alt

মতামত » সম্পাদকীয়

সড়ক দুর্ঘটনা : বেপরোয়া গতি আর অব্যবস্থাপনার মাশুল

: শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫

সড়ক দুর্ঘটনার ক্রমবর্ধমান পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালে ৬ হাজার ৯২৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৭ হাজার ২৯৪ জন, আহত হয়েছেন আরও ১২ হাজার ১৯ জন। ২০২৩ সালের তুলনায় প্রাণহানির সংখ্যা ১২ শতাংশ বেড়েছে।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে বেপরোয়া গতি, চালকের অদক্ষতা, যানবাহনের অযোগ্যতা এবং প্রাতিষ্ঠানিক অব্যবস্থাপনা শীর্ষে রয়েছে। অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটে নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে, যা স্পষ্টভাবে চালকদের প্রশিক্ষণের ঘাটতি ও সড়ক নিরাপত্তার প্রতি তাদের উদাসীনতা নির্দেশ করে। এছাড়া মুখোমুখি সংঘর্ষ এবং পথচারীদের চাপা দেওয়ার মতো ঘটনাগুলোও উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, পণ্যবাহী যানবাহন এবং মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহতদের ৭৫ শতাংশই তরুণ, যারা ১৪ থেকে ৪৫ বছর বয়সী। এ হার একটি সামাজিক সংকটের ইঙ্গিত দেয়, কারণ দেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

দুর্ঘটনার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি আঞ্চলিক সড়কে। এসব সড়কে দুর্বল অবকাঠামো এবং অপ্রতুল নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। সময়ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সকাল এবং রাত দুর্ঘটনার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ সময়। বিশেষত রাজধানীতে রাতের বেলা ভারি যানবাহনের বেপরোয়া গতি দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়িয়ে তুলছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের মতে, দেশের সড়ক ও পরিবহন ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কার্যকর সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। বিআরটিএ, ডিটিসিএ, পুলিশ, বিআরটিসি এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের অসামঞ্জস্য এবং জবাবদিহিতার অভাব সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি স্পষ্ট যে, সড়ক দুর্ঘটনাগুলো শুধুমাত্র একটি দুর্ঘটনা নয়; এগুলো কাঠামোগত হত্যাকা-।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আমাদের কাঠামোগত ও প্রশাসনিক পরিবর্তন আনতে হবে। কার্যকর সমন্বয়, চালকদের জন্য আধুনিক প্রশিক্ষণ এবং যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষার কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য। এছাড়া আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়কগুলোর উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা উচিত। স্কুল ও গণমাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তা সচেতনতা বাড়ানোও জরুরি।

প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় হাজারও মানুষের প্রাণহানি দেশের জন্য একটি বড় দুর্যোগ। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের পাশাপাশি নাগরিকদেরও ভূমিকা রাখতে হবে। সড়ক পরিবহন আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং আইন লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। পাশাপাশি পথচারীদেরও সড়ক পারাপারে সচেতন হওয়া এবং ট্রাফিক আইন মেনে চলা উচিত। সড়ক দুর্ঘটনাকে কেবল ব্যক্তিগত দুর্ভাগ্য নয়, বরং একটি জাতীয় সংকট হিসেবে দেখতে হবে। একমাত্র সম্মিলিত প্রচেষ্টায়ই আমরা সড়ক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারি।

কারেন্ট পোকা দমনে কৃষককে সহায়তা দিন

আলুর বাজারে নীরব বিপর্যয়

বিদ্যালয়ের মাঠ দখলমুক্ত করুন

টিলায় পাথর লুট : কার্যকর ব্যবস্থা নিন

ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল ভবন সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ দরকার

ডেঙ্গু মোকাবিলায় দায়িত্বহীনতা আর নয়

সার সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ দরকার

নির্বাচনী সহিংসতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন

প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা যেন অবহেলার শিকার না হয়

প্রাথমিকে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিল : একটি ভুল বার্তা

ঘিওর ভেটেরিনারি হাসপাতালের সংকট দূর করুন

ভূমি অফিসে সেবাপ্রার্থীদের দুর্ভোগ

একটি পাকা সেতুর জন্য অপেক্ষা

নদী থেকে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধ করুন

ইছামতী নদীকে রক্ষা করুন

সন্দেহবশত পিটিয়ে হত্যা: দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জয়দেবপুর রেলক্রসিংয়ে দুর্ভোগের অবসান হোক

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কেন থামছে না?

সারের সংকট আর কত

সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করুন

কক্সবাজার সৈকত রক্ষা করুন

ঐকমত্য কমিশনের উদ্দেশ্য কী?

সড়ক দখলমুক্ত করা জরুরি

কৃষকদের পাশে থাকুন

প্রাথমিক শিক্ষায় সংকট

অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণে ধীরগতি: ঝুঁকিতে মানুষ ও গবাদিপশু

রাজধানীর যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ফিরেছে সিগন্যাল বাতি: বাস্তবায়ন জরুরি

দুস্থদের জন্য নিম্নমানের চাল: দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

নিরাপদ সড়কের আকাঙ্ক্ষা ও বাস্তবতা

কটিয়াদীতে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে অভিযোগ আমলে নিন

ধানখেতে পোকার আক্রমণ: কৃষকের পাশে দাঁড়ান

কৃষিজমির পাশে ইউক্যালিপটাস: লাভ সাময়িক, ক্ষতি দীর্ঘমেয়াদী

খুলনা বিভাগীয় শিশু হাসপাতাল চালু হতে আর কত অপেক্ষা

সদরপুর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে ব্যবস্থা নিন

সরকারি জমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে

রংপুর সিটি করপোরেশনে অটোরিকশার লাইসেন্স প্রসঙ্গে

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

সড়ক দুর্ঘটনা : বেপরোয়া গতি আর অব্যবস্থাপনার মাশুল

শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫

সড়ক দুর্ঘটনার ক্রমবর্ধমান পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালে ৬ হাজার ৯২৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৭ হাজার ২৯৪ জন, আহত হয়েছেন আরও ১২ হাজার ১৯ জন। ২০২৩ সালের তুলনায় প্রাণহানির সংখ্যা ১২ শতাংশ বেড়েছে।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে বেপরোয়া গতি, চালকের অদক্ষতা, যানবাহনের অযোগ্যতা এবং প্রাতিষ্ঠানিক অব্যবস্থাপনা শীর্ষে রয়েছে। অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটে নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে, যা স্পষ্টভাবে চালকদের প্রশিক্ষণের ঘাটতি ও সড়ক নিরাপত্তার প্রতি তাদের উদাসীনতা নির্দেশ করে। এছাড়া মুখোমুখি সংঘর্ষ এবং পথচারীদের চাপা দেওয়ার মতো ঘটনাগুলোও উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, পণ্যবাহী যানবাহন এবং মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহতদের ৭৫ শতাংশই তরুণ, যারা ১৪ থেকে ৪৫ বছর বয়সী। এ হার একটি সামাজিক সংকটের ইঙ্গিত দেয়, কারণ দেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

দুর্ঘটনার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি আঞ্চলিক সড়কে। এসব সড়কে দুর্বল অবকাঠামো এবং অপ্রতুল নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। সময়ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সকাল এবং রাত দুর্ঘটনার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ সময়। বিশেষত রাজধানীতে রাতের বেলা ভারি যানবাহনের বেপরোয়া গতি দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়িয়ে তুলছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের মতে, দেশের সড়ক ও পরিবহন ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কার্যকর সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। বিআরটিএ, ডিটিসিএ, পুলিশ, বিআরটিসি এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের অসামঞ্জস্য এবং জবাবদিহিতার অভাব সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি স্পষ্ট যে, সড়ক দুর্ঘটনাগুলো শুধুমাত্র একটি দুর্ঘটনা নয়; এগুলো কাঠামোগত হত্যাকা-।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আমাদের কাঠামোগত ও প্রশাসনিক পরিবর্তন আনতে হবে। কার্যকর সমন্বয়, চালকদের জন্য আধুনিক প্রশিক্ষণ এবং যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষার কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য। এছাড়া আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়কগুলোর উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা উচিত। স্কুল ও গণমাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তা সচেতনতা বাড়ানোও জরুরি।

প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় হাজারও মানুষের প্রাণহানি দেশের জন্য একটি বড় দুর্যোগ। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের পাশাপাশি নাগরিকদেরও ভূমিকা রাখতে হবে। সড়ক পরিবহন আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং আইন লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। পাশাপাশি পথচারীদেরও সড়ক পারাপারে সচেতন হওয়া এবং ট্রাফিক আইন মেনে চলা উচিত। সড়ক দুর্ঘটনাকে কেবল ব্যক্তিগত দুর্ভাগ্য নয়, বরং একটি জাতীয় সংকট হিসেবে দেখতে হবে। একমাত্র সম্মিলিত প্রচেষ্টায়ই আমরা সড়ক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারি।

back to top