alt

সাময়িকী

কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা

: বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫

কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়

ইতিবৃত্ত ১

সারা বছরের ধুলো তাপ জমা হয়

পুরুষ্টু কাঁথায় তালিমল কালোপনা।

চৈত্রে-মাঘে দুইবার মেলে দেয় তাকে

রোদে, হাওয়ায়।

আজ এই অঘ্রানের ভোরে ধোয়

টলটলে জলে নয় কোনো, পাশুঁটে মলিন,

ছায়াহীন।

সামলে-আগলে খেঁচে ঈষৎ সাবানে

পায়ের পাতায়, কাঠের গুঁড়িতে ন্যাড়া।

গায়ের অসংখ্য খাড়ি বেয়ে তার,

বেয়ে ছেঁড়া সুতোমুখ

ধুয়ে নামে কালো জল শুধু নয়,

প্রবল দাম্পত্য সুখ কিছুÑ

চোখ চেয়ে থাকে তাই।

ইতিবৃত্ত ২

পুকুর-পাড়ের ছায়া পড়ে জল ঘেঁষে পুকুরের,

সবুজ পাতার, পাতার মাথার মরা,

পাতার ওপরে ফড়িং-পাখার,

নির্বিকার-নিরুত্তাপ মাছ ভেসে থাকে রোদের বিরামে।

দেহের পাড়ের ছায়া পড়ে কালো মুখে,

জোড়া-খাড়া ভুরুর-নাকের সকলের পড়ে ঠিকÑ

তার মুখে পড়ে উনুনের, আগুনের,

রাতের ভূতের পায়ের ঝিঁকে-ঝিঁকে কাঁপে।

চর্ম’পরে গাঢ়তর তিল লেগে ছিল এক এতোদিন স্পষ্ট রূপ সুন্দরের,

অবিরাম অন্ধকারে এখন বিলীন প্রায় হায়

ইতিবৃত্ত ৩

চালের বাতায় ছিলো হাত, খ্যাড় ফাঁকা দেখে ভারি হেঁটে যায়,

সীমের মাচার নিচে হিম ছায়া ঘাসে। নামে, বসে,Ñ

পেট কচলায় কম কিনা, পরীক্ষায় উবুÑ

হয় কিনা মুখে লালা কম, শুখা হাঁড়ি গেলে ভুলে।

অবশেষে শুয়ে থাকে, এক শাড়ির খেয়াল নেই,

আলগা কোমরে বুক টলমল ভাসে।

দু’হাঁটু গোটানো, অপেক্ষায় নয় কারোÑ

আসুক, দেখুক, বাহির সে হয় নাই, শুধুই অভ্যাসে...

ইতিবৃত্ত ৪
[সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ্ শ্রদ্ধাস্পদেষু]

রোদে-হাওয়ায় কিছুদিন

বেদম গমকে অন্তহীন

লাল চুল উড়ে পড়ে

উচুঁ ঘাড়ে, গোল বুকে;

বেণীবদ্ধ হয় না কখনো,

ছাড়ে না সে মলিনতা।

সর্দারের পরিত্যক্ত হায় হায়

পীড়িত-মূর্ছিত পেয়ে অতঃপর একদা আঁধারে

পরশিরা কেউ-কেউ, মোড়ল যুবক, হীন চেলা তার, আর

আমমৌলভী জনৈক

সকলে মিলেই এক কথা বলে:

সন্ধ্যার বাতাসে

আউলা কেশীকে দেখেছিল দূর পুকুরের পাড়,

হয়েছিল কিনা সওয়ার শয়তান জিন

বেশরম নারীর অনাবৃত কাঁধে।

সাময়িকী কবিতা

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

কানাগলি

ছবি

পার্ল এস বাক-এর কবিতা

ছবি

হোসে এচেগারাই স্প্যানিশ আলোকবর্তিকা

ছবি

নববীণায় বাজে নতুনের জয়গান

ছবি

রবীন্দ্রনাথের ‘করুণা’ ঘিরে কিছু কথা

ছবি

গীতাঞ্জলির ইতিবৃত্ত ও বেদনাহত রবীন্দ্রনাথ

ছবি

রবীন্দ্রনাথ, শিলাইদহ ও ‘ছিন্নপত্র’

ছবি

নিউ নেদারল্যান্ডস: জার্র্সি এবং লেনাপি জনগোষ্ঠী

সাময়িকী কবিতা

ছবি

বকুলীর সেইরাত

ছবি

আকাশের প্রান্ত

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

মুখ

ছবি

বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি

ছবি

অগ্রজ দাউদ হায়দারের মহাপ্রয়াণ

ছবি

নারী যখন পাঠক নারী যখন লেখক

সাময়িকী কবিতা

মিত্র

ছবি

মৃত্যুর মৃদু উত্তাপ : পথের শেষ কোথায়

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

বেলাল চৌধুরীর কবিতা

ছবি

পাঠের আগ্রহ থাকলে বইয়ের অভাব হয় না

ছবি

রবীন্দ্রগানে শঙ্খ ঘোষের মন

ছবি

ফার্স্ট টিউসডে’স : আমার প্রথম মঙ্গলবার সন্ধ্যার গন্তব্য

ছবি

আজ লাবণ্যর বিয়ে

ছবি

সংস্কৃতির পরম্পরা, অভিঘাত-অভিজ্ঞান ইতিহাস বিচার-বিশ্লেষণ

ছবি

তুষার গায়েন-এর কবিতা

ছবি

লোরকার দেশে

ফিলিস্তিনের তিনটি কবিতা

ছবি

এক বিস্ময় প্রতিভা

ছবি

দিওয়ান-ই-মাখফি : জেব-উন-নিশা

ছবি

বৈচিত্র্যে ভরা ‘যদিও উত্তরমেঘ’

ছবি

রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাইয়ের কথা

ছবি

মোহ কাঠের নৌকা : জীবন-সংগ্রামের এক বাস্তব প্রতিচ্ছবি

tab

সাময়িকী

কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা

কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়

বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫

ইতিবৃত্ত ১

সারা বছরের ধুলো তাপ জমা হয়

পুরুষ্টু কাঁথায় তালিমল কালোপনা।

চৈত্রে-মাঘে দুইবার মেলে দেয় তাকে

রোদে, হাওয়ায়।

আজ এই অঘ্রানের ভোরে ধোয়

টলটলে জলে নয় কোনো, পাশুঁটে মলিন,

ছায়াহীন।

সামলে-আগলে খেঁচে ঈষৎ সাবানে

পায়ের পাতায়, কাঠের গুঁড়িতে ন্যাড়া।

গায়ের অসংখ্য খাড়ি বেয়ে তার,

বেয়ে ছেঁড়া সুতোমুখ

ধুয়ে নামে কালো জল শুধু নয়,

প্রবল দাম্পত্য সুখ কিছুÑ

চোখ চেয়ে থাকে তাই।

ইতিবৃত্ত ২

পুকুর-পাড়ের ছায়া পড়ে জল ঘেঁষে পুকুরের,

সবুজ পাতার, পাতার মাথার মরা,

পাতার ওপরে ফড়িং-পাখার,

নির্বিকার-নিরুত্তাপ মাছ ভেসে থাকে রোদের বিরামে।

দেহের পাড়ের ছায়া পড়ে কালো মুখে,

জোড়া-খাড়া ভুরুর-নাকের সকলের পড়ে ঠিকÑ

তার মুখে পড়ে উনুনের, আগুনের,

রাতের ভূতের পায়ের ঝিঁকে-ঝিঁকে কাঁপে।

চর্ম’পরে গাঢ়তর তিল লেগে ছিল এক এতোদিন স্পষ্ট রূপ সুন্দরের,

অবিরাম অন্ধকারে এখন বিলীন প্রায় হায়

ইতিবৃত্ত ৩

চালের বাতায় ছিলো হাত, খ্যাড় ফাঁকা দেখে ভারি হেঁটে যায়,

সীমের মাচার নিচে হিম ছায়া ঘাসে। নামে, বসে,Ñ

পেট কচলায় কম কিনা, পরীক্ষায় উবুÑ

হয় কিনা মুখে লালা কম, শুখা হাঁড়ি গেলে ভুলে।

অবশেষে শুয়ে থাকে, এক শাড়ির খেয়াল নেই,

আলগা কোমরে বুক টলমল ভাসে।

দু’হাঁটু গোটানো, অপেক্ষায় নয় কারোÑ

আসুক, দেখুক, বাহির সে হয় নাই, শুধুই অভ্যাসে...

ইতিবৃত্ত ৪
[সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ্ শ্রদ্ধাস্পদেষু]

রোদে-হাওয়ায় কিছুদিন

বেদম গমকে অন্তহীন

লাল চুল উড়ে পড়ে

উচুঁ ঘাড়ে, গোল বুকে;

বেণীবদ্ধ হয় না কখনো,

ছাড়ে না সে মলিনতা।

সর্দারের পরিত্যক্ত হায় হায়

পীড়িত-মূর্ছিত পেয়ে অতঃপর একদা আঁধারে

পরশিরা কেউ-কেউ, মোড়ল যুবক, হীন চেলা তার, আর

আমমৌলভী জনৈক

সকলে মিলেই এক কথা বলে:

সন্ধ্যার বাতাসে

আউলা কেশীকে দেখেছিল দূর পুকুরের পাড়,

হয়েছিল কিনা সওয়ার শয়তান জিন

বেশরম নারীর অনাবৃত কাঁধে।

back to top