বরকত আলী
হিমালয়ের কন্যা নামে খ্যাত সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। এ জেলায় পাঁচটি গড়ের স্পষ্ট অবস্থান রয়েছে; ধারণা করা হয় এই পাঁচ গড় থেকেই পঞ্চগড় নামকরণ করা হয়। রংপুর বিভাগের এই জেলাটি ১৯৮৪ সালে মহকুমা থেকে জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের উত্তরে পঞ্চগড় জেলা অবস্থিত এবং জেলাটির তিন দিকেই ভারতের দীর্ঘ সীমান্ত দ্বারা আবদ্ধ।
মুক্তিযুদ্ধে এ জেলার বর্তমান চার থানা পাকিস্তান হানাদার দখলে নেয়। কিন্তু পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়াগামী মহাসড়কে চাওয়াই নদীর উপরের সেতু (অমরখানা ব্রিজ) উড়িয়ে দেওয়ায় তারা তেঁতুলিয়ায় ঢুকতে পারেনি। ফলে মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়ে তেঁতুলিয়া মুক্ত ছিল। অস্থায়ী সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সভা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়াতেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মুক্তাঞ্চল হিসেবে সেই সময় তেঁতুলিয়া সব কর্মকা-ের জন্য স্বাধীনতার তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। তাই ঐতিহাসিক ও কৌশলগতভাবে জেলাটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে এবং পঞ্চগড় একটি সম্ভাবনাময় ও উন্নয়নশীল জেলা।
কাঞ্চনজঙ্ঘা বিশ্বের তৃতীয় সর্ব্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। কাঞ্চনজঙ্ঘার রাজকীয় চূড়া ভারতের সিকিম ও নেপাল সিমান্তে অবস্থিত; যা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার দূরে হলেও শীতের শুরুতে যখন আকাশ মেঘ ও কুয়াশামুক্ত থাকে; তখন পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে খালি চোখেই এই পর্বতশৃঙ্গের অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করা যায়। প্রতি বছর নভেম্বরের শুরুর দিকে ভেসে উঠে কাঞ্চনজঙ্ঘার বাহারি রূপ। পর্যটক ও প্রকৃতিপ্রেমীরা এটি দেখতে পঞ্চগড়ের মহানন্দা নদীর তীরে তেঁতুলিয়ার ডাকবাংলোতে ভিড় জমায়। বলা যায়, কাঞ্চনজঙ্ঘা খুব কাছ থেকে দেখার জন্য এটাই উত্তম জায়গা। শুধুমাত্র কাঞ্চনজঙ্ঘার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রঙের প্রতিচ্ছবি দেখার ইচ্ছা থেকেই সূর্যোদয় থেকে শুরু করে সুর্যাস্ত পর্যন্ত পর্যটকদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো।
পঞ্চগড় জেলা একটি চিত্তাকর্ষক এবং বৈচিত্র্যময় স্থান। এই জেলার মহানন্দা ও করতোয়াসহ প্রভৃতি নদী থেকে মানুষ দল বেঁধে বিশেষ উপায়ে মাছ ধরার মতো করে পানি ছেঁকে উন্নতমানের নুড়ি পাথর সংগ্রহ করে। এই দৃশ্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন জায়গায় হরেক রকমের পাথর পর্যটকদের এক অন্য জগতে নিয়ে যায়। আর বাংলাদেশের একমাত্র রকস মিউজিয়াম (পাথরের জাদুঘর) এই পঞ্চগড়েই অবস্থিত।
প্রকৃতিপ্রেমীরা নিজ চোখ চা বাগান দেখতে মৌলভীবাজার বা সিলেট ভ্রমণে বেরিয়ে পড়ে তবে একমাত্র সমতল ভূমির চা বাগান রয়েছে পঞ্চগড় জেলায়। আবার দেশের একমাত্র জেলা হিসেবে এটি অর্গানিক চা উৎপাদন করে। এখন বাণিজ্যিকভাবে পঞ্চগড়ের অনেক জায়গায় চা উৎপাদন করা হচ্ছে। বলা যায়, এই জেলা বনায়ন, নদী এবং হ্রদসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক আকর্ষণের আবাসস্থল। চাওয়াই ও করতোয়া নদীর তীরে রয়েছে সরকারি বন; এটি হাইকিং ও ক্যাম্পিং করার জন্য একটি জনপ্রিয় জায়গা।
বাংলাবান্ধা দেশের সর্ব উত্তরের জায়গা এবং দেশের অন্যতম স্থলবন্দর, যা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে অবস্থিত। এটিই দেশের একমাত্র স্থলবন্দর যেটি বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান চারটি দেশকে পণ্যসামগ্রী আদান-প্রদানের সুবিধা দিয়ে থাকে। বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে সপ্তাহের ছয় দিন বিকেলে একটি নির্দিষ্ট সময়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে জয়েন্ট রি ট্রিট শ্রীমনি বা যৌথ বিরতি অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় যা দর্শকদের মুগ্ধ করে। বাংলাবান্ধা দেশের উত্তরের প্রবেশদার; তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক তাৎপর্যের জন্যই এটি অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য।
পঞ্চগঙের রয়েছে একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও এই জেলা সমৃদ্ধ; জেলাটি একসময় কামরূপের প্রাচীন রাজ্যের অংশ ছিল। শুধু তাই নয়, পঞ্চগড় মুঘল সাম্রাজ্যের-ও অংশ ছিল; যা ১৬ শতকে প্রথম নথিভুক্তি হয়। মুঘলরা সে সময় এই অঞ্চলে ভিতরগড়, হোসাইনগড় এবং মিরগড়সহ বেশ কয়েকটি দুর্গ নির্মাণ করেছিল। পরে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৮ শতকে পঞ্চগড় জয় করেছিল এবং রাজনগড় ও দেবেনগড়সহ এ অঞ্চলে দুর্গ নির্মাণ অব্যাহত রেখেছিল। এছাড়াও তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো, আটোয়ারী কেল্লাপুরাতন দুর্গ, বারো আউলিয়ার মাজার, মির্জাপুর শাহী মসজিদ এবং গোলোকধাম মন্দিরসহ অনেক ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা কালের সাক্ষী হয়ে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে; যা পর্যটকদের অভিভূত করে।
পঞ্চগড় জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৌশলগত অবস্থান এবং এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই একটি পর্যটন সম্ভাবনাময় জেলা। ইতোমধ্যেই এই জেলাটি পর্যটকদের কাছে মুগ্ধতা ছড়িয়ে সুনাম কুড়িয়েছে তবে তা যথেষ্ট নয়। ভ্রমণ পিপাসুদের আকৃষ্ট করতে আরও নতুনভাবে পিকনিক স্পট, আবাসিক হোটেল, মোটল, পুরাতন স্থাপনার সংস্কার ও নতুন করে দৃষ্টিনন্দনের জনয কাজ করতে হবে। পর্যটকদের নিরাপদে ঘোরাঘুরি করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে। পঞ্চগড় জেলা পর্যটন কেন্দ্রে এগিয়ে গেলে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে জনসমাগম হবে; যা পঞ্চগড় জেলার পাশাপাশি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি এ বিষয়ে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে এবং কাজ করতে হবে।
[লেখক : শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, দিনাজপুর সরকারি কলেজ]
বরকত আলী
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪
হিমালয়ের কন্যা নামে খ্যাত সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। এ জেলায় পাঁচটি গড়ের স্পষ্ট অবস্থান রয়েছে; ধারণা করা হয় এই পাঁচ গড় থেকেই পঞ্চগড় নামকরণ করা হয়। রংপুর বিভাগের এই জেলাটি ১৯৮৪ সালে মহকুমা থেকে জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের উত্তরে পঞ্চগড় জেলা অবস্থিত এবং জেলাটির তিন দিকেই ভারতের দীর্ঘ সীমান্ত দ্বারা আবদ্ধ।
মুক্তিযুদ্ধে এ জেলার বর্তমান চার থানা পাকিস্তান হানাদার দখলে নেয়। কিন্তু পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়াগামী মহাসড়কে চাওয়াই নদীর উপরের সেতু (অমরখানা ব্রিজ) উড়িয়ে দেওয়ায় তারা তেঁতুলিয়ায় ঢুকতে পারেনি। ফলে মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়ে তেঁতুলিয়া মুক্ত ছিল। অস্থায়ী সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সভা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়াতেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মুক্তাঞ্চল হিসেবে সেই সময় তেঁতুলিয়া সব কর্মকা-ের জন্য স্বাধীনতার তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। তাই ঐতিহাসিক ও কৌশলগতভাবে জেলাটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে এবং পঞ্চগড় একটি সম্ভাবনাময় ও উন্নয়নশীল জেলা।
কাঞ্চনজঙ্ঘা বিশ্বের তৃতীয় সর্ব্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। কাঞ্চনজঙ্ঘার রাজকীয় চূড়া ভারতের সিকিম ও নেপাল সিমান্তে অবস্থিত; যা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার দূরে হলেও শীতের শুরুতে যখন আকাশ মেঘ ও কুয়াশামুক্ত থাকে; তখন পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে খালি চোখেই এই পর্বতশৃঙ্গের অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করা যায়। প্রতি বছর নভেম্বরের শুরুর দিকে ভেসে উঠে কাঞ্চনজঙ্ঘার বাহারি রূপ। পর্যটক ও প্রকৃতিপ্রেমীরা এটি দেখতে পঞ্চগড়ের মহানন্দা নদীর তীরে তেঁতুলিয়ার ডাকবাংলোতে ভিড় জমায়। বলা যায়, কাঞ্চনজঙ্ঘা খুব কাছ থেকে দেখার জন্য এটাই উত্তম জায়গা। শুধুমাত্র কাঞ্চনজঙ্ঘার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রঙের প্রতিচ্ছবি দেখার ইচ্ছা থেকেই সূর্যোদয় থেকে শুরু করে সুর্যাস্ত পর্যন্ত পর্যটকদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো।
পঞ্চগড় জেলা একটি চিত্তাকর্ষক এবং বৈচিত্র্যময় স্থান। এই জেলার মহানন্দা ও করতোয়াসহ প্রভৃতি নদী থেকে মানুষ দল বেঁধে বিশেষ উপায়ে মাছ ধরার মতো করে পানি ছেঁকে উন্নতমানের নুড়ি পাথর সংগ্রহ করে। এই দৃশ্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন জায়গায় হরেক রকমের পাথর পর্যটকদের এক অন্য জগতে নিয়ে যায়। আর বাংলাদেশের একমাত্র রকস মিউজিয়াম (পাথরের জাদুঘর) এই পঞ্চগড়েই অবস্থিত।
প্রকৃতিপ্রেমীরা নিজ চোখ চা বাগান দেখতে মৌলভীবাজার বা সিলেট ভ্রমণে বেরিয়ে পড়ে তবে একমাত্র সমতল ভূমির চা বাগান রয়েছে পঞ্চগড় জেলায়। আবার দেশের একমাত্র জেলা হিসেবে এটি অর্গানিক চা উৎপাদন করে। এখন বাণিজ্যিকভাবে পঞ্চগড়ের অনেক জায়গায় চা উৎপাদন করা হচ্ছে। বলা যায়, এই জেলা বনায়ন, নদী এবং হ্রদসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক আকর্ষণের আবাসস্থল। চাওয়াই ও করতোয়া নদীর তীরে রয়েছে সরকারি বন; এটি হাইকিং ও ক্যাম্পিং করার জন্য একটি জনপ্রিয় জায়গা।
বাংলাবান্ধা দেশের সর্ব উত্তরের জায়গা এবং দেশের অন্যতম স্থলবন্দর, যা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে অবস্থিত। এটিই দেশের একমাত্র স্থলবন্দর যেটি বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান চারটি দেশকে পণ্যসামগ্রী আদান-প্রদানের সুবিধা দিয়ে থাকে। বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে সপ্তাহের ছয় দিন বিকেলে একটি নির্দিষ্ট সময়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে জয়েন্ট রি ট্রিট শ্রীমনি বা যৌথ বিরতি অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় যা দর্শকদের মুগ্ধ করে। বাংলাবান্ধা দেশের উত্তরের প্রবেশদার; তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক তাৎপর্যের জন্যই এটি অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য।
পঞ্চগঙের রয়েছে একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও এই জেলা সমৃদ্ধ; জেলাটি একসময় কামরূপের প্রাচীন রাজ্যের অংশ ছিল। শুধু তাই নয়, পঞ্চগড় মুঘল সাম্রাজ্যের-ও অংশ ছিল; যা ১৬ শতকে প্রথম নথিভুক্তি হয়। মুঘলরা সে সময় এই অঞ্চলে ভিতরগড়, হোসাইনগড় এবং মিরগড়সহ বেশ কয়েকটি দুর্গ নির্মাণ করেছিল। পরে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৮ শতকে পঞ্চগড় জয় করেছিল এবং রাজনগড় ও দেবেনগড়সহ এ অঞ্চলে দুর্গ নির্মাণ অব্যাহত রেখেছিল। এছাড়াও তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো, আটোয়ারী কেল্লাপুরাতন দুর্গ, বারো আউলিয়ার মাজার, মির্জাপুর শাহী মসজিদ এবং গোলোকধাম মন্দিরসহ অনেক ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা কালের সাক্ষী হয়ে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে; যা পর্যটকদের অভিভূত করে।
পঞ্চগড় জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৌশলগত অবস্থান এবং এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই একটি পর্যটন সম্ভাবনাময় জেলা। ইতোমধ্যেই এই জেলাটি পর্যটকদের কাছে মুগ্ধতা ছড়িয়ে সুনাম কুড়িয়েছে তবে তা যথেষ্ট নয়। ভ্রমণ পিপাসুদের আকৃষ্ট করতে আরও নতুনভাবে পিকনিক স্পট, আবাসিক হোটেল, মোটল, পুরাতন স্থাপনার সংস্কার ও নতুন করে দৃষ্টিনন্দনের জনয কাজ করতে হবে। পর্যটকদের নিরাপদে ঘোরাঘুরি করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে। পঞ্চগড় জেলা পর্যটন কেন্দ্রে এগিয়ে গেলে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে জনসমাগম হবে; যা পঞ্চগড় জেলার পাশাপাশি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি এ বিষয়ে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে এবং কাজ করতে হবে।
[লেখক : শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, দিনাজপুর সরকারি কলেজ]