মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
‘শিক্ষা সবার জন্য’ কথাটি সবাই মুখে বললেও বর্তমানে শিক্ষাই যেন সবচেয়ে অনিশ্চিত বিষয়। মহামারি করোনার সময় থেকে সব সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি করানো শুরু হয়। বিশেষ করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমেই ভর্তি করানো হতো শিক্ষার্থীদের। আসন সংখ্যা অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীরাই পছন্দের বিদ্যালয়ে একটি সিট নিশ্চিত করতে পারতো।
অথচ আজ যেন মেধার চেয়ে ভাগ্যের উপরেই শিক্ষার্থীদের বেশি নির্ভর করতে হচ্ছে। কারণ এখন আর ভর্তি পরীক্ষা হয় না, মেধার লড়াই হয় না। হয় লটারি, হয় ভাগ্য পরীক্ষা। পঞ্চম শ্রেণির পর ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পরিবারগুলোর একটা বৃহৎ অংশের লক্ষ্য থাকে ছেলেমেয়েকে সরকারি বিদ্যালয়ে পড়াবে। শুধু শখের বশে বাবা-মা সন্তানকে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াতে চান না। তার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণটি হলো আর্থিক। বাংলাদেশের বেশিরভাগ পরিবার এখনো দারিদ্র্যসীমায় বাস করে। তার ওপর দ্রব্যমূল্যের চড়া বাজারে দিনদিন বেড়ে চলেছে বই-খাতা, কলমের দামও। পড়াশোনা তাই এখন ব্যয়বহুল। কিন্তু বাবা-মা তো নিজের আগে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবেন। তারা না খেয়ে হলেও সন্তানকে পড়ান। কিন্তু এই ধরনের মানুষগুলোর জীবনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লটারি পদ্ধতি যেন এসেছে অভিশাপ হয়ে।
অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী লটারি পদ্ধতিতে ভাগ্যের কাছে হেরে যায়। পছন্দের বিদ্যালয় তো দূরে, অনেকে তো কোন সরকারি বিদ্যালয়েই পড়ার সুযোগ পায় না। অনেক অভিভাবকের দাবি ভর্তি পরীক্ষা হলে তাদের সন্তান পছন্দের প্রতিষ্ঠানে চান্স পেতো। কিন্তু লটারির কারণে তাদের সন্তান কোন সরকারি প্রতিষ্ঠানেই চান্স পায়নি। আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তো তাদের সাধ্যের বাইরে। আর ভাগ্য পরীক্ষায় হেরে যাওয়ায় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর দরজাও তাদের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। অকালে ঝড়ে যায় কতগুলো মেধাবী মুখ।
তিক্ত হলেও সত্য, লটারির মাধ্যমে চান্স পাওয়া অনেক শিক্ষার্থী ভর্তিযুদ্ধে টিকতে পারবে না। তাদের মধ্যে এমন শিক্ষার্থীও আছে যারা চাইলেই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়তে পারবে। ভর্তি পরীক্ষা হলে অন্তত দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীরা সরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুযোগ পাবে। মেধাশক্তি ছাড়া কখনোই দেশের উন্নতি সম্ভব না। তাই আমাদের সবার মেধাশক্তিগুলোকে ঝরে যাওয়া থেকে বাঁচাতে হবে। আর তার জন্য লটারি পদ্ধতি বাতিল করে ভর্তি পরীক্ষা ফিরিয়ে আনাই উত্তম।
তাশিন জাহান হৃদি
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫
‘শিক্ষা সবার জন্য’ কথাটি সবাই মুখে বললেও বর্তমানে শিক্ষাই যেন সবচেয়ে অনিশ্চিত বিষয়। মহামারি করোনার সময় থেকে সব সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি করানো শুরু হয়। বিশেষ করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমেই ভর্তি করানো হতো শিক্ষার্থীদের। আসন সংখ্যা অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীরাই পছন্দের বিদ্যালয়ে একটি সিট নিশ্চিত করতে পারতো।
অথচ আজ যেন মেধার চেয়ে ভাগ্যের উপরেই শিক্ষার্থীদের বেশি নির্ভর করতে হচ্ছে। কারণ এখন আর ভর্তি পরীক্ষা হয় না, মেধার লড়াই হয় না। হয় লটারি, হয় ভাগ্য পরীক্ষা। পঞ্চম শ্রেণির পর ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পরিবারগুলোর একটা বৃহৎ অংশের লক্ষ্য থাকে ছেলেমেয়েকে সরকারি বিদ্যালয়ে পড়াবে। শুধু শখের বশে বাবা-মা সন্তানকে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াতে চান না। তার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণটি হলো আর্থিক। বাংলাদেশের বেশিরভাগ পরিবার এখনো দারিদ্র্যসীমায় বাস করে। তার ওপর দ্রব্যমূল্যের চড়া বাজারে দিনদিন বেড়ে চলেছে বই-খাতা, কলমের দামও। পড়াশোনা তাই এখন ব্যয়বহুল। কিন্তু বাবা-মা তো নিজের আগে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবেন। তারা না খেয়ে হলেও সন্তানকে পড়ান। কিন্তু এই ধরনের মানুষগুলোর জীবনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লটারি পদ্ধতি যেন এসেছে অভিশাপ হয়ে।
অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী লটারি পদ্ধতিতে ভাগ্যের কাছে হেরে যায়। পছন্দের বিদ্যালয় তো দূরে, অনেকে তো কোন সরকারি বিদ্যালয়েই পড়ার সুযোগ পায় না। অনেক অভিভাবকের দাবি ভর্তি পরীক্ষা হলে তাদের সন্তান পছন্দের প্রতিষ্ঠানে চান্স পেতো। কিন্তু লটারির কারণে তাদের সন্তান কোন সরকারি প্রতিষ্ঠানেই চান্স পায়নি। আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তো তাদের সাধ্যের বাইরে। আর ভাগ্য পরীক্ষায় হেরে যাওয়ায় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর দরজাও তাদের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। অকালে ঝড়ে যায় কতগুলো মেধাবী মুখ।
তিক্ত হলেও সত্য, লটারির মাধ্যমে চান্স পাওয়া অনেক শিক্ষার্থী ভর্তিযুদ্ধে টিকতে পারবে না। তাদের মধ্যে এমন শিক্ষার্থীও আছে যারা চাইলেই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়তে পারবে। ভর্তি পরীক্ষা হলে অন্তত দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীরা সরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুযোগ পাবে। মেধাশক্তি ছাড়া কখনোই দেশের উন্নতি সম্ভব না। তাই আমাদের সবার মেধাশক্তিগুলোকে ঝরে যাওয়া থেকে বাঁচাতে হবে। আর তার জন্য লটারি পদ্ধতি বাতিল করে ভর্তি পরীক্ষা ফিরিয়ে আনাই উত্তম।
তাশিন জাহান হৃদি
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়