আনোয়ারুল হক
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের যে বাড়িটিকে ঘিরে হয়েছিল স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের আয়োজন পর্ব, ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে সেই বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়, চালানো হয় ভাঙচুর ও লুটপাট। শেষে বাড়িটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়
১৯৭২ সালে জুলফিকার আলী ভুট্টো ক্ষমতা গ্রহণের পর জাতির উদ্দেশে ইংরেজিতে দেয়া এক ভাষণে বলেছিলেন, “১৪ দিনের যুদ্ধে কেবল যুদ্ধ বিরতি হয়েছে মাত্র। পূর্ব পাকিস্তান আমাদের অধিকার এবং আমাদেরই দেশ। পূর্ব পাকিস্তানকে যতক্ষণ আমরা আমাদের দখলে আনতে না পারব ততক্ষণ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব। পূর্ব পাকিস্তান পাকিস্তানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই পাকিস্তানকে আমরা সত্য করে তুলব, এই বিশ্বাস আমার আছে। এক ও সম্মিলিত পাকিস্তান এই আদর্শের মধ্যেই পূর্ব পাকিস্তানকে থাকতে হবে অবশ্যই। মুসলিম বাংলা সর্বদাই পাকিস্তানের অংশ হিসেবে থাকবে।”
ধানমন্ডি ৩২নং- এর যে বাড়িটিকে ঘিরে হয়েছিল স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের আয়োজন পর্ব। ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে সেই বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, লুটপাট এবং ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই ডিফেন্স পকিস্তানের এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে বলা হয়, বিশ্বাসঘাতক শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে বিপ্লবীরা, যে বাড়িতে বসে মুজিব ভারতের সঙ্গে পাকিস্তান ভাঙার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। টুইটারে আরও বলা হয় এর পরে আর বাংলাদেশে মুজিব স্মৃতির অবশিষ্টাংশ রইল না। এর আগে জনৈক ছাত্র সমন্বয়ক তার ফেসবুক পোস্টে লিখলেন আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি থেকে মুক্ত হবে। কি অদ্ভুত যোগাযোগ!
এর আগে ৫ আগস্টের পরপর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছিলেন, ‘যিনি পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি অবশেষে তার করুণ পরিণতি ভোগ করেছেন।’ ভাস্কর্য ভাঙচুরের প্রসঙ্গে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘যিনি খারাপ কাজ করবেন তা ফের তার ওপরই আসবে। শেখ মুজিবুর রহমান এই অবিভক্ত পাকিস্তানকে দুই ভাগ করেছিলেন।’
পাকিস্তান সরকারের এই মুজিব বিদ্বেষী মনোভাবের একমাত্র কারণ হলো মুজিব বাঙালির ওপর পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসন শোষণ অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং পরিশেষে পাকিস্তানের গোলামির জিঞ্জির ছিন্ন করে বাংলাদেশের মানুষকে যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেই মুক্তি সংগ্রামের বিরুদ্ধে এ দেশের যে সমস্ত রাজনৈতিক শক্তি পাকিস্তানের দোসর ছিলেন এবং রাজাকার আলবদর বাহিনী গঠন করে হানাদার বাহিনীর সব অপরাধের সহযোগী ছিলেন সে সব শক্তি আজ পরিস্থিতির সদ্ব্যবহার করে পাকিস্তানি আকাক্সক্ষাকে বাস্তবায়ন করছেন। অবশ্য এক দশকেরও বেশি সময়কাল এক অগণতান্ত্রিক স্বেচ্ছাচারী দমন-পীড়নমূলক শাসন চালিয়ে দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তাদের জন্য এক উর্বর জমিন তৈরি করে দিয়ে গেছেন মুজিব কন্যা শেখ হাসিনাই। ৭১-এর অন্ধকারের শক্তিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা না করে কখনো কিছুটা ছাড় দিয়ে, কখনো শক্ত হাতে সাময়িকভাবে দমন করে আবার কখনো আর্থিক সুবিধা দিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশল নিয়ে চলছিলেন। তার ফল আজ ভোগ করতে হচ্ছে।
একটা কথা বলা হচ্ছে, শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে থেকে ছাত্রদের উদ্দেশে ভাষণ দেয়ার ঘোষণা দেয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অধিকাংশ রাজনৈতিক বিশ্লেষক এর সঙ্গে পুরোপুরি একমত হতে পারছেন না। তাদের মতে গণ-অভুত্থানের ছয় মাস পূর্তিকে কেন্দ্র করে মহলবিশেষের এ ধরনের অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির একটা সংগঠিত পরিকল্পনা ছিল। তা না হলে এক যোগে সারাদেশে এ ধরনের নৈরাজ্যমূলক কার্যক্রম হতো না। শেখ হাসিনার বক্তৃতা দেয়ার খায়েশ প্রকাশ তাতে আরও নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা, সারা রাত এমনকি পরদিনও এই তা-ব চালানোর পরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তায় এটাই প্রমাণিত হয় এসব ঘটনাবলীর পেছনে হাসিনার উসকানির মতো সরকারেরও সম্মতি আছে। তাই ঘটনার ১ দিন পর সরকার নিন্দা না জানিয়ে ধরি মাছ না ছুঁই পানি ধরনের একটি বিবৃতি দিয়েছেন- যা প্রাক্তন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরের ‘আধমরা সরকার’ উক্তির যথার্থতা প্রমাণ করছে।
এ কথা কারও না বোঝার কারণ নেই যে গণধিকৃত শেখ হাসিনার বিচারের মুখোমুখি না হয়ে জনগণের সামনে দাঁড়ানোর কোন সুযোগ নেই- তা তিনি দিল্লি, লন্ডন, নিউইয়র্ক বা যেখান থেকেই যত বক্তৃতা দিন না কেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দেয়া দল আওয়ামী লীগও যদি আয়নায় মুখ না দেখে, বিগত ১৫ বছরের অন্যায় অপরাধের জন্য অনুশোচনা না করে, অপরাধী নেতৃত্বের বদল না ঘটায় তারা জনগণের সামনে এসে দাঁড়ানোর নৈতিক শক্তি অর্জন করবে না। এমনকি মাঠপর্যায়ের কর্মীদেরও থানা পুলিশকে বা স্থানীয় পর্যায়ে ‘সমন্বয়কদের’ বখরা দিয়ে মাথা নিচু করে এলাকায় থাকতে হচ্ছে ও হবে। তাই আওয়ামী লীগ ভীতি বা হাসিনার বক্তৃতা ভীতি ভাঙচুরের পক্ষে জনতুষ্টিমূলক ওছিলা মাত্র।
পরাজিত ফ্যাসিবাদের দূরে কোথাও কোন বক্তৃতা বিবৃতির জন্য ‘দেশ প্রেমিকদের’ এমন উন্মত্ত হয়ে উঠতে হয়? হয় তো হয়! ভয় থাকলে হয়! হালে পানি না পেলে হয়। যা চলছে এটাকে নৈরাজ্য ছাড়া কি বলা যায়। এখানে আছে শুধু ঘৃণা, ক্রোধ, হিংসা, আগুন। আর আছে বুলডোজার- যেখানে যা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি আছে তা ভাঙতে। তাইতো শুধু আওয়ামী লীগারদের ঘরবাড়ি বা মুজিব ভাস্কর্য ভাঙচুর নয়। সুদূর মফস্বল শহরেও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণের স্থানে আঘাত হানা হচ্ছে।
তাই হয়তো পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইশাক দার ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে বলে বসলেন পাকিস্তান তাদের ‘হারিয়ে যাওয়া ভাই’ কে ফিরে পেয়েছে। আসলেই কি ফিরে পেয়েছে? নাকি এই দাহ্য আগুন বিপ্লবী হতাশার বাহ্য রূপ!
[ লেখক : সাবেক সভাপতি, ছাত্র ইউনিয়ন ]
আনোয়ারুল হক
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের যে বাড়িটিকে ঘিরে হয়েছিল স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের আয়োজন পর্ব, ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে সেই বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়, চালানো হয় ভাঙচুর ও লুটপাট। শেষে বাড়িটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়
সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
১৯৭২ সালে জুলফিকার আলী ভুট্টো ক্ষমতা গ্রহণের পর জাতির উদ্দেশে ইংরেজিতে দেয়া এক ভাষণে বলেছিলেন, “১৪ দিনের যুদ্ধে কেবল যুদ্ধ বিরতি হয়েছে মাত্র। পূর্ব পাকিস্তান আমাদের অধিকার এবং আমাদেরই দেশ। পূর্ব পাকিস্তানকে যতক্ষণ আমরা আমাদের দখলে আনতে না পারব ততক্ষণ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব। পূর্ব পাকিস্তান পাকিস্তানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই পাকিস্তানকে আমরা সত্য করে তুলব, এই বিশ্বাস আমার আছে। এক ও সম্মিলিত পাকিস্তান এই আদর্শের মধ্যেই পূর্ব পাকিস্তানকে থাকতে হবে অবশ্যই। মুসলিম বাংলা সর্বদাই পাকিস্তানের অংশ হিসেবে থাকবে।”
ধানমন্ডি ৩২নং- এর যে বাড়িটিকে ঘিরে হয়েছিল স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের আয়োজন পর্ব। ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে সেই বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, লুটপাট এবং ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই ডিফেন্স পকিস্তানের এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে বলা হয়, বিশ্বাসঘাতক শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে বিপ্লবীরা, যে বাড়িতে বসে মুজিব ভারতের সঙ্গে পাকিস্তান ভাঙার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। টুইটারে আরও বলা হয় এর পরে আর বাংলাদেশে মুজিব স্মৃতির অবশিষ্টাংশ রইল না। এর আগে জনৈক ছাত্র সমন্বয়ক তার ফেসবুক পোস্টে লিখলেন আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি থেকে মুক্ত হবে। কি অদ্ভুত যোগাযোগ!
এর আগে ৫ আগস্টের পরপর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছিলেন, ‘যিনি পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি অবশেষে তার করুণ পরিণতি ভোগ করেছেন।’ ভাস্কর্য ভাঙচুরের প্রসঙ্গে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘যিনি খারাপ কাজ করবেন তা ফের তার ওপরই আসবে। শেখ মুজিবুর রহমান এই অবিভক্ত পাকিস্তানকে দুই ভাগ করেছিলেন।’
পাকিস্তান সরকারের এই মুজিব বিদ্বেষী মনোভাবের একমাত্র কারণ হলো মুজিব বাঙালির ওপর পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসন শোষণ অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং পরিশেষে পাকিস্তানের গোলামির জিঞ্জির ছিন্ন করে বাংলাদেশের মানুষকে যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেই মুক্তি সংগ্রামের বিরুদ্ধে এ দেশের যে সমস্ত রাজনৈতিক শক্তি পাকিস্তানের দোসর ছিলেন এবং রাজাকার আলবদর বাহিনী গঠন করে হানাদার বাহিনীর সব অপরাধের সহযোগী ছিলেন সে সব শক্তি আজ পরিস্থিতির সদ্ব্যবহার করে পাকিস্তানি আকাক্সক্ষাকে বাস্তবায়ন করছেন। অবশ্য এক দশকেরও বেশি সময়কাল এক অগণতান্ত্রিক স্বেচ্ছাচারী দমন-পীড়নমূলক শাসন চালিয়ে দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তাদের জন্য এক উর্বর জমিন তৈরি করে দিয়ে গেছেন মুজিব কন্যা শেখ হাসিনাই। ৭১-এর অন্ধকারের শক্তিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা না করে কখনো কিছুটা ছাড় দিয়ে, কখনো শক্ত হাতে সাময়িকভাবে দমন করে আবার কখনো আর্থিক সুবিধা দিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশল নিয়ে চলছিলেন। তার ফল আজ ভোগ করতে হচ্ছে।
একটা কথা বলা হচ্ছে, শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে থেকে ছাত্রদের উদ্দেশে ভাষণ দেয়ার ঘোষণা দেয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অধিকাংশ রাজনৈতিক বিশ্লেষক এর সঙ্গে পুরোপুরি একমত হতে পারছেন না। তাদের মতে গণ-অভুত্থানের ছয় মাস পূর্তিকে কেন্দ্র করে মহলবিশেষের এ ধরনের অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির একটা সংগঠিত পরিকল্পনা ছিল। তা না হলে এক যোগে সারাদেশে এ ধরনের নৈরাজ্যমূলক কার্যক্রম হতো না। শেখ হাসিনার বক্তৃতা দেয়ার খায়েশ প্রকাশ তাতে আরও নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা, সারা রাত এমনকি পরদিনও এই তা-ব চালানোর পরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তায় এটাই প্রমাণিত হয় এসব ঘটনাবলীর পেছনে হাসিনার উসকানির মতো সরকারেরও সম্মতি আছে। তাই ঘটনার ১ দিন পর সরকার নিন্দা না জানিয়ে ধরি মাছ না ছুঁই পানি ধরনের একটি বিবৃতি দিয়েছেন- যা প্রাক্তন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরের ‘আধমরা সরকার’ উক্তির যথার্থতা প্রমাণ করছে।
এ কথা কারও না বোঝার কারণ নেই যে গণধিকৃত শেখ হাসিনার বিচারের মুখোমুখি না হয়ে জনগণের সামনে দাঁড়ানোর কোন সুযোগ নেই- তা তিনি দিল্লি, লন্ডন, নিউইয়র্ক বা যেখান থেকেই যত বক্তৃতা দিন না কেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দেয়া দল আওয়ামী লীগও যদি আয়নায় মুখ না দেখে, বিগত ১৫ বছরের অন্যায় অপরাধের জন্য অনুশোচনা না করে, অপরাধী নেতৃত্বের বদল না ঘটায় তারা জনগণের সামনে এসে দাঁড়ানোর নৈতিক শক্তি অর্জন করবে না। এমনকি মাঠপর্যায়ের কর্মীদেরও থানা পুলিশকে বা স্থানীয় পর্যায়ে ‘সমন্বয়কদের’ বখরা দিয়ে মাথা নিচু করে এলাকায় থাকতে হচ্ছে ও হবে। তাই আওয়ামী লীগ ভীতি বা হাসিনার বক্তৃতা ভীতি ভাঙচুরের পক্ষে জনতুষ্টিমূলক ওছিলা মাত্র।
পরাজিত ফ্যাসিবাদের দূরে কোথাও কোন বক্তৃতা বিবৃতির জন্য ‘দেশ প্রেমিকদের’ এমন উন্মত্ত হয়ে উঠতে হয়? হয় তো হয়! ভয় থাকলে হয়! হালে পানি না পেলে হয়। যা চলছে এটাকে নৈরাজ্য ছাড়া কি বলা যায়। এখানে আছে শুধু ঘৃণা, ক্রোধ, হিংসা, আগুন। আর আছে বুলডোজার- যেখানে যা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি আছে তা ভাঙতে। তাইতো শুধু আওয়ামী লীগারদের ঘরবাড়ি বা মুজিব ভাস্কর্য ভাঙচুর নয়। সুদূর মফস্বল শহরেও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণের স্থানে আঘাত হানা হচ্ছে।
তাই হয়তো পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইশাক দার ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে বলে বসলেন পাকিস্তান তাদের ‘হারিয়ে যাওয়া ভাই’ কে ফিরে পেয়েছে। আসলেই কি ফিরে পেয়েছে? নাকি এই দাহ্য আগুন বিপ্লবী হতাশার বাহ্য রূপ!
[ লেখক : সাবেক সভাপতি, ছাত্র ইউনিয়ন ]