মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
টিকা আবিষ্কারের পরও আশার আলো দেখাচ্ছে প্লাজমা থেরাপি
বিশ্বজুড়ে চলছে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) তান্ডব এবং প্রথম ঢেউয়ের মতোই দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রতিনিয়তই বাড়ছে ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী এবং মৃত্যুর সংখ্যা। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে নানা দেশে টিকা গ্রহণ করার পরও অনেকে সংক্রমিত হয়েছে বলে খবর বেরিয়েছে এবং এ কারণে কোন টিকা কতটা কার্যকর সে প্রশ্ন অনেকের মনেই উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে। তবে আবিষ্কৃত কোন টিকায় রোগী আক্রান্ত হলে তার ক্ষেত্রে একেবারেই কাজ করছে না। ফলে গুরুতর কোভিড-১৯ রোগীদের জীবন বাঁচাতে চিকিৎসকরা এখন ভরসা করছেন কনভালসেন্ট প্লাজমা থেরাপির (সিপিটি) ওপর।
প্লাজমা হলো রক্তের জলীয় উপাদান। বাংলায় বলা হয় ‘রক্তরস’। সহজে বলা যায়, যাদের করোনা হয়েছিল এবং সেরে উঠেছেন, তাদের শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি হয় বা রক্তে প্রোটিন জাতীয় পদার্থ তৈরি হয়, যা ওই ভাইরাস প্রতিরোধের ক্ষমতা রাখে। প্লাজমা পদ্ধতির অর্থ হলো- ওই ব্যক্তিদের রক্ত থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করে করোনা আক্রান্তের শরীরে দেওয়া। যাতে রোগীর শরীরেও অ্যান্টিবডি তৈরি হয়।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়েছেন এমন যেকোনো ব্যক্তিই হতে পারেন সম্ভাব্য প্লাজমা ডোনার বা প্লাজমাদাতা। আগে কোভিড-১৯ পজিটিভ ছিলেন আর এখন পরপর দুবার নমুনা পরীক্ষায় নেগেটিভ প্রমাণিত হয়েছেন এবং নেগেটিভ হওয়ার পর কমপক্ষে ১৪ দিন (কোনো কোনো ক্ষেত্রে ২৮ দিন) কোনো উপসর্গ দেখা দেয়নি এমন ব্যক্তিই হতে পারেন প্লাজমাদাতা। প্লাজমা দানের আগে নিশ্চিত হতে হবে যে তার শরীরে যথেষ্ট মাত্রায় অ্যান্টিবডি উৎপাদিত হয়েছে কিনা।
একজন দাতার শরীর থেকে একবারে ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিলিটার প্লাজমা নেওয়া সম্ভব। অ্যাফেরেসিস যন্ত্রের মাধ্যমে বিশেষ প্রক্রিয়ায় দাতার শরীর থেকে পুরো রক্ত না নিয়ে শুধু প্লাজমা নেওয়া সম্ভব। একজন দাতার প্লাজমা দিয়ে তিন ইউনিট পর্যন্ত (প্রতি ইউনিট ২০০ মিলিলিটার) প্লাজমা বানানো যায়। দাতা চাইলে একবার প্লাজমা দেওয়ার পরের সপ্তাহে আবারও প্লাজমা দিতে পারেন। প্লাজমা দান করার পর ২৪ ঘণ্টায় তিন লিটার পানি পান করলেই এর অভাব পূরণ হয়ে যায়।
প্লাজমা দানে এগিয়ে আসতে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। দাতাদের কাছ থেকে যত বেশি প্লাজমা পাওয়া যাবে, ততই সিপিটি ব্যবহার করে কোভিড-১৯ মোকাবিলা করা সহজ হবে এবং কোভিড-১৯ চিকিৎসায় আশার আলো ততই উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হবে।
মো. জিল্লুর রহমান
ব্যাংকার ও মুক্তমনা কলাম লেখক
সতীশ সরকার রোড, গেন্ডারিয়া, ঢাকা।
মসজিদে মুসল্লির সর্বোচ্চ সংখ্যা নির্ধারণ প্রসঙ্গে
দেশে মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি চরম ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। শনাক্তের হারের পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। মানুষের জীবনের সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে সরকার ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের কঠোর ও সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ধর্ম মন্ত্রণালয়ও পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত মসজিদে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের শর্তে প্রতি ওয়াক্তে ও তারাবির নামাজে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও হাফেজসহ মুসল্লির সংখ্যা নির্ধারণ করেছে সর্বোচ্চ ২০ জন। তবে শুক্রবারের জুমার নামাজের ক্ষেত্রে কোন সীমা নির্ধারণ করা হয়নি।
উল্লেখ্য এখন পবিত্র রমজান মাস। অতি পবিত্র ও সংযমের এই মাসে অন্যান্য সময় অপেক্ষা মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা বেশি হয়ে থাকে। আর দেশের ছোট-বড় সব মসজিদের মুসল্লি ধারণ ক্ষমতা স্বাভাবিকভাবেই এক নয়। অধিকাংশ মসজিদেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ২০ জনের বেশি মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করার সুযোগ থাকলেও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা অনুসরণের বাধ্যবাধকতায় নির্দিষ্ট-সংখ্যক মুসল্লির অতিরিক্ত কেউ নামাজে অংশগ্রহণ করতে পারছে না।
এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালনের শর্তে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে মসজিদের সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা অনুযায়ী মুসল্লির প্রবেশ ও নামাজে অংশগ্রহণের নির্দেশনা দেয়া যেতে পারে। এতে করে আরও অনেকেরই ঘরের পরিবর্তে মসজিদের জামাতে নামাজ আদায়ের সুযোগ নিশ্চিত হবে। তাই পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতির কথা বিবেচনা করে উপর্যুক্ত বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি প্রত্যাশা করছি।
আবু ফারুক
বনরুপা পাড়া
সদর, বান্দরবান।
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
শুক্রবার, ১৬ এপ্রিল ২০২১
টিকা আবিষ্কারের পরও আশার আলো দেখাচ্ছে প্লাজমা থেরাপি
বিশ্বজুড়ে চলছে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) তান্ডব এবং প্রথম ঢেউয়ের মতোই দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রতিনিয়তই বাড়ছে ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী এবং মৃত্যুর সংখ্যা। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে নানা দেশে টিকা গ্রহণ করার পরও অনেকে সংক্রমিত হয়েছে বলে খবর বেরিয়েছে এবং এ কারণে কোন টিকা কতটা কার্যকর সে প্রশ্ন অনেকের মনেই উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে। তবে আবিষ্কৃত কোন টিকায় রোগী আক্রান্ত হলে তার ক্ষেত্রে একেবারেই কাজ করছে না। ফলে গুরুতর কোভিড-১৯ রোগীদের জীবন বাঁচাতে চিকিৎসকরা এখন ভরসা করছেন কনভালসেন্ট প্লাজমা থেরাপির (সিপিটি) ওপর।
প্লাজমা হলো রক্তের জলীয় উপাদান। বাংলায় বলা হয় ‘রক্তরস’। সহজে বলা যায়, যাদের করোনা হয়েছিল এবং সেরে উঠেছেন, তাদের শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি হয় বা রক্তে প্রোটিন জাতীয় পদার্থ তৈরি হয়, যা ওই ভাইরাস প্রতিরোধের ক্ষমতা রাখে। প্লাজমা পদ্ধতির অর্থ হলো- ওই ব্যক্তিদের রক্ত থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করে করোনা আক্রান্তের শরীরে দেওয়া। যাতে রোগীর শরীরেও অ্যান্টিবডি তৈরি হয়।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়েছেন এমন যেকোনো ব্যক্তিই হতে পারেন সম্ভাব্য প্লাজমা ডোনার বা প্লাজমাদাতা। আগে কোভিড-১৯ পজিটিভ ছিলেন আর এখন পরপর দুবার নমুনা পরীক্ষায় নেগেটিভ প্রমাণিত হয়েছেন এবং নেগেটিভ হওয়ার পর কমপক্ষে ১৪ দিন (কোনো কোনো ক্ষেত্রে ২৮ দিন) কোনো উপসর্গ দেখা দেয়নি এমন ব্যক্তিই হতে পারেন প্লাজমাদাতা। প্লাজমা দানের আগে নিশ্চিত হতে হবে যে তার শরীরে যথেষ্ট মাত্রায় অ্যান্টিবডি উৎপাদিত হয়েছে কিনা।
একজন দাতার শরীর থেকে একবারে ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিলিটার প্লাজমা নেওয়া সম্ভব। অ্যাফেরেসিস যন্ত্রের মাধ্যমে বিশেষ প্রক্রিয়ায় দাতার শরীর থেকে পুরো রক্ত না নিয়ে শুধু প্লাজমা নেওয়া সম্ভব। একজন দাতার প্লাজমা দিয়ে তিন ইউনিট পর্যন্ত (প্রতি ইউনিট ২০০ মিলিলিটার) প্লাজমা বানানো যায়। দাতা চাইলে একবার প্লাজমা দেওয়ার পরের সপ্তাহে আবারও প্লাজমা দিতে পারেন। প্লাজমা দান করার পর ২৪ ঘণ্টায় তিন লিটার পানি পান করলেই এর অভাব পূরণ হয়ে যায়।
প্লাজমা দানে এগিয়ে আসতে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। দাতাদের কাছ থেকে যত বেশি প্লাজমা পাওয়া যাবে, ততই সিপিটি ব্যবহার করে কোভিড-১৯ মোকাবিলা করা সহজ হবে এবং কোভিড-১৯ চিকিৎসায় আশার আলো ততই উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হবে।
মো. জিল্লুর রহমান
ব্যাংকার ও মুক্তমনা কলাম লেখক
সতীশ সরকার রোড, গেন্ডারিয়া, ঢাকা।
মসজিদে মুসল্লির সর্বোচ্চ সংখ্যা নির্ধারণ প্রসঙ্গে
দেশে মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি চরম ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। শনাক্তের হারের পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। মানুষের জীবনের সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে সরকার ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের কঠোর ও সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ধর্ম মন্ত্রণালয়ও পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত মসজিদে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের শর্তে প্রতি ওয়াক্তে ও তারাবির নামাজে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও হাফেজসহ মুসল্লির সংখ্যা নির্ধারণ করেছে সর্বোচ্চ ২০ জন। তবে শুক্রবারের জুমার নামাজের ক্ষেত্রে কোন সীমা নির্ধারণ করা হয়নি।
উল্লেখ্য এখন পবিত্র রমজান মাস। অতি পবিত্র ও সংযমের এই মাসে অন্যান্য সময় অপেক্ষা মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা বেশি হয়ে থাকে। আর দেশের ছোট-বড় সব মসজিদের মুসল্লি ধারণ ক্ষমতা স্বাভাবিকভাবেই এক নয়। অধিকাংশ মসজিদেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ২০ জনের বেশি মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করার সুযোগ থাকলেও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা অনুসরণের বাধ্যবাধকতায় নির্দিষ্ট-সংখ্যক মুসল্লির অতিরিক্ত কেউ নামাজে অংশগ্রহণ করতে পারছে না।
এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালনের শর্তে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে মসজিদের সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা অনুযায়ী মুসল্লির প্রবেশ ও নামাজে অংশগ্রহণের নির্দেশনা দেয়া যেতে পারে। এতে করে আরও অনেকেরই ঘরের পরিবর্তে মসজিদের জামাতে নামাজ আদায়ের সুযোগ নিশ্চিত হবে। তাই পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতির কথা বিবেচনা করে উপর্যুক্ত বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি প্রত্যাশা করছি।
আবু ফারুক
বনরুপা পাড়া
সদর, বান্দরবান।