রাইসা মেহজাবীন
ভালোমানের কালো বা ডার্ক চকলেটে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান। ডার্ক চকলেট দেহের জন্য উপকারী ফাইবার এবং খণিজ পদার্থে পরিপূর্ণ। এতে ৫০-৯০% কোকো সলিডস, কোকো মাখন এবং চিনি রয়েছে। ১ আউন্স সার্ভিং বা ২৮ গ্রাম ৮৫% ডার্ক চকলেটে রয়েছে, ক্যালরি- ১৩৬ কিলোক্যালোরি, ফ্যাট- ১৪ গ্রাম, প্রোটিন- ১ গ্রাম, ফাইবার- ২ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট- ১২ গ্রাম।
শুধু পুষ্টি উপাদানেই সীমাবদ্ধ নেই এই ডার্ক চকলেট। এটি গ্রহণে আমাদের দেহে বেশ কিছু উপকারিতা লক্ষ্য করা যায়। ডার্ক চকলেটের একটি উপকারী গুণ হলো হাই-ব্লাডপ্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ কমানো। ডার্ক চকলেটে রয়েছে ফ্ল্যাভনয়েডস নামক ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট। এটি শিরা-উপশিরার মধ্যে এক প্রকার উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এর ফলে শিরা-উপশিরার মধ্যে নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি হয় এবং এগুলোর পেশি নমনীয় হয়। ফলে রক্ত চলাচল দ্রুত হয় এবং হাই ব্লাড প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ কমে যায়।
ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন জার্নালের তথ্য জানাচ্ছে, সপ্তাহে ৫ বার ডার্ক চকলেট খেলে ৫৭ শতাংশ পরিমাণ হার্টের অসুখের সম্ভাবনা কমে যায়। ডার্ক চকলেটের নানা যৌগিক উপাদান লো-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন (LDL) রক্তে মিশতে বাধা দেয় এবং শিরা-উপশিরায় কোলেস্টেরল জমতে দেয় না। এতে হার্টের অসুখ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়।
ডার্ক চকলেটের উপকারিতা রয়েছে রক্তের চিনি বা ব্লাড শুগার এবং ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও। কোকোসমৃদ্ধ ডার্ক চকলেট দেহের গ্লকোজ নিয়ন্ত্রণে প্রভাব ফেলে। ডার্ক চকলেট দেহে ইনসুলিন উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে প্রভাব বিস্তার করে যা ডায়াবেটিক রোগ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
ডার্ক চকলেটে ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, কপারসহ অনেক উপাদান আছে। এসব উপাদান আমাদের দেহে কোলাজেন নামক এক ধরনের প্রোটিন তৈরী করে। এই কোলাজেন আমাদের দেহের ত্বক মোলায়েম ও স্বাস্থ্যবান রাখে। ডার্ক চকলেট আমাদের দেহে রোগ সৃষ্টিকারী মুক্ত বিচরণকারী কণাগুলো ধ্বংস করে এবং আমাদের দেহকে ক্যান্সারসহ নানা রোগ থেকে রক্ষা করে।
ডার্ক চকলেট, কাজুবাদাম এবং নির্ভেজাল মিষ্টি না মেশানো প্রাকৃতিক কোকো আমাদের দেহের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয়।
ডার্ক চকলেটে প্রচুর পরিমাণে সক্রিয় জৈব উপাদান রয়েছে, যা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এসব উপাদান হলো পলিফেনলস, ফ্ল্যাভানল ইত্যাদি। অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট কোষের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া রোধ করে।
কোকোয়া বীজের ফ্ল্যাভানল মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বাড়ায়; যা মানুষকে আরও উদ্দীপিত করে তোলে। শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে এটি অত্যন্ত কার্যকরী। গর্ভবতী মহিলাদের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
এটি বিষণ্নতা দূর করতে কাজ করে। মস্তিষ্কে ডোপামিন ক্ষরণ বাড়িয়ে শরীরে আনন্দের অনুভূতি তৈরি করে। দিনে ৪০ গ্রাম ডার্ক চকলেট খেলে দুই সপ্তাহের মধ্যে স্ট্রেস হরমোন কমে যায়।
চকলেট কেনার সময় সবচেয়ে কম মিষ্টিটি কিনতে হবে। সর্বোচ্চ মাত্রার কোকোয়াসমৃদ্ধ চকলেটই ভালো। সম্ভব হলে অরগানিক কিনা, সেটাও দেখে নিতে হবে। চকলেটের লেবেলে যদি লেখা থাকে ‘প্রসেসড উইথ অ্যালকালি’ তবে তা পরিহার করতে হবে। এই পদ্ধতিতে তৈরি চকলেটে “কোকোয়া”র প্রাকৃতিক ফ্ল্যাভানল অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ভেঙে ফেলা হয়। কোকোয়া বাটারবিহীন চকলেট কিনুন।
পরিমিত মাত্রায় চকলেট খাওয়া ভালো। সপ্তাহে ভালোমানের অল্প চকলেট খেলেই উপকারিতা পাবেন এবং তা অবশ্যই ডার্ক চকলেট।
[লেখক : প্রাবন্ধিক]
রাইসা মেহজাবীন
মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৩
ভালোমানের কালো বা ডার্ক চকলেটে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান। ডার্ক চকলেট দেহের জন্য উপকারী ফাইবার এবং খণিজ পদার্থে পরিপূর্ণ। এতে ৫০-৯০% কোকো সলিডস, কোকো মাখন এবং চিনি রয়েছে। ১ আউন্স সার্ভিং বা ২৮ গ্রাম ৮৫% ডার্ক চকলেটে রয়েছে, ক্যালরি- ১৩৬ কিলোক্যালোরি, ফ্যাট- ১৪ গ্রাম, প্রোটিন- ১ গ্রাম, ফাইবার- ২ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট- ১২ গ্রাম।
শুধু পুষ্টি উপাদানেই সীমাবদ্ধ নেই এই ডার্ক চকলেট। এটি গ্রহণে আমাদের দেহে বেশ কিছু উপকারিতা লক্ষ্য করা যায়। ডার্ক চকলেটের একটি উপকারী গুণ হলো হাই-ব্লাডপ্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ কমানো। ডার্ক চকলেটে রয়েছে ফ্ল্যাভনয়েডস নামক ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট। এটি শিরা-উপশিরার মধ্যে এক প্রকার উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এর ফলে শিরা-উপশিরার মধ্যে নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি হয় এবং এগুলোর পেশি নমনীয় হয়। ফলে রক্ত চলাচল দ্রুত হয় এবং হাই ব্লাড প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ কমে যায়।
ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন জার্নালের তথ্য জানাচ্ছে, সপ্তাহে ৫ বার ডার্ক চকলেট খেলে ৫৭ শতাংশ পরিমাণ হার্টের অসুখের সম্ভাবনা কমে যায়। ডার্ক চকলেটের নানা যৌগিক উপাদান লো-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন (LDL) রক্তে মিশতে বাধা দেয় এবং শিরা-উপশিরায় কোলেস্টেরল জমতে দেয় না। এতে হার্টের অসুখ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়।
ডার্ক চকলেটের উপকারিতা রয়েছে রক্তের চিনি বা ব্লাড শুগার এবং ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও। কোকোসমৃদ্ধ ডার্ক চকলেট দেহের গ্লকোজ নিয়ন্ত্রণে প্রভাব ফেলে। ডার্ক চকলেট দেহে ইনসুলিন উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে প্রভাব বিস্তার করে যা ডায়াবেটিক রোগ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
ডার্ক চকলেটে ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, কপারসহ অনেক উপাদান আছে। এসব উপাদান আমাদের দেহে কোলাজেন নামক এক ধরনের প্রোটিন তৈরী করে। এই কোলাজেন আমাদের দেহের ত্বক মোলায়েম ও স্বাস্থ্যবান রাখে। ডার্ক চকলেট আমাদের দেহে রোগ সৃষ্টিকারী মুক্ত বিচরণকারী কণাগুলো ধ্বংস করে এবং আমাদের দেহকে ক্যান্সারসহ নানা রোগ থেকে রক্ষা করে।
ডার্ক চকলেট, কাজুবাদাম এবং নির্ভেজাল মিষ্টি না মেশানো প্রাকৃতিক কোকো আমাদের দেহের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয়।
ডার্ক চকলেটে প্রচুর পরিমাণে সক্রিয় জৈব উপাদান রয়েছে, যা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এসব উপাদান হলো পলিফেনলস, ফ্ল্যাভানল ইত্যাদি। অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট কোষের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া রোধ করে।
কোকোয়া বীজের ফ্ল্যাভানল মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বাড়ায়; যা মানুষকে আরও উদ্দীপিত করে তোলে। শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে এটি অত্যন্ত কার্যকরী। গর্ভবতী মহিলাদের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
এটি বিষণ্নতা দূর করতে কাজ করে। মস্তিষ্কে ডোপামিন ক্ষরণ বাড়িয়ে শরীরে আনন্দের অনুভূতি তৈরি করে। দিনে ৪০ গ্রাম ডার্ক চকলেট খেলে দুই সপ্তাহের মধ্যে স্ট্রেস হরমোন কমে যায়।
চকলেট কেনার সময় সবচেয়ে কম মিষ্টিটি কিনতে হবে। সর্বোচ্চ মাত্রার কোকোয়াসমৃদ্ধ চকলেটই ভালো। সম্ভব হলে অরগানিক কিনা, সেটাও দেখে নিতে হবে। চকলেটের লেবেলে যদি লেখা থাকে ‘প্রসেসড উইথ অ্যালকালি’ তবে তা পরিহার করতে হবে। এই পদ্ধতিতে তৈরি চকলেটে “কোকোয়া”র প্রাকৃতিক ফ্ল্যাভানল অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ভেঙে ফেলা হয়। কোকোয়া বাটারবিহীন চকলেট কিনুন।
পরিমিত মাত্রায় চকলেট খাওয়া ভালো। সপ্তাহে ভালোমানের অল্প চকলেট খেলেই উপকারিতা পাবেন এবং তা অবশ্যই ডার্ক চকলেট।
[লেখক : প্রাবন্ধিক]