alt

সম্পাদকীয়

ফসল রক্ষা বাঁধে অনিয়ম কাম্য নয়

: সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম এবং দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টদের অবহেলা আবারও দেশের কৃষকদের বিপন্ন অবস্থার চিত্র স্পষ্ট করেছে। খাসিয়ামারা নদীর বাম তীরে বালি দিয়ে বাঁধ নির্মাণ, স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, এবং পিআইসি সংশ্লিষ্টদের স্বেচ্ছাচারিতার ঘটনাগুলো প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

কৃষকরা জানান, বাঁধ নির্মাণের শুরুতেই নীতিমালা অমান্য করে ধূলোমিশ্রিত বালিতে বাঁধ তৈরি করা হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগের পর কাজ বন্ধ করা হলেও পরবর্তীতে সেই বালির উপর মাটির প্রলেপ দিয়ে আবার কাজ শুরু হয়। স্থানীয় কৃষকরা আশঙ্কা করছেন, বর্ষার সময় পাহাড়ি ঢলে এই অস্থায়ী ও দুর্বল বাঁধ কোনোভাবেই ফসল রক্ষা করতে পারবে না। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি)-এর দায়িত্বশীলরা কীভাবে এই ভেল্কিবাজি চালাচ্ছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।

পাউবোর (বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড) ইঞ্জিনিয়ারদের দায়িত্ব ছিল এই প্রকল্পের গুণগত মান নিশ্চিত করা। তারা বালির বাঁধের কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও পিআইসি সংশ্লিষ্টরা সেই নির্দেশ অমান্য করে নিজেদের ইচ্ছেমতো কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। উপরন্তু, যেসব ব্যক্তিরা পিআইসির দায়িত্ব পেয়েছেন, তাদের অনেকেরই ফসল রক্ষা বাঁধসংলগ্ন কোনো জমি নেই। এ থেকেই বোঝা যায়, প্রকল্প বাস্তবায়নের পুরো প্রক্রিয়া কতটা স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মে আচ্ছন্ন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, পিআইসির অন্তরালে থাকা প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট পুরো প্রকল্পটি নিয়ন্ত্রণ করছে। ৮ লাখ ২২ হাজার টাকা বরাদ্দকৃত এই প্রকল্পে দায়সারা কাজ করে ফসল রক্ষা বাঁধের কার্যকারিতা নষ্ট করা হচ্ছে। ফলে শুধু অর্থ অপচয়ই হচ্ছে না, বরং কৃষকদের জীবন ও জীবিকার ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন, বালির বাঁধ নির্মাণ অব্যাহত থাকলে পিআইসি বাতিল করা হবে, একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে এ ধরনের হুঁশিয়ারি শুধু মুখে নয়, তাৎক্ষণিক বাস্তবায়নের মাধ্যমেই কার্যকর হতে পারে। পিআইসি বাতিল করে প্রকল্পটি নতুনভাবে নীতিমালানুযায়ী বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। পাশাপাশি পাউবোর ইঞ্জিনিয়ারদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

দেশের কৃষকদের জীবনযাত্রা ও ফসলের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। কিন্তু সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের এই প্রকল্পের ঘটনাগুলো দেখায়, কীভাবে সঠিক তদারকির অভাবে একটি মহৎ উদ্যোগ দুর্নীতিগ্রস্ত ও অকার্যকর হয়ে উঠতে পারে। প্রশাসনের উচিত এ ঘটনাকে দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচনা করে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। কৃষকের প্রতি আমাদের যে দায়িত্ব, তা পালন করা শুধু প্রশাসনের নয়, বরং পুরো সমাজের নৈতিক দায়িত্ব।

কৃষিজমিতে কারখানা: ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য

ওরস বন্ধ রাখাই কি একমাত্র সমাধান?

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে শিশুদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা করুন

নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পে গাফিলতি

রিওভাইরাস: আতঙ্ক নয়, চাই সতর্কতা

শুল্ক-কর এখন বাড়ানো কি জরুরি ছিল

নওগাঁর বর্জ্য পরিশোধনাগার প্রসঙ্গে

সড়ক দুর্ঘটনা : বেপরোয়া গতি আর অব্যবস্থাপনার মাশুল

সংরক্ষিত বনের গাছ রক্ষায় উদাসীনতার অভিযোগ আমলে নিন

চালের দাম বাড়ছে: সংকট আরও বাড়ার আগেই ব্যবস্থা নিন

বারইখালী ও বহরবুনিয়ার মানুষের দুর্ভোগ কবে দূর হবে

রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি : সমাধান কোথায়?

সময়ের সমীকরণে বেকারত্বের নতুন চিত্র

বরুড়ায় খালের দুর্দশা

টেকনাফে অপহরণ: স্থানীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ ও সমাধানের প্রয়োজনীয়তা

স্কুল মাঠে মাটি কাটার অভিযোগ

কিশোর গ্যাং : আইনশৃঙ্খলার ব্যর্থতা ও সামাজিক সংকট

বই বিতরণে স্বচ্ছতা প্রয়োজন

পরিবেশ রক্ষায় আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করুন

হাসপাতালের লোকবল সংকট দূর করুন

প্রাথমিক শিক্ষা : উন্নত জাতি গঠনে অপরিহার্য ভিত্তি

খেলার মাঠে কারখানা : পরিবেশ দূষণ ও জনস্বাস্থ্যের বিপদ

শীতের তীব্রতা : বিপন্ন মানুষ এবং সরকারের কর্তব্য

বনে কেন করাতকল

গণপিটুনির দুঃসহ চিত্র

কর্মক্ষেত্রে শ্রমিক নিরাপত্তা

নববর্ষে মানবিক ও সমতার বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার

পরিযায়ী পাখি রক্ষায় ব্যবস্থা নিন

প্রবাসী কর্মীদের স্বাস্থ্য সমস্যা : সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে

অবৈধ ইটভাটার কারণে পরিবেশ ও কৃষির বিপর্যয়

পরিবেশ রক্ষায় প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন জরুরি

নরসিংদী-মদনগঞ্জ সড়কে ময়লার ভাগাড়

ভরা মৌসুমে বেড়েছে চালের দাম : বাজারে অস্থিরতা, গ্রাহকরা বিপাকে

ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বসতিতে আগুন : দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা?

সচিবালয়ে আগুন : সুষ্ঠু তদন্ত হোক

অভয়াশ্রম রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন

tab

সম্পাদকীয়

ফসল রক্ষা বাঁধে অনিয়ম কাম্য নয়

সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম এবং দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টদের অবহেলা আবারও দেশের কৃষকদের বিপন্ন অবস্থার চিত্র স্পষ্ট করেছে। খাসিয়ামারা নদীর বাম তীরে বালি দিয়ে বাঁধ নির্মাণ, স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, এবং পিআইসি সংশ্লিষ্টদের স্বেচ্ছাচারিতার ঘটনাগুলো প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

কৃষকরা জানান, বাঁধ নির্মাণের শুরুতেই নীতিমালা অমান্য করে ধূলোমিশ্রিত বালিতে বাঁধ তৈরি করা হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগের পর কাজ বন্ধ করা হলেও পরবর্তীতে সেই বালির উপর মাটির প্রলেপ দিয়ে আবার কাজ শুরু হয়। স্থানীয় কৃষকরা আশঙ্কা করছেন, বর্ষার সময় পাহাড়ি ঢলে এই অস্থায়ী ও দুর্বল বাঁধ কোনোভাবেই ফসল রক্ষা করতে পারবে না। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি)-এর দায়িত্বশীলরা কীভাবে এই ভেল্কিবাজি চালাচ্ছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।

পাউবোর (বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড) ইঞ্জিনিয়ারদের দায়িত্ব ছিল এই প্রকল্পের গুণগত মান নিশ্চিত করা। তারা বালির বাঁধের কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও পিআইসি সংশ্লিষ্টরা সেই নির্দেশ অমান্য করে নিজেদের ইচ্ছেমতো কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। উপরন্তু, যেসব ব্যক্তিরা পিআইসির দায়িত্ব পেয়েছেন, তাদের অনেকেরই ফসল রক্ষা বাঁধসংলগ্ন কোনো জমি নেই। এ থেকেই বোঝা যায়, প্রকল্প বাস্তবায়নের পুরো প্রক্রিয়া কতটা স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মে আচ্ছন্ন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, পিআইসির অন্তরালে থাকা প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট পুরো প্রকল্পটি নিয়ন্ত্রণ করছে। ৮ লাখ ২২ হাজার টাকা বরাদ্দকৃত এই প্রকল্পে দায়সারা কাজ করে ফসল রক্ষা বাঁধের কার্যকারিতা নষ্ট করা হচ্ছে। ফলে শুধু অর্থ অপচয়ই হচ্ছে না, বরং কৃষকদের জীবন ও জীবিকার ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন, বালির বাঁধ নির্মাণ অব্যাহত থাকলে পিআইসি বাতিল করা হবে, একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে এ ধরনের হুঁশিয়ারি শুধু মুখে নয়, তাৎক্ষণিক বাস্তবায়নের মাধ্যমেই কার্যকর হতে পারে। পিআইসি বাতিল করে প্রকল্পটি নতুনভাবে নীতিমালানুযায়ী বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। পাশাপাশি পাউবোর ইঞ্জিনিয়ারদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

দেশের কৃষকদের জীবনযাত্রা ও ফসলের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। কিন্তু সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের এই প্রকল্পের ঘটনাগুলো দেখায়, কীভাবে সঠিক তদারকির অভাবে একটি মহৎ উদ্যোগ দুর্নীতিগ্রস্ত ও অকার্যকর হয়ে উঠতে পারে। প্রশাসনের উচিত এ ঘটনাকে দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচনা করে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। কৃষকের প্রতি আমাদের যে দায়িত্ব, তা পালন করা শুধু প্রশাসনের নয়, বরং পুরো সমাজের নৈতিক দায়িত্ব।

back to top