alt

মতামত » চিঠিপত্র

চিঠিপত্র : পারিবারিক সহিংসতা রোধে চাই সচেতনতা

: শনিবার, ২১ নভেম্বর ২০২০

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

পারিবারিক সহিংসতা রোধে চাই সচেতনতা

পরিবার হলো পৃথিবীর প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠান। যেখানে প্রাচীনকাল থেকে পরিবার তার সদস্যদের নিরাপত্তা দিয়ে আসছে। পরিবার একমাত্র প্রতিষ্ঠান যা নিঃস্বার্থে সদস্যদের সুরক্ষা দিয়ে আসছে। তবে করোনাকালীন মহামারী মধ্যে পারিবারিক সহিংসতা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দাম্পত্য কলহ, পরকীয়া, মাদকাসক্তি ও যৌতুকের কারণে হত্যাকান্ডের মতো ঘটনা ঘটছে। আবার পরিবারের সদস্যদের প্ররোচনায় কেউ আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নিচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে এ সহিংসতা থেকে শিশুরাও রক্ষা পাচ্ছে না। পারিবারিক সহিংসতা বৃদ্ধি পেলেও আমাদের সমাজে ব্যক্তিগত বা পারিবারিক বিষয় বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। পারিবারিক সহিংসতা একটি অপরাধ এটি বেশিরভাগ মানুষ মানতে রাজি নয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকার খুবই দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।

আমাদের সমাজের নারীরা সহিংসতার শিকার বা অপমানিত হলে তা সহজে প্রকাশ করতে চান না। নিরাপত্তা ও মান-সম্মানের ভয়ে সহিংসতার শিকার নারীরা আদালতে মামলা করেন না। ফলে পারিবারিক সহিংসতার ঘটনাগুলো প্রকাশ না পাওয়ায় আইন থাকার পরেও সুফল মিলছে না। দেশে পারিবারিক সহিংসতা রোধে আইন থাকলেও সে আইনের প্রয়োগ করা হয় না। আর সাধারণ মানুষের অজ্ঞতার কারণে আইনের সুফল পাচ্ছেন না। দেশে ২০০০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। তবে এ আইন দ্বারা নারী ও শিশু নির্যাতন রোধ করা যাচ্ছিল না।

এজন্য পারিবারিক সহিংসতা রোধে ৩৯টি মানবাধিকার সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয় পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ নাগরিক জোট। এ জোটের দাবির মুখে সরকার ২০১০ সালের ১২ অক্টোবর পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন-২০১০ প্রণয়ন করে। দেশে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে যত আইন ছিল সব শাস্তিনির্ভর। আইনগুলোর মাধ্যমে অপরাধীকে শুধু জেল-জরিমানার বিধান ছিল। তবে ২০১০ সালের প্রণীত আইনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা করা। যদি কোন নারী ও শিশু নির্যাতনের স্বীকার হয় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে এই আইন তাকে সুরক্ষা দেবে।

পারিবারিক সহিংসতা বলতে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে যেমন, রক্ত সম্পর্কীয়, বৈবাহিক সম্পর্কীয়, দত্তক বা যৌথ পরিবারের সদস্য এমন কোন ব্যক্তি কর্তৃক পরিবারের অপর কোন নারী বা শিশু সদস্যের ওপর শারীরিক নির্যাতন, মানসিক নির্যাতন, যৌন নির্যাতন অথবা আর্থিক ক্ষতিকে বোঝাবে। তবে এ আইনের আওতায় শাস্তিগুলো জামিনযোগ্য ও ও আপসযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। কারণ আইনের উদ্দেশ্য হলো পারিবারিক সহিংসতা কমিয়ে আনা বা প্রতিরোধ করা।

পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন-২০১০ দেশে প্রচলিত অন্যান্য আইনের তুলনায় আধুনিক ও আলাদা। আইনটির উপকারভোগী ও বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ অনেক সময় পুরনো ধ্যানধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার জন্য অনেক সময় এর সুষ্ঠু প্রয়োগ হয় না। আর বিষয়গুলো পারিবারিক হওয়ার কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আগাম কোন তথ্য থাকে না। ফলে পারিবারিক সহিংসতা কোনোভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে প্রথমে এগিয়ে আসতে হবে পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের। কোন পরিবারে যদি দীর্ঘদিন ধরে স্বামী-স্ত্রী বা অন্য কোন সদস্যের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব থাকে তাহলে সেটা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রতিবেশী বা পরিবারে পারিবারিক কলহ বা সহিংসতা নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হলে বিরোধীয় উভয়পক্ষকে পারিবারিক সহিংসতা আইনের দিকগুলো জানাতে হবে। পারিবারিক সহিংসতা রোধে সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ভাবে পারিবারিক সহিংসতা রোধে জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে।

আবদুর রউফ

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আগাম সতর্কবার্তাই কি যথেষ্ট?

সুলতানপুরে করতোয়া নদীর তাণ্ডব: নদীভাঙনে মানুষের জীবন বিপন্ন

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সম্ভাবনা বিস্তৃত, অনিয়মের ছায়াও গভীর

গেন্ডারিয়ায় সড়ক ও ড্রেন সংস্কারে অনিয়ম: জনদূর্ভোগ বৃদ্ধি

প্রবীণদের সুরক্ষা ও মর্যাদা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি

পলিভিনাইলের ব্যবহার প্রতিরোধ জরুরি

বৈধ সনদধারীদের অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি

টেকসই দুর্যোগ প্রস্তুতিতে জরুরি বাস্তব পদক্ষেপ প্রয়োজন

জলবায়ু পরিবর্তন ও নারী ও কিশোরীদের ঝুঁকি

মেধা হারাচ্ছে দেশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় : অযৌক্তিক ফি, সেশনজট ও প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলায় বিপর্যস্ত শিক্ষার্থী

সামাজিক মাধ্যমের ভুবনে জনতুষ্টিবাদের নতুন রূপ

ভেজাল খেজুরগুড় ও স্বাস্থ্যঝুঁকি

হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় প্রশাসনিক ক্যাডারের প্রয়োজনীয়তা

প্লাস্টিক বর্জ্যে মাছের মৃত্যু: সমাধান কোথায়

খোলা ম্যানহোল: ঢাকার রাজপথে এক নীরব মরণফাঁদ

গণপরিবহন: প্রতিদিনের যন্ত্রণার শেষ কবে?

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পুনর্জাগরণ

সাইবার বুলিং ও ভার্চুয়াল অপরাধ: তরুণদের অদৃশ্য বিপদ

ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে নগরজীবনের চরম ভোগান্তি

রাবি মেডিকেল সেন্টারের সংস্কার চাই

চিংড়ি শিল্পের পরিবেশগত প্রভাব

কক্সবাজার: উন্নয়নের পথে, বিপন্ন প্রকৃতি

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রেক্ষাপটে নতুন সম্ভাবনার ভোর

প্রাথমিক শিক্ষকদের বঞ্চনা দূর না হলে মানোন্নয়ন অসম্ভব

রাবির আবাসন সংকট

সব হাসপাতালে ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন সেবা চালু করা হোক

ডেঙ্গু মোকাবিলায় সচেতনতা

পানি সংকট: জীবন ও সভ্যতার জন্য বিরাট হুমকি

ই-লার্নিং: সীমান্তহীন শিক্ষার নতুন দিগন্ত

আজিমপুর কলোনির অব্যবস্থাপনা

জনস্বাস্থ্যের নীরব ঘাতক : তামাকজাত পণ্য

বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়: অবস্থান, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

ইন্দো-প্যাসিফিক রাজনীতি ও বাংলাদেশের সমুদ্রকৌশল

বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট: দীর্ঘসূত্রতা ও ভোগান্তির শেষ কোথায়?

পুরান ঢাকার রাস্তাগুলোর বেহাল অবস্থা

tab

মতামত » চিঠিপত্র

চিঠিপত্র : পারিবারিক সহিংসতা রোধে চাই সচেতনতা

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

শনিবার, ২১ নভেম্বর ২০২০

পারিবারিক সহিংসতা রোধে চাই সচেতনতা

পরিবার হলো পৃথিবীর প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠান। যেখানে প্রাচীনকাল থেকে পরিবার তার সদস্যদের নিরাপত্তা দিয়ে আসছে। পরিবার একমাত্র প্রতিষ্ঠান যা নিঃস্বার্থে সদস্যদের সুরক্ষা দিয়ে আসছে। তবে করোনাকালীন মহামারী মধ্যে পারিবারিক সহিংসতা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দাম্পত্য কলহ, পরকীয়া, মাদকাসক্তি ও যৌতুকের কারণে হত্যাকান্ডের মতো ঘটনা ঘটছে। আবার পরিবারের সদস্যদের প্ররোচনায় কেউ আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নিচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে এ সহিংসতা থেকে শিশুরাও রক্ষা পাচ্ছে না। পারিবারিক সহিংসতা বৃদ্ধি পেলেও আমাদের সমাজে ব্যক্তিগত বা পারিবারিক বিষয় বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। পারিবারিক সহিংসতা একটি অপরাধ এটি বেশিরভাগ মানুষ মানতে রাজি নয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকার খুবই দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।

আমাদের সমাজের নারীরা সহিংসতার শিকার বা অপমানিত হলে তা সহজে প্রকাশ করতে চান না। নিরাপত্তা ও মান-সম্মানের ভয়ে সহিংসতার শিকার নারীরা আদালতে মামলা করেন না। ফলে পারিবারিক সহিংসতার ঘটনাগুলো প্রকাশ না পাওয়ায় আইন থাকার পরেও সুফল মিলছে না। দেশে পারিবারিক সহিংসতা রোধে আইন থাকলেও সে আইনের প্রয়োগ করা হয় না। আর সাধারণ মানুষের অজ্ঞতার কারণে আইনের সুফল পাচ্ছেন না। দেশে ২০০০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। তবে এ আইন দ্বারা নারী ও শিশু নির্যাতন রোধ করা যাচ্ছিল না।

এজন্য পারিবারিক সহিংসতা রোধে ৩৯টি মানবাধিকার সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয় পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ নাগরিক জোট। এ জোটের দাবির মুখে সরকার ২০১০ সালের ১২ অক্টোবর পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন-২০১০ প্রণয়ন করে। দেশে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে যত আইন ছিল সব শাস্তিনির্ভর। আইনগুলোর মাধ্যমে অপরাধীকে শুধু জেল-জরিমানার বিধান ছিল। তবে ২০১০ সালের প্রণীত আইনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা করা। যদি কোন নারী ও শিশু নির্যাতনের স্বীকার হয় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে এই আইন তাকে সুরক্ষা দেবে।

পারিবারিক সহিংসতা বলতে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে যেমন, রক্ত সম্পর্কীয়, বৈবাহিক সম্পর্কীয়, দত্তক বা যৌথ পরিবারের সদস্য এমন কোন ব্যক্তি কর্তৃক পরিবারের অপর কোন নারী বা শিশু সদস্যের ওপর শারীরিক নির্যাতন, মানসিক নির্যাতন, যৌন নির্যাতন অথবা আর্থিক ক্ষতিকে বোঝাবে। তবে এ আইনের আওতায় শাস্তিগুলো জামিনযোগ্য ও ও আপসযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। কারণ আইনের উদ্দেশ্য হলো পারিবারিক সহিংসতা কমিয়ে আনা বা প্রতিরোধ করা।

পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন-২০১০ দেশে প্রচলিত অন্যান্য আইনের তুলনায় আধুনিক ও আলাদা। আইনটির উপকারভোগী ও বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ অনেক সময় পুরনো ধ্যানধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার জন্য অনেক সময় এর সুষ্ঠু প্রয়োগ হয় না। আর বিষয়গুলো পারিবারিক হওয়ার কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আগাম কোন তথ্য থাকে না। ফলে পারিবারিক সহিংসতা কোনোভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে প্রথমে এগিয়ে আসতে হবে পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের। কোন পরিবারে যদি দীর্ঘদিন ধরে স্বামী-স্ত্রী বা অন্য কোন সদস্যের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব থাকে তাহলে সেটা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রতিবেশী বা পরিবারে পারিবারিক কলহ বা সহিংসতা নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হলে বিরোধীয় উভয়পক্ষকে পারিবারিক সহিংসতা আইনের দিকগুলো জানাতে হবে। পারিবারিক সহিংসতা রোধে সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ভাবে পারিবারিক সহিংসতা রোধে জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে।

আবদুর রউফ

back to top