভয়াবহ। ২০০০ সালে মোট আয়তনের ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ ছিল জলাভূমি, যা বর্তমানে ৩ দশমিক ২৭ শতাংশে নেমে এসেছে। জলাভূমি কমে যাওয়ার পাশাপাশি জেলার নদীগুলোও দূষণের শিকার হয়েছে। তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা এবং বংশী নদীগুলোর পানি শিল্পবর্জ্য দ্বারা মারাত্মকভাবে দূষিত হয়েছে। এর ফলে কৃষি জমি, খোলা জায়গা এবং বসবাসের অনুকূল পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এই বিপর্যয়ের মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেয়া দরকার। এই সমস্যার মূলে রয়েছে পরিকল্পনার অভাব। উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে পরিকল্পিত নগরায়ণ এবং শিল্পায়নের বিকল্প নেই। উন্নয়ন প্রয়োজন, কিন্তু সেটা হতে হবে পরিবেশকে সংরক্ষণ করেই। গাজীপুরের বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের এই বার্তা দিচ্ছে যে, অপরিকল্পিত উন্নয়ন দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশগত বিপর্যয় ডেকে আনে।

back to top