alt

উপ-সম্পাদকীয়

জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান কেন কমছে

এস এম জাহাঙ্গীর আলম

: রোববার, ০৮ মে ২০২২

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশে ইতোমধ্যে দানাদার ফসলের উৎপাদন সাড়ে ৪ কোটি টন ছাড়িয়ে গেছে। চলতি অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে ৪ কোটি ৭০ লাখ টন প্রায়। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে ধান, গম ও ভুট্টাসহ দানাদার ফসলের উৎপাদন ছিল ৪ কোটি ৫৫ লাখ টন। এছাড়া কন্দাল ফসলের (আলু, শাকসবজি, পাট ইত্যাদি) উৎপাদন ছিল ১ কোটি ৯৭ লাখ টনের বেশি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ চাহিদার চেয়ে চালের উৎপাদন বেশি হচ্ছে। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে চালের উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ৮৬ লাখ টন, গম ১২ লাখ এবং ভুট্টা ৫৭ লাখ টন। অপরদিকে শাকসবজি, মসলা, তেল জাতীয় পণ্যের উৎপাদনও বাড়ছে। গত অর্থবছরে আলুর উৎপাদন ছিল ১ কোটি ৬ লাখ টন, শাকসবজি ১ কোটি ৯৭ লাখ টন, তেলজাতীয় ফসল ১২ লাখ টন ও ডাল ৯ লাখ টন। এ ছাড়া ডাল ১১ লাখ ২০ হাজার, তেলবীজ সাড়ে ১০ লাখ টন, পেঁয়াজ ২৩ লাখ, রসুন ৬ লাখ, ধনিয়া ৭ হাজার, আড়া ২ লাখ ৫০ হাজার ও হলুদ ১ লাখ ৫০ হাজার টন উৎপাদন হয়। মোট মসলাজাতীয় পণ্যে উৎপাদন ছিল ৩৫ লাখ টন। অভ্যন্তরীণ চাহিদার চেয়ে চালের উৎপাদন বেশি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) থেকে জানা যায়, মাথাপিছু বার্ষিক চালের (দানাদার) চাহিদা ১৫২ কেজি। এতে করে ১৬ কোটি ৬৪ লাখ জনসংখ্যার জন্য বার্ষিক চাহিদা ২ কোটি ৫৩ লাখ টন। যদি জনসংখ্যা ১৭ কোটি হয়, তাহলে বার্ষিক চাহিদা দাঁড়ায় প্রায় ৩ কোটি টন। অর্থাৎ বর্তমানে চাহিদার চেয়ে খাদ্যের উৎপাদন বেশি।

কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে এখাতে স্থির মূল্যে জিডিপির অবদান গত অর্থবছরে ছিল ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। বিবিএসের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী দেশে খানা পরিবারের সংখ্যা ২ কোটি ৮৬ লাখ ৯৫ হাজার ৭৬৩টি। কৃষি পরিবার ১ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার ১৮৩টি। মোট ফসলি জমির পরিমাণ ১ কোটি ৫৪ লাখ ৩৮ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে আবাদ যোগ্য জমির পরিমাণ ৮৫ লাখ ৭৭ হাজার হেক্টর। সেচের আওয়তায় ৭৪ লাখ ৪৮ হাজার হেক্টর, পতিত ২ লাখ ২৩ হাজার, এক ফসলি জমি ২২ লাখ ৫৩ হাজার, ২ ফসলি জমি ৩৯ লাখ ১৪ হাজার ও ৩ ফসলি জমির পরিমাণ ১৭ লাখ ৬৩ হাজার হেক্টর।

কৃষিতে সরকার মোটা অঙ্কের ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরে এখাতে ভর্তুকি রাখা হয়েছে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা, এর আগের অর্থবছরেও সমপরিমাণ ভর্তুকি রাখা হয়েছিল। জ্বালানি ও সারে বেশির ভাগ ভর্তুকি যাচ্ছে। বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ইউরিয়া সারের চাহিদা ২৮ লাখ টনের বেশি। এর মধ্যে প্রায় ১০ লাখ টন তারা উৎপাদন করতে পারছে, বাকিটা আমদানি করতে হচ্ছে। বেশি দামে সার আমদানি করে কম দামে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতি কেজি ইউরিয়া কৃষকদের মধ্যে বিক্রি করা হচ্ছে ১৪ টাকা কেজি।

এদিকে জিডিপিতে কৃষির অবদান কমতে শুরু করেছে। গত একদশকে জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান কমেছে প্রায় ৫ শতাংশ। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী একদশক আগেও কৃষিতে জিডিপির অবদান বেশ ভালোই ছিল। কিন্তু তা ক্রমেই কমে আসছে। ২০১০-১১ অর্থবছরে কৃষিতে জিডিপির অবদান ছিল ১৮ দশমিক ১ শতাংশ, যা গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা কমে এসে দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গত অর্থবছরে (২০২০-২১) অর্থবছরে আরও কমে এসে দাঁড়ায় প্রায় ১২ শতাংশে।

সরকার কৃষিতে মোটা অঙ্কের ভতুর্কি দিচ্ছে ঠিকই, তবে এ খাতকে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল নিশ্চিত করতে হবে, মাঠপর্যায়ে যাতে কৃষিক সরাসরি ভতুর্কির সুফল পায় তাও নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি রক্ষা করতে হবে কৃষিজমি।

[লেখক : সাবেক করকমিশনার]

জমি আপনার, দখল অন্যের?

সিধু-কানু : ধ্বংসস্তূপের নিচেও জেগে আছে সাহস

ছবি

বাংলার অনন্য লোকসংস্কৃতি ও গণতান্ত্রিক চেতনা

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান

তিন দিক থেকে স্বাস্থ্যঝুঁকি : করোনা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া

দেশের অর্থ পাচারের বাস্তবতা

খাদ্য নিরাপত্তার নতুন দিগন্ত

আবারও কি রোহিঙ্গাদের ত্যাগ করবে বিশ্ব?

প্লান্ট ক্লিনিক বদলে দিচ্ছে কৃষির ভবিষ্যৎ

ঢাকাকে বাসযোগ্য নগরী করতে করণীয়

রম্যগদ্য : ‘ডন ডনা ডন ডন...’

ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব : কে সন্ত্রাসী, কে শিকার?

সুস্থ ও শক্তিশালী জাতি গঠনে শারীরিক শিক্ষার গুরুত্ব

প্রতিরোধই উত্তম : মাদকমুক্ত প্রজন্ম গড়ার ডাক

ছবি

বিকাশের পথকে পরিত্যাগ করা যাবে না

বর্ষা ও বৃক্ষরোপণ : সবুজ বিপ্লবের আহ্বান

প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়া রোধে শিক্ষকের করণীয়

পারমাণবিক ন্যায়বিচার ও বৈশ্বিক ভণ্ডামির প্রতিচ্ছবি

পরিবেশের নীরব রক্ষক : শকুন সংরক্ষণে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন

মশার উপদ্রব : জনস্বাস্থ্য ও নগর ব্যবস্থাপনার চরম ব্যর্থতা

ভুল স্বীকারে গ্লানি নেই

ভাঙনের বুকে টিকে থাকা স্বপ্ন

একটি সফর, একাধিক সংকেত : কে পেল কোন বার্তা?

দেশের কারা ব্যবস্থার বাস্তবতা

ইসলামী ব্যাংক একীভূতকরণ : আস্থা ফেরাতে সংস্কার, না দায়মুক্তির প্রহসন?

রম্যগদ্য : চাঁদাবাজি চলছে, চলবে

বায়ুদূষণ : নীরব ঘাতক

ইসরায়েলের কৌশলগত ঔদ্ধত্য

পরিবার : সুনাগরিক ও সুশাসক তৈরির ভিত্তিমূল

শিল্পে গ্যাস সংকট : দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নিন

আমাদের লড়াইটা আমাদের লড়তে দিন

ব্যাকবেঞ্চারদের পৃথিবী : ব্যর্থতার গায়ে সাফল্যের ছাপ

আমের অ্যানথ্রাকনোজ ও বোঁটা পঁচা রোগ

শিশুদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি : স্কুল ব্যাংকিংয়ের সম্ভাবনা ও সংকট

প্রশিক্ষণ থেকে কেন বাদ নারী কৃষকরা?

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ও বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া

tab

উপ-সম্পাদকীয়

জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান কেন কমছে

এস এম জাহাঙ্গীর আলম

রোববার, ০৮ মে ২০২২

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশে ইতোমধ্যে দানাদার ফসলের উৎপাদন সাড়ে ৪ কোটি টন ছাড়িয়ে গেছে। চলতি অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে ৪ কোটি ৭০ লাখ টন প্রায়। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে ধান, গম ও ভুট্টাসহ দানাদার ফসলের উৎপাদন ছিল ৪ কোটি ৫৫ লাখ টন। এছাড়া কন্দাল ফসলের (আলু, শাকসবজি, পাট ইত্যাদি) উৎপাদন ছিল ১ কোটি ৯৭ লাখ টনের বেশি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ চাহিদার চেয়ে চালের উৎপাদন বেশি হচ্ছে। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে চালের উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ৮৬ লাখ টন, গম ১২ লাখ এবং ভুট্টা ৫৭ লাখ টন। অপরদিকে শাকসবজি, মসলা, তেল জাতীয় পণ্যের উৎপাদনও বাড়ছে। গত অর্থবছরে আলুর উৎপাদন ছিল ১ কোটি ৬ লাখ টন, শাকসবজি ১ কোটি ৯৭ লাখ টন, তেলজাতীয় ফসল ১২ লাখ টন ও ডাল ৯ লাখ টন। এ ছাড়া ডাল ১১ লাখ ২০ হাজার, তেলবীজ সাড়ে ১০ লাখ টন, পেঁয়াজ ২৩ লাখ, রসুন ৬ লাখ, ধনিয়া ৭ হাজার, আড়া ২ লাখ ৫০ হাজার ও হলুদ ১ লাখ ৫০ হাজার টন উৎপাদন হয়। মোট মসলাজাতীয় পণ্যে উৎপাদন ছিল ৩৫ লাখ টন। অভ্যন্তরীণ চাহিদার চেয়ে চালের উৎপাদন বেশি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) থেকে জানা যায়, মাথাপিছু বার্ষিক চালের (দানাদার) চাহিদা ১৫২ কেজি। এতে করে ১৬ কোটি ৬৪ লাখ জনসংখ্যার জন্য বার্ষিক চাহিদা ২ কোটি ৫৩ লাখ টন। যদি জনসংখ্যা ১৭ কোটি হয়, তাহলে বার্ষিক চাহিদা দাঁড়ায় প্রায় ৩ কোটি টন। অর্থাৎ বর্তমানে চাহিদার চেয়ে খাদ্যের উৎপাদন বেশি।

কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে এখাতে স্থির মূল্যে জিডিপির অবদান গত অর্থবছরে ছিল ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। বিবিএসের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী দেশে খানা পরিবারের সংখ্যা ২ কোটি ৮৬ লাখ ৯৫ হাজার ৭৬৩টি। কৃষি পরিবার ১ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার ১৮৩টি। মোট ফসলি জমির পরিমাণ ১ কোটি ৫৪ লাখ ৩৮ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে আবাদ যোগ্য জমির পরিমাণ ৮৫ লাখ ৭৭ হাজার হেক্টর। সেচের আওয়তায় ৭৪ লাখ ৪৮ হাজার হেক্টর, পতিত ২ লাখ ২৩ হাজার, এক ফসলি জমি ২২ লাখ ৫৩ হাজার, ২ ফসলি জমি ৩৯ লাখ ১৪ হাজার ও ৩ ফসলি জমির পরিমাণ ১৭ লাখ ৬৩ হাজার হেক্টর।

কৃষিতে সরকার মোটা অঙ্কের ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরে এখাতে ভর্তুকি রাখা হয়েছে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা, এর আগের অর্থবছরেও সমপরিমাণ ভর্তুকি রাখা হয়েছিল। জ্বালানি ও সারে বেশির ভাগ ভর্তুকি যাচ্ছে। বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ইউরিয়া সারের চাহিদা ২৮ লাখ টনের বেশি। এর মধ্যে প্রায় ১০ লাখ টন তারা উৎপাদন করতে পারছে, বাকিটা আমদানি করতে হচ্ছে। বেশি দামে সার আমদানি করে কম দামে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতি কেজি ইউরিয়া কৃষকদের মধ্যে বিক্রি করা হচ্ছে ১৪ টাকা কেজি।

এদিকে জিডিপিতে কৃষির অবদান কমতে শুরু করেছে। গত একদশকে জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান কমেছে প্রায় ৫ শতাংশ। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী একদশক আগেও কৃষিতে জিডিপির অবদান বেশ ভালোই ছিল। কিন্তু তা ক্রমেই কমে আসছে। ২০১০-১১ অর্থবছরে কৃষিতে জিডিপির অবদান ছিল ১৮ দশমিক ১ শতাংশ, যা গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা কমে এসে দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গত অর্থবছরে (২০২০-২১) অর্থবছরে আরও কমে এসে দাঁড়ায় প্রায় ১২ শতাংশে।

সরকার কৃষিতে মোটা অঙ্কের ভতুর্কি দিচ্ছে ঠিকই, তবে এ খাতকে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল নিশ্চিত করতে হবে, মাঠপর্যায়ে যাতে কৃষিক সরাসরি ভতুর্কির সুফল পায় তাও নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি রক্ষা করতে হবে কৃষিজমি।

[লেখক : সাবেক করকমিশনার]

back to top