খুলনায় পৃথক দুটি হত্যা মামলায় দুইজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল সকালে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আবদুস ছালাম খান এবং বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মতিয়ার রহমান পৃথক এই রায় ঘোষণা করেন।
খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ জানান, যৌতুকের দাবিতে ২০১১ সালের ২৫ আগস্ট রাতে খুলনা নগরের বেলায়েত হোসেন সড়কের বাসভবনে আসামি নুরুন্নবী তার স্ত্রী জোহরা খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর মরদেহ এবং তার শিশুপুত্রকে ঘরের মধ্যে তালাবদ্ধ করে রেখে পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই সাদ্দাম হোসেন বাদী হয়ে ২৭ আগস্ট খুলনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ১৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। গতকাল ওই মামলায় রায়ে আসামি নুরুন্নবীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আবদুস ছালাম খান। রায় ঘোষণার পর আসামিকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
অন্যদিকে যশোরের অভয়নগরের কলেজছাত্র নুরুজ্জামান বাবু হত্যা মামলায় আসামি রাজ্জাক পাটোয়ারীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মতিয়ার রহমান। আসামি রাজ্জাক পাটোয়ারী পলাতক রয়েছেন।
মামলার এজাহারের বরাতে খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী মাজাহারুল ইসলাম জানান, ২০২০ সালের ১ জুন রাতে কলেজছাত্র নুরুজ্জামান বাবুকে তার বাড়ির পাশের আম বাগানে ডেকে কোমলপানীয়তে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে পান করানোর পর অচেতন করা হয়। এরপর গামছা দিয়ে তার চোখ বেঁধে অভয়নগরের পুড়াখালী গ্রামের সরকারি বাঁওড়ের পাশে নিয়ে নাইলনের রশি দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করে বাঁওড়ের কচুরিপনার নিচে লুকিয়ে রাখেন।
২ জুন ছেলের মোবাইল থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরে আসামি রাজ্জাক পাটোয়ারীকে আটক করে পুলিশ। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক ৪ জুন বাবুর মরদেহ বাঁওড়ের কচুরিপানা থেকে উদ্ধার করা হয়।
পরে নিহত নুরুজ্জামানের বাবা ইমরান গাজী বাদী হয়ে ৪ জুন অভয়নগর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মতিয়ার রহমান আসামি রাজ্জাক পাটোয়ারীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এদিকে মৌলভীবাজার জেলা বার্তা পরিবেশক জানান, মৌলভীবাজারে একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায়ে দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের রায় এবং জেলে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল মৌলভীবাজারের বিচারক এবং সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. সোলায়মান এ রায় প্রদান করেন।
ফাসির দণেড দণ্ডিত আসামিরা হলেন- আবারক মিয়া, পিতা-মজমিল উরপে মজ মিয়া, সাং-ছিক্কা, উপজেলা রাজনগর এবং জয়নাল মিয়া, পিতা-মৃত হামদু মিয়া, সাং-দক্ষিণ কাসিমপুর, উপজেলা-রাজনগর, উভয়ের জেলা মৌলভীবাজার। রায় ঘোষণা শেষে আবারক মিয়া ও জয়নালকে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
মামলার বিষয়বস্তু সম্পর্কে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল মৌলভীবাজারের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নিখিল রঞ্জন দাশ বলেছেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমণ ট্রাইব্যুনালের ২০১৯ সনের ২৫৩ নম্বর মামলার রায়ে ভিকটিমকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ের দোষী সাব্যস্ত ক্রমে এ দণ্ড দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় ভিকটিমের পরিবার ন্যায়বিচার পেয়েছে।
সিলেট জেলার বালাগঞ্জ উপজেলার ঐয়া গ্রামের মৃত ফরাসত আলীর কন্যা এ মামলার ভিকটিম রাশেদা বেগম খুন করে লাশ গুম করার অভিযোগ এতে ভিকটিমের ভাই আবদুল খালিদ বাদী হয়ে রাজনগর থাকায় বিগত এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিম ২০১৮ সনের ৩০ মে বিকেল অনুমান ৩ ঘটিকার সময় ধান কেনার জন্য নগদ ৭০,০০০ টাকা নিয়া রাজনগরের উদ্দেশে বাড়ি হইতে বাহির হইয়া আসে এবং গন্তব্য স্থল রাজনগরে আসামি আরকের বাড়িতে পৌঁছে। ওইদিন রাত অনুমান ৮টা পর থেকে ভিকটিম রাশেদা বেগম এর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নাই। এ ঘটনায় ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে পরদিন রাজনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। তদন্ত শেষে ২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। পুলিশ ভিকটিমের লাশ উদ্ধার করে দন্ডিত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগসহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল মৌলভীবাজারের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নিখিল রঞ্জন দাশ জানিয়েছেন, আদালতের বিচারক ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমাণিত হলে এ রায় প্রদান করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত ওই মামলার অভিযুক্ত আবারক মিয়া ও জয়নালকে ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। একই সাথে প্রত্যেকেকে ১ লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়।
বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪
খুলনায় পৃথক দুটি হত্যা মামলায় দুইজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল সকালে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আবদুস ছালাম খান এবং বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মতিয়ার রহমান পৃথক এই রায় ঘোষণা করেন।
খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ জানান, যৌতুকের দাবিতে ২০১১ সালের ২৫ আগস্ট রাতে খুলনা নগরের বেলায়েত হোসেন সড়কের বাসভবনে আসামি নুরুন্নবী তার স্ত্রী জোহরা খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর মরদেহ এবং তার শিশুপুত্রকে ঘরের মধ্যে তালাবদ্ধ করে রেখে পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই সাদ্দাম হোসেন বাদী হয়ে ২৭ আগস্ট খুলনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ১৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। গতকাল ওই মামলায় রায়ে আসামি নুরুন্নবীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আবদুস ছালাম খান। রায় ঘোষণার পর আসামিকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
অন্যদিকে যশোরের অভয়নগরের কলেজছাত্র নুরুজ্জামান বাবু হত্যা মামলায় আসামি রাজ্জাক পাটোয়ারীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মতিয়ার রহমান। আসামি রাজ্জাক পাটোয়ারী পলাতক রয়েছেন।
মামলার এজাহারের বরাতে খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী মাজাহারুল ইসলাম জানান, ২০২০ সালের ১ জুন রাতে কলেজছাত্র নুরুজ্জামান বাবুকে তার বাড়ির পাশের আম বাগানে ডেকে কোমলপানীয়তে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে পান করানোর পর অচেতন করা হয়। এরপর গামছা দিয়ে তার চোখ বেঁধে অভয়নগরের পুড়াখালী গ্রামের সরকারি বাঁওড়ের পাশে নিয়ে নাইলনের রশি দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করে বাঁওড়ের কচুরিপনার নিচে লুকিয়ে রাখেন।
২ জুন ছেলের মোবাইল থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরে আসামি রাজ্জাক পাটোয়ারীকে আটক করে পুলিশ। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক ৪ জুন বাবুর মরদেহ বাঁওড়ের কচুরিপানা থেকে উদ্ধার করা হয়।
পরে নিহত নুরুজ্জামানের বাবা ইমরান গাজী বাদী হয়ে ৪ জুন অভয়নগর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মতিয়ার রহমান আসামি রাজ্জাক পাটোয়ারীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এদিকে মৌলভীবাজার জেলা বার্তা পরিবেশক জানান, মৌলভীবাজারে একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায়ে দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের রায় এবং জেলে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল মৌলভীবাজারের বিচারক এবং সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. সোলায়মান এ রায় প্রদান করেন।
ফাসির দণেড দণ্ডিত আসামিরা হলেন- আবারক মিয়া, পিতা-মজমিল উরপে মজ মিয়া, সাং-ছিক্কা, উপজেলা রাজনগর এবং জয়নাল মিয়া, পিতা-মৃত হামদু মিয়া, সাং-দক্ষিণ কাসিমপুর, উপজেলা-রাজনগর, উভয়ের জেলা মৌলভীবাজার। রায় ঘোষণা শেষে আবারক মিয়া ও জয়নালকে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
মামলার বিষয়বস্তু সম্পর্কে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল মৌলভীবাজারের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নিখিল রঞ্জন দাশ বলেছেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমণ ট্রাইব্যুনালের ২০১৯ সনের ২৫৩ নম্বর মামলার রায়ে ভিকটিমকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ের দোষী সাব্যস্ত ক্রমে এ দণ্ড দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় ভিকটিমের পরিবার ন্যায়বিচার পেয়েছে।
সিলেট জেলার বালাগঞ্জ উপজেলার ঐয়া গ্রামের মৃত ফরাসত আলীর কন্যা এ মামলার ভিকটিম রাশেদা বেগম খুন করে লাশ গুম করার অভিযোগ এতে ভিকটিমের ভাই আবদুল খালিদ বাদী হয়ে রাজনগর থাকায় বিগত এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিম ২০১৮ সনের ৩০ মে বিকেল অনুমান ৩ ঘটিকার সময় ধান কেনার জন্য নগদ ৭০,০০০ টাকা নিয়া রাজনগরের উদ্দেশে বাড়ি হইতে বাহির হইয়া আসে এবং গন্তব্য স্থল রাজনগরে আসামি আরকের বাড়িতে পৌঁছে। ওইদিন রাত অনুমান ৮টা পর থেকে ভিকটিম রাশেদা বেগম এর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নাই। এ ঘটনায় ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে পরদিন রাজনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। তদন্ত শেষে ২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। পুলিশ ভিকটিমের লাশ উদ্ধার করে দন্ডিত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগসহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল মৌলভীবাজারের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নিখিল রঞ্জন দাশ জানিয়েছেন, আদালতের বিচারক ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমাণিত হলে এ রায় প্রদান করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত ওই মামলার অভিযুক্ত আবারক মিয়া ও জয়নালকে ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। একই সাথে প্রত্যেকেকে ১ লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়।