alt

পাঠকের চিঠি

রম্যগদ্য : ‘অন্ডুল নাস্তি...’

জাঁ-নেসার ওসমান

: শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

‘নাই, নাই, নাই, কই গেলো কই গেলো...হায় হায় রে., হায় হায় রে...’ রিকশাওয়ালা রাস্তায় গড়াগড়ি দিয়ে হাউ হাউ করে কাঁদছে।

ব্যাপারটা কী? এমনি আহত চড়–ইয়ের মতো বুকফাটা আর্ত-চিৎকার। হলো কী? রাস্তায় মজা দ্যেখার জন্য বেশ ভিড় জমেছে। ঘটনা কী? কেউ কি ওর, সারাদিনের কামাই মেরে দিলো, নাকি ওর অটো রিশকার ব্যাটারি চুরি করেছে, নাকি প্রশাসন ব্যাটারি নিয়েছে! ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। কী ঘটেছে। দুই-একজনকে জিজ্ঞেস করাতে কেউ ভালো-মন্দ কিছু বলতে পারলো না। উৎসুক জনতার ভিড় বেড়েই চলেছে।

‘নাই, নাই, নাই, কই গেলো কই গেলো...হায় হায় রে., হায় হায় রে...’ রিকশাওয়ালার রাস্তায় গড়াগড়ি দিয়ে কান্না থামছেই না।

যাই হোক শেষ পর্যন্ত রিকশাওয়ালাকে একটু গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে, বোতলের মিনারেল ওয়াটার পান করিয়ে একটু ধাতস্ত হওয়ার পর ফোঁপাতে ফোঁপাতে রিকশাওয়ালা তার বয়ান শুরু করলো।

‘কয়েন না হালায়, সাঁঝের বেলা, পোস্তগোলা শ্মশানের কাছ থ্যেইকে দুই প্যাসেনজার উঠছে, কুচকুচইয়া কালা মোডাবেডি আর লগে ধপ ধইপ্পা ফর্সা এক ব্যাটা, ইয়া লম্বা চউড়া। অন্তত তিন মণ, ওজন হইবো। লগে একটা বোঁচকা; কিন্তু ব্যাডারা রিশকায় উডার পর আমারে কয় কী ওয়ারী বলদা গার্ডেনের পাশের খ্রিস্টানগো গোরস্তানে লয়া চলো। দ্যেইখ্যাই বুজছি ব্যাডারা ঢাকায় লোতুন। লগের বোঁচকা দ্যেইখা সুযোগ বুইজ্ঝা ভাড়া চাইলাম দুইশ ট্যাকা।

বেডি কোইলো ভাড়া লয়া চিন্তা কোইরোনা। ইনসাফ কইরা দিমুনি। ব্যাস মনের খুশিতে, ব্যাডা-বেডি আর বোঁচকা এ্যতোগুলা ওজনলয়া, বেশ গায়ের জোরে প্যাডেল মারলাম। ওম্মা রিশকা দ্যেহী, পাঁই পাঁই বেগে ছুটলো। ওয়াকী, মনে হয় জানি খালি রিশকা টানতাছি, পেরথম ইকটু সন্দ হইলো, কি রে ভাই এত্তোগুলা ওজন আর রিশকা চলতাছে পঙ্খীরাজ ঘোড়ার মতুন! ব্যাপার কী। রিকশায় মুখ ঘুরায়া দেহি, না প্যাসেঞ্জার দুইডা রিশকার হুড ফালায়া অন্তরঙ্গ হয়া বয়া আছে। মনে মনে ভাবলাম আমার কী, রিশকা চলে পনপনায়া, গায়ের ইকটু জোরও লাগতাছে না, তাড়াতাড়ি ঠিকানায় পৌঁছায়া ভাড়ালমু, আমার কি ঠ্যাকা, হালাগো ওজন আছে কি নাই। হেই লয়া আমার কাম কী!

রিশকায় প্যাডেল মারতাছি আর মাঝে মাঝে গত রাইতে পাঁচতারা হোটেলের ফালায়া দেওয়া বিরিয়ানি খাইছিলাম তাই মাঝে মইধ্যে হাল্কা পাতলা গ্যাস বাইরাতে ছিলো। গন্ধে আমারই মাথা ঘুইরা যায়। হঠাৎ ওই বেডি ওয়াক থু কইরা আমারে কয়, ওই রিশকাওয়ালা তোমার তো লুঙ্গিডার পিছনটা ছেঁড়া, তাছাড়া তখন থেকে তুমি মাঝে মাঝে বাতকম্ব করছো। হাইসসা কইলাম, হেঁঃ হেঁঃ গত রাইতে পাঁচতারা হোটেলের ফালায়া দেওয়া বিরিয়ানি খাইছিলাম তাই মাঝে মইধ্যে হাল্কাপাতলা গ্যাস বাইরাতেছে, আর লুঙ্গি ঘুরায়া পরলে তো, লুঙ্গির ফাডাদিয়া...বাংলা বাহির হইবো...হেঁঃ হেঁঃ।

আমার কতা হুইন্না বেডি কিছু কোইলো না, খালি ওয়াক থু কইরা খানিকটা ছ্যেপ ফালাইলো। ভাবলাম প্যাসেঞ্জারের লগে বেয়াদপি করণ ভালো না। তাই ভাবলাম ইকটু কথা কয়া বিষয়টা ঠান্ডা করি।

ফাঁৎ কইরা জিগাইলাম স্যার আপনেগো গ্রাম কই? ব্যাডা কোইলো, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া সিমেট্রী। হ্যায় কি কইলো মাথা মুন্ডু কিছুই বুঝলাম না। হ্যের গেরামের নাম কি কোইলো হ্যেইডাও বুঝলাম না। কোইলাম স্যার এহানে কোই আইছিলেন? বেডি কয় বোইনের বাড়ি। আমি কোইলাম- স্যার শুনছেননি, বাংলাদেশের ব্যবাগ বড় বড় সাহেবরা এয়ারপোর্টে ধরা পড়তাছে, দেশের বাইরে যাইতে পারে না। বেডি কয় কর্মফল! সাবে কয়- আচ্ছা ক’দিন পরপরই তোমাদের সমাজে তোমরা বাঙালি হয়ে বাঙালির সাথে গন্ডগোল করো, আর তোমাদের দেশের নিম্নআয়ের লোকেদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয় না, তোমরা এর প্রতিবাদ করোনা ক্যেনো?

আমি কইলাম, স্যার আমরা গরিবরা কি করুম কন। যেই দেশের হাল ধরে হ্যেই খালি ট্যাকা ট্যাকা কইরা নিজের আখের গোছায়, আমাগো গরিবের কথা কে ভাববো কন? কথা কয়া শেষ করছি কি করি নাই, ঠিক এই সময় আবার আমার গর্জন কইরা একটা বড় গ্যাস আইলো। বেডি চ্যেইত্তা মেইত্তা কয়Ñ ‘এই রিকশাওয়াল, রিকশা থামাও।’

আমি কোই, আমরা তো অহনো ওয়ারী আহি নাই?

‘তুমি তখন থেকে মাঝে মাঝেই বাতর্কম করছো আর আমাদের দু’জনের অন্নপ্রাশন্নের ভাত উগরে আসছে। যাও যলদি রিকশা থামিয়ে লুঙ্গি ঘুরিয়ে পর।’

আমি কোইলাম ম্যাডাম আর মাত্র পাঁচ মিনিট, আমরা ওয়ারী পৌঁছায়া যামু।

‘না আমি বলছি তুমি থামাও, না হলে তোমার ভালো হবে না বলছি।’ বেডির গলার আওয়াজ শুইন্না আমার কেমন যেনো, গায়ে কাঁটা দিয়া উঠলো। আমি কোইলাম, আচ্ছা আচ্ছা ম্যাডাম, আমি লুঙ্গি ঘুরায়া পরতাছি, বইল্লা রাস্তার এক পাশে রিকশা রাইখ্যা তাড়াতাড়ি বইলাম যে প্যেসাব কোইরা লুঙ্গি ঘুরায়া পরুম; কিন্তু যেই প্যেসাব করতে বইছি, আর দেহি কি নাই। আমার সামনে কিচ্ছু নাই। তাড়াতাড়ি দৌড় পাইড়া আইস্সা দেখি নাই, আমার রিশকায় প্যাসেঞ্জারও নাই। লগে লগে আমার পৌরুষও নাই, আমি ওই দুই ভুতুড়ে প্যাসেঞ্জারের লগে বেয়াদপি করাতে হ্যেরা আমারে হিজড়া বানায়া দিছে। অহন আপনেরাই কন আমি কি করুম... আমি অহন কি করুম... তাইতো, আমার মনে হলো- কারো বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমরা কি সবাই রিকশাওয়ালার মতো আটকুঁড়ে জীবন কাটাবো...।

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

মহাসড়কে কেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা

মাধ্যমিক থেকেই চাই কর্মমুখী শিক্ষা

গণপরিবহনে নারীদের নিরাপত্তা জরুরি

যানজট নিরসনে পদক্ষেপ চাই

ছবি

নিপাহ ভাইরাস : আতঙ্ক নয়, প্রয়োজন সচেতনতা

ছবি

ব্যাটারিচালিত রিকশা

সারের সংকট ও কৃষকের দুর্ভোগ

সংস্কার আর সময়ের সমীকরণে নির্বাচন

বাণিজ্য মুক্ত হোক সান্ধ্যকোর্স

ছবি

ডে-কেয়ার সেন্টার

ডিজিটাল দাসত্ব : মোবাইল আসক্তির প্রভাব

লোকালয়ে ইটভাটা

ছবি

নিপাহ ভাইরাস : খেজুরের কাঁচা রস পরিহার করুন

ছবি

পাটের বস্তা ব্যবহার অনেকটাই উপক্ষিত

রায়পুরে সড়কের সংস্কার চাই

অতিরিক্ত ভাড়া বন্ধ হোক

গ্যাস সংকট

ছবি

বাংলার ক্রিকেটের সফলতার গল্প লিখেছেন যুবারা

স্বেচ্ছাসেবা : একটি জীবন বোধ

শীতকালীন বায়ুদূষণ ও স্বাস্থ্য সচেতনতা

অবসরের বয়সসীমা বাড়ান

রাস্তা অবরোধ নামক অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে

ছবি

খেলনায় বিষাক্ত ধাতু

জিপিএ-৫ মুখ্য নয়, প্রয়োজন প্রকৃত শিক্ষা

রাষ্ট্রসংস্কারের পূর্বে আত্মসংস্কার প্রয়োজন

আইনশৃৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বেহালদশা

পরিকল্পিতভাবে উপযুক্ত স্থানে গাছ রোপণ করা উচিত

ইজিবাইক ছিনতাই

ছবি

টিসিবির পণ্য : নিম্নআয়ের মানুষের ভোগান্তি

ছবি

উন্নয়নের জন্য কারিগরি শিক্ষা অপরিহার্য

ছবি

ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ বন্ধ করুন

সড়ক দুর্ঘটনা

বায়ুদূষণে দমবন্ধ ঢাকা

হলগুলোর খাবারের মান বাড়ান

নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ হবে কবে

tab

পাঠকের চিঠি

রম্যগদ্য : ‘অন্ডুল নাস্তি...’

জাঁ-নেসার ওসমান

শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

‘নাই, নাই, নাই, কই গেলো কই গেলো...হায় হায় রে., হায় হায় রে...’ রিকশাওয়ালা রাস্তায় গড়াগড়ি দিয়ে হাউ হাউ করে কাঁদছে।

ব্যাপারটা কী? এমনি আহত চড়–ইয়ের মতো বুকফাটা আর্ত-চিৎকার। হলো কী? রাস্তায় মজা দ্যেখার জন্য বেশ ভিড় জমেছে। ঘটনা কী? কেউ কি ওর, সারাদিনের কামাই মেরে দিলো, নাকি ওর অটো রিশকার ব্যাটারি চুরি করেছে, নাকি প্রশাসন ব্যাটারি নিয়েছে! ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। কী ঘটেছে। দুই-একজনকে জিজ্ঞেস করাতে কেউ ভালো-মন্দ কিছু বলতে পারলো না। উৎসুক জনতার ভিড় বেড়েই চলেছে।

‘নাই, নাই, নাই, কই গেলো কই গেলো...হায় হায় রে., হায় হায় রে...’ রিকশাওয়ালার রাস্তায় গড়াগড়ি দিয়ে কান্না থামছেই না।

যাই হোক শেষ পর্যন্ত রিকশাওয়ালাকে একটু গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে, বোতলের মিনারেল ওয়াটার পান করিয়ে একটু ধাতস্ত হওয়ার পর ফোঁপাতে ফোঁপাতে রিকশাওয়ালা তার বয়ান শুরু করলো।

‘কয়েন না হালায়, সাঁঝের বেলা, পোস্তগোলা শ্মশানের কাছ থ্যেইকে দুই প্যাসেনজার উঠছে, কুচকুচইয়া কালা মোডাবেডি আর লগে ধপ ধইপ্পা ফর্সা এক ব্যাটা, ইয়া লম্বা চউড়া। অন্তত তিন মণ, ওজন হইবো। লগে একটা বোঁচকা; কিন্তু ব্যাডারা রিশকায় উডার পর আমারে কয় কী ওয়ারী বলদা গার্ডেনের পাশের খ্রিস্টানগো গোরস্তানে লয়া চলো। দ্যেইখ্যাই বুজছি ব্যাডারা ঢাকায় লোতুন। লগের বোঁচকা দ্যেইখা সুযোগ বুইজ্ঝা ভাড়া চাইলাম দুইশ ট্যাকা।

বেডি কোইলো ভাড়া লয়া চিন্তা কোইরোনা। ইনসাফ কইরা দিমুনি। ব্যাস মনের খুশিতে, ব্যাডা-বেডি আর বোঁচকা এ্যতোগুলা ওজনলয়া, বেশ গায়ের জোরে প্যাডেল মারলাম। ওম্মা রিশকা দ্যেহী, পাঁই পাঁই বেগে ছুটলো। ওয়াকী, মনে হয় জানি খালি রিশকা টানতাছি, পেরথম ইকটু সন্দ হইলো, কি রে ভাই এত্তোগুলা ওজন আর রিশকা চলতাছে পঙ্খীরাজ ঘোড়ার মতুন! ব্যাপার কী। রিকশায় মুখ ঘুরায়া দেহি, না প্যাসেঞ্জার দুইডা রিশকার হুড ফালায়া অন্তরঙ্গ হয়া বয়া আছে। মনে মনে ভাবলাম আমার কী, রিশকা চলে পনপনায়া, গায়ের ইকটু জোরও লাগতাছে না, তাড়াতাড়ি ঠিকানায় পৌঁছায়া ভাড়ালমু, আমার কি ঠ্যাকা, হালাগো ওজন আছে কি নাই। হেই লয়া আমার কাম কী!

রিশকায় প্যাডেল মারতাছি আর মাঝে মাঝে গত রাইতে পাঁচতারা হোটেলের ফালায়া দেওয়া বিরিয়ানি খাইছিলাম তাই মাঝে মইধ্যে হাল্কা পাতলা গ্যাস বাইরাতে ছিলো। গন্ধে আমারই মাথা ঘুইরা যায়। হঠাৎ ওই বেডি ওয়াক থু কইরা আমারে কয়, ওই রিশকাওয়ালা তোমার তো লুঙ্গিডার পিছনটা ছেঁড়া, তাছাড়া তখন থেকে তুমি মাঝে মাঝে বাতকম্ব করছো। হাইসসা কইলাম, হেঁঃ হেঁঃ গত রাইতে পাঁচতারা হোটেলের ফালায়া দেওয়া বিরিয়ানি খাইছিলাম তাই মাঝে মইধ্যে হাল্কাপাতলা গ্যাস বাইরাতেছে, আর লুঙ্গি ঘুরায়া পরলে তো, লুঙ্গির ফাডাদিয়া...বাংলা বাহির হইবো...হেঁঃ হেঁঃ।

আমার কতা হুইন্না বেডি কিছু কোইলো না, খালি ওয়াক থু কইরা খানিকটা ছ্যেপ ফালাইলো। ভাবলাম প্যাসেঞ্জারের লগে বেয়াদপি করণ ভালো না। তাই ভাবলাম ইকটু কথা কয়া বিষয়টা ঠান্ডা করি।

ফাঁৎ কইরা জিগাইলাম স্যার আপনেগো গ্রাম কই? ব্যাডা কোইলো, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া সিমেট্রী। হ্যায় কি কইলো মাথা মুন্ডু কিছুই বুঝলাম না। হ্যের গেরামের নাম কি কোইলো হ্যেইডাও বুঝলাম না। কোইলাম স্যার এহানে কোই আইছিলেন? বেডি কয় বোইনের বাড়ি। আমি কোইলাম- স্যার শুনছেননি, বাংলাদেশের ব্যবাগ বড় বড় সাহেবরা এয়ারপোর্টে ধরা পড়তাছে, দেশের বাইরে যাইতে পারে না। বেডি কয় কর্মফল! সাবে কয়- আচ্ছা ক’দিন পরপরই তোমাদের সমাজে তোমরা বাঙালি হয়ে বাঙালির সাথে গন্ডগোল করো, আর তোমাদের দেশের নিম্নআয়ের লোকেদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয় না, তোমরা এর প্রতিবাদ করোনা ক্যেনো?

আমি কইলাম, স্যার আমরা গরিবরা কি করুম কন। যেই দেশের হাল ধরে হ্যেই খালি ট্যাকা ট্যাকা কইরা নিজের আখের গোছায়, আমাগো গরিবের কথা কে ভাববো কন? কথা কয়া শেষ করছি কি করি নাই, ঠিক এই সময় আবার আমার গর্জন কইরা একটা বড় গ্যাস আইলো। বেডি চ্যেইত্তা মেইত্তা কয়Ñ ‘এই রিকশাওয়াল, রিকশা থামাও।’

আমি কোই, আমরা তো অহনো ওয়ারী আহি নাই?

‘তুমি তখন থেকে মাঝে মাঝেই বাতর্কম করছো আর আমাদের দু’জনের অন্নপ্রাশন্নের ভাত উগরে আসছে। যাও যলদি রিকশা থামিয়ে লুঙ্গি ঘুরিয়ে পর।’

আমি কোইলাম ম্যাডাম আর মাত্র পাঁচ মিনিট, আমরা ওয়ারী পৌঁছায়া যামু।

‘না আমি বলছি তুমি থামাও, না হলে তোমার ভালো হবে না বলছি।’ বেডির গলার আওয়াজ শুইন্না আমার কেমন যেনো, গায়ে কাঁটা দিয়া উঠলো। আমি কোইলাম, আচ্ছা আচ্ছা ম্যাডাম, আমি লুঙ্গি ঘুরায়া পরতাছি, বইল্লা রাস্তার এক পাশে রিকশা রাইখ্যা তাড়াতাড়ি বইলাম যে প্যেসাব কোইরা লুঙ্গি ঘুরায়া পরুম; কিন্তু যেই প্যেসাব করতে বইছি, আর দেহি কি নাই। আমার সামনে কিচ্ছু নাই। তাড়াতাড়ি দৌড় পাইড়া আইস্সা দেখি নাই, আমার রিশকায় প্যাসেঞ্জারও নাই। লগে লগে আমার পৌরুষও নাই, আমি ওই দুই ভুতুড়ে প্যাসেঞ্জারের লগে বেয়াদপি করাতে হ্যেরা আমারে হিজড়া বানায়া দিছে। অহন আপনেরাই কন আমি কি করুম... আমি অহন কি করুম... তাইতো, আমার মনে হলো- কারো বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমরা কি সবাই রিকশাওয়ালার মতো আটকুঁড়ে জীবন কাটাবো...।

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

back to top