alt

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

মোবাইল ফোন ব্যবহারে সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রয়োজন

এসএম জাহাঙ্গীর আলম

: রোববার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
image

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর গত ২০২০ তাদের পরিসংখ্যানে বলেছিল, আমাদের দেশে জনসংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৮২ লাখের বেশি। আমরা ধরে নিতে পারি যে, বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি। বিটিআরসির হিসাবে ২০২০ সালে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল সাড়ে ১৬ কোটি। অবশ্য বেসরকারি হিসাবে এর সংখ্যা আরও অনেক বেশি তো অবশ্যই। জনসংখ্যার চেয়ে বেশি মোবাইল ফোন। একজন একাধিক মোবাইল ব্যবহার করছেন। মোবাইল ফোনের সিমকার্ড বিক্রি হচ্ছে রাস্তা-ঘাটে। অবাধে বিক্রি হচ্ছে সিম। বিনা পয়সায় আর সেই সঙ্গে কিছু উপহারও দেয়া হয়।

ফেসবুক আর টুইটারসহ নানা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নানাভাবে ব্যবহার হচ্ছে। আধুনিক ডিজিট্যাল যুগে মোবাইলের ব্যবহার যেমন ইতিবাচক, তেমনি নেতিবাচকও বটে। যেহেতু এর অপব্যবহার বাড়ছে। ঘটছে ব্ল্যাকমেইলের ঘটনা। এমন ঘটনার হরহামেশায় ঘটছে। এই তো গেল একটা দিক। অপরদিকে অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারকারীরা শারীরিক ও মানসিক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কিছুদিন আগে একাধিক গবেষণার ফলের বরাত দিয়ে হাফিংটন এক প্রতিবেদনে বলেছে, মুঠোফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে শারীরিক ও মানসিকসহ নানা সমস্যায় পড়ছেন ব্যবহারকারীরা। আবার নানা জটিল রোগে দেখা দিচ্ছে। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, এখন থেকে ৫/৭ বছর আগেও যেসব রোগের অস্তিত্ব ছিল না, সেসব রোগ এখন দেখা দিচ্ছে। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোর ফলে স্লিপ টেক্সটিং ঘটতে পারে, চোখের জ্যোতি কমা, কানে কম শোনা, শরীরের অস্থি-সন্ধিগুলোর ক্ষতি, শুক্রাণু কমে যাওয়াসহ নানা জটিল ও কঠিন রোগ দেখা দিচ্ছে।

মোবাইলের ব্যবহার নিয়ে সুস্পট কোন নীতিমালা নেই। যাও যাচ্ছে-তা কার্যকর হচ্ছে না। এর আগে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে মোবাইলের ব্যবহার ও সিম বিক্রির বিষয়ে কয়ক দফা বৈঠক হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোকে কিছু শর্তও দেয়া হয়। যেমন একজন দুটির বেশি সিম ব্যবহার করতে পারবেন না, শিশু-কিশোরদের কাছে মোবাইলের সিম বিক্রি করা যাবে না ইত্যাদি। লক্ষণীয় বিষয় হলো যে, প্রাপ্ত বয়স্করা একই এনআইডি দিয়ে একধিক সিম কিনতে পারছেন। বিনা পয়সায় যে কোন কোম্পানির সিম পাচ্ছেন। এমনকি সরকারি মোবাইল কোম্পানি টেলিটক সিম এখন রাস্তাঘাটে বিনা পয়সা দেয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সম্প্রতি ঘোষণা দেয় যে, ‘গত পহেলা জুলাই/২১ থেকে অবৈধ হ্যান্ডসেট আর ব্যবহার করা যাবে না’। কিন্তু তা কার্যকর করতে পারেনি। বিটিআরসির স্পেট্রাম বিভাগের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল আলম বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, আসছে (গত) পহেলা জুলাই থেকে বাংলাদেশের ভেতর যেসব নতুন মোবাইল সেট ব্যবহার হবে সেগুলো অবশ্যই নিবন্ধিত হতে হবে। তিনি আরও বলেছিলেন, ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) সিস্টেম ব্যবহার করে অবৈধ মোবাইল ফোন সেট শনাক্ত করা যাবে। আর সেগুলো ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ দেয়া হবে’।

যে যার মতো যত খুশি মোবাইল সেট কিনতে পারছে, আর বিনা মূল্যে সিমতো রাস্তাঘাটে পাওয়াই যাচ্ছে

মোবাইল সেট আমদানির বিষয়েও বিটিআরসির কিছু নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু সেগুলোও কোন কাজে আসছে না। চোরাই পথে অবাধ সেট দেশের ভেতর ঢুকছে বলেও অভিযোগ আছে। যে যার মতো যত খুশি সেট কিনতে পারছে, আর বিনা মূল্যে সিমতো রাস্তাঘাটে পাওয়াই যাচ্ছে। মূল কথা হলো যে মোবাইল ফোনের অবাধ ব্যবহার ব্যাপক রূপ নিচ্ছে। এতে অদূর ভবিষতে আমাদের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে। এমতাবস্থায় সরকার তথা সংশ্লিদের এখনই কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন করতে হবে। আরেকটা কথা বলতেই হয় যে, মোবাইল কোম্পানিগুলো সরকারের ট্যাক্স ফাঁকি দিচ্ছে মোটা অঙ্কের। এ বিষয়েও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

[লেখক : সাবেক করকমিশনার; পরিচালক, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কো. লি.]

প্রাণিসম্পদ: দেশীয় জাত, আধুনিক প্রযুক্তি

জমির জরিপ: ন্যায়বিচার প্রসঙ্গ

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

উন্নয়নের আড়ালে রোগীর ভোগান্তি: আস্থা সংকটে স্বাস্থ্যসেবা

ছবি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: অমিত শক্তির উৎস

ছবি

বেগম রোকেয়া এখনো জাগ্রত

পশ্চিমবঙ্গ: বামপন্থীদের ‘বাংলা বাঁচাও’-এর ডাক

সবার বাংলাদেশ কবে প্রতিষ্ঠিত হবে?

বিদেশি বিনিয়োগ : প্রয়োজন আইনের শাসন ও সামাজিক স্থিতি

চিকিৎসা যখন অসহনীয় ব্যয়, তখন প্রতিবাদই ন্যায়

মস্কোর কৌশলগত পুনর্গঠন

“সব শিয়ালের এক রা’ মারা গেল কুমিরের ছা”

ছবি

বিচূর্ণ দর্পণের মুখ

নিজের চেতনায় নিজেরই ঘা দেয়া জরুরি

ঋণ অবলোপনের প্রভাব

ভেজাল গুড়ের মরণফাঁদ: বাঙালির ঐতিহ্য, জনস্বাস্থ্য ও আস্থার নীরব বিপর্যয়

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস

জোটের ভোট নাকি ভোটের জোট, কৌশলটা কী?

প্রমাণ তো করতে হবে আমরা হাসিনার চেয়ে ভালো

ছবি

কৃষি ডেটা ব্যবস্থাপনা

যুক্তরাজ্যে ভর্তি স্থগিতের কুয়াশা: তালা লাগলেও চাবি আমাদের হাতে

শিক্ষকদের কর্মবিরতি: পেশাগত নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধ

জাতীয় রক্তগ্রুপ নির্ণয় দিবস

জাল সনদপত্রে শিক্ষকতা

সাধারণ চুক্তিগুলোও গোপনীয় কেন

ছবি

শিশুখাদ্যের নিরাপত্তা: জাতির ভবিষ্যৎ সুরক্ষার প্রথম শর্ত

ছবি

ফিনল্যান্ড কেন সুখী দেশ

ছবি

কৃষকের সংকট ও অর্থনীতির ভবিষ্যৎ

আলু চাষের আধুনিক প্রযুক্তি

ই-বর্জ্য: নীরব বিষে দগ্ধ আমাদের ভবিষ্যৎ

ঢাকার জনপরিসর: আর্ভিং গফম্যানের সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ

আলু চাষের আধুনিক প্রযুক্তি

কলি ফুটিতে চাহে ফোটে না!

কৃষিতে স্মার্ট প্রযুক্তি

রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে লোকালাইজেশন অপরিহার্য

আইসিইউ থেকে বাড়ি ফেরা ও খাদের কিনারায় থাকা দেশ

tab

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

মোবাইল ফোন ব্যবহারে সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রয়োজন

এসএম জাহাঙ্গীর আলম

image

রোববার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর গত ২০২০ তাদের পরিসংখ্যানে বলেছিল, আমাদের দেশে জনসংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৮২ লাখের বেশি। আমরা ধরে নিতে পারি যে, বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি। বিটিআরসির হিসাবে ২০২০ সালে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল সাড়ে ১৬ কোটি। অবশ্য বেসরকারি হিসাবে এর সংখ্যা আরও অনেক বেশি তো অবশ্যই। জনসংখ্যার চেয়ে বেশি মোবাইল ফোন। একজন একাধিক মোবাইল ব্যবহার করছেন। মোবাইল ফোনের সিমকার্ড বিক্রি হচ্ছে রাস্তা-ঘাটে। অবাধে বিক্রি হচ্ছে সিম। বিনা পয়সায় আর সেই সঙ্গে কিছু উপহারও দেয়া হয়।

ফেসবুক আর টুইটারসহ নানা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নানাভাবে ব্যবহার হচ্ছে। আধুনিক ডিজিট্যাল যুগে মোবাইলের ব্যবহার যেমন ইতিবাচক, তেমনি নেতিবাচকও বটে। যেহেতু এর অপব্যবহার বাড়ছে। ঘটছে ব্ল্যাকমেইলের ঘটনা। এমন ঘটনার হরহামেশায় ঘটছে। এই তো গেল একটা দিক। অপরদিকে অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারকারীরা শারীরিক ও মানসিক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কিছুদিন আগে একাধিক গবেষণার ফলের বরাত দিয়ে হাফিংটন এক প্রতিবেদনে বলেছে, মুঠোফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে শারীরিক ও মানসিকসহ নানা সমস্যায় পড়ছেন ব্যবহারকারীরা। আবার নানা জটিল রোগে দেখা দিচ্ছে। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, এখন থেকে ৫/৭ বছর আগেও যেসব রোগের অস্তিত্ব ছিল না, সেসব রোগ এখন দেখা দিচ্ছে। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোর ফলে স্লিপ টেক্সটিং ঘটতে পারে, চোখের জ্যোতি কমা, কানে কম শোনা, শরীরের অস্থি-সন্ধিগুলোর ক্ষতি, শুক্রাণু কমে যাওয়াসহ নানা জটিল ও কঠিন রোগ দেখা দিচ্ছে।

মোবাইলের ব্যবহার নিয়ে সুস্পট কোন নীতিমালা নেই। যাও যাচ্ছে-তা কার্যকর হচ্ছে না। এর আগে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে মোবাইলের ব্যবহার ও সিম বিক্রির বিষয়ে কয়ক দফা বৈঠক হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোকে কিছু শর্তও দেয়া হয়। যেমন একজন দুটির বেশি সিম ব্যবহার করতে পারবেন না, শিশু-কিশোরদের কাছে মোবাইলের সিম বিক্রি করা যাবে না ইত্যাদি। লক্ষণীয় বিষয় হলো যে, প্রাপ্ত বয়স্করা একই এনআইডি দিয়ে একধিক সিম কিনতে পারছেন। বিনা পয়সায় যে কোন কোম্পানির সিম পাচ্ছেন। এমনকি সরকারি মোবাইল কোম্পানি টেলিটক সিম এখন রাস্তাঘাটে বিনা পয়সা দেয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সম্প্রতি ঘোষণা দেয় যে, ‘গত পহেলা জুলাই/২১ থেকে অবৈধ হ্যান্ডসেট আর ব্যবহার করা যাবে না’। কিন্তু তা কার্যকর করতে পারেনি। বিটিআরসির স্পেট্রাম বিভাগের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল আলম বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, আসছে (গত) পহেলা জুলাই থেকে বাংলাদেশের ভেতর যেসব নতুন মোবাইল সেট ব্যবহার হবে সেগুলো অবশ্যই নিবন্ধিত হতে হবে। তিনি আরও বলেছিলেন, ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) সিস্টেম ব্যবহার করে অবৈধ মোবাইল ফোন সেট শনাক্ত করা যাবে। আর সেগুলো ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ দেয়া হবে’।

যে যার মতো যত খুশি মোবাইল সেট কিনতে পারছে, আর বিনা মূল্যে সিমতো রাস্তাঘাটে পাওয়াই যাচ্ছে

মোবাইল সেট আমদানির বিষয়েও বিটিআরসির কিছু নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু সেগুলোও কোন কাজে আসছে না। চোরাই পথে অবাধ সেট দেশের ভেতর ঢুকছে বলেও অভিযোগ আছে। যে যার মতো যত খুশি সেট কিনতে পারছে, আর বিনা মূল্যে সিমতো রাস্তাঘাটে পাওয়াই যাচ্ছে। মূল কথা হলো যে মোবাইল ফোনের অবাধ ব্যবহার ব্যাপক রূপ নিচ্ছে। এতে অদূর ভবিষতে আমাদের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে। এমতাবস্থায় সরকার তথা সংশ্লিদের এখনই কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন করতে হবে। আরেকটা কথা বলতেই হয় যে, মোবাইল কোম্পানিগুলো সরকারের ট্যাক্স ফাঁকি দিচ্ছে মোটা অঙ্কের। এ বিষয়েও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

[লেখক : সাবেক করকমিশনার; পরিচালক, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কো. লি.]

back to top