alt

উপ-সম্পাদকীয়

দেশের কারা ব্যবস্থার বাস্তবতা

শুভাশিস ব্যানার্জি শুভ

: শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

কারা ব্যবস্থা বলতে কোনো দেশে অপরাধীদের আটক রাখার জন্য যে আইনি কাঠামো ও কার্যক্রম পরিচালিত হয়, তাকে বোঝায়। এটি মূলত কারাগার পরিচালনা, বন্দিদের নিরাপত্তা, সংশোধন ও পুনর্বাসনের একটি পদ্ধতি। বাংলাদেশে কারা ব্যবস্থা কারা অধিদপ্তর দ্বারা পরিচালিত হয়, যার প্রধান কার্যালয় পুরাতন ঢাকার চকবাজারে অবস্থিত। ‘সংশোধনাগার‘ শব্দটি একটি বাংলা শব্দ, যার অর্থ ‘সংযোজন কেন্দ্র‘ বা ‘পুনর্বাসন কেন্দ্র‘। এটি এমন একটি স্থানকে বোঝায় যেখানে অপরাধী বা আইন অমান্যকারী ব্যক্তিদের রাখা হয় এবং তাদের সংশোধন ও পুনর্বাসনের জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

‘সংশোধনাগার‘ শব্দটির সমার্থক শব্দ ‘কারাগার‘। এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে সমাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অপরাধীদেরও একটি নতুন জীবন শুরু করার সুযোগ করে দেয়া হয়।

বাংলাদেশের অপরাধে জড়িয়ে যাওয়া নাগরিকদের সংশোধনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ‘বাংলাদেশ জেল‘। এটি প্রথম যাত্রা শুরু করে ১৭৮৮ খ্রিস্টাব্দে। বাংলাদেশ জেলের অধীনে বর্তমানে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার এবং ৫৫টি জেলা কারাগার রয়েছে। বাংলাদেশের কারাগারসমূহের ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৪৫০ জন।

‘বাংলাদেশ জেল‘-এর ভিশন হলোÑ রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ। প্রশ্ন হচ্ছে, নিরাপদ রাখার ভিশনে অবস্থানরত ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনা কেন প্রশ্নবিদ্ধ হয়? প্রশ্নটি আরও অনেক বেশি জোরালো কারণ, এসব মৃত্যু নিয়ে প্রায়শই মৃত ব্যক্তির পরিবার থেকে অভিযোগ শোনা যায় যে, করারক্ষী বাহিনী কারাবান্দিকে হত্যা করেছে। যেমন- গত ১৫ জুন কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে একজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ‘সাভারের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, কারা কর্তৃপক্ষ বলছে তিনি গলায় ফাঁস দিয়েছেন’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদটিতে উল্লেখ করা হয়েছেÑ কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কারা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, রোববার বেলা ১১টার দিকে কারাগারের সূর্যমুখী ভবনের একটি কক্ষে ঘটনাটি ঘটেছে।

কারা সূত্র জানায়, কারাগারের সূর্যমুখী ভবনের একটি সাধারণ কক্ষে তিনজন বন্দি ছিলেন। ঘটনার সময় একজন আদালতে, আরেকজন ঘুমিয়ে ছিলেন। কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজনস) গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সকালে তিনি নাশতা করেছেন। এরপরই কক্ষে ফাঁস দেন।’ কিভাবে এ ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

প্রতিবেদনের প্রতিবেদক নিহত ব্যক্তির পরিবারের সাথে কথা বলেছেন। নিহত সাইদুরের স্ত্রী রোকসানা রহমানসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা এই মৃত্যুকে ‘আত্মহত্যা‘ হিসেবে মেনে নেয়নি। বরং তারা অভিযোগ করেছে, শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও নিহত সাইদুর রহমানকে চিকিৎসার করানোর সুযোগ পরিবারকে দেয়া হয়নি।

এমন আরও বহু উদাহরণ রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন হয় না। কালের স্রোতে রহস্য শুধু ‘রহস্য‘-ই থেকে যায়! ২০২০ খ্রিস্টাব্দের ০৮ ফেব্রুয়ারি ‘কারাগারগুলো কবে হবে সংশোধনাগার’ শিরোনামে করা এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়Ñ দেশের বিভিন্ন কারাগারে বর্তমানে ধারণক্ষমতা ৪০ হাজার ৯৪৪ জন। সেখানে আটক বন্দির সংখ্যা ৮৮ হাজার ১৮৫ জন। অর্থাৎ ধারণক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি বন্দি বর্তমানে কারাগারে অবস্থান করছেন। এ হিসাব গত ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। সরকারি সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে এ হিসাব পাওয়া গেছে। বহু আগে থেকেই অভিযোগ শোনা যায়, আমাদের কারাগারগুলোতে মানবাধিকার ব্যাপকভাবে লঙ্ঘিত হয়। ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধাও সাধারণ কারাবাসী পান না। গাদাগাদি করে অমানবিক পরিবেশে থাকতে হয়। খাবারের মানও খুব খারাপ। কারাবাসীর সংশোধনেও নেয়া হয় না উল্লেখযোগ্য কোনো উদ্যোগ বা কার্যক্রম। ২০২০ খ্রিস্টাব্দের সেই চিত্র ২০২৫ খ্রিস্টাব্দে আরও ভয়াবহ হয়েছে। প্রতিদিন সামাজিক ও গণমাধ্যমে এসবের চর্চা হয়। আলাপ-আলোচনা হয়। সরকারি-বেসরকারিভাবে নানান উদ্যোগ গ্রহণের খবরও পাওয়া যায়; কিন্তু যেটা হয় না, সেটা হলো কথা এবং উদ্যোগ বাস্তবায়ন। ফলে বাস্তবতা হয়েছে স্থির দ-ায়মান- যেই লাউ সেই কদু।

বিশ্বব্যাপী কারাগার এবং অপরাধ বিচার ব্যবস্থার পরিবর্তন এবং প্রবণতা নিয়ে কাজ করছে ‘গ্লোবাল প্রিজন ট্রেন্ডস (জিপিটি)’। তাদের প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছেÑ বিশ্বজুড়ে কারাগারের অবস্থা খারাপ হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো কারাগারে অতিরিক্ত বন্দি থাকা। এটি তর্কসাপেক্ষে কারা ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় সমস্যা এবং এর পরিণতি সবচেয়ে খারাপভাবে জীবন-হুমকির কারণ হতে পারে। ফলে কারাগারগুলো তাদের যথাযথ কার্যকারিতা পালনে বাধাগ্রস্ত করতে পারে না।

কারাগারে অতিরিক্ত ভিড় কমাতে এবং এর ক্ষতিকারক দিকসমূহের নিমিত্তে জিপিটির নীতি-নির্ধারকরা ১০-দফা পরিকল্পনা তৈরি করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ ১. বিচার-পূর্ব এবং সাজা প্রদানের পরে আটক রাখার জন্য অ-হেফাজত বিকল্পতে বিনিয়োগ করা। ২. ছোটখাটো মামলাগুলোকে ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা থেকে সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে নেয়া। ৩. অপরাধ প্রতিরোধ ও হ্রাসের জন্য দীর্ঘমেয়াদি কৌশলে বিনিয়োগ করা। ৪. ন্যায়বিচারের সুযোগ উন্নত করে বিচার-পূর্ব আটকের উচ্চ হার হ্রাস করা। ৫. ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠী যেমন- শিশু, নির্ভরশীল শিশুদের মা এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ বা বিকল্প ব্যবস্থা করা।

সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে কারাগারগুলোর ধারণক্ষমতা ৪২ হাজারের কিছু বেশি। ৫ আগস্টের পর ৫০ হাজারের বেশি বন্দি ছিল। তারপর কারাবন্দির সংখ্যা আরও বেড়েছে। বর্তমানে কারাবন্দি রয়েছে ৬৫ হাজারের বেশি। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছেÑ দেশের ১৭টি কারাগার অনেক পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ। এসব কারাগার দ্রুত সংস্কার, মেরামত ও পুনর্নির্মাণ না করলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। ৫ আগস্ট ও পরবর্তী সময়ে ২২ শতাধিক কারাবন্দি পালিয়ে গেছেন। তার মধ্যে অনেকে স্বেচ্ছায় ফিরে এসেছেন। আবার অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৫০০ জন ধরা পড়েছে। এখনও কারাগার থেকে পালানো সন্ত্রাসী, জঙ্গিসহ ৭০০ বন্দির হদিস মিলছে না।

অন্যদিকে গত কয়েক মাসে জেএমবিসহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের ১৭৪ জন জামিনে মুক্তি পেয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন আলোচিত মামলার আসামি ও জঙ্গি সদস্যের মধ্যে এখনও পলাতক ৭০ জন। এসব নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কারা কর্তৃপক্ষ।

অপরাধীদের সংস্কারের জন্য ‘শাস্তি‘ দেয়ার প্রচলন শুরু করেছিলেন গ্রীক দার্শনিক প্লেটো। যারা তাদের জরিমানা দিতে পারতেন না তাদের জন্য সাধারণত শাস্তি হিসেবে কারাদ- ব্যবহার করা হতো। দরিদ্র এথেনিয়ানরা যারা জরিমানা দিতে পারতেন না তাদের অনির্দিষ্টকালের জন্য কারাদ- দেয়া হতো। প্রাচীন এথেন্সের কারাগারটি ‘ডেসমোটেরিয়ন‘ বা ‘শেকলের স্থান‘ নামে পরিচিত ছিল। মানব সভ্যতা বিকশিত হওয়ার সাথে সাথে ‘কারাগার‘ ব্যবস্থা বা চিন্তায় ইতিবাচক প্রভাব লক্ষনীয়। এই ক্ষেত্রে যথার্থ উদাহরণ ‘ন্যায়পরায়ণতা‘। এটি হচ্ছে বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুবিচার নিশ্চিত করা। বিচার বিভাগীয় পদক্ষেপগুলোকে এমনভাবে পরিচালিত হতে হয় যাতে তা পক্ষপাতহীন হয় এবং কেউ অন্যায়ভাবে বিচারপ্রাপ্ত না হন। ন্যায়পরায়ণতার মূল লক্ষ্য হলো অপরাধীর ন্যায়সঙ্গত বিচার এবং নির্দোষের সুরক্ষা। একজন নিরপরাধ ব্যক্তিও যেন সাজা না পায়- এই ধারণাটি আইনের একটি মৌলিক নীতি। এখানে উল্লেখ করা আছে, আদালত বা বিচার ব্যবস্থায়, দোষী সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট প্রমাণ না থাকলে, একজন নিরপরাধ ব্যক্তিকে সাজা দেয়া উচিত নয়। এই নীতিটি আইনের শাসন এবং ন্যায়বিচারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আধুনিক এই তত্ত্ব থেকে ‘সংশোধনাগার‘ শব্দটির উদ্ভব। পত্রিকান্তরে জানা যায়, নানান অনিয়মে দেশের কারাগারগুলো। টাকার বিনিময়ে সব ধরনের সুযোগ নিচ্ছে বন্দিরা। ৮৮টি নেটওয়ার্ক জ্যামারের মধ্যে ৭৮টি বিকল থাকায় বন্দিরা লুকিয়ে মোবাইলে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে। কারা কর্মকর্তারা বলছেন, আদালতে হাজিরা শেষে কারাগারে ফেরার সময় মাদক ও মোবাইল ফোন নিয়ে আসছে বন্দিরা। কারাফটকের তল্লাশিতে প্রায়ই তাদের ধরা হলেও অনেকে চোখ ফাঁকি দিচ্ছে। এ নিয়ে বেকায়দায় কারা কর্তৃপক্ষ। কারাগারের ভেতরে বন্দিদের অপরাধ রোধ করতে বিভিন্ন কৌশল নিয়েও হিমশিম খেতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সবকটি কারাগারে জ্যামার বসানোসহ নানামুখী পরিকল্পনা নিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।

আগামী ছয় মাসের মধ্যে নতুন জ্যামার স্থাপনসহ এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে বলে দাবি করছেন বর্তমান সরকার। যারা এই দাবিটি রাখছেন, তারাও খুব ভালোকরেই জানেন, এটা অসম্ভব। সেই কারণে এমন একটা সময় বেধে দিয়েছেন, যখন হয়তো সরকারে পরিবর্তন আসবে। বাংলাদেশে কারা ব্যবস্থা একটি সংশোধনাগার হিসাবে গড়ে তোলার জন্য কাজ চলছে বলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন,-বর্তমান সরকার আন্তর্জাতিক মানের কারা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

কারাগারগুলোকে সংশোধনাগারে রূপান্তরের লক্ষ্যে একটি আইন প্রণয়নের কাজ চলছে। দেশের কারা ব্যবস্থা সম্পর্কে সবাই কম-বেশি অবহিত। বহু অভিযোগে অভিযুক্ত এসব জায়গা থেকে অপরাধী পালিয়ে যাওয়ার মতোও ঘটনা ঘটে। বন্দি ধারণক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি কারাগারগুলোকে প্রকৃত সংশোধনাগার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। এর চেয়েও জরুরি অপরাধ প্রবণতা কমানো। এসব সমস্যা উত্তরণে প্রয়োজন আইনের পরিবর্তন ও প্রয়োগ। একই সাথে প্রক্রিয়াগত পরিবর্তনও আনতে হবে। কারাগারের এমন পরিবেশ দরকার যেখানে কর্তৃপক্ষের সংস্পর্শে এসে বন্দিরা নীতি-নৈতিকতায় সংশোধিত হওয়ার সুযোগ পায়। ‘কারাগার’ এবং ‘সংশোধনাগার’Ñ এই দুইয়ের মধ্যে সাম্য সাধনের সমন্বয় গড়ে তুলতে পারলে সমাজ এবং রাষ্ট্র সন্দেহাতীতভাবে উপকৃত হবে।

[লেখক : সংবাদকর্মী]

ভাঙনের বুকে টিকে থাকা স্বপ্ন

একটি সফর, একাধিক সংকেত : কে পেল কোন বার্তা?

ইসলামী ব্যাংক একীভূতকরণ : আস্থা ফেরাতে সংস্কার, না দায়মুক্তির প্রহসন?

রম্যগদ্য : চাঁদাবাজি চলছে, চলবে

বায়ুদূষণ : নীরব ঘাতক

ইসরায়েলের কৌশলগত ঔদ্ধত্য

পরিবার : সুনাগরিক ও সুশাসক তৈরির ভিত্তিমূল

শিল্পে গ্যাস সংকট : দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নিন

আমাদের লড়াইটা আমাদের লড়তে দিন

ব্যাকবেঞ্চারদের পৃথিবী : ব্যর্থতার গায়ে সাফল্যের ছাপ

আমের অ্যানথ্রাকনোজ ও বোঁটা পঁচা রোগ

শিশুদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি : স্কুল ব্যাংকিংয়ের সম্ভাবনা ও সংকট

প্রশিক্ষণ থেকে কেন বাদ নারী কৃষকরা?

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ও বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া

লই গো বুক পেতে অনল-বাণ!

সরকারি হাসপাতালের পরিবেশ

আমেরিকার অলিগার্কি পতনের আখ্যান

রম্যগদ্য : ‘উহু উহু, তোরে মাফ করা যায় না...’

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট : সংকোচন, সংকট ও সম্ভাবনার প্রতিফলন

আম রপ্তানি : বাস্তবতা ও চ্যালেঞ্জ

ছবি

সামাজিকমাধ্যম গুরুত্বহীন নয়

জমির শ্রেণী চেনার উপায় ও পরিবর্তনের নিয়ম-কানুন

বাংলাদেশ : “রক্তে জন্ম আর পানিতে মরণ”

নতুন নোট, নতুন বিতর্ক

রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের হতাশা ও উপজেলা পর্যায়ের অদক্ষতা : কে নেবে দায়িত্ব?

তরল সম্পর্কের গোলকধাঁধা

পরিবার থেকে রাষ্ট্র : ন্যায়ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের উপায়

বাজেটে বৈষম্য কমানোর কোনো স্পষ্ট প্রতিফলন আছে কি

চোখের নজর কম হলে আর কাজল দিয়ে কী হবে

রম্যগদ্য : ‘নির্বাচন, না নীর-বচন...’

প্লাস্টিক দূষণ নয়, প্রকৃতির পাশে দাঁড়ান

কোরবানির পর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

ত্যাগের মহিমায় ঈদুল আজহা

নাম ও মর্যাদা : অর্থবহ নামকরণে বৈষম্য রোধের আহ্বান

ডিজিটাল পুঁজিবাদের যুগে নগর বাংলাদেশের শ্রেণী কাঠামো

পারিবারিক শিক্ষা ও রাষ্ট্রসংস্কার : ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের পথরেখা

tab

উপ-সম্পাদকীয়

দেশের কারা ব্যবস্থার বাস্তবতা

শুভাশিস ব্যানার্জি শুভ

শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

কারা ব্যবস্থা বলতে কোনো দেশে অপরাধীদের আটক রাখার জন্য যে আইনি কাঠামো ও কার্যক্রম পরিচালিত হয়, তাকে বোঝায়। এটি মূলত কারাগার পরিচালনা, বন্দিদের নিরাপত্তা, সংশোধন ও পুনর্বাসনের একটি পদ্ধতি। বাংলাদেশে কারা ব্যবস্থা কারা অধিদপ্তর দ্বারা পরিচালিত হয়, যার প্রধান কার্যালয় পুরাতন ঢাকার চকবাজারে অবস্থিত। ‘সংশোধনাগার‘ শব্দটি একটি বাংলা শব্দ, যার অর্থ ‘সংযোজন কেন্দ্র‘ বা ‘পুনর্বাসন কেন্দ্র‘। এটি এমন একটি স্থানকে বোঝায় যেখানে অপরাধী বা আইন অমান্যকারী ব্যক্তিদের রাখা হয় এবং তাদের সংশোধন ও পুনর্বাসনের জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

‘সংশোধনাগার‘ শব্দটির সমার্থক শব্দ ‘কারাগার‘। এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে সমাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অপরাধীদেরও একটি নতুন জীবন শুরু করার সুযোগ করে দেয়া হয়।

বাংলাদেশের অপরাধে জড়িয়ে যাওয়া নাগরিকদের সংশোধনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ‘বাংলাদেশ জেল‘। এটি প্রথম যাত্রা শুরু করে ১৭৮৮ খ্রিস্টাব্দে। বাংলাদেশ জেলের অধীনে বর্তমানে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার এবং ৫৫টি জেলা কারাগার রয়েছে। বাংলাদেশের কারাগারসমূহের ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৪৫০ জন।

‘বাংলাদেশ জেল‘-এর ভিশন হলোÑ রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ। প্রশ্ন হচ্ছে, নিরাপদ রাখার ভিশনে অবস্থানরত ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনা কেন প্রশ্নবিদ্ধ হয়? প্রশ্নটি আরও অনেক বেশি জোরালো কারণ, এসব মৃত্যু নিয়ে প্রায়শই মৃত ব্যক্তির পরিবার থেকে অভিযোগ শোনা যায় যে, করারক্ষী বাহিনী কারাবান্দিকে হত্যা করেছে। যেমন- গত ১৫ জুন কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে একজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ‘সাভারের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, কারা কর্তৃপক্ষ বলছে তিনি গলায় ফাঁস দিয়েছেন’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদটিতে উল্লেখ করা হয়েছেÑ কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কারা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, রোববার বেলা ১১টার দিকে কারাগারের সূর্যমুখী ভবনের একটি কক্ষে ঘটনাটি ঘটেছে।

কারা সূত্র জানায়, কারাগারের সূর্যমুখী ভবনের একটি সাধারণ কক্ষে তিনজন বন্দি ছিলেন। ঘটনার সময় একজন আদালতে, আরেকজন ঘুমিয়ে ছিলেন। কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজনস) গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সকালে তিনি নাশতা করেছেন। এরপরই কক্ষে ফাঁস দেন।’ কিভাবে এ ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

প্রতিবেদনের প্রতিবেদক নিহত ব্যক্তির পরিবারের সাথে কথা বলেছেন। নিহত সাইদুরের স্ত্রী রোকসানা রহমানসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা এই মৃত্যুকে ‘আত্মহত্যা‘ হিসেবে মেনে নেয়নি। বরং তারা অভিযোগ করেছে, শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও নিহত সাইদুর রহমানকে চিকিৎসার করানোর সুযোগ পরিবারকে দেয়া হয়নি।

এমন আরও বহু উদাহরণ রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন হয় না। কালের স্রোতে রহস্য শুধু ‘রহস্য‘-ই থেকে যায়! ২০২০ খ্রিস্টাব্দের ০৮ ফেব্রুয়ারি ‘কারাগারগুলো কবে হবে সংশোধনাগার’ শিরোনামে করা এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়Ñ দেশের বিভিন্ন কারাগারে বর্তমানে ধারণক্ষমতা ৪০ হাজার ৯৪৪ জন। সেখানে আটক বন্দির সংখ্যা ৮৮ হাজার ১৮৫ জন। অর্থাৎ ধারণক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি বন্দি বর্তমানে কারাগারে অবস্থান করছেন। এ হিসাব গত ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। সরকারি সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে এ হিসাব পাওয়া গেছে। বহু আগে থেকেই অভিযোগ শোনা যায়, আমাদের কারাগারগুলোতে মানবাধিকার ব্যাপকভাবে লঙ্ঘিত হয়। ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধাও সাধারণ কারাবাসী পান না। গাদাগাদি করে অমানবিক পরিবেশে থাকতে হয়। খাবারের মানও খুব খারাপ। কারাবাসীর সংশোধনেও নেয়া হয় না উল্লেখযোগ্য কোনো উদ্যোগ বা কার্যক্রম। ২০২০ খ্রিস্টাব্দের সেই চিত্র ২০২৫ খ্রিস্টাব্দে আরও ভয়াবহ হয়েছে। প্রতিদিন সামাজিক ও গণমাধ্যমে এসবের চর্চা হয়। আলাপ-আলোচনা হয়। সরকারি-বেসরকারিভাবে নানান উদ্যোগ গ্রহণের খবরও পাওয়া যায়; কিন্তু যেটা হয় না, সেটা হলো কথা এবং উদ্যোগ বাস্তবায়ন। ফলে বাস্তবতা হয়েছে স্থির দ-ায়মান- যেই লাউ সেই কদু।

বিশ্বব্যাপী কারাগার এবং অপরাধ বিচার ব্যবস্থার পরিবর্তন এবং প্রবণতা নিয়ে কাজ করছে ‘গ্লোবাল প্রিজন ট্রেন্ডস (জিপিটি)’। তাদের প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছেÑ বিশ্বজুড়ে কারাগারের অবস্থা খারাপ হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো কারাগারে অতিরিক্ত বন্দি থাকা। এটি তর্কসাপেক্ষে কারা ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় সমস্যা এবং এর পরিণতি সবচেয়ে খারাপভাবে জীবন-হুমকির কারণ হতে পারে। ফলে কারাগারগুলো তাদের যথাযথ কার্যকারিতা পালনে বাধাগ্রস্ত করতে পারে না।

কারাগারে অতিরিক্ত ভিড় কমাতে এবং এর ক্ষতিকারক দিকসমূহের নিমিত্তে জিপিটির নীতি-নির্ধারকরা ১০-দফা পরিকল্পনা তৈরি করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ ১. বিচার-পূর্ব এবং সাজা প্রদানের পরে আটক রাখার জন্য অ-হেফাজত বিকল্পতে বিনিয়োগ করা। ২. ছোটখাটো মামলাগুলোকে ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা থেকে সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে নেয়া। ৩. অপরাধ প্রতিরোধ ও হ্রাসের জন্য দীর্ঘমেয়াদি কৌশলে বিনিয়োগ করা। ৪. ন্যায়বিচারের সুযোগ উন্নত করে বিচার-পূর্ব আটকের উচ্চ হার হ্রাস করা। ৫. ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠী যেমন- শিশু, নির্ভরশীল শিশুদের মা এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ বা বিকল্প ব্যবস্থা করা।

সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে কারাগারগুলোর ধারণক্ষমতা ৪২ হাজারের কিছু বেশি। ৫ আগস্টের পর ৫০ হাজারের বেশি বন্দি ছিল। তারপর কারাবন্দির সংখ্যা আরও বেড়েছে। বর্তমানে কারাবন্দি রয়েছে ৬৫ হাজারের বেশি। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছেÑ দেশের ১৭টি কারাগার অনেক পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ। এসব কারাগার দ্রুত সংস্কার, মেরামত ও পুনর্নির্মাণ না করলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। ৫ আগস্ট ও পরবর্তী সময়ে ২২ শতাধিক কারাবন্দি পালিয়ে গেছেন। তার মধ্যে অনেকে স্বেচ্ছায় ফিরে এসেছেন। আবার অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৫০০ জন ধরা পড়েছে। এখনও কারাগার থেকে পালানো সন্ত্রাসী, জঙ্গিসহ ৭০০ বন্দির হদিস মিলছে না।

অন্যদিকে গত কয়েক মাসে জেএমবিসহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের ১৭৪ জন জামিনে মুক্তি পেয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন আলোচিত মামলার আসামি ও জঙ্গি সদস্যের মধ্যে এখনও পলাতক ৭০ জন। এসব নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কারা কর্তৃপক্ষ।

অপরাধীদের সংস্কারের জন্য ‘শাস্তি‘ দেয়ার প্রচলন শুরু করেছিলেন গ্রীক দার্শনিক প্লেটো। যারা তাদের জরিমানা দিতে পারতেন না তাদের জন্য সাধারণত শাস্তি হিসেবে কারাদ- ব্যবহার করা হতো। দরিদ্র এথেনিয়ানরা যারা জরিমানা দিতে পারতেন না তাদের অনির্দিষ্টকালের জন্য কারাদ- দেয়া হতো। প্রাচীন এথেন্সের কারাগারটি ‘ডেসমোটেরিয়ন‘ বা ‘শেকলের স্থান‘ নামে পরিচিত ছিল। মানব সভ্যতা বিকশিত হওয়ার সাথে সাথে ‘কারাগার‘ ব্যবস্থা বা চিন্তায় ইতিবাচক প্রভাব লক্ষনীয়। এই ক্ষেত্রে যথার্থ উদাহরণ ‘ন্যায়পরায়ণতা‘। এটি হচ্ছে বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুবিচার নিশ্চিত করা। বিচার বিভাগীয় পদক্ষেপগুলোকে এমনভাবে পরিচালিত হতে হয় যাতে তা পক্ষপাতহীন হয় এবং কেউ অন্যায়ভাবে বিচারপ্রাপ্ত না হন। ন্যায়পরায়ণতার মূল লক্ষ্য হলো অপরাধীর ন্যায়সঙ্গত বিচার এবং নির্দোষের সুরক্ষা। একজন নিরপরাধ ব্যক্তিও যেন সাজা না পায়- এই ধারণাটি আইনের একটি মৌলিক নীতি। এখানে উল্লেখ করা আছে, আদালত বা বিচার ব্যবস্থায়, দোষী সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট প্রমাণ না থাকলে, একজন নিরপরাধ ব্যক্তিকে সাজা দেয়া উচিত নয়। এই নীতিটি আইনের শাসন এবং ন্যায়বিচারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আধুনিক এই তত্ত্ব থেকে ‘সংশোধনাগার‘ শব্দটির উদ্ভব। পত্রিকান্তরে জানা যায়, নানান অনিয়মে দেশের কারাগারগুলো। টাকার বিনিময়ে সব ধরনের সুযোগ নিচ্ছে বন্দিরা। ৮৮টি নেটওয়ার্ক জ্যামারের মধ্যে ৭৮টি বিকল থাকায় বন্দিরা লুকিয়ে মোবাইলে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে। কারা কর্মকর্তারা বলছেন, আদালতে হাজিরা শেষে কারাগারে ফেরার সময় মাদক ও মোবাইল ফোন নিয়ে আসছে বন্দিরা। কারাফটকের তল্লাশিতে প্রায়ই তাদের ধরা হলেও অনেকে চোখ ফাঁকি দিচ্ছে। এ নিয়ে বেকায়দায় কারা কর্তৃপক্ষ। কারাগারের ভেতরে বন্দিদের অপরাধ রোধ করতে বিভিন্ন কৌশল নিয়েও হিমশিম খেতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সবকটি কারাগারে জ্যামার বসানোসহ নানামুখী পরিকল্পনা নিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।

আগামী ছয় মাসের মধ্যে নতুন জ্যামার স্থাপনসহ এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে বলে দাবি করছেন বর্তমান সরকার। যারা এই দাবিটি রাখছেন, তারাও খুব ভালোকরেই জানেন, এটা অসম্ভব। সেই কারণে এমন একটা সময় বেধে দিয়েছেন, যখন হয়তো সরকারে পরিবর্তন আসবে। বাংলাদেশে কারা ব্যবস্থা একটি সংশোধনাগার হিসাবে গড়ে তোলার জন্য কাজ চলছে বলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন,-বর্তমান সরকার আন্তর্জাতিক মানের কারা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

কারাগারগুলোকে সংশোধনাগারে রূপান্তরের লক্ষ্যে একটি আইন প্রণয়নের কাজ চলছে। দেশের কারা ব্যবস্থা সম্পর্কে সবাই কম-বেশি অবহিত। বহু অভিযোগে অভিযুক্ত এসব জায়গা থেকে অপরাধী পালিয়ে যাওয়ার মতোও ঘটনা ঘটে। বন্দি ধারণক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি কারাগারগুলোকে প্রকৃত সংশোধনাগার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। এর চেয়েও জরুরি অপরাধ প্রবণতা কমানো। এসব সমস্যা উত্তরণে প্রয়োজন আইনের পরিবর্তন ও প্রয়োগ। একই সাথে প্রক্রিয়াগত পরিবর্তনও আনতে হবে। কারাগারের এমন পরিবেশ দরকার যেখানে কর্তৃপক্ষের সংস্পর্শে এসে বন্দিরা নীতি-নৈতিকতায় সংশোধিত হওয়ার সুযোগ পায়। ‘কারাগার’ এবং ‘সংশোধনাগার’Ñ এই দুইয়ের মধ্যে সাম্য সাধনের সমন্বয় গড়ে তুলতে পারলে সমাজ এবং রাষ্ট্র সন্দেহাতীতভাবে উপকৃত হবে।

[লেখক : সংবাদকর্মী]

back to top