alt

উপ-সম্পাদকীয়

ধর্ষণের বিরুদ্ধে লড়াই : আইনের শক্তি ও সমাজের দুর্বলতা

জিয়াউদ্দীন আহমেদ

: রোববার, ০৬ এপ্রিল ২০২৫

মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা যাওয়া শিশুর ধর্ষণ মামলার বিচার এক সপ্তাহের মধ্যে শুরু করার আশ্বাস দিয়েছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, ধর্ষণ মামলার বিচারকাজ সাত থেকে আট দিনের মধ্যে শেষ করার নজিরও রয়েছে। ধর্ষণের বিচার কাজ দ্রুত শুরু করা হলেও তা কতদিনের মধ্যে শেষ হবে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি। অন্যদিকে বরগুনার সপ্তম শ্রেণীর এক মেয়েকে ধর্ষণের পর বিচার চেয়ে মামলা করায় বাবাকে হত্যার শিকার হতে হয়েছে। আট বছরের এক পথশিশু- শিশুটির বাবা ভিক্ষুক, মা মানসিক প্রতিবন্ধী; ভাসমান এই পথশিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার পর হাসপাতালে সাত দিন লুকিয়ে রাখার অপরাধে ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিলেটের হজরত শাহপরাণ (রহ.) মাজার এলাকা থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন এক তরুণীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ, বিশ্বনাথ উপজেলায় ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণ, সাতক্ষীরায় প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণ, পটুয়াখালীতে ঘরে ঢুকে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ, মানিকগঞ্জে বিয়ের অনুষ্ঠানে তিন বছরের শিশুকে ধর্ষণ, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, এমন আরও অনেক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২০২৫ সালের মার্চ মাসের প্রথমার্ধেই।

সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই খারাপ,- চোর, ডাকাত, সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারীর মতো ধর্ষকেরাও এই সুযোগটি কাজে লাগাতে চেয়েছে। পাঁচই আগস্টের পর দেশের সর্বত্র এমন একটি প্রতীতির জন্ম হয়েছে যে, সংঘবদ্ধ হয়ে যাই করুক না কেন তা আমলে নেয়া হবে না।অন্তর্বর্তী সরকার এবং আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত বাহিনী সংঘবদ্ধ অপরাধে নিরব ও নিশ্চুপ থাকায় চোর, ডাকাত, ছিনতাইকারীরাও নিজেদের বিপ্লবী ভাবতে শুরু করে দিয়েছে।তবে ফুটপাতে ব্যবসা করতে গিয়ে কয়েকজন শিক্ষিত যুবক যেভাবে পুলিশের হাতে হেনস্তা হয়েছে তাতে মনে হয় পুলিশ পুনরায় সক্রিয় হওয়ার তাগিদ অনুভব করছে। গত মাসে শুধু মেয়ে শিশু নয়, ছেলে শিশুরাও বেঘোরে ধর্ষিত হয়েছে। ছেলে শিশুদের ধর্ষণের ঘটনা আমাদের দেশে বেশি হয় মাদ্রাসায়, অন্যান্য দেশে হয় ধর্মীয় উপসনালয়ে।মাদ্রাসা-মাদ্রাসায় ধর্ষণ বা বলাৎকার হলেও আমাদের আইনে ছেলে শিশু ধর্ষণের ব্যাপারে কিন্তু কিছু বলা নেই, ছেলে শিশুরা যে ধর্ষণের শিকার হতে পারে এই ধারণাটাই আমাদের আইন স্বীকার করে না।

ধর্ষণ ও বলাৎকার মহামারী আকারে দেখা দিলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের বিধান রেখে আওয়ামী লীগ আমলেই আইন পাস করা হয়। মৃত্যুদ-ের বিধান না থাকায় ধর্ষকেরা বেপরোয়া- সবার ধারণা ছিল মৃত্যদ-ের ভয় থাকলে এসিড সন্ত্রাসের মতো ধর্ষণের মহামারী হ্রাস পাবে। কিন্তু মার্চ মাসের অনেক ধর্ষণের ঘটনা জনগণের বিশ্বাসকে নড়বড় করে দিয়েছে। অনেক মাদ্রাসা, মক্তব ও এতিমখানার ছাত্র-ছাত্রীরা তাদেরই শিক্ষক দ্বারা অহরহ ধর্ষণের শিকার হচ্ছে।একশ্রেণির মাওলানা, ইমাম ও মুয়াজ্জিনের বলাৎকার ও ধর্ষণের ধরন বিকৃত ও অভিনব। শিশুর মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে, হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ ও বলাৎকার করা হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে চকলেট দিয়ে, কোন কোন ক্ষেত্রে গোসল বা গায়ে তেল মাখানোর ফজিলত বর্ণনা করতে করতে, কখনো কখনো সওয়াব কামানোর বাণী দিয়ে, আবার কখনো কখনো বেহেশত পাওয়ার আশ্বাসবাণী শুনিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এমনও দেখা গেছে, নির্যাতিত শিশুর যন্ত্রণার চিৎকার শুনে ধর্ষক মাওলানারা বেশি বেশি যৌন উত্তেজনা অনুভব করেছেন। লুত জাতির ধ্বংস বা দোজখের আগুনে দগ্ধ হওয়ার ভীতিজনক শাস্তির ভয়ও কুৎসিত প্রবৃত্তি থেকে তাদের বিরত রাখতে পারে না। কারণ শয়তান আছর করে বলেই তারা ধর্ষণ করে, সব দোষ শয়তানের।

পৃথিবীর যেখানেই যুদ্ধ হয়েছে সেখানেই যুদ্ধরত সেনারা টার্গেট করেছে নারীদেরকে। একাত্তরে পাকিস্তানি সৈন্য এবং তাদের এ দেশীয় দোসররা নির্বিচারে আমাদের মেয়েদের ধর্ষণ করেছে। ধর্ষকদের সৌভাগ্য যে, এই দেশে যৌন হয়রানির শিকার নারীরা ধর্ষণের ঘটনা লুকিয়ে রাখে। ধর্ষিতা মেয়েরা মা’র কাছে অবহেলিত, বাবার কাছে অনাদৃত, ভাইবোনদের কাছে অস্পৃশ্য, সমাজের কাছে অপাঙক্তেয়। এমন অবহেলা থেকেই তাদের আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হয়। কোন মেয়ে একটু সাহসী হলেই সমাজ থেকে রব উঠে- মেয়েরা ঘর থেকে বের হয় কেন? মেয়েরা হবে অসূর্যস্পর্শা, সূর্যের আলো গায়ে লাগানো তাদের জন্য অপরাধ। নারীদের শুধু ভোগের বস্তু মনে করা হয় বলেই দেখামাত্র কিছু লোকের মনে ধর্ষণের উদগ্র বাসনা জাগে। মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত হওয়া সত্ত্বেও নারী দেখলেই সম্ভোগের বাসনা কেন জাগে তার ব্যাখ্যা কোন কপট ধার্মিকদের কাছেও নেই।

এত এত ধর্ষণের কারণ খুঁজে পেয়েছেন ডা. জাকির নায়েক এবং মাওলানা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান। দুজনই প্রায় একই বক্তব্য দিয়েছেন-মাহরাম ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া কোন নারী ধর্ষণের শিকার হলে তার দায় সংশ্লিষ্ট নারীর। মাওলানা ত্বহার বক্তব্য অনুযায়ী মাহরাম ছাড়া নারীর হজ করারও বিধান নেই। মাওলানা ত্বহাকে নিয়ে এত সমালোচনা কেন? তিনি তো কোন ভুল বলেননি। কোরআন অনুযায়ী যে ১৪ ব্যক্তিকে বিয়ে করা জায়েজ নয় এবং যাদের সম্মুখে পর্দা করা ফরজ নয় তারাই মাহরাম। নবীজি বলেছেন, কোনো পুরুষ যেন কোনো নারীর সঙ্গে তার মাহরাম ব্যতিরেকে একাকী অবস্থান না করে। শুধু হাদিস নয়, কোরআনেও বলা হয়েছে, ‘তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং প্রাচীন যুগের মতো নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’

ডা. জাকির নায়েক কথা বলেছেন নারীর পোশাক নিয়ে-পশ্চিমা পোশাক মেয়েদের ধর্ষণের অন্যতম কারণ, শালীন পোশাক না পরার কারণে ধর্ষণ হলে সে নারী নিজেই দায়ী। তিনি এখানে থেমে যাননি, কারণ তিনি জানেন, মেয়ে শিশুরাও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে, যাদের ধর্ষণ অশালীন পোশাকের তকমা দিয়ে জায়েজ করা সহজ নয়। এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি বলেছেন, শালীন পোশাক পরে ধর্ষিত হলে সেটা আল্লাহর পরীক্ষা! শিশুদের ধর্ষণের মধ্যে ডা. জাকির নায়েক মহান ও করুণাময় আল্লাহতালার পরীক্ষা আবিষ্কার করেছেন। ডা. জাকির নায়েক একজন ধর্ম বিশেষজ্ঞ, তিনি কোরআন-হাদিসের ভিত্তিতে কথা বলেন।

নারীদের জন্য ধর্মীয় বিধিবিধানের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কড়া বক্তব্য দিয়ে থাকেন মাওলানা রাজ্জাক বিন ইউসুফ। পিস টিভিতে তিনি নিয়মিত ইসলাম ধর্ম নিয়ে আলোচনা করতেন। তাকে আমার পছন্দ, তিনি কারও মন রক্ষা করে কথা বলেন না, ধর্মের সুবিধাজনক অপব্যাখ্যাকে তিনি প্রশ্রয় দেন না। পৃথিবী নিত্যনতুন ধ্যানধারণায় সমৃদ্ধ হলেও তার সঙ্গে ধর্মের সুবিধাজনক পরিবর্তিত ব্যাখ্যা অগ্রহণযোগ্য। তাই মুসলমান মানেই মৌলবাদী, মূলকে নবরূপে সজ্জিত করার কোন সুযোগ ইসলাম ধর্মে নেই। মাওলানা রাজ্জাক বিন ইউসুফ যা বলেন তা ইসলাম ধর্মেরই কথা। মাওলানা রাজ্জাক বলেন, নারী থাকবে ঘরে, তাদের কোন আত্মা নেই, ঘরের ভেতর আবদ্ধ থেকে স্বামীর সেবা করাই তাদের কাজ। নারীদের বুদ্ধি-বিবেক কম এবং ধর্মে খাটো, তারা স্বামীর কথা শুনে না, মানুষের বদনাম করে বলেই তারা জাহান্নামী- এই হাদিসটি তিনি প্রায়ই বলেন। দেবরের সঙ্গে দেখা করা, কথা বলা যেখানে বিষতুল্য সেখানে নারীদের বাইরে গিয়ে জোর পদক্ষেপে হাঁটা গ্রহণযোগ্য হয় কী করে- এই সব হাদিস রাজ্জাক সাহেব অহরহ বলেন। আমার ধারণা তিনি ধর্মের কথাই বলেন। অনেক আলেম ওয়াজে বলেছেন, ‘মেয়েদের স্কুলে পাঠানো উচিত নয়, স্কুলে গিয়ে মেয়েরা তাদের কুমারীত্ব হারায়, স্কুলগুলো বন্ধ করে দেয়া উচিত’। ডা. জাকির নায়েক উচ্চ শিক্ষার জন্য মেয়েদের মিসর বা সৌদি আরব যেতে বলেছেন। আফগান সরকার মেয়েদের শিক্ষা ধর্মের নির্দেশনা মেনেই বন্ধ করেছে।’ নারী হলো আবরণীয়। যখন সে বের হয় শয়তান তাকে অনুসরণ করে। যখন সে ঘরে আবদ্ধ থাকে তখন আল্লাহর রহমত লাভের অতি নিকটবর্তী থাকে - হাদিসের কথা।

আফগানিস্তানের তালেবান সরকার ১২ বছরের বেশি বয়সী মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে, মেয়েদের স্কুল-কলেজে যাওয়াকে মনে করা হয় আধুনিক সমাজের বেহায়াপনা, নির্লজ্জতা ও নাপাক কাজ। মেয়েদের ঘরে আবদ্ধ থাকাটাকে সর্বোত্তম ধর্মীয় পন্থা বলে তালেবানেরা মনে করে। তাদের মতে মেয়েরা বাইরে গিয়ে লেখাপড়া করলে পুরুষ তাদের চোখ, কান ও শারীরিক যিনা থেকে মুক্তি পাবে না। নারীদের জন্য স্কুল কলেজ নিষিদ্ধ হলে নারী চিকিৎসক যে সৃষ্টি হবে না তা বোঝার ক্ষমতা তালেবানদের আছে; দুয়েকজন নারী-রোগী চিকিৎসার অভাবে মারা গেলে কিচ্ছু যায় আসে না, তাদের কাছে আধুনিক চিকিৎসার চেয়ে নারীদের ঘরে আবদ্ধ রাখাই অধিকতর যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে। তাদের কাছে ধর্মের অনুশাসনই মুখ্য, চিকিৎসা নয়। আফগানিস্তানে সেই নারীই আদর্শ নারী যার কণ্ঠ বাইরের কেউ শুনেনি এবং যার চেহারা চন্দ্র-সূর্য কখনো দেখেনি। যে পুরুষ যতবেশি নারীদের কঠোর শাসনে রাখে সেই পুরুষ সমাজে তত বেশি সম্মানিত। বর্তমান বিশ্বে কিছু মুসলমান নানাবিধ ব্যাখ্যার বদৌলতে ধর্মের সঙ্গে আধুনিক জীবনধারার সমন্বয় করে চলার চেষ্টা করলেও তালেবানেরা সেই আপস করেনি, কারণ ধর্মগ্রন্থই তাদের জীবনযাপনের একমাত্র পাথেয়। ধর্মগ্রন্থ যা বলেছে তাই তারা ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় জীবনে প্রতিফলনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কারো চালচলনের উপযোগী করে ধর্মকে যুগপোযোগী করা যায় না, ধর্ম অনমনীয়।

আফগানিস্তানের মতো আমাদের দেশেও নারী শিক্ষা বিরোধী ফতোয়া আছে। আল্লামা শফি হুজুরের মতো মৌলবাদী আলেমদের অভিমত হলো, নারীরা শুধু নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ইত্যাদি মৌলিক বিষয়ে জ্ঞানার্জন করবে। শফি হুজুর আরও সুনির্দিষ্ট করে বলতে গিয়ে মেয়েদের কেবল ক্লাস ফোর-ফাইভ পর্যন্ত পড়তে বলেছেন যাতে তাদের পক্ষে স্বামীর টাকা-পয়সার হিসাব রাখা সম্ভব হয়। এমন পরিবেশ সৃষ্টির প্রয়াস পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে ড. মোহাম্মদ ইউনূস একজন আধুনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক লোক, তার হাতেই এই দেশের গ্রামের মেয়েরা রাস্তায় নেমে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছে। তাই বাংলাদেশ অতি শীঘ্র আফগানিস্তান হচ্ছে না।

রাষ্ট্র শুধু নারী নয়, শিশুদেরও ধর্ষণ থেকে রক্ষা করতে পারছে না। ধর্ষণের আতঙ্ক সৃষ্টি করে নারীদের ঘরে আবদ্ধ রাখার ফন্দি বলে যারা চিৎকার করছেন তাদের ক্ষেত্রে ধর্ম মানা এবং না মানার প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মানলে লেখাপড়া, চাকরি ইত্যাদি কাজ বাদ দিয়ে ঘরে আবদ্ধ থাকা উত্তম, কারণ হাদিস মতে, ‘দুনিয়ার উত্তম উপভোগ্য উপকরণ পুণ্যবতী নারী’।

[লেখক : সাবেক নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক ]

বাসন্তী পূজা

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস : বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার চিত্র

মার্কিন নীতির পরিবর্তনে ইউক্রেনের পরিণতি

গাজা : ক্রমবর্ধমান মানবিক ও রাজনৈতিক সংকট

নিষিদ্ধ পলিথিনে বিপন্ন প্রকৃতি

রাজনৈতিক রূপান্তরের এক সতর্কবার্তা

বৈষম্যমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে গণমুখী শিক্ষা

ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে ভারতকে বাঁচাতে বাম উদ্যোগ

ছবি

পিরোজপুরের ডিসিকে হারিয়ে দিলেন লালমনিরহাটের ডিসি!

জমি-জমার রেকর্ড সংশোধনে নতুন পরিপত্র ও প্রাসঙ্গিক আইন

র্অথনতৈকি উন্নয়নে জাকাতরে ভূমকিা

কবে মিলবে নতুন নোট

আইনস্টাইনের দেশে

আওয়ামী লীগ থেকে অন্য দলগুলো কি শিক্ষা গ্রহণ করবে?

আজি নূতন রতনে ভূষণে যতনে...

ঈদে বাড়ি ফেরা নিরাপদ হোক

পেঁয়াজের আদ্যোপান্ত

রঙ্গব্যঙ্গ : ‘প্রতিধ্বনি শুনি আমি, প্রতিধ্বনি শুনি...’

মালাকারটোলা গণহত্যা

‘বৈষম্যহীন বাংলায়’ দলিতদের প্রতি সীমাহীন বৈষম্য

বাংলাদেশের রাজনীতি এক কঠিন সন্ধিক্ষণে

স্বাধীনতার ৫৪ বছর

একাত্তরের মার্চে কেমন ছিল শ্রীমঙ্গল

ছবি

মুক্তিযুদ্ধে ভাটি বাংলা

ছবি

‘বীরের রক্তস্রোত, মায়ের অশ্রুধারায়’ প্রাপ্ত স্বাধীনতা

ছবি

সুন্দরবন : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জনপদের ভরসার স্থল

কখন বসন্ত গেল, এবার হল না গান

সেই কালরাত

মাটির যথার্থ পরিচর্যা : জীবনের ভিত রক্ষার আহ্বান

আমাদের বন, আমাদের পানি : প্রকৃতির সংকট ও আমাদের করণীয়

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই

রামনবমী ঘিরে সাম্প্রদায়িক কৌশল

ঈদে মিলবে না নতুন নোট

প্রসঙ্গ : পুরুষ ধর্ষণ

শাহবাগ শাপলা বিভাজন : দায় যাদের তাদেরই করতে হবে নিরসন

বিশ্ব বর্ণবৈষম্য বিলোপ দিবস

tab

উপ-সম্পাদকীয়

ধর্ষণের বিরুদ্ধে লড়াই : আইনের শক্তি ও সমাজের দুর্বলতা

জিয়াউদ্দীন আহমেদ

রোববার, ০৬ এপ্রিল ২০২৫

মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা যাওয়া শিশুর ধর্ষণ মামলার বিচার এক সপ্তাহের মধ্যে শুরু করার আশ্বাস দিয়েছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, ধর্ষণ মামলার বিচারকাজ সাত থেকে আট দিনের মধ্যে শেষ করার নজিরও রয়েছে। ধর্ষণের বিচার কাজ দ্রুত শুরু করা হলেও তা কতদিনের মধ্যে শেষ হবে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি। অন্যদিকে বরগুনার সপ্তম শ্রেণীর এক মেয়েকে ধর্ষণের পর বিচার চেয়ে মামলা করায় বাবাকে হত্যার শিকার হতে হয়েছে। আট বছরের এক পথশিশু- শিশুটির বাবা ভিক্ষুক, মা মানসিক প্রতিবন্ধী; ভাসমান এই পথশিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার পর হাসপাতালে সাত দিন লুকিয়ে রাখার অপরাধে ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিলেটের হজরত শাহপরাণ (রহ.) মাজার এলাকা থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন এক তরুণীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ, বিশ্বনাথ উপজেলায় ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণ, সাতক্ষীরায় প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণ, পটুয়াখালীতে ঘরে ঢুকে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ, মানিকগঞ্জে বিয়ের অনুষ্ঠানে তিন বছরের শিশুকে ধর্ষণ, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, এমন আরও অনেক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২০২৫ সালের মার্চ মাসের প্রথমার্ধেই।

সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই খারাপ,- চোর, ডাকাত, সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারীর মতো ধর্ষকেরাও এই সুযোগটি কাজে লাগাতে চেয়েছে। পাঁচই আগস্টের পর দেশের সর্বত্র এমন একটি প্রতীতির জন্ম হয়েছে যে, সংঘবদ্ধ হয়ে যাই করুক না কেন তা আমলে নেয়া হবে না।অন্তর্বর্তী সরকার এবং আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত বাহিনী সংঘবদ্ধ অপরাধে নিরব ও নিশ্চুপ থাকায় চোর, ডাকাত, ছিনতাইকারীরাও নিজেদের বিপ্লবী ভাবতে শুরু করে দিয়েছে।তবে ফুটপাতে ব্যবসা করতে গিয়ে কয়েকজন শিক্ষিত যুবক যেভাবে পুলিশের হাতে হেনস্তা হয়েছে তাতে মনে হয় পুলিশ পুনরায় সক্রিয় হওয়ার তাগিদ অনুভব করছে। গত মাসে শুধু মেয়ে শিশু নয়, ছেলে শিশুরাও বেঘোরে ধর্ষিত হয়েছে। ছেলে শিশুদের ধর্ষণের ঘটনা আমাদের দেশে বেশি হয় মাদ্রাসায়, অন্যান্য দেশে হয় ধর্মীয় উপসনালয়ে।মাদ্রাসা-মাদ্রাসায় ধর্ষণ বা বলাৎকার হলেও আমাদের আইনে ছেলে শিশু ধর্ষণের ব্যাপারে কিন্তু কিছু বলা নেই, ছেলে শিশুরা যে ধর্ষণের শিকার হতে পারে এই ধারণাটাই আমাদের আইন স্বীকার করে না।

ধর্ষণ ও বলাৎকার মহামারী আকারে দেখা দিলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের বিধান রেখে আওয়ামী লীগ আমলেই আইন পাস করা হয়। মৃত্যুদ-ের বিধান না থাকায় ধর্ষকেরা বেপরোয়া- সবার ধারণা ছিল মৃত্যদ-ের ভয় থাকলে এসিড সন্ত্রাসের মতো ধর্ষণের মহামারী হ্রাস পাবে। কিন্তু মার্চ মাসের অনেক ধর্ষণের ঘটনা জনগণের বিশ্বাসকে নড়বড় করে দিয়েছে। অনেক মাদ্রাসা, মক্তব ও এতিমখানার ছাত্র-ছাত্রীরা তাদেরই শিক্ষক দ্বারা অহরহ ধর্ষণের শিকার হচ্ছে।একশ্রেণির মাওলানা, ইমাম ও মুয়াজ্জিনের বলাৎকার ও ধর্ষণের ধরন বিকৃত ও অভিনব। শিশুর মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে, হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ ও বলাৎকার করা হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে চকলেট দিয়ে, কোন কোন ক্ষেত্রে গোসল বা গায়ে তেল মাখানোর ফজিলত বর্ণনা করতে করতে, কখনো কখনো সওয়াব কামানোর বাণী দিয়ে, আবার কখনো কখনো বেহেশত পাওয়ার আশ্বাসবাণী শুনিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এমনও দেখা গেছে, নির্যাতিত শিশুর যন্ত্রণার চিৎকার শুনে ধর্ষক মাওলানারা বেশি বেশি যৌন উত্তেজনা অনুভব করেছেন। লুত জাতির ধ্বংস বা দোজখের আগুনে দগ্ধ হওয়ার ভীতিজনক শাস্তির ভয়ও কুৎসিত প্রবৃত্তি থেকে তাদের বিরত রাখতে পারে না। কারণ শয়তান আছর করে বলেই তারা ধর্ষণ করে, সব দোষ শয়তানের।

পৃথিবীর যেখানেই যুদ্ধ হয়েছে সেখানেই যুদ্ধরত সেনারা টার্গেট করেছে নারীদেরকে। একাত্তরে পাকিস্তানি সৈন্য এবং তাদের এ দেশীয় দোসররা নির্বিচারে আমাদের মেয়েদের ধর্ষণ করেছে। ধর্ষকদের সৌভাগ্য যে, এই দেশে যৌন হয়রানির শিকার নারীরা ধর্ষণের ঘটনা লুকিয়ে রাখে। ধর্ষিতা মেয়েরা মা’র কাছে অবহেলিত, বাবার কাছে অনাদৃত, ভাইবোনদের কাছে অস্পৃশ্য, সমাজের কাছে অপাঙক্তেয়। এমন অবহেলা থেকেই তাদের আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হয়। কোন মেয়ে একটু সাহসী হলেই সমাজ থেকে রব উঠে- মেয়েরা ঘর থেকে বের হয় কেন? মেয়েরা হবে অসূর্যস্পর্শা, সূর্যের আলো গায়ে লাগানো তাদের জন্য অপরাধ। নারীদের শুধু ভোগের বস্তু মনে করা হয় বলেই দেখামাত্র কিছু লোকের মনে ধর্ষণের উদগ্র বাসনা জাগে। মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত হওয়া সত্ত্বেও নারী দেখলেই সম্ভোগের বাসনা কেন জাগে তার ব্যাখ্যা কোন কপট ধার্মিকদের কাছেও নেই।

এত এত ধর্ষণের কারণ খুঁজে পেয়েছেন ডা. জাকির নায়েক এবং মাওলানা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান। দুজনই প্রায় একই বক্তব্য দিয়েছেন-মাহরাম ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া কোন নারী ধর্ষণের শিকার হলে তার দায় সংশ্লিষ্ট নারীর। মাওলানা ত্বহার বক্তব্য অনুযায়ী মাহরাম ছাড়া নারীর হজ করারও বিধান নেই। মাওলানা ত্বহাকে নিয়ে এত সমালোচনা কেন? তিনি তো কোন ভুল বলেননি। কোরআন অনুযায়ী যে ১৪ ব্যক্তিকে বিয়ে করা জায়েজ নয় এবং যাদের সম্মুখে পর্দা করা ফরজ নয় তারাই মাহরাম। নবীজি বলেছেন, কোনো পুরুষ যেন কোনো নারীর সঙ্গে তার মাহরাম ব্যতিরেকে একাকী অবস্থান না করে। শুধু হাদিস নয়, কোরআনেও বলা হয়েছে, ‘তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং প্রাচীন যুগের মতো নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’

ডা. জাকির নায়েক কথা বলেছেন নারীর পোশাক নিয়ে-পশ্চিমা পোশাক মেয়েদের ধর্ষণের অন্যতম কারণ, শালীন পোশাক না পরার কারণে ধর্ষণ হলে সে নারী নিজেই দায়ী। তিনি এখানে থেমে যাননি, কারণ তিনি জানেন, মেয়ে শিশুরাও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে, যাদের ধর্ষণ অশালীন পোশাকের তকমা দিয়ে জায়েজ করা সহজ নয়। এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি বলেছেন, শালীন পোশাক পরে ধর্ষিত হলে সেটা আল্লাহর পরীক্ষা! শিশুদের ধর্ষণের মধ্যে ডা. জাকির নায়েক মহান ও করুণাময় আল্লাহতালার পরীক্ষা আবিষ্কার করেছেন। ডা. জাকির নায়েক একজন ধর্ম বিশেষজ্ঞ, তিনি কোরআন-হাদিসের ভিত্তিতে কথা বলেন।

নারীদের জন্য ধর্মীয় বিধিবিধানের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কড়া বক্তব্য দিয়ে থাকেন মাওলানা রাজ্জাক বিন ইউসুফ। পিস টিভিতে তিনি নিয়মিত ইসলাম ধর্ম নিয়ে আলোচনা করতেন। তাকে আমার পছন্দ, তিনি কারও মন রক্ষা করে কথা বলেন না, ধর্মের সুবিধাজনক অপব্যাখ্যাকে তিনি প্রশ্রয় দেন না। পৃথিবী নিত্যনতুন ধ্যানধারণায় সমৃদ্ধ হলেও তার সঙ্গে ধর্মের সুবিধাজনক পরিবর্তিত ব্যাখ্যা অগ্রহণযোগ্য। তাই মুসলমান মানেই মৌলবাদী, মূলকে নবরূপে সজ্জিত করার কোন সুযোগ ইসলাম ধর্মে নেই। মাওলানা রাজ্জাক বিন ইউসুফ যা বলেন তা ইসলাম ধর্মেরই কথা। মাওলানা রাজ্জাক বলেন, নারী থাকবে ঘরে, তাদের কোন আত্মা নেই, ঘরের ভেতর আবদ্ধ থেকে স্বামীর সেবা করাই তাদের কাজ। নারীদের বুদ্ধি-বিবেক কম এবং ধর্মে খাটো, তারা স্বামীর কথা শুনে না, মানুষের বদনাম করে বলেই তারা জাহান্নামী- এই হাদিসটি তিনি প্রায়ই বলেন। দেবরের সঙ্গে দেখা করা, কথা বলা যেখানে বিষতুল্য সেখানে নারীদের বাইরে গিয়ে জোর পদক্ষেপে হাঁটা গ্রহণযোগ্য হয় কী করে- এই সব হাদিস রাজ্জাক সাহেব অহরহ বলেন। আমার ধারণা তিনি ধর্মের কথাই বলেন। অনেক আলেম ওয়াজে বলেছেন, ‘মেয়েদের স্কুলে পাঠানো উচিত নয়, স্কুলে গিয়ে মেয়েরা তাদের কুমারীত্ব হারায়, স্কুলগুলো বন্ধ করে দেয়া উচিত’। ডা. জাকির নায়েক উচ্চ শিক্ষার জন্য মেয়েদের মিসর বা সৌদি আরব যেতে বলেছেন। আফগান সরকার মেয়েদের শিক্ষা ধর্মের নির্দেশনা মেনেই বন্ধ করেছে।’ নারী হলো আবরণীয়। যখন সে বের হয় শয়তান তাকে অনুসরণ করে। যখন সে ঘরে আবদ্ধ থাকে তখন আল্লাহর রহমত লাভের অতি নিকটবর্তী থাকে - হাদিসের কথা।

আফগানিস্তানের তালেবান সরকার ১২ বছরের বেশি বয়সী মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে, মেয়েদের স্কুল-কলেজে যাওয়াকে মনে করা হয় আধুনিক সমাজের বেহায়াপনা, নির্লজ্জতা ও নাপাক কাজ। মেয়েদের ঘরে আবদ্ধ থাকাটাকে সর্বোত্তম ধর্মীয় পন্থা বলে তালেবানেরা মনে করে। তাদের মতে মেয়েরা বাইরে গিয়ে লেখাপড়া করলে পুরুষ তাদের চোখ, কান ও শারীরিক যিনা থেকে মুক্তি পাবে না। নারীদের জন্য স্কুল কলেজ নিষিদ্ধ হলে নারী চিকিৎসক যে সৃষ্টি হবে না তা বোঝার ক্ষমতা তালেবানদের আছে; দুয়েকজন নারী-রোগী চিকিৎসার অভাবে মারা গেলে কিচ্ছু যায় আসে না, তাদের কাছে আধুনিক চিকিৎসার চেয়ে নারীদের ঘরে আবদ্ধ রাখাই অধিকতর যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে। তাদের কাছে ধর্মের অনুশাসনই মুখ্য, চিকিৎসা নয়। আফগানিস্তানে সেই নারীই আদর্শ নারী যার কণ্ঠ বাইরের কেউ শুনেনি এবং যার চেহারা চন্দ্র-সূর্য কখনো দেখেনি। যে পুরুষ যতবেশি নারীদের কঠোর শাসনে রাখে সেই পুরুষ সমাজে তত বেশি সম্মানিত। বর্তমান বিশ্বে কিছু মুসলমান নানাবিধ ব্যাখ্যার বদৌলতে ধর্মের সঙ্গে আধুনিক জীবনধারার সমন্বয় করে চলার চেষ্টা করলেও তালেবানেরা সেই আপস করেনি, কারণ ধর্মগ্রন্থই তাদের জীবনযাপনের একমাত্র পাথেয়। ধর্মগ্রন্থ যা বলেছে তাই তারা ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় জীবনে প্রতিফলনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কারো চালচলনের উপযোগী করে ধর্মকে যুগপোযোগী করা যায় না, ধর্ম অনমনীয়।

আফগানিস্তানের মতো আমাদের দেশেও নারী শিক্ষা বিরোধী ফতোয়া আছে। আল্লামা শফি হুজুরের মতো মৌলবাদী আলেমদের অভিমত হলো, নারীরা শুধু নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ইত্যাদি মৌলিক বিষয়ে জ্ঞানার্জন করবে। শফি হুজুর আরও সুনির্দিষ্ট করে বলতে গিয়ে মেয়েদের কেবল ক্লাস ফোর-ফাইভ পর্যন্ত পড়তে বলেছেন যাতে তাদের পক্ষে স্বামীর টাকা-পয়সার হিসাব রাখা সম্ভব হয়। এমন পরিবেশ সৃষ্টির প্রয়াস পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে ড. মোহাম্মদ ইউনূস একজন আধুনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক লোক, তার হাতেই এই দেশের গ্রামের মেয়েরা রাস্তায় নেমে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছে। তাই বাংলাদেশ অতি শীঘ্র আফগানিস্তান হচ্ছে না।

রাষ্ট্র শুধু নারী নয়, শিশুদেরও ধর্ষণ থেকে রক্ষা করতে পারছে না। ধর্ষণের আতঙ্ক সৃষ্টি করে নারীদের ঘরে আবদ্ধ রাখার ফন্দি বলে যারা চিৎকার করছেন তাদের ক্ষেত্রে ধর্ম মানা এবং না মানার প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মানলে লেখাপড়া, চাকরি ইত্যাদি কাজ বাদ দিয়ে ঘরে আবদ্ধ থাকা উত্তম, কারণ হাদিস মতে, ‘দুনিয়ার উত্তম উপভোগ্য উপকরণ পুণ্যবতী নারী’।

[লেখক : সাবেক নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক ]

back to top