alt

opinion » post-editorial

প্রান্তিক মানুষের হৃদয়ে ফিরে আসা কালো মেঘ

শেখর ভট্টাচার্য

: শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
image

বাংলাদেশের প্রান্তিক মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের অগণন আন্দোলন, সংগ্রামের ইতিহাস আছে কিন্তু প্রান্তজনের জীবন মানের দৃশ্যমান পরিবর্তন সাধনের কোন চিহ্ন আমরা এখনও দেখতে পাইনি

সমতার সমাজ গড়ার স্বপ্ন মানুষ শত শত বছর থেকে দেখে আসছে। ষাট, সত্তর দশকে এই উপমহাদেশ এবং আমাদের বাংলাদেশের তরুণরা গভীরভাবে বিশ্বাস করতো সমতার সমাজ গড়া সম্ভব। বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখে আমাদের তরুণেরা একাত্তরে রণাঙ্গনে লড়ে গেছেন আধুনিক মারণাস্ত্রের সামনে। ছেষট্টির ছয়দফা আন্দোলনের প্রতিটি দফা ছিলো, পূর্ব ও পশ্চিম-পাকিস্তানের মধ্যে বৈষম্য নিরসন সম্পর্কিত। আবার আমরা যদি ফিরে যাই বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনে, সে আন্দোলনও কিন্তু ছিলো সংখ্যাগরিষ্টের ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দানের আন্দোলন। শোষণের গতিধারা অব্যাহত রাখার জন্যই কিন্তু পাকিস্তানি শাসকেরা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অসম্মতি প্রকাশ করেন। স্বয়ং পাকিস্তানের জাতির পিতা এ’ বিষয়ে সব চেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলেন। যদিও বিষয়টি বহুল আলোচিত তারপরও মনে করিয়ে দিচ্ছি বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষার মর্যাদা না দেয়ার পেছনে যে পূর্ব বাংলাকে নতুন উপনিবেশ তৈরির প্রাথমিক পদক্ষেপ ছিলো এ’ বিষয়টি উপলব্ধি করতে বাঙালিদের খুব বেশি সময় ব্যয় করতে হয়নি।

পাকিস্তানের তেইশ বছরের ইতিহাস, শোষণ এবং অপশাসনের ইতিহাস। পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই নীতি নির্ধারণে পশ্চিম-পাকিস্তানিদের একচেটিয়া আধিপত্য ছিলো। এই আধিপত্য পাকিস্তানের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছিলো। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের নাগরিকদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বৈষম্যই স্বাধীন বাংলাদেশ স্রৃষ্টির আন্দোলনকে বেগবান করে তুলে। সার্বিকভাবে যদি আমরা বিষয়টিকে বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখতে পাবো, নাগরিকদের মধ্যে সকল অধিকারের ক্ষেত্রে বৈষম্য নিরসনই ছিলো বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের মূল উদ্দেশ্য। অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক রাজনৈতিকভাবে মুক্ত হয়ে সমতার সমাজ গড়ার জন্য ত্রিশ লক্ষ মানুষ শহিদ হয়েছিলো একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে। সঙ্গত কারণেই মুক্তিযুদ্ধত্তোর বাংলাদেশের সংবিধানে সমতার স্বপ্নকে লিপিবদ্ধ করা হয় “সমাজতন্ত্র” চার মূলনীতির একটি হিসেবে স্থান দিয়ে। বৈষম্য ও শোষণ মুক্তি ছিলো এর অন্তর্নিহিত কারণ।

শোষণের মাধ্যমে বৈষম্য কি কেবল পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসকেরাই সূচনা করেছিলো? বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসন কিংবা তারও পূর্বে নানা উপায়ে শাসক রাজারা শোষণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখে গেছেন। উপমহাদেশে বৃটিশদের আগমনের কারণ হলো এই উপমহাদেশ বিশেষকরে বাংলার প্রাকৃতিক সম্পদ লুন্ঠন করে নিজেদের দেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা। বৃটিশরাজ শোষণের প্রক্রিয়াকে আরও মজবুত করার জন্যই চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রবর্তন করে জমিদারদের মাধ্যমে নব্য মধ্যবর্তী শোষক তৈরি করেছিলো। পাট চাষের ব্যাপকতা বৃটিশদের মাধ্যমেই সাধিত হয়েছিলো। জাহাজযোগে পাটপণ্য কিংবা পাটের আঁশ চলে যেতো রাণীর দেশে। নানা পাটজাত পণ্য উৎপাদন করে ঔপনিবেশিক বৃটিশ সরকার মুনাফা লাভ করে নিজে দেশের সম্পদকে স্ফীত করে তুলতো। কৃষকদের দিয়ে বল প্রয়োগ করে নীল চাষের ইতিহাসও একই।

বাংলাদেশের প্রান্তিক মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের অগণন আন্দোলন, সংগ্রামের ইতিহাস আছে কিন্তু প্রান্তজনের জীবন মানের দৃশ্যমান পরিবর্তন সাধনের কোন চিহ্ন আমরা এখনও দেখতে পাইনি। বৈষম্য নিরসন কী কেবল স্বপ্ন? সমাজ পরিবর্তনে বিশ্বাসী, আশাবাদী মানুষেরা বৈষম্য নিরসনে দৃশ্যমান করার মতো একটি ধারণা বলে বিশ্বাস করেন। বৈষম্য নিরসন হলো অর্জনযোগ্য একটি লক্ষ্য যা অর্জনের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা, রাজনৈতিক সংস্কার এবং সামাজিক পরিবর্তনের প্রয়োজন।

বৈষম্য দূরীকরণের পথে অনেক চ্যালেঞ্জ বা বাঁধা রয়েছে বলে সকল কালের বিপ্লবীরা মনে করেন। তবে নিবেদিতপ্রাণ আন্দোলনকারীরা বিশ্বাস করেন সংঘবদ্ধ মানুষের নিবেদন, সামষ্টিক প্রচেষ্টা এবং ব্যাপক সংস্কারের মাধ্যমেই সম্ভব একটি স্বপ্নের সমতার সমাজ গঠন। আন্দোলন, বিপ্লব, গণঅভ্যুত্থানে কিছু শব্দ কিছু স্লোগান মানুষকে জাদুর মতো আকর্ষন করে। চব্বিশের গণ আন্দোলনে যুগল ম্যাজিক শব্দ ছিলো ‘বৈষম্য নিরসন’। গণ আন্দোলনে মানুষের অংশ গ্রহণের মূল আগ্রহের স্থল ছিলো বৈষম্য নিরসনর স্বপ্ন এবং তা’ অর্জন করে সমতার সমাজ গড়ার শত বছরের আকাক্সক্ষার বাস্তবায়ন।

ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক গণঅভ্যুথানকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে বৈষম্যের বিরুদ্ধে মানুষের এই আন্দোলন সমূহ একটি উন্নত সমাজ গড়ার আকাক্সক্ষার কারণে পরিচালিত হয়েছে। প্রতিটি আন্দোলনে প্রান্তিক মানুষেরা চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার প্রবল আকাক্সক্ষায় লক্ষ লক্ষ তরুণ ষাট সত্তর দশকে পতঙ্গের মতো বিপ্লবের আগুনে ঝাপ দিয়েছে। আমরা যারা ষাটের দশকে জন্ম গ্রহণ করেছি অনেকেই সেই বিপ্লবের অংশীজন ছিলাম প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে।

বৈষম্য নিরসনের আন্দোলন সকল সমাজে, সকল সময়ে বহমান ছিলো এবং আছে। বৈষম্যের মাত্রা যখন সহিষ্ণুতার সকল মাত্রা ছাড়িয়ে যায় তখন মানুষের সামাজিক এবং রাজনৈতিক জীবনে প্রতিরোধের তীব্র কামনা ঘটে। এই কামনা জ্বলন্ত অংগার হয়ে বিপ্লব, অভ্যুথান হিসেবে প্রকাশিত হয়। কখনো বা শাসকদের স্বৈরশাসনে সমাজে নীরবতার সংস্কৃতি গ্রাস করে। এটি অনেকটা ঝড়ের পূর্বের নীরব প্রকৃতির মতো। যে কোন বিষয় বা দাবিকে কেন্দ্র করে এই নীরবতা ভংগ হয়ে বিপ্লব সংঘটিত হয়। সমাজ বিজ্ঞানীরা ঝড়ের পূর্বের সমাজের এই নীরবতা দেখে সতর্ক সংকেত দিয়ে থাকেন যদিও দাপুটে শাসকেরা সেই সংকেতকে অগ্রাহ্য করে দমন পীড়ন চালিয়ে যেতে থাকেন কারণ স্বৈরশাসকেরা দমন পীড়নের মাধ্যমে সকল আন্দোলনকে দমিয়ে দিতে দিতে এক ধরণের অস্বাভাবিক এবং অযৌক্তিক আত্মবিশ্বাস অর্জন করে থাকেন।

চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করার লক্ষ্য নিয়ে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা নেমেছিলেন রাজপথে। বিন্দু বিন্দু ঘটনাপ্রবাহ একপর্যায়ে রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। আওয়ামী শাসনের সাড়ে পনেরো বছরের দুঃশাসনজনিত ক্ষোভ থেকে মুক্ত হতে পথে নামে আপামর জনতা। এভাবেই একটি দাবি থেকে দানা বাঁধা আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানের মতো সামষ্টিক পরিসর লাভ করে। প্রশ্ন হচ্ছে, যে বৈষম্য দূর করতে যে তরুণেরা প্রাণ দিয়েছে, পঙ্গুত্ব বরণ করে নিয়েছে তার ফলাফল হিসেবে বৈষম্য কি আদৌ দূর হয়েছে? কিংবা দূর হওয়ার পথরেখা তৈরি হয়েছে? অন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ ও সমাজচিন্তকদের মতে, বৈষম্য দূর হয়নি, বৈষম্য হ্রাসের দুরবর্তী সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছেনা। অনেকেই মনে অনেক বৈষম্য এবারও ফিরে এসেছে ভিন রূপে এবং ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বব্যাংক কিংবা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদরা কোন আশার বাণী শুনাতে পারছেন না।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের ফেলো। অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে ২৭ লাখের বেশি মানুষ আরো বেশি দরিদ্র হয়ে গেছে। এর মধ্যে ১৮ লাখ নারী।সমাজের সবচেয়ে প্রান্তিক, ভঙ্গুর জনসমষ্টি হচ্ছেন আমাদের নারী সমাজ। তারা হলেন দরিদ্রের মধ্যে দরিদ্রতম (পুরেস্ট অব দ্য পুওর)। নারীসমাজের ক্রমমবর্ধমান বিপন্নতা দেখলে যে কারো গা শিউরে উঠতে পারে। সরকার বদল হলে যদি শাসন প্রক্রিয়ার পরিবর্তন না হয় তাহলে নব্য শোষকের জন্ম হওয়া অবধারিত।

বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার বৃদ্ধি ও সার্বিক ভাবে অর্থনীতির স্থিতিশীলতার প্রশ্নে পরবর্তীতে ব্যাপক আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদেরা স্থিতিশীলতার প্রশ্নে একই ব্যক্ত মতামত ব্যক্ত করেছেন। তাদের মতে “পরিস্থতি নাজুক’ হচ্ছে ক্রমশ। বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি “বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট” প্রকাশ করেছে। এই আপডেটে বলা হয়েছে চলতি বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসার সম্ভাবনা নেই। ২০২৫ সালের শেষের দিকে আরও ত্রিশ লক্ষ মানুষ অতি দরিদ্র্েযর কাতারে চলে যাবে। ধারণা করা হচ্ছে, এ বছর দারিদ্র্েযর হার ২২.৯ শতাংশে চলে যাবে যা ২০২২ সালে ছিলো ১৮.৭ শতাংশ। দারিদ্র্েযর ক্রমাগত হার বৃদ্ধিকে সামাল দেয়ার প্রক্রিয়া এবং পথনকশা এখনও নাগরিকদের সামনে দৃশ্যমান হয়ে ওঠেনি।

প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রাম সফলতার মুখ দেখে যখন প্রান্তিক মানুষ আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকশ করে রাজপথে নেমে আসে। চোখ ভরা স্বপ্ন, বুক ভরা সাহস নিয়ে এসব প্রান্তিক মানুষ পরিবর্তনকে ছুঁয়ে দেখতে চায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিবর্তন আকাশে ভেসে থাকা ছবি হয়ে দূরে সরে যায়। হাতের স্পর্শ কিংবা দৃশ্যমান পরিবর্তনকে অনুভব করার সুযোগ হয় না প্রান্তিক মানুষের।

যে সমস্ত ম্যাজিক ওয়ার্ড বা জাদুকরী শব্দে বিশ্বাস স্থাপন করে প্রান্তজনেরা স্বপ্ন দেখে সে সব শব্দ নিয়ে কথামালা তৈরি হয় কিন্তু এর দৃশ্যমান কোন রূপ দেখা যায় না। বৃটিশ, প্রাক বৃটিশ, সাতচল্লিশ, একাত্তর, চব্বিশের পরিবর্তন গুলো ব্যাপক সম্ভাবনা নিয়ে আসে কিন্তু এই সম্ভাবনাকে চোখের সামনে ধুলিস্যাৎ হতে দ্যাখে মানুষের হৃদয় ভেংগে খান খান হয়ে যায়। বৈষম্য নিরসন করে সমতাভিত্তিক সমাজের স্বপ্ন কি ইউটোপিয়া কিংবা কিছুসংখ্যক মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের পরিকল্পিত এবং সাজনো কোন খেলা? বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে। “মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ”, রবি ঠাকুর বলে গেছেন। প্রান্তিক মানুষের প্রতি এখনও বিশ্বাস হারায়নি অনেকে। বার বার পোড় খাওয়া মানুষেরা এখন পরিবর্তনের স্লোগান শুনতে পেলে সন্দেহ নিয়ে নির্বিকারভাবে তাকিয়ে থাকেন। সন্দেহ নামক কালো মেঘ কাটবে কখন। কেনো সন্দেহের কালো মেঘ আসে ফিরে ফিরে বাংলাদেশের প্রান্তিক মানুষের হৃদয়-আকাশে, সে প্রশ্নের সুরাহা হওয়া এখন সময়ের দাবি।

[লেখক: প্রাবন্ধিক ও উন্নয়ন গবেষক]

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: অবক্ষয়ের চোরাবালিতে আলোর দিশারী

অটোমেশন ও দেশের যুব কর্মসংস্থানের ভবিষ্যৎ

দুর্যোগে ভয় নয়, প্রস্তুতিই শক্তি

বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন

ছবি

‘আল্লাহ তুই দেহিস’: এ কোন ঘৃণার আগুন, ছড়িয়ে গেল সবখানে!

চেকের মামলায় আসামী যেসব ডিফেন্স নিয়ে খালাস পেতে পারেন

খেলনাশিল্প: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ

গীর্জায় হামলার নেপথ্যে কী?

সংঘের শতবর্ষের রাজনৈতিক তাৎপর্য

দুর্নীতি আর চাঁদাবাজি রাজনৈতিক-সংস্কৃতির অংশ

বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস

বাংলার সংস্কৃতি : উৎস, বিবর্তন ও বর্তমান সমাজ-মনন

রম্যগদ্য: শিক্ষা সহজ, বিদ্যা কঠিন

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জনগণের ভূমিকা উপেক্ষিত

শ্রমজীবী মানুষের শোভন কর্মসংস্থান

মূল্যস্ফীতি মোকাবেলায় বাংলাদেশের বাস্তবতা

প্রবারণার আলোয় আলোকিত হোক মানবজাতি

অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে ওয়াশিংটনের শেষ সুযোগ?

পাহাড় থেকে সমতল: আদিবাসী নারীর নিরাপত্তা

সোশ্যাল মিডিয়ার ‘লাইক’ সংস্কৃতি: আসক্তি নাকি নতুন যোগাযোগ?

জাতিসংঘে রোহিঙ্গা ইস্যু

মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক পরিবর্তন: আমরা কী শিক্ষা নিতে পারি

রম্যগদ্য: “কেশ ফ্যালায় ভাই, কেশ ফ্যালায়...”

লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীর অধিকার: বিসিএস ও শিক্ষা ক্যাডারের বৈষম্য

ন্যাশনাল গ্যালারি : রঙতুলির মহাসমুদ্রে একদিন

যুব শক্তি বনাম বেকারত্ব

প্রযুক্তি, আর্থিক পরিকল্পনা ও গণিতের ব্যবহার

ফরাসি বিপ্লব: বৈষম্য নিরসনে সামগ্রিক মুক্তির প্রেরণা

অন্তর্বর্তী সরকারের নিউইয়র্ক সফর

প্রবীণদের যত্ন: নৈতিক দায়িত্ব থেকে সামাজিক শক্তি নির্মাণ

জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের অপরিহার্যতা

জনমিতিক সুবিধা: স্বপ্নের দশক ও নীতিগত সংস্কারের অপরিহার্যতা

বিদ্যালয় ও মাঠ দখলের বিরুদ্ধে আদিবাসীদের সংগ্রাম

শিক্ষাসংস্কারে চাই সুস্পষ্ট লক্ষ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা

ভারতে এসআইআর বিতর্ক

কীটনাশক: জনস্বাস্থ্যের হুমকি

tab

opinion » post-editorial

প্রান্তিক মানুষের হৃদয়ে ফিরে আসা কালো মেঘ

শেখর ভট্টাচার্য

image

বাংলাদেশের প্রান্তিক মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের অগণন আন্দোলন, সংগ্রামের ইতিহাস আছে কিন্তু প্রান্তজনের জীবন মানের দৃশ্যমান পরিবর্তন সাধনের কোন চিহ্ন আমরা এখনও দেখতে পাইনি

শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

সমতার সমাজ গড়ার স্বপ্ন মানুষ শত শত বছর থেকে দেখে আসছে। ষাট, সত্তর দশকে এই উপমহাদেশ এবং আমাদের বাংলাদেশের তরুণরা গভীরভাবে বিশ্বাস করতো সমতার সমাজ গড়া সম্ভব। বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখে আমাদের তরুণেরা একাত্তরে রণাঙ্গনে লড়ে গেছেন আধুনিক মারণাস্ত্রের সামনে। ছেষট্টির ছয়দফা আন্দোলনের প্রতিটি দফা ছিলো, পূর্ব ও পশ্চিম-পাকিস্তানের মধ্যে বৈষম্য নিরসন সম্পর্কিত। আবার আমরা যদি ফিরে যাই বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনে, সে আন্দোলনও কিন্তু ছিলো সংখ্যাগরিষ্টের ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দানের আন্দোলন। শোষণের গতিধারা অব্যাহত রাখার জন্যই কিন্তু পাকিস্তানি শাসকেরা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অসম্মতি প্রকাশ করেন। স্বয়ং পাকিস্তানের জাতির পিতা এ’ বিষয়ে সব চেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলেন। যদিও বিষয়টি বহুল আলোচিত তারপরও মনে করিয়ে দিচ্ছি বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষার মর্যাদা না দেয়ার পেছনে যে পূর্ব বাংলাকে নতুন উপনিবেশ তৈরির প্রাথমিক পদক্ষেপ ছিলো এ’ বিষয়টি উপলব্ধি করতে বাঙালিদের খুব বেশি সময় ব্যয় করতে হয়নি।

পাকিস্তানের তেইশ বছরের ইতিহাস, শোষণ এবং অপশাসনের ইতিহাস। পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই নীতি নির্ধারণে পশ্চিম-পাকিস্তানিদের একচেটিয়া আধিপত্য ছিলো। এই আধিপত্য পাকিস্তানের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছিলো। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের নাগরিকদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বৈষম্যই স্বাধীন বাংলাদেশ স্রৃষ্টির আন্দোলনকে বেগবান করে তুলে। সার্বিকভাবে যদি আমরা বিষয়টিকে বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখতে পাবো, নাগরিকদের মধ্যে সকল অধিকারের ক্ষেত্রে বৈষম্য নিরসনই ছিলো বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের মূল উদ্দেশ্য। অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক রাজনৈতিকভাবে মুক্ত হয়ে সমতার সমাজ গড়ার জন্য ত্রিশ লক্ষ মানুষ শহিদ হয়েছিলো একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে। সঙ্গত কারণেই মুক্তিযুদ্ধত্তোর বাংলাদেশের সংবিধানে সমতার স্বপ্নকে লিপিবদ্ধ করা হয় “সমাজতন্ত্র” চার মূলনীতির একটি হিসেবে স্থান দিয়ে। বৈষম্য ও শোষণ মুক্তি ছিলো এর অন্তর্নিহিত কারণ।

শোষণের মাধ্যমে বৈষম্য কি কেবল পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসকেরাই সূচনা করেছিলো? বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসন কিংবা তারও পূর্বে নানা উপায়ে শাসক রাজারা শোষণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখে গেছেন। উপমহাদেশে বৃটিশদের আগমনের কারণ হলো এই উপমহাদেশ বিশেষকরে বাংলার প্রাকৃতিক সম্পদ লুন্ঠন করে নিজেদের দেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা। বৃটিশরাজ শোষণের প্রক্রিয়াকে আরও মজবুত করার জন্যই চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রবর্তন করে জমিদারদের মাধ্যমে নব্য মধ্যবর্তী শোষক তৈরি করেছিলো। পাট চাষের ব্যাপকতা বৃটিশদের মাধ্যমেই সাধিত হয়েছিলো। জাহাজযোগে পাটপণ্য কিংবা পাটের আঁশ চলে যেতো রাণীর দেশে। নানা পাটজাত পণ্য উৎপাদন করে ঔপনিবেশিক বৃটিশ সরকার মুনাফা লাভ করে নিজে দেশের সম্পদকে স্ফীত করে তুলতো। কৃষকদের দিয়ে বল প্রয়োগ করে নীল চাষের ইতিহাসও একই।

বাংলাদেশের প্রান্তিক মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের অগণন আন্দোলন, সংগ্রামের ইতিহাস আছে কিন্তু প্রান্তজনের জীবন মানের দৃশ্যমান পরিবর্তন সাধনের কোন চিহ্ন আমরা এখনও দেখতে পাইনি। বৈষম্য নিরসন কী কেবল স্বপ্ন? সমাজ পরিবর্তনে বিশ্বাসী, আশাবাদী মানুষেরা বৈষম্য নিরসনে দৃশ্যমান করার মতো একটি ধারণা বলে বিশ্বাস করেন। বৈষম্য নিরসন হলো অর্জনযোগ্য একটি লক্ষ্য যা অর্জনের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা, রাজনৈতিক সংস্কার এবং সামাজিক পরিবর্তনের প্রয়োজন।

বৈষম্য দূরীকরণের পথে অনেক চ্যালেঞ্জ বা বাঁধা রয়েছে বলে সকল কালের বিপ্লবীরা মনে করেন। তবে নিবেদিতপ্রাণ আন্দোলনকারীরা বিশ্বাস করেন সংঘবদ্ধ মানুষের নিবেদন, সামষ্টিক প্রচেষ্টা এবং ব্যাপক সংস্কারের মাধ্যমেই সম্ভব একটি স্বপ্নের সমতার সমাজ গঠন। আন্দোলন, বিপ্লব, গণঅভ্যুত্থানে কিছু শব্দ কিছু স্লোগান মানুষকে জাদুর মতো আকর্ষন করে। চব্বিশের গণ আন্দোলনে যুগল ম্যাজিক শব্দ ছিলো ‘বৈষম্য নিরসন’। গণ আন্দোলনে মানুষের অংশ গ্রহণের মূল আগ্রহের স্থল ছিলো বৈষম্য নিরসনর স্বপ্ন এবং তা’ অর্জন করে সমতার সমাজ গড়ার শত বছরের আকাক্সক্ষার বাস্তবায়ন।

ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক গণঅভ্যুথানকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে বৈষম্যের বিরুদ্ধে মানুষের এই আন্দোলন সমূহ একটি উন্নত সমাজ গড়ার আকাক্সক্ষার কারণে পরিচালিত হয়েছে। প্রতিটি আন্দোলনে প্রান্তিক মানুষেরা চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার প্রবল আকাক্সক্ষায় লক্ষ লক্ষ তরুণ ষাট সত্তর দশকে পতঙ্গের মতো বিপ্লবের আগুনে ঝাপ দিয়েছে। আমরা যারা ষাটের দশকে জন্ম গ্রহণ করেছি অনেকেই সেই বিপ্লবের অংশীজন ছিলাম প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে।

বৈষম্য নিরসনের আন্দোলন সকল সমাজে, সকল সময়ে বহমান ছিলো এবং আছে। বৈষম্যের মাত্রা যখন সহিষ্ণুতার সকল মাত্রা ছাড়িয়ে যায় তখন মানুষের সামাজিক এবং রাজনৈতিক জীবনে প্রতিরোধের তীব্র কামনা ঘটে। এই কামনা জ্বলন্ত অংগার হয়ে বিপ্লব, অভ্যুথান হিসেবে প্রকাশিত হয়। কখনো বা শাসকদের স্বৈরশাসনে সমাজে নীরবতার সংস্কৃতি গ্রাস করে। এটি অনেকটা ঝড়ের পূর্বের নীরব প্রকৃতির মতো। যে কোন বিষয় বা দাবিকে কেন্দ্র করে এই নীরবতা ভংগ হয়ে বিপ্লব সংঘটিত হয়। সমাজ বিজ্ঞানীরা ঝড়ের পূর্বের সমাজের এই নীরবতা দেখে সতর্ক সংকেত দিয়ে থাকেন যদিও দাপুটে শাসকেরা সেই সংকেতকে অগ্রাহ্য করে দমন পীড়ন চালিয়ে যেতে থাকেন কারণ স্বৈরশাসকেরা দমন পীড়নের মাধ্যমে সকল আন্দোলনকে দমিয়ে দিতে দিতে এক ধরণের অস্বাভাবিক এবং অযৌক্তিক আত্মবিশ্বাস অর্জন করে থাকেন।

চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করার লক্ষ্য নিয়ে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা নেমেছিলেন রাজপথে। বিন্দু বিন্দু ঘটনাপ্রবাহ একপর্যায়ে রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। আওয়ামী শাসনের সাড়ে পনেরো বছরের দুঃশাসনজনিত ক্ষোভ থেকে মুক্ত হতে পথে নামে আপামর জনতা। এভাবেই একটি দাবি থেকে দানা বাঁধা আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানের মতো সামষ্টিক পরিসর লাভ করে। প্রশ্ন হচ্ছে, যে বৈষম্য দূর করতে যে তরুণেরা প্রাণ দিয়েছে, পঙ্গুত্ব বরণ করে নিয়েছে তার ফলাফল হিসেবে বৈষম্য কি আদৌ দূর হয়েছে? কিংবা দূর হওয়ার পথরেখা তৈরি হয়েছে? অন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ ও সমাজচিন্তকদের মতে, বৈষম্য দূর হয়নি, বৈষম্য হ্রাসের দুরবর্তী সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছেনা। অনেকেই মনে অনেক বৈষম্য এবারও ফিরে এসেছে ভিন রূপে এবং ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বব্যাংক কিংবা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদরা কোন আশার বাণী শুনাতে পারছেন না।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের ফেলো। অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে ২৭ লাখের বেশি মানুষ আরো বেশি দরিদ্র হয়ে গেছে। এর মধ্যে ১৮ লাখ নারী।সমাজের সবচেয়ে প্রান্তিক, ভঙ্গুর জনসমষ্টি হচ্ছেন আমাদের নারী সমাজ। তারা হলেন দরিদ্রের মধ্যে দরিদ্রতম (পুরেস্ট অব দ্য পুওর)। নারীসমাজের ক্রমমবর্ধমান বিপন্নতা দেখলে যে কারো গা শিউরে উঠতে পারে। সরকার বদল হলে যদি শাসন প্রক্রিয়ার পরিবর্তন না হয় তাহলে নব্য শোষকের জন্ম হওয়া অবধারিত।

বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার বৃদ্ধি ও সার্বিক ভাবে অর্থনীতির স্থিতিশীলতার প্রশ্নে পরবর্তীতে ব্যাপক আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদেরা স্থিতিশীলতার প্রশ্নে একই ব্যক্ত মতামত ব্যক্ত করেছেন। তাদের মতে “পরিস্থতি নাজুক’ হচ্ছে ক্রমশ। বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি “বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট” প্রকাশ করেছে। এই আপডেটে বলা হয়েছে চলতি বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসার সম্ভাবনা নেই। ২০২৫ সালের শেষের দিকে আরও ত্রিশ লক্ষ মানুষ অতি দরিদ্র্েযর কাতারে চলে যাবে। ধারণা করা হচ্ছে, এ বছর দারিদ্র্েযর হার ২২.৯ শতাংশে চলে যাবে যা ২০২২ সালে ছিলো ১৮.৭ শতাংশ। দারিদ্র্েযর ক্রমাগত হার বৃদ্ধিকে সামাল দেয়ার প্রক্রিয়া এবং পথনকশা এখনও নাগরিকদের সামনে দৃশ্যমান হয়ে ওঠেনি।

প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রাম সফলতার মুখ দেখে যখন প্রান্তিক মানুষ আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকশ করে রাজপথে নেমে আসে। চোখ ভরা স্বপ্ন, বুক ভরা সাহস নিয়ে এসব প্রান্তিক মানুষ পরিবর্তনকে ছুঁয়ে দেখতে চায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিবর্তন আকাশে ভেসে থাকা ছবি হয়ে দূরে সরে যায়। হাতের স্পর্শ কিংবা দৃশ্যমান পরিবর্তনকে অনুভব করার সুযোগ হয় না প্রান্তিক মানুষের।

যে সমস্ত ম্যাজিক ওয়ার্ড বা জাদুকরী শব্দে বিশ্বাস স্থাপন করে প্রান্তজনেরা স্বপ্ন দেখে সে সব শব্দ নিয়ে কথামালা তৈরি হয় কিন্তু এর দৃশ্যমান কোন রূপ দেখা যায় না। বৃটিশ, প্রাক বৃটিশ, সাতচল্লিশ, একাত্তর, চব্বিশের পরিবর্তন গুলো ব্যাপক সম্ভাবনা নিয়ে আসে কিন্তু এই সম্ভাবনাকে চোখের সামনে ধুলিস্যাৎ হতে দ্যাখে মানুষের হৃদয় ভেংগে খান খান হয়ে যায়। বৈষম্য নিরসন করে সমতাভিত্তিক সমাজের স্বপ্ন কি ইউটোপিয়া কিংবা কিছুসংখ্যক মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের পরিকল্পিত এবং সাজনো কোন খেলা? বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে। “মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ”, রবি ঠাকুর বলে গেছেন। প্রান্তিক মানুষের প্রতি এখনও বিশ্বাস হারায়নি অনেকে। বার বার পোড় খাওয়া মানুষেরা এখন পরিবর্তনের স্লোগান শুনতে পেলে সন্দেহ নিয়ে নির্বিকারভাবে তাকিয়ে থাকেন। সন্দেহ নামক কালো মেঘ কাটবে কখন। কেনো সন্দেহের কালো মেঘ আসে ফিরে ফিরে বাংলাদেশের প্রান্তিক মানুষের হৃদয়-আকাশে, সে প্রশ্নের সুরাহা হওয়া এখন সময়ের দাবি।

[লেখক: প্রাবন্ধিক ও উন্নয়ন গবেষক]

back to top