alt

উপ-সম্পাদকীয়

পুলিশ কবে পুলিশ হবে

জাঁ-নেসার ওসমান

: শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

“কি রে ভাই, এইডা আবার কি কন, পুলিশ কবে পুলিশ হবে? পুলিশের চাকরিতে জয়েন করলেই, পুলিশ! ওগো আবার, পুলিশ কবে পুলিশ হবে, এই সব লাগে না। পুলিশে জয়েন মানেই পুলিশ!”

“কিন্তু ভাই সে কথা তুমি বললে তো হবে না। সত্যিকারের আর্ন্তজাতিক মানের পুলিশ হতে গেলে তোমাকে পুলিশ হতে হবে।”

“আরে ভাই সারা পৃথিবীতে পুলিশ মানেই পুলিশ। গরুর বাচ্চা যেমন জন্মালেই গরু। ঠিক তেমনি পুলিশে জয়েন মানেই পুলিশ।”

“ আচ্ছা বল দেখি পুলিশ বানান কি?”

“আন্নে আঁরে কি নোয়াখাইল্লা পাইছেননি যে, পুলিশ বানান হারতাম না!”

“ আরে মনু চ্যেত কা! এই প্রশ্নের মইধ্যে একটা রহস্য আছে তাই তোমারে পুলিশ বানান জিগাইলাম।”

“ পুলিশ বানান ইংরেজিতে হলো; পি ও এল আই সি ই, আর এই পুলিশের অর্থ হচ্ছে পি তে, পোলাইট, মানে নম্র, ও তে, ওবেডিয়েন্ট, মানে, বড়দের সম্মান করে চলে, আর এল”

“থাক থাক, তোমাকে আর বাংলাদেশি ভার্সনটা শোনাতে হবে না। সারা পৃথিবীতে পি ও এল আই সি ই, পুলিশ, মানে হচ্ছে, পাবলিক অফিসার ফর লিগ্যাল ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড ক্রিমিন্যাল ইমার্জেন্সিস। কিন্তু তোর দেশে কোন বড় অফিসার তার সুবিধামতো মনগড়া এক মানে, বাংলাদেশে ছড়িয়েছে।”

“তাহলে এতো দিন যে, পোলাইট, ওবেডিয়েন্ট, ইন্টেলিজেন্ট”

“আরে এসব ভুয়া, মানে কারো মনগড়া বা বাংলাদেশি ভার্সন বলতে পারিস।”

“ না না, এটা কি বলেন আমাদের বাংলাদেশের পুলিশ কি সারা পৃথিবী থেকে আলাদা!!”

“তা, একরকম তুই বলতে পারিস আমরা মানে আমাদের পুলিশ, পুরো বিশ্ব থেকে আলাদা। যেমন ধর তোদের পাসপোর্ট সরবরাহের আগে পুলিশ ভেরিফিকেশন্স বা তদন্ত হয় না, যে তোর আগে কোনো পাসপোর্ট ছিল কিনা বা বর্তমানে কোনো পাসপোর্ট আছে কিনা? এইসব দ্যেখার পর তোর ক্রিমিনাল কোনো রের্কড আছে কিনা, এইসব দেখে, যাচাইবাছাই করেই, তারপর তোর নামে পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়, মানে সরবরাহ করা হয়। কথাটা ঠিক কিনা?”

“কথাটা ঠিক, হানড্রেড পার্সেন্ট ঠিক।”

“তাহলে তোর বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আইজিপি জনাব, বেনজীরের পনেরটা পাসপোর্ট কি করে ইস্যু করা হয়, মানে সরবরাহ করা হয়!!”

“হেঁঃ হেঁঃ হেঁঃ চাকরির একটা মায়া আছে না, বৌ-পোলা, মাইয়া আছে না!!”

“তাহলে বল আমেরিকায় বা সুইজারল্যান্ডের পুলিশ প্রধান কি নিজের একই নামে পনেরটা পাসপোর্ট বানাতে পারবে??”

“পনেরটা পাসপোর্ট!! হাগল নি কোনো। শালা এক পাসপোর্ট থাকতে আর এক পাসপোর্ট চাইলেই তো জেলে যাইবো!!”

“তাহলে ওগো পুলিশের কি চাকরির মায়া নাই? নাকি ওগো পুলিশের বৌ-পোলা, মাইয়া নাই??”

“তাতো আছে।”

“ শোন তোকে একটা কাল্পনিক গল্প শোনাই, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পুলিশ ইন্সেপেক্টার সাজ্জাদ, টেকনিক্যালের মোড়ে ডিউটি করছে। এমন সময় বেলাল মিয়া রাস্তার ভাঙা ডিভাইডার দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়েছে, রাতের অন্ধকারে ভালো দ্যেখাও যায় না। ব্যাস কইতে খালি দেরি, লগে লগে পুলিশ ইন্সেপেক্টার সাজ্জাদ (কাল্পনিক নাম) তার ডিউটির পরাকাষ্টা দেখিয়ে, বেলাল মিয়াকে তিন হাজার টাকা ফাইন করল। এর মধ্যে দেখা গেল রাস্তার ওই ভাঙা ডিভাইডার দিয়ে অন্য গাড়ি ঘুরিয়ে চলে যাচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পুলিশ ইন্সেপেক্টার সাজ্জাদ কে যখন বলা হলো ওই যে, অন্য সব গাড়ি ঘুরছে? পুলিশ ইন্সেপেক্টার সাজ্জাদ, তখন মুচকি হেসে বলল, শুনলেন না, টেলিফোনে বড় স্যার বলছে, আজকে এই টেকনিক্যালের মোড় থেকে মিনিমাম তিন লাখ টাকা কালেক্ট করতে হবে। মানে আমার টার্গেট পুরা করতে হবে। এখন কাকে কি বলবি বল!! অথচ এই তোর বাঙালি

পুলিশ ভাই তোর দেশেরই সন্তান। তুই যখন ঈদের নামাজ পড়িস তখন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পুলিশ ইন্সেপেক্টার সাজ্জাদের মতো কাউকে না কাউকে তার নামাজ বাদ দিয়ে তোর ডিউটি করতে হয়। শুধু তোর নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে।

আবার এই পুলিশ ভাইটি, ডিউটির কারণে, তার প্রথম সন্তানের জন্মের সময় স্ত্রীর পাশে থাকতে পারেননি, এমন ঘটনাও ঘটে।”

“কিন্তু ভাই এই কয়দিন আগে রায়ট কার থেকে বাংলাদেশের ছেলের অর্ধমৃত দেহ কি ঘৃণাভরে আপনার পুলিশ রাস্তায় ফেলে দিল, তখন এই পুলিশের বিবেক বলে কি কিছু ছিল??”

“কিন্তু তোরা যে ওই পুলিশ ভাইদের কৃতকর্মের জন্য পুড়িয়ে মারলি, পিটিয়ে মারলি সেটাও কি ঠিক হয়েছে??”

“ইট মারলে ভাই পাটকেলটি খাইতে হবে।”

“তাহলে এর সমাধান কি, তোরা খালি আজীবন ইট আর পাটকেল নিয়ে নিজেরা নিজেরা মারামারি করবি!! বাঙালি হয়ে বাঙালি মারবি!! এর শেষ কোথায়!!?”

“ স্যার একটা গল্প কোই, তায়লেই বুঝবেন এর শেষ কোথায়?”

“ বল বল জলদি বল, তাহলেও যদি এই মারামারি বন্ধ না হোক অন্ততঃ সমাধানটা জানতে পারি। বল বল জলদি বল।”

“গল্পটা হচ্ছে এই রকম যে, এক লোক এক ঘুটঘুটা অন্ধকার টানেল মানে গুহার মধ্যে হাঁটছে। এমন অন্ধকার যে এক হাত দূরের কোনো কিছুই ঠাহর করতে পারছে না। লোকটার কেমন এক আধিভৌতিক রহস্য গল্পের মতো গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল। এই সময় দূর থেকে একটা কুকুরের কান্না ভেসে এলো। আউউউ...আঊঊ... শীতের রাতেও লোকটা ঘামছে। এমন সময় দেখল দূরে একটা আলোকবর্তিকা। লোকটার আনন্দ আর কে দেখে। যাক বাবা শেষমেশ সৃষ্টিকর্তা ওর জন্য গুহার শেষ মাথায় আলোর ঝলকানি এনেছেন এবার ওর সব মুশকিল আসান হবে, আঁধার পেরিয়ে ও আলোতে পৌঁছাবে। ও দ্রুত ওই আলোর দিকে হাঁটতে থাকলো।”

“জলদি বল তারপর লোকটার কি হলো?”

“ লোকটা ঠিক করে বুঝে ওঠার আগেই দেখলো, যে ওই আলোটা একটা ট্রেনের ফ্লাড লাইট, তখন বড্ড দেরি হয়েছে ও সরার আগেই রেল গাড়িটা ঝমাঝম শব্দে ওর শরীরের উপর দিয়ে সিটি বাজাতে বাজাতে চলে গেল...”

“মানে কী...”

[লেখক : চলচ্চিত্রকার ]

ছবি

বিজয় সংগ্রামের সূচনার সন্ধানে

মানসম্মত কনটেন্ট ও টিআরপির দ্বৈরথ

জিকা ভাইরাস রোধে প্রয়োজন সচেতনতা

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক

স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবার গুরুত্ব

ঢাকার বাতাস বিষাক্ত কেন

চরের কৃষি ও কৃষকের জীবন

নিম্ন আয়ের মানুষ ভালো নাই

সবার আগে নিজেকে পরিবর্তন করা দরকার

জীবন ফিরে আসুক বাংলার নদীগুলোতে

কান্দন সরেন হত্যা ও ভূমি বিরোধ কি এড়ানো যেত না

পরিবারতত্ত্ব ও পরিবারতন্ত্র: রাষ্ট্র বিনির্মাণে সমস্যা কোথায়?

মানবাধিকার দিবস : মানুষের অধিকার নিয়ে কেন এত কথা?

আমলাতান্ত্রিক স্বচ্ছতা : সংস্কারের পথে নাকি পুনরাবৃত্তি?

খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কিছু কথা

ছবি

বেগম রোকেয়া : নারী জাগরণের অগ্রদূত

দুর্নীতির সর্বগ্রাসী বিস্তার বন্ধ করতে হবে

মা তোর বদনখানি মলিন হলে

ব্যবসায়ী নেতৃত্বশূন্য ই-ক্যাব

মূল্যস্ফীতির হিসাব নির্ণয়ে নতুন পদ্ধতির প্রাসঙ্গিকতা

মানুষ অন্তর্বর্তী সরকারের সফলতা চায়

সবার উপরে মানুষ সত্য

এইচএসসিতে ইংরেজিতে ফল বিপর্যয় কেন, করণীয় কী

ছবি

নিরাপদ এবং সুষম পরিবেশের পরিকল্পনা

ফার্মেসি শিক্ষা ও পেশার সংস্কার প্রয়োজন

মশার কয়েলের প্রভাব : জনস্বাস্থ্যের অদৃশ্য হুমকি

“আইনুন কাইনুন সর্বনেশে...”

কুষ্ঠজনিত প্রতিবন্ধকতার ঝুঁকি ও করণীয়

এই সর্বনাশের দায় কার?

জ্ঞানই শক্তি

বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস : জোর দিতে হবে প্রতিরোধে

ঋণ ব্যবস্থা : তেলা মাথায় ঢালো তেল, ন্যাড়া মাথায় ভাঙো বেল

বিচারকের ওপর হামলা কেন

বৈশ্বিক নিষ্ক্রিয়তার কবলে রোহিঙ্গা ইস্যু

আন্তর্জাতিক দাসপ্রথা বিলোপ দিবস

বৈষম্য ঘোচাতে চাই একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়

tab

উপ-সম্পাদকীয়

পুলিশ কবে পুলিশ হবে

জাঁ-নেসার ওসমান

শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

“কি রে ভাই, এইডা আবার কি কন, পুলিশ কবে পুলিশ হবে? পুলিশের চাকরিতে জয়েন করলেই, পুলিশ! ওগো আবার, পুলিশ কবে পুলিশ হবে, এই সব লাগে না। পুলিশে জয়েন মানেই পুলিশ!”

“কিন্তু ভাই সে কথা তুমি বললে তো হবে না। সত্যিকারের আর্ন্তজাতিক মানের পুলিশ হতে গেলে তোমাকে পুলিশ হতে হবে।”

“আরে ভাই সারা পৃথিবীতে পুলিশ মানেই পুলিশ। গরুর বাচ্চা যেমন জন্মালেই গরু। ঠিক তেমনি পুলিশে জয়েন মানেই পুলিশ।”

“ আচ্ছা বল দেখি পুলিশ বানান কি?”

“আন্নে আঁরে কি নোয়াখাইল্লা পাইছেননি যে, পুলিশ বানান হারতাম না!”

“ আরে মনু চ্যেত কা! এই প্রশ্নের মইধ্যে একটা রহস্য আছে তাই তোমারে পুলিশ বানান জিগাইলাম।”

“ পুলিশ বানান ইংরেজিতে হলো; পি ও এল আই সি ই, আর এই পুলিশের অর্থ হচ্ছে পি তে, পোলাইট, মানে নম্র, ও তে, ওবেডিয়েন্ট, মানে, বড়দের সম্মান করে চলে, আর এল”

“থাক থাক, তোমাকে আর বাংলাদেশি ভার্সনটা শোনাতে হবে না। সারা পৃথিবীতে পি ও এল আই সি ই, পুলিশ, মানে হচ্ছে, পাবলিক অফিসার ফর লিগ্যাল ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড ক্রিমিন্যাল ইমার্জেন্সিস। কিন্তু তোর দেশে কোন বড় অফিসার তার সুবিধামতো মনগড়া এক মানে, বাংলাদেশে ছড়িয়েছে।”

“তাহলে এতো দিন যে, পোলাইট, ওবেডিয়েন্ট, ইন্টেলিজেন্ট”

“আরে এসব ভুয়া, মানে কারো মনগড়া বা বাংলাদেশি ভার্সন বলতে পারিস।”

“ না না, এটা কি বলেন আমাদের বাংলাদেশের পুলিশ কি সারা পৃথিবী থেকে আলাদা!!”

“তা, একরকম তুই বলতে পারিস আমরা মানে আমাদের পুলিশ, পুরো বিশ্ব থেকে আলাদা। যেমন ধর তোদের পাসপোর্ট সরবরাহের আগে পুলিশ ভেরিফিকেশন্স বা তদন্ত হয় না, যে তোর আগে কোনো পাসপোর্ট ছিল কিনা বা বর্তমানে কোনো পাসপোর্ট আছে কিনা? এইসব দ্যেখার পর তোর ক্রিমিনাল কোনো রের্কড আছে কিনা, এইসব দেখে, যাচাইবাছাই করেই, তারপর তোর নামে পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়, মানে সরবরাহ করা হয়। কথাটা ঠিক কিনা?”

“কথাটা ঠিক, হানড্রেড পার্সেন্ট ঠিক।”

“তাহলে তোর বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আইজিপি জনাব, বেনজীরের পনেরটা পাসপোর্ট কি করে ইস্যু করা হয়, মানে সরবরাহ করা হয়!!”

“হেঁঃ হেঁঃ হেঁঃ চাকরির একটা মায়া আছে না, বৌ-পোলা, মাইয়া আছে না!!”

“তাহলে বল আমেরিকায় বা সুইজারল্যান্ডের পুলিশ প্রধান কি নিজের একই নামে পনেরটা পাসপোর্ট বানাতে পারবে??”

“পনেরটা পাসপোর্ট!! হাগল নি কোনো। শালা এক পাসপোর্ট থাকতে আর এক পাসপোর্ট চাইলেই তো জেলে যাইবো!!”

“তাহলে ওগো পুলিশের কি চাকরির মায়া নাই? নাকি ওগো পুলিশের বৌ-পোলা, মাইয়া নাই??”

“তাতো আছে।”

“ শোন তোকে একটা কাল্পনিক গল্প শোনাই, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পুলিশ ইন্সেপেক্টার সাজ্জাদ, টেকনিক্যালের মোড়ে ডিউটি করছে। এমন সময় বেলাল মিয়া রাস্তার ভাঙা ডিভাইডার দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়েছে, রাতের অন্ধকারে ভালো দ্যেখাও যায় না। ব্যাস কইতে খালি দেরি, লগে লগে পুলিশ ইন্সেপেক্টার সাজ্জাদ (কাল্পনিক নাম) তার ডিউটির পরাকাষ্টা দেখিয়ে, বেলাল মিয়াকে তিন হাজার টাকা ফাইন করল। এর মধ্যে দেখা গেল রাস্তার ওই ভাঙা ডিভাইডার দিয়ে অন্য গাড়ি ঘুরিয়ে চলে যাচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পুলিশ ইন্সেপেক্টার সাজ্জাদ কে যখন বলা হলো ওই যে, অন্য সব গাড়ি ঘুরছে? পুলিশ ইন্সেপেক্টার সাজ্জাদ, তখন মুচকি হেসে বলল, শুনলেন না, টেলিফোনে বড় স্যার বলছে, আজকে এই টেকনিক্যালের মোড় থেকে মিনিমাম তিন লাখ টাকা কালেক্ট করতে হবে। মানে আমার টার্গেট পুরা করতে হবে। এখন কাকে কি বলবি বল!! অথচ এই তোর বাঙালি

পুলিশ ভাই তোর দেশেরই সন্তান। তুই যখন ঈদের নামাজ পড়িস তখন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পুলিশ ইন্সেপেক্টার সাজ্জাদের মতো কাউকে না কাউকে তার নামাজ বাদ দিয়ে তোর ডিউটি করতে হয়। শুধু তোর নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে।

আবার এই পুলিশ ভাইটি, ডিউটির কারণে, তার প্রথম সন্তানের জন্মের সময় স্ত্রীর পাশে থাকতে পারেননি, এমন ঘটনাও ঘটে।”

“কিন্তু ভাই এই কয়দিন আগে রায়ট কার থেকে বাংলাদেশের ছেলের অর্ধমৃত দেহ কি ঘৃণাভরে আপনার পুলিশ রাস্তায় ফেলে দিল, তখন এই পুলিশের বিবেক বলে কি কিছু ছিল??”

“কিন্তু তোরা যে ওই পুলিশ ভাইদের কৃতকর্মের জন্য পুড়িয়ে মারলি, পিটিয়ে মারলি সেটাও কি ঠিক হয়েছে??”

“ইট মারলে ভাই পাটকেলটি খাইতে হবে।”

“তাহলে এর সমাধান কি, তোরা খালি আজীবন ইট আর পাটকেল নিয়ে নিজেরা নিজেরা মারামারি করবি!! বাঙালি হয়ে বাঙালি মারবি!! এর শেষ কোথায়!!?”

“ স্যার একটা গল্প কোই, তায়লেই বুঝবেন এর শেষ কোথায়?”

“ বল বল জলদি বল, তাহলেও যদি এই মারামারি বন্ধ না হোক অন্ততঃ সমাধানটা জানতে পারি। বল বল জলদি বল।”

“গল্পটা হচ্ছে এই রকম যে, এক লোক এক ঘুটঘুটা অন্ধকার টানেল মানে গুহার মধ্যে হাঁটছে। এমন অন্ধকার যে এক হাত দূরের কোনো কিছুই ঠাহর করতে পারছে না। লোকটার কেমন এক আধিভৌতিক রহস্য গল্পের মতো গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল। এই সময় দূর থেকে একটা কুকুরের কান্না ভেসে এলো। আউউউ...আঊঊ... শীতের রাতেও লোকটা ঘামছে। এমন সময় দেখল দূরে একটা আলোকবর্তিকা। লোকটার আনন্দ আর কে দেখে। যাক বাবা শেষমেশ সৃষ্টিকর্তা ওর জন্য গুহার শেষ মাথায় আলোর ঝলকানি এনেছেন এবার ওর সব মুশকিল আসান হবে, আঁধার পেরিয়ে ও আলোতে পৌঁছাবে। ও দ্রুত ওই আলোর দিকে হাঁটতে থাকলো।”

“জলদি বল তারপর লোকটার কি হলো?”

“ লোকটা ঠিক করে বুঝে ওঠার আগেই দেখলো, যে ওই আলোটা একটা ট্রেনের ফ্লাড লাইট, তখন বড্ড দেরি হয়েছে ও সরার আগেই রেল গাড়িটা ঝমাঝম শব্দে ওর শরীরের উপর দিয়ে সিটি বাজাতে বাজাতে চলে গেল...”

“মানে কী...”

[লেখক : চলচ্চিত্রকার ]

back to top