দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে যে অস্থিরতা চলছে, তা প্রতিনিয়ত সাধারণ ভোক্তাদের অসহায় করে তুলছে। আলু-পেঁয়াজের মতো কিছু পণ্যের দামে সামান্য কমতি হলেও চাল ও মুরগির মতো প্রধান খাদ্যপণ্যের বাড়তি দাম ভোক্তাদের সামগ্রিক ব্যয় অনেকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এর ফলে, সাধারণ মানুষের জন্য সাশ্রয়ের যে সামান্য আশা ছিল, সেটাও বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
চালের দামে হঠাৎ এই ঊর্ধ্বগতি এমন এক সময়ে ঘটছে, যখন বাজারে আমন মৌসুমের চালের সরবরাহ থাকার কথা। অথচ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, পাইকারি পর্যায়ে ধানের বাড়তি দাম চালকল মালিকদের চালের দাম বাড়াতে বাধ্য করছে। এতে খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি ২ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। চালের বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে সরকার ইতোমধ্যে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করেছে, তবে তার দৃশ্যমান কোনো প্রভাব এখনও বাজারে পড়েনি।
দাম বাড়ানোর পরও বাজারে সয়াবিন তেলের ঘাটতি দেখা গেছে। অনেক ক্রেতাকেই তেল কিনতে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে।
এদিকে, ব্রয়লার মুরগির দামের আকস্মিক ২০ টাকা বৃদ্ধিও ভোক্তাদের ব্যয়ভার বাড়িয়েছে। মুরগি বিক্রেতারা এটাকে সাধারণ চাহিদা-জোগানের ওঠানামা বলে ব্যাখ্যা করলেও, প্রায় প্রতি সপ্তাহেই এমন দামের অস্থিতিশীলতা ভোক্তাদের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে, দীর্ঘ সময় ধরে চড়া দামে থাকা আলু ও পেঁয়াজের দামে সামান্য স্বস্তি ফিরেছে। কিন্তু আলু-পেঁয়াজের কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমার যে সাশ্রয়, তা চাল ও মুরগির মতো পণ্যের বাড়তি ব্যয় সামলানোর জন্য একেবারেই যথেষ্ট নয়।
এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠে, বাজার ব্যবস্থাপনার এই অস্থিরতা কীভাবে সামলানো হবে? সরকারের নীতিগত পদক্ষেপে যেমন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব পরিলক্ষিত হয়, তেমনি ব্যবসায়ীদের একাংশের অযৌক্তিক মুনাফা লোভও বাজারকে অস্থির রাখছে।
সাময়িক পদক্ষেপের বাইরে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের দিকে মনোযোগ দেয়া জরুরি। একদিকে স্থানীয় উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কৃষকদের প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দিতে হবে, অন্যদিকে চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীদের একচেটিয়া কার্যক্রমের ওপর কার্যকর নজরদারি প্রয়োজন। এছাড়া পণ্যের দাম মনিটরিং এবং বাজারে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার জন্য শক্তিশালী তদারকি ব্যবস্থারও অভাব রয়েছে।
যখন বাজারের প্রতিটি সেক্টরে অস্থিরতা চলছে, তখন সাময়িক স্বস্তি দিয়ে সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করা সম্ভব নয়। সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর উচিত একটি সমন্বিত বাজারনীতি প্রণয়ন করা, যা শুধু ক্রেতাদের স্বস্তি দেবে না, বরং বাজার ব্যবস্থাকে টেকসই করবে। নইলে, প্রতিনিয়ত এই অস্থিরতার বোঝা সাধারণ মানুষকেই বহন করতে হবে।
রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে যে অস্থিরতা চলছে, তা প্রতিনিয়ত সাধারণ ভোক্তাদের অসহায় করে তুলছে। আলু-পেঁয়াজের মতো কিছু পণ্যের দামে সামান্য কমতি হলেও চাল ও মুরগির মতো প্রধান খাদ্যপণ্যের বাড়তি দাম ভোক্তাদের সামগ্রিক ব্যয় অনেকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এর ফলে, সাধারণ মানুষের জন্য সাশ্রয়ের যে সামান্য আশা ছিল, সেটাও বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
চালের দামে হঠাৎ এই ঊর্ধ্বগতি এমন এক সময়ে ঘটছে, যখন বাজারে আমন মৌসুমের চালের সরবরাহ থাকার কথা। অথচ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, পাইকারি পর্যায়ে ধানের বাড়তি দাম চালকল মালিকদের চালের দাম বাড়াতে বাধ্য করছে। এতে খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি ২ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। চালের বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে সরকার ইতোমধ্যে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করেছে, তবে তার দৃশ্যমান কোনো প্রভাব এখনও বাজারে পড়েনি।
দাম বাড়ানোর পরও বাজারে সয়াবিন তেলের ঘাটতি দেখা গেছে। অনেক ক্রেতাকেই তেল কিনতে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে।
এদিকে, ব্রয়লার মুরগির দামের আকস্মিক ২০ টাকা বৃদ্ধিও ভোক্তাদের ব্যয়ভার বাড়িয়েছে। মুরগি বিক্রেতারা এটাকে সাধারণ চাহিদা-জোগানের ওঠানামা বলে ব্যাখ্যা করলেও, প্রায় প্রতি সপ্তাহেই এমন দামের অস্থিতিশীলতা ভোক্তাদের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে, দীর্ঘ সময় ধরে চড়া দামে থাকা আলু ও পেঁয়াজের দামে সামান্য স্বস্তি ফিরেছে। কিন্তু আলু-পেঁয়াজের কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমার যে সাশ্রয়, তা চাল ও মুরগির মতো পণ্যের বাড়তি ব্যয় সামলানোর জন্য একেবারেই যথেষ্ট নয়।
এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠে, বাজার ব্যবস্থাপনার এই অস্থিরতা কীভাবে সামলানো হবে? সরকারের নীতিগত পদক্ষেপে যেমন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব পরিলক্ষিত হয়, তেমনি ব্যবসায়ীদের একাংশের অযৌক্তিক মুনাফা লোভও বাজারকে অস্থির রাখছে।
সাময়িক পদক্ষেপের বাইরে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের দিকে মনোযোগ দেয়া জরুরি। একদিকে স্থানীয় উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কৃষকদের প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দিতে হবে, অন্যদিকে চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীদের একচেটিয়া কার্যক্রমের ওপর কার্যকর নজরদারি প্রয়োজন। এছাড়া পণ্যের দাম মনিটরিং এবং বাজারে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার জন্য শক্তিশালী তদারকি ব্যবস্থারও অভাব রয়েছে।
যখন বাজারের প্রতিটি সেক্টরে অস্থিরতা চলছে, তখন সাময়িক স্বস্তি দিয়ে সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করা সম্ভব নয়। সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর উচিত একটি সমন্বিত বাজারনীতি প্রণয়ন করা, যা শুধু ক্রেতাদের স্বস্তি দেবে না, বরং বাজার ব্যবস্থাকে টেকসই করবে। নইলে, প্রতিনিয়ত এই অস্থিরতার বোঝা সাধারণ মানুষকেই বহন করতে হবে।