মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
জলাশয় সংস্কার করে মশা নিধন ও চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা করা হোক
ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় বহু পুকুর, খাল, ডোবা ইত্যাদি দীর্ঘদিন যাবৎ অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে। সংস্কারের অভাবে এগুলো কোন কোন ক্ষেত্রে বেদখল হচ্ছে এবং ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতারও অন্যতম কারণ। লক্ষণীয় বিয়ষ হচ্ছে, এগুলো একদিকে যেমন পরিবেশ দূষণ করছে, ঠিক তেমনিভাবে সারা বছর মশার প্রজননকেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকো ভাইরাসসহ অনেক মশা ও পানি বাহিত রোগের আধার হচ্ছে এসব হাজামজা পুকুর, ডোবা ও খাল। এসব পুকুর, জলাশয়ের একফোঁটা পানি যেন এক ফোটা বিষ। মশার উৎপাত বৃদ্ধি ও ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে প্রচুর আলোচনা সমালোচনা হয়। সরকার ও জনপ্রতিনিধিরাও বিব্রত হচ্ছেন। বাড়ছে মানুষের ক্ষোভ ও হতাশা।
রাজধানী একটি নির্দিষ্ট সময় পুরোপুরি ডেঙ্গু রোগের ঝুঁকিতে থাকে। তখন ঘরে ঘরে ডেঙ্গুর শঙ্কা ও ভয় থাকে। কয়েক বছর আগে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকেও রাজধানীতে ডেঙ্গু সম্পর্কে সতর্ক করা হয়। তবে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা যখন বৃদ্ধি পায়, তখন এডিস মশা মারার কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রদ্বয় ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ওপর চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে নগরবাসী।
ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় পুকুর, খাল, ডোবা ইত্যাদি জলাশয় সংস্কার করে একদিকে যেমন মশা নিধন করা সম্ভব, পক্ষান্তরে এগুলোকে সহজেই বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত করা সম্ভব। শুধু দরকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ আন্তরিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সরকারি, ব্যক্তিগত বা বাণিজ্যিকভাবেও এসব জলাশয় প্রকল্প আকারে সংস্কার ও বাস্তবায়ন করতে পারে। পরিকল্পনা মতো যদি জলাশয়গুলোর পানি পরিষ্কার করে চারদিকে সুন্দর চলাচলের রাস্তা, পাশে কংক্রিট/সিমেন্টের পর্যাপ্ত চেয়ার বা বেঞ্চ, ফুলের বাগান বা ফলজ গাছ, জলাশয়ের মধ্যে বা পাশে পানির ফোয়ারা, ভ্রমণপিপাসুদের জন্য নৌকা, শিশুদের জন্য বিনোদনের রাইড ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়, তবে এগুলো হতে পারে চমৎকার বিনোদন কেন্দ্র।
ঢাকার বাহিরে অনেক বড় বড় শহরের হাজামজা পুকুর ও জলাশয় সংস্কার করে ভ্রমণ পিপাসুদের আনন্দ বিনোদনের সুব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব জলাশয় একদিকে যেমন মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে, ঠিক তেমনিভাবে এগুলো এসব নগর ও শহরবাসীর প্রাতঃভ্রমণ ও চিত্ত বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে। উপকৃত হচ্ছে আপামর জনগণ। পুরান ঢাকার বংশাল বড় মসজিদের দক্ষিণ পার্শ্বের পুকুরটি হতে পারে একটি আদর্শ উদাহরণ। প্রতিদিন এর নির্মল স্বচ্ছ পানিতে হাজারও মানুষ গোসল করে এবং চারদিকে সহজেই প্রাতঃভ্রমণ করে। হাতিরঝিল সংস্কারের পূর্বে এটি ছিল মশা প্রজননের একটি উত্তম ক্ষেত্র কিন্তু বর্তমানে এটি হাজারও মানুষের পদচারণায় মুখরিত থাকে। দৃষ্টিনন্দন এসব সংস্কার ভ্রমণ পিপাসুদের বিকালের আড্ডা ও বিনোদনের চমৎকার স্থান। বিকেলে পরিবার নিয়ে সহজেই এসব জায়গায় বেড়াতে বের হওয়া সম্ভব।
শহর ও গ্রামে সকাল-বিকাল হাজার হাজার মানুষ হাঁটতে বের হন, সবাই চায় স্বচ্ছ নির্মল পরিবেশ ও বাতাস। শহর জীবনে মানুষের চলাচলের পথ ও উন্মুক্ত স্থান যেখানে ধীরে ধীরে সংকুচিত হচ্ছে, সেখানে এসব জলাশয় সংস্কার করে বিনোদনের ব্যবস্থা করা হলে, এগুলো একদিকে যেমন মশা নিধনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে, ঠিক তেমনিভাবে পরিবেশ রক্ষা এবং ভূমিদস্যুদের হাত থেকে রক্ষা করবে। এছাড়া এগুলো মানুষকে দিবে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল ও আনন্দ বিনোদনের নিশ্চয়তা। আবার বানিজ্যিকভাবে এগুলো হতে পারে আয়ের একটি অন্যতম উৎস। আশা করি ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ভেবে দেখবে এবং পরিকল্পনা মতো ব্যবস্থা নিবে।
মো. জিল্লুর রহমান
সতিশ সরকার রোড,
গেন্ডারিয়া, ঢাকা।
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
শুক্রবার, ১২ মার্চ ২০২১
জলাশয় সংস্কার করে মশা নিধন ও চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা করা হোক
ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় বহু পুকুর, খাল, ডোবা ইত্যাদি দীর্ঘদিন যাবৎ অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে। সংস্কারের অভাবে এগুলো কোন কোন ক্ষেত্রে বেদখল হচ্ছে এবং ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতারও অন্যতম কারণ। লক্ষণীয় বিয়ষ হচ্ছে, এগুলো একদিকে যেমন পরিবেশ দূষণ করছে, ঠিক তেমনিভাবে সারা বছর মশার প্রজননকেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকো ভাইরাসসহ অনেক মশা ও পানি বাহিত রোগের আধার হচ্ছে এসব হাজামজা পুকুর, ডোবা ও খাল। এসব পুকুর, জলাশয়ের একফোঁটা পানি যেন এক ফোটা বিষ। মশার উৎপাত বৃদ্ধি ও ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে প্রচুর আলোচনা সমালোচনা হয়। সরকার ও জনপ্রতিনিধিরাও বিব্রত হচ্ছেন। বাড়ছে মানুষের ক্ষোভ ও হতাশা।
রাজধানী একটি নির্দিষ্ট সময় পুরোপুরি ডেঙ্গু রোগের ঝুঁকিতে থাকে। তখন ঘরে ঘরে ডেঙ্গুর শঙ্কা ও ভয় থাকে। কয়েক বছর আগে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকেও রাজধানীতে ডেঙ্গু সম্পর্কে সতর্ক করা হয়। তবে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা যখন বৃদ্ধি পায়, তখন এডিস মশা মারার কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রদ্বয় ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ওপর চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে নগরবাসী।
ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় পুকুর, খাল, ডোবা ইত্যাদি জলাশয় সংস্কার করে একদিকে যেমন মশা নিধন করা সম্ভব, পক্ষান্তরে এগুলোকে সহজেই বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত করা সম্ভব। শুধু দরকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ আন্তরিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সরকারি, ব্যক্তিগত বা বাণিজ্যিকভাবেও এসব জলাশয় প্রকল্প আকারে সংস্কার ও বাস্তবায়ন করতে পারে। পরিকল্পনা মতো যদি জলাশয়গুলোর পানি পরিষ্কার করে চারদিকে সুন্দর চলাচলের রাস্তা, পাশে কংক্রিট/সিমেন্টের পর্যাপ্ত চেয়ার বা বেঞ্চ, ফুলের বাগান বা ফলজ গাছ, জলাশয়ের মধ্যে বা পাশে পানির ফোয়ারা, ভ্রমণপিপাসুদের জন্য নৌকা, শিশুদের জন্য বিনোদনের রাইড ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়, তবে এগুলো হতে পারে চমৎকার বিনোদন কেন্দ্র।
ঢাকার বাহিরে অনেক বড় বড় শহরের হাজামজা পুকুর ও জলাশয় সংস্কার করে ভ্রমণ পিপাসুদের আনন্দ বিনোদনের সুব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব জলাশয় একদিকে যেমন মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে, ঠিক তেমনিভাবে এগুলো এসব নগর ও শহরবাসীর প্রাতঃভ্রমণ ও চিত্ত বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে। উপকৃত হচ্ছে আপামর জনগণ। পুরান ঢাকার বংশাল বড় মসজিদের দক্ষিণ পার্শ্বের পুকুরটি হতে পারে একটি আদর্শ উদাহরণ। প্রতিদিন এর নির্মল স্বচ্ছ পানিতে হাজারও মানুষ গোসল করে এবং চারদিকে সহজেই প্রাতঃভ্রমণ করে। হাতিরঝিল সংস্কারের পূর্বে এটি ছিল মশা প্রজননের একটি উত্তম ক্ষেত্র কিন্তু বর্তমানে এটি হাজারও মানুষের পদচারণায় মুখরিত থাকে। দৃষ্টিনন্দন এসব সংস্কার ভ্রমণ পিপাসুদের বিকালের আড্ডা ও বিনোদনের চমৎকার স্থান। বিকেলে পরিবার নিয়ে সহজেই এসব জায়গায় বেড়াতে বের হওয়া সম্ভব।
শহর ও গ্রামে সকাল-বিকাল হাজার হাজার মানুষ হাঁটতে বের হন, সবাই চায় স্বচ্ছ নির্মল পরিবেশ ও বাতাস। শহর জীবনে মানুষের চলাচলের পথ ও উন্মুক্ত স্থান যেখানে ধীরে ধীরে সংকুচিত হচ্ছে, সেখানে এসব জলাশয় সংস্কার করে বিনোদনের ব্যবস্থা করা হলে, এগুলো একদিকে যেমন মশা নিধনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে, ঠিক তেমনিভাবে পরিবেশ রক্ষা এবং ভূমিদস্যুদের হাত থেকে রক্ষা করবে। এছাড়া এগুলো মানুষকে দিবে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল ও আনন্দ বিনোদনের নিশ্চয়তা। আবার বানিজ্যিকভাবে এগুলো হতে পারে আয়ের একটি অন্যতম উৎস। আশা করি ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ভেবে দেখবে এবং পরিকল্পনা মতো ব্যবস্থা নিবে।
মো. জিল্লুর রহমান
সতিশ সরকার রোড,
গেন্ডারিয়া, ঢাকা।