alt

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

থ্যালাসেমিয়া রোধে সচেতনতা জরুরি

আরিফুল ইসলাম

: শুক্রবার, ০৭ মে ২০২১

বিশ্বে যে বংশগত রোগ নিয়ে শিশু জন্মের হার বাড়ছে তার মধ্যে থ্যালাসেমিয়া অন্যতম। এটি একটি জিনগত রক্তের রোগ, যা বংশ পরম্পরায় ছড়ায়। এটি কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়। সন্তান নেয়ার আগে পিতা-মাতা অজ্ঞতাবশত কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষাই করান না। ফলে সময়ের সাথে বাড়ছে এই রোগীর সংখ্যা। এই রোগ প্রতিরোধের প্রধান মাধ্যম হলো রোগ সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান এবং সচেতনতা। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ৮ মে দিনটিকে ‘বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে।

থ্যালাসেমিয়া একটি গ্রিক শব্দ। থ্যালাসা শব্দের অর্থ সমুদ্র এবং আনেমিয়া শব্দের অর্থ রক্তাপ্লতা। ভূমধ্যসাগর সন্নিহিত অঞ্চলে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। এজন্য একে থ্যালাসেমিয়া বলে। ১৯২৫ সালে আমেরিকার টমাস কুলি ও পারোল লি এই রোগটি চিহ্নিত করেন। এটি রক্তের লোহিত রক্তকণিকার হিমোগ্লোবিন অংশের একটি অস্বাভাবিক অবস্থাজনিত রোগ। এর ফলে মারাত্মক রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। এই রোগে আক্রান্ত রোগীকে নিয়মিত রক্ত সঞ্চালন না করলে তার পক্ষে বেঁচে থাকা সম্ভব হয় না।

একটি জরিপে দেখা গেছে, বিশ্বে থ্যালাসেমিয়ার বাহক সংখ্যা প্রায় ২৫০ মিলিয়ন। প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ১ লাখ শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। স্বনামধন্য অরফানেট জার্নাল অব রেয়্যার ডিজিজেসে প্রকাশিত (২০১৭) ‘থ্যালাসেমিয়া ইন সাউথ এশিয়া : ক্লিনিক্যাল লেসনস ল্যার্ন্ট ফ্রম বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধে প্রকাশিত হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের ১০-১২ ভাগ মানুষ এ রোগের বাহক; অর্থাৎ প্রায় দেড় থেকে দুই কোটির মতো মানুষ তাদের অজান্তে এ রোগের বাহক। বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, এই বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীর পরস্পরের মধ্যে বিয়ের মাধ্যমে দেশে প্রতিবছর নতুন করে ৭ হাজারের অধিক শিশু এই ঘাতক ব্যাধি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।

এই রোগ সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞানের অভাবের কারণে প্রতিনিয়ত এই রোগে আক্রান্ত লোকের সংখ্যা বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশঙ্কা করছে, আগামী ৫০ বছরে থ্যালাসেমিয়া পৃথিবীজুড়ে একটি বড় রকমের সমস্যা হয়ে দেখা দেবে।

সাধারণত থ্যালাসেমিয়া বাহকের মধ্যে রোগের কোনো ধরনের লক্ষণ থাকে না। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাহক যখন গর্ভাবস্থায় থাকেন, তখন তার রক্তশূন্যতা হলে তা আয়রন, ফলিক অ্যাসিড বা অন্য কোনো ওষুধ সেবনের মাধ্যমে ভালো হয় না। এছাড়া বাহকের তেমন কোনো সমস্যাই হয় না। চিকিৎসক ছাড়াও সাধারণ মানুষের এ রোগ সম্পর্কে জানা উচিত। থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে সচেতন হওয়া উচিত সবারই।

শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

একতার বাতাসে উড়ুক দক্ষিণ এশিয়ার পতাকা

ছবি

স্মরণ: শহীদ ডা. মিলন ও বৈষম্যহীন ব্যবস্থার সংগ্রাম

মনে পুরানো দিনের কথা আসে, মনে আসে, ফিরে আসে...

রাসায়নিক দূষণ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি

আছদগঞ্জের শুটকি : অতীতের গৌরব, বর্তমানের দুঃসময়

নবান্নের আনন্দ ও আমনের ফলন

‘প্রশ্ন কোরো না, প্রশ্ন সর্বনাশী’

ভূমিকম্প, অর্থনৈতিক চাপ এবং অনিশ্চয়তা: মানসিকতার নতুন অর্থনীতি

নবম পে স্কেল ও এর আর্থসামাজিক প্রভাব

মৃত্যুদণ্ড, তারপর...

জমির ভুয়া দলিল কীভাবে বাতিল করবেন?

জুলাই সনদ আদিবাসীদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি

ব্যাংকের দুরবস্থা থামানো যাচ্ছে না কেন

আমন ধানে ব্রাউন প্ল্যান্টহপারের প্রাদুর্ভাব

বৈষম্য, অপচয় ও খাদ্যনিরাপত্তার সংকট

“বাঙালি আমরা, নহিতো...”

নারী নির্যাতন, মানসিক স্বাস্থ্য এবং সমাজের দায়

কাঁপছে ডলারের সিংহাসন

ত্রিশতম জলবায়ু সম্মেলন : প্রতীকী প্রদর্শনী, নাকি বৈশ্বিক জলবায়ু রাজনীতির বাঁক নেওয়ার মুহূর্ত?

অপরিণত নবজাতক : ঝুঁকি, প্রতিরোধ ও যত্নের জরুরি বাস্তবতা

বাংলাদেশী উত্তরাধিকার: প্রবাস-জীবন ও আমাদের সংস্কৃতি

রাজনীতিতে ভাষার সহনীয় প্রয়োগ

ভারত : এসআইআর এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজন

মনে কী দ্বিধা নিয়ে...

নিরাপদ সড়ক ভাবনা

অপরিকল্পিত বাঁধ-শিল্পায়নে বিপর্যস্ত বরেন্দ্র কৃষি

ছবি

মামদানি দেখালেন নেতৃত্বের মূল পরিচয় কী

চেকের মামলায় বৈধ বিনিময়, লেনদেন, দেনা-পাওনা প্রমাণ ছাড়া আর জেল নয়

নবাগত শিক্ষকদের পেশাগত ভাবনা

মাদকাসক্তি: শুধু নিরাময় নয়, চাই সমাজ ব্যবস্থার সংস্কার

আমেরিকার “নো কিংস” আন্দোলন

ঘি তো আমাদের লাগবেই, নো হাংকি পাংকি!

“মামদানি না জামদানি...”

ভাষার বৈচিত্র্য রক্ষায় নীরব বিপ্লব

উপাত্ত সুরক্ষা আইন : গোপনীয়তা রক্ষা নাকি রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ?

সমতা কি ন্যায্যতা নিশ্চিত করে?

tab

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

থ্যালাসেমিয়া রোধে সচেতনতা জরুরি

আরিফুল ইসলাম

শুক্রবার, ০৭ মে ২০২১

বিশ্বে যে বংশগত রোগ নিয়ে শিশু জন্মের হার বাড়ছে তার মধ্যে থ্যালাসেমিয়া অন্যতম। এটি একটি জিনগত রক্তের রোগ, যা বংশ পরম্পরায় ছড়ায়। এটি কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়। সন্তান নেয়ার আগে পিতা-মাতা অজ্ঞতাবশত কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষাই করান না। ফলে সময়ের সাথে বাড়ছে এই রোগীর সংখ্যা। এই রোগ প্রতিরোধের প্রধান মাধ্যম হলো রোগ সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান এবং সচেতনতা। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ৮ মে দিনটিকে ‘বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে।

থ্যালাসেমিয়া একটি গ্রিক শব্দ। থ্যালাসা শব্দের অর্থ সমুদ্র এবং আনেমিয়া শব্দের অর্থ রক্তাপ্লতা। ভূমধ্যসাগর সন্নিহিত অঞ্চলে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। এজন্য একে থ্যালাসেমিয়া বলে। ১৯২৫ সালে আমেরিকার টমাস কুলি ও পারোল লি এই রোগটি চিহ্নিত করেন। এটি রক্তের লোহিত রক্তকণিকার হিমোগ্লোবিন অংশের একটি অস্বাভাবিক অবস্থাজনিত রোগ। এর ফলে মারাত্মক রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। এই রোগে আক্রান্ত রোগীকে নিয়মিত রক্ত সঞ্চালন না করলে তার পক্ষে বেঁচে থাকা সম্ভব হয় না।

একটি জরিপে দেখা গেছে, বিশ্বে থ্যালাসেমিয়ার বাহক সংখ্যা প্রায় ২৫০ মিলিয়ন। প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ১ লাখ শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। স্বনামধন্য অরফানেট জার্নাল অব রেয়্যার ডিজিজেসে প্রকাশিত (২০১৭) ‘থ্যালাসেমিয়া ইন সাউথ এশিয়া : ক্লিনিক্যাল লেসনস ল্যার্ন্ট ফ্রম বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধে প্রকাশিত হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের ১০-১২ ভাগ মানুষ এ রোগের বাহক; অর্থাৎ প্রায় দেড় থেকে দুই কোটির মতো মানুষ তাদের অজান্তে এ রোগের বাহক। বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, এই বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীর পরস্পরের মধ্যে বিয়ের মাধ্যমে দেশে প্রতিবছর নতুন করে ৭ হাজারের অধিক শিশু এই ঘাতক ব্যাধি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।

এই রোগ সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞানের অভাবের কারণে প্রতিনিয়ত এই রোগে আক্রান্ত লোকের সংখ্যা বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশঙ্কা করছে, আগামী ৫০ বছরে থ্যালাসেমিয়া পৃথিবীজুড়ে একটি বড় রকমের সমস্যা হয়ে দেখা দেবে।

সাধারণত থ্যালাসেমিয়া বাহকের মধ্যে রোগের কোনো ধরনের লক্ষণ থাকে না। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাহক যখন গর্ভাবস্থায় থাকেন, তখন তার রক্তশূন্যতা হলে তা আয়রন, ফলিক অ্যাসিড বা অন্য কোনো ওষুধ সেবনের মাধ্যমে ভালো হয় না। এছাড়া বাহকের তেমন কোনো সমস্যাই হয় না। চিকিৎসক ছাড়াও সাধারণ মানুষের এ রোগ সম্পর্কে জানা উচিত। থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে সচেতন হওয়া উচিত সবারই।

শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

back to top