alt

সাময়িকী

সাময়িকী কবিতা

: বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

করোনাকালের স্মৃতি
শফিক ইমতিয়াজ

একেকটা দিন, কী রকম রোঁয়াওঠা

সকাল দুপুর সন্ধ্যা কিংবা রাত; নিরেট বাসীরুটির মনমরা

আয়নায় তাকাই, ঝামা ঘষে দেয়া মুখ!

‘অন্তরীণ’ শব্দটা ভাষিক প্রকাশের চেয়ে

যাপন উপলব্ধিতে তীব্র হয়ে আছে অনেককাল, সয়েও গেছে

তার উপর প্রকৃতি প্রতিশোধ রূপে ছোড়ে বাণ, অতিমারী!

আমরা আগাপাশতলা এক পলোচাপা আষাঢ়ে বোয়াল

কে জানে বাকি জীবন এভাবেই যাবে কীনা-

অথৈ ভীতির আঁচে বৌদ্ধিকজঙ্গম, রীতিমতো কেন্নোর কু-লি।

হঠাৎ একঘেয়েমি কাটাতে বেরিয়ে পড়ি

পথে ও বাজারে কিছু কোলাহল

প্রাণবন্ত মাঠ আজ আলস্যের হাই তোলা সবুজ ঘাসের ঘুম!

স্বজন আকাশ, ও খুব অন্যমনস্ক

করতলের সূর্য, সে শঙ্কার দূরত্বে!

আজ সারাদিন এ নগরে কোনো যুবাকে দেখিনি

হলুদ চুলের কেউ, দেখা গেলো পথে, সেটি আমগাছ

মাথাভর্তি বোলের তরঙ্গ, পাশে উদগ্রীব ভ্রমর-মৌমাছি।

রাতের নগর, নির্জন গহ্বর

ঘরে ফেরা, সে নতুন দীর্ঘশ্বাস!

প্রতি শীতের কমলা
আমিনুর রহমান সুলতান

কমলা সুন্দর, রঙে

আকার ও আকৃতিতে।

পছন্দের তালিকায় রাখি শীতে

পরম আদরে রেখে ঢেকে

রসের ফলের মধ্যে

কমলা ঘুমেও পৃথিবী হয়ে ঘোরে

ঘুরায় স্বপ্নের ঘোরে।

শীত আসে গত হয়

অপেক্ষা ফুরায় মিটবে তৃষ্ণা

কমলার রসে।

প্রতি শীতে আমাকে বঞ্চিত করে

মুখ থেকে পচন ধরিয়ে...

মুক্তির মুদ্রা 
হাসানাত লোকমান

ভালোবাসা, তুমি কি কেবল এক দহনশিখা?

নাকি বুকে জমে থাকা বিদ্রোহের তুমুল ঝড়,

ফুৎকারে স্বর্গ মর্ত্য পাতাল উড়িয়ে দিবে স্বাধীনতার ডাক?

তোমার উত্তপ্ত স্পর্শে টের পাই

চিরসবুজ অরণ্যের বন্য হাহাকার,

তা-ব নৃত্যে ভাসে অজ¯্র আগুন ফুলের মুদ্রা

আমি সেই মুদ্রায় খুঁজে ফিরি নিজের পরিচয়।

তোমার প্রেম বন্ধনহীন প্রগল্ভ জোয়ার

তুমি পথ ভাঙা উত্তাল মাতাল নদী— উ™£ান্ত, উন্মত্ত,

যার ঢেউয়ের ভাঁজে বিচূর্ণ প্রাচীন সভ্যতার গৌরব,

তবু সেই ভাঙনে জন্ম নেয় নতুন জীবন যাত্রার সুর।

তুমি দিগন্তে অঙ্কিত এক পেঙ্গুইন পাখির শ্যান চোখ

যার ডানা ও গনগনে দৃষ্টির আঁচে পুড়ে যায় দুর্বল ভীরু,

তোমার হিরন্ময় শক্তির দীক্ষায় হতে চাই

সময়ের শিলালিপি, যেখানে লেখা থাকবে বিপ্লব।

তুমি ভালোবাসার নাম নিয়ে

জেগে ওঠো প্রতিরোধের সৈনিক,

তুমি কামনার মায়া ভেঙে

গড়ে তোলো শুদ্ধতার নীড়।

তুমি যদি হও কালবৈশাখীর দুরন্ত মেঘ

আমি হবো সেই মেঘের প্রথম বৃষ্টির ফোঁটা,

যা দগ্ধ মাটির বুকে নিয়ে আসবে স্পন্দিত প্রাণের সুর।

ভালোবাসা, তুমি শিকল ভাঙার গান,

তুমি শ্রাবণের প্লাবন, যা আনে পথে পথে জয়যাত্রার পদধ্বনি

তুমি আমি, আমরা একসাথে

হাতে নিই প্রতিবাদের মশাল,

যেখানে প্রেম মানে কেবল নয় বাঁধন-

প্রেম মানে মুক্তি, অবাধ ডানার উড়াল

প্রেম মানে অনন্ত উদার দিগন্তে

স্বপ্ন আঁকার উজ্জ্বল সাহস!

ইতিহাসের চ্যাটবট
মণিপদ্ম দত্ত

শুধু সে গুলোই মনে পড়ে যা বলা হয়ে গেছে

বলা হয়নি যা বা বলতে পারিনি

বলতে দেয়নি বোবা ভয়

সেসব নিয়েই তো দিব্যি বেঁচে থাকা যায়।

থাকবোও আরও বহুদিন কোন সিকায়ৎ ছাড়াই

লোডশেডিং-এর আনন্দে যেমন মশা তাড়াই।

এভাবেই ক্রমান্বয়ে ভুল ইতিহাস লেখা হয় মানুষের

আঙ্গুল উঁচিয়ে থাকে ভয়ের তর্জনী।

এখন মানি বীরভোগ্যা বসুন্ধরা।

প্যালেস্তাইনের রক্ত বা

দলিত কিশোরীর চিরে দেওয়া তলপেটও আর যথেষ্ট লাল মনে হয় না;

শেয়ার বাজারের ওঠা পড়ায়

হায়নার মুখেও স্নিগ্ধ ময়ূখ লাগে

প্রভু, তোমা লাগি আঁখি জাগে।

মঙ্গলযান স্টারশিপ এ আই

এরাই ভ্যালেন্টাইন, এরাই প্রেম

শপিং মলের হারেমে ছালসহ ঝোলে।

জীবন বহিয়া চলে ঝালে অম্বলে।

গোধূলি
সুস্মিতা বিশ্বাস

ওগো মুগ্ধ, অকরুণ চক্ষুসহোদর

সূর্যটি অস্ত যাবে, এমনই লিখেছ ছায়া বিজনবাতাসে!

তোমার হাতের পাতা মরিচাগন্ধমাখা, শ্যামঘনরঙ।

পশ্চিম আকাশজুড়ে সে যখন আয়ুমেঘ,

সুরের অনতিদূরে আলোর বিন্দু অতি-আলো...

সূর্যটি অস্ত যায়। করুণাকণার চেয়ে সূক্ষ্ম মৃদু বাষ্পলতা ভাসে

মহাকাল, মাতৃবৎ, সহজ স্নেহের বশে দিকচক্রবালে ঝুঁকে আসে!

পথ
যাকির সাইদ

প্রায়শ এমন হয়, রাত বাড়তে থাকলে

আমিও আমার মন থেকে

সমূলে হারাতে থাকি।

একসময় সর্পিল পথ

আমাকে দূরের পথে নিয়ে যায় ডেকে।

নৈঃশব্দ্যের সিঁড়ি ভেঙে ভেঙে

নেমে যাই নিগূঢ় কুহরে,

নির্দ্বন্দ্ব নৈষ্ঠিক মণীষায়।

কোনো কোনো রাতে

তোমাদের দালানের কার্নিশে

বৈদ্যুতিক আলো

শতভূজ বৃক্ষের ফাঁকফোকর গলে

বেরিয়ে আসতে দেখলে আমার

হৃৎপি-ের অসংখ্য ফুটো দিয়ে

রক্তপ্রপাত বয়ে যায়।

আলোক জলের শিহরণ
রিপন বর্মন

আলোক দীপে শিহরিত চোখ

গাছের ভাঙল ঘুম

লজ্জায় মায়া, উষ্ণ স্রোতে ডুবেছে ঠোঁট

হৃৎপি-ে ধক ধক

আঙুলের করোটিতে উঠে আসে-

স্ফীত স্তনের হাসি

জল ভেঙে প্রজাপতি উড়ে যায়

কপালে ঘামবিন্দু

লাঙলের ফলাতে মৃত্তিকার স্বপ্ন-

বিদীর্ণ কোলাহল ছেড়ে জন্মাবে নতুন পৃথিবী...

সমুদ্র আয়না
ওমর ফারুক জীবন

সংকীর্ণ এই আমি

বিস্তীর্ণ সমুদ্রে ফেলে আসি নিজেকে

দশদিক বিদীর্ণ করে বিলাপে ফেটে পড়ে জল

দূরে কাছে চিৎকারে ভারী করে তোলে

ঢেউয়ের ঐরাবত,

ঢেউয়ের ভিতর থেকে গর্জন করতে করতে

একপাল অশ্বকে তাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে

একঝাঁক সিংহ,

অথচ চূর্ণ বিচূর্ণ ঢেউ থেকে যেনবা

উপচে পড়া জলের অরণ্য থেকে

ঝাঁক বেঁধে পালিয়ে যাচ্ছে হরিণের দল

সমুদ্র আর আমি নির্লিপ্ত চেয়ে থাকি

আমাদের বিপুল নিঃসঙ্গ একাকীত্বের ভিতর

ভেসে বেড়াচ্ছে কস্তুরির ঘ্রাণ।

শীতের গীত
আমির হামজা

শীত এলেই গীত হয় কুয়াশার ভোর

অভিসারে ফুটে ওঠে

সরিষা দানার অণুগল্প

হলুদ গালিচায় সম্ভাষণ জানায়

মাঘের ঝিরিঝিরি বাতাস।

রৌদ্রময় দিনগুলো ঝাপসা হয়

বুকের পাঁজর ভাঙ্গে,

শীতের বাড়াবাড়িতে

আস্ফালনের কুসুম জাগে না!

নুয়ে থাকা ঘাসফুল জেগে উঠে

ধূসর প্রান্তরে

বসন্ত ছন্দের আগমনী উচ্ছ্বাসে।

ছবি

ভ্রম

ছবি

পালকের চিহ্নগুলো

ছবি

নতুন বইয়ের খবর

ছবি

রফিক আজাদের কবিতা

ছবি

ধূসর পাণ্ডুলিপি পরিবহন

ছবি

চৈত্রের কোনো এক মধ্যরাতে

ছবি

দেশভাগের বিপর্যয় ও ‘জলপাইহাটি’র জীবনানন্দ দাশ

ছবি

সামান্য ভুল

সাময়িকী কবিতা

ছবি

আধুনিক বাংলা কবিতার প্রথাভাঙা মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত

ছবি

ধুলোময় জীবনের মেটাফর

ছবি

স্কুলটি ছোট্ট বটে

ছবি

নতুন বইয়ের খবর

ছবি

পালকের চিহ্নগুলো

ছবি

আদোনিসের কবিতা

ছবি

আড়াই লেনের কৃষ্ণচূড়া

ছবি

গিরিশচন্দ্র ঘোষের নাটক ইতিহাস ও দেশপ্রেম

ছবি

নিজস্বতার অনন্য প্রমাণ

ছবি

বইমেলায় আসছে নতুন বই

ছবি

সরল প্রাণের সোপান

ছবি

হাসান আজিজুল হকের দর্শনচিন্তা

ছবি

শীতের পদাবলি

সাময়িকী কবিতা

ছবি

মধুসূদনের ‘মেঘনাদবধ’ কাব্য মানবতারই জয়গান

ছবি

বইতরণী সাহিত্য পুরস্কার পেলেন শুক্লা গাঙ্গুলী

ছবি

‘শব্দঘর’ আহমদ রফিক সংখ্যা ও তাঁকে সম্মাননা প্রদান

ছবি

নিজস্বতার অনন্য প্রমাণ

ছবি

ঈশ্বরের সত্য দর্শন

ছবি

মঞ্চে প্রবেশ

ছবি

আমি মাকারিও নই

ছবি

মৃতজন গল্প রচনা করে

ছবি

সম্পত্তি বিতর্ক: কেন পদত্যাগ করতে হলো টিউলিপ সিদ্দিককে

ছবি

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা ফেব্রুয়ারিতে

ছবি

মধুসূদনের সাহিত্যে নৈরাশ্যবাদ

ছবি

বিদূষী নবনীতা বনাম মানুষ নবনীতা

ছবি

দুটি অণুগল্প

tab

সাময়িকী

সাময়িকী কবিতা

বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

করোনাকালের স্মৃতি
শফিক ইমতিয়াজ

একেকটা দিন, কী রকম রোঁয়াওঠা

সকাল দুপুর সন্ধ্যা কিংবা রাত; নিরেট বাসীরুটির মনমরা

আয়নায় তাকাই, ঝামা ঘষে দেয়া মুখ!

‘অন্তরীণ’ শব্দটা ভাষিক প্রকাশের চেয়ে

যাপন উপলব্ধিতে তীব্র হয়ে আছে অনেককাল, সয়েও গেছে

তার উপর প্রকৃতি প্রতিশোধ রূপে ছোড়ে বাণ, অতিমারী!

আমরা আগাপাশতলা এক পলোচাপা আষাঢ়ে বোয়াল

কে জানে বাকি জীবন এভাবেই যাবে কীনা-

অথৈ ভীতির আঁচে বৌদ্ধিকজঙ্গম, রীতিমতো কেন্নোর কু-লি।

হঠাৎ একঘেয়েমি কাটাতে বেরিয়ে পড়ি

পথে ও বাজারে কিছু কোলাহল

প্রাণবন্ত মাঠ আজ আলস্যের হাই তোলা সবুজ ঘাসের ঘুম!

স্বজন আকাশ, ও খুব অন্যমনস্ক

করতলের সূর্য, সে শঙ্কার দূরত্বে!

আজ সারাদিন এ নগরে কোনো যুবাকে দেখিনি

হলুদ চুলের কেউ, দেখা গেলো পথে, সেটি আমগাছ

মাথাভর্তি বোলের তরঙ্গ, পাশে উদগ্রীব ভ্রমর-মৌমাছি।

রাতের নগর, নির্জন গহ্বর

ঘরে ফেরা, সে নতুন দীর্ঘশ্বাস!

প্রতি শীতের কমলা
আমিনুর রহমান সুলতান

কমলা সুন্দর, রঙে

আকার ও আকৃতিতে।

পছন্দের তালিকায় রাখি শীতে

পরম আদরে রেখে ঢেকে

রসের ফলের মধ্যে

কমলা ঘুমেও পৃথিবী হয়ে ঘোরে

ঘুরায় স্বপ্নের ঘোরে।

শীত আসে গত হয়

অপেক্ষা ফুরায় মিটবে তৃষ্ণা

কমলার রসে।

প্রতি শীতে আমাকে বঞ্চিত করে

মুখ থেকে পচন ধরিয়ে...

মুক্তির মুদ্রা 
হাসানাত লোকমান

ভালোবাসা, তুমি কি কেবল এক দহনশিখা?

নাকি বুকে জমে থাকা বিদ্রোহের তুমুল ঝড়,

ফুৎকারে স্বর্গ মর্ত্য পাতাল উড়িয়ে দিবে স্বাধীনতার ডাক?

তোমার উত্তপ্ত স্পর্শে টের পাই

চিরসবুজ অরণ্যের বন্য হাহাকার,

তা-ব নৃত্যে ভাসে অজ¯্র আগুন ফুলের মুদ্রা

আমি সেই মুদ্রায় খুঁজে ফিরি নিজের পরিচয়।

তোমার প্রেম বন্ধনহীন প্রগল্ভ জোয়ার

তুমি পথ ভাঙা উত্তাল মাতাল নদী— উ™£ান্ত, উন্মত্ত,

যার ঢেউয়ের ভাঁজে বিচূর্ণ প্রাচীন সভ্যতার গৌরব,

তবু সেই ভাঙনে জন্ম নেয় নতুন জীবন যাত্রার সুর।

তুমি দিগন্তে অঙ্কিত এক পেঙ্গুইন পাখির শ্যান চোখ

যার ডানা ও গনগনে দৃষ্টির আঁচে পুড়ে যায় দুর্বল ভীরু,

তোমার হিরন্ময় শক্তির দীক্ষায় হতে চাই

সময়ের শিলালিপি, যেখানে লেখা থাকবে বিপ্লব।

তুমি ভালোবাসার নাম নিয়ে

জেগে ওঠো প্রতিরোধের সৈনিক,

তুমি কামনার মায়া ভেঙে

গড়ে তোলো শুদ্ধতার নীড়।

তুমি যদি হও কালবৈশাখীর দুরন্ত মেঘ

আমি হবো সেই মেঘের প্রথম বৃষ্টির ফোঁটা,

যা দগ্ধ মাটির বুকে নিয়ে আসবে স্পন্দিত প্রাণের সুর।

ভালোবাসা, তুমি শিকল ভাঙার গান,

তুমি শ্রাবণের প্লাবন, যা আনে পথে পথে জয়যাত্রার পদধ্বনি

তুমি আমি, আমরা একসাথে

হাতে নিই প্রতিবাদের মশাল,

যেখানে প্রেম মানে কেবল নয় বাঁধন-

প্রেম মানে মুক্তি, অবাধ ডানার উড়াল

প্রেম মানে অনন্ত উদার দিগন্তে

স্বপ্ন আঁকার উজ্জ্বল সাহস!

ইতিহাসের চ্যাটবট
মণিপদ্ম দত্ত

শুধু সে গুলোই মনে পড়ে যা বলা হয়ে গেছে

বলা হয়নি যা বা বলতে পারিনি

বলতে দেয়নি বোবা ভয়

সেসব নিয়েই তো দিব্যি বেঁচে থাকা যায়।

থাকবোও আরও বহুদিন কোন সিকায়ৎ ছাড়াই

লোডশেডিং-এর আনন্দে যেমন মশা তাড়াই।

এভাবেই ক্রমান্বয়ে ভুল ইতিহাস লেখা হয় মানুষের

আঙ্গুল উঁচিয়ে থাকে ভয়ের তর্জনী।

এখন মানি বীরভোগ্যা বসুন্ধরা।

প্যালেস্তাইনের রক্ত বা

দলিত কিশোরীর চিরে দেওয়া তলপেটও আর যথেষ্ট লাল মনে হয় না;

শেয়ার বাজারের ওঠা পড়ায়

হায়নার মুখেও স্নিগ্ধ ময়ূখ লাগে

প্রভু, তোমা লাগি আঁখি জাগে।

মঙ্গলযান স্টারশিপ এ আই

এরাই ভ্যালেন্টাইন, এরাই প্রেম

শপিং মলের হারেমে ছালসহ ঝোলে।

জীবন বহিয়া চলে ঝালে অম্বলে।

গোধূলি
সুস্মিতা বিশ্বাস

ওগো মুগ্ধ, অকরুণ চক্ষুসহোদর

সূর্যটি অস্ত যাবে, এমনই লিখেছ ছায়া বিজনবাতাসে!

তোমার হাতের পাতা মরিচাগন্ধমাখা, শ্যামঘনরঙ।

পশ্চিম আকাশজুড়ে সে যখন আয়ুমেঘ,

সুরের অনতিদূরে আলোর বিন্দু অতি-আলো...

সূর্যটি অস্ত যায়। করুণাকণার চেয়ে সূক্ষ্ম মৃদু বাষ্পলতা ভাসে

মহাকাল, মাতৃবৎ, সহজ স্নেহের বশে দিকচক্রবালে ঝুঁকে আসে!

পথ
যাকির সাইদ

প্রায়শ এমন হয়, রাত বাড়তে থাকলে

আমিও আমার মন থেকে

সমূলে হারাতে থাকি।

একসময় সর্পিল পথ

আমাকে দূরের পথে নিয়ে যায় ডেকে।

নৈঃশব্দ্যের সিঁড়ি ভেঙে ভেঙে

নেমে যাই নিগূঢ় কুহরে,

নির্দ্বন্দ্ব নৈষ্ঠিক মণীষায়।

কোনো কোনো রাতে

তোমাদের দালানের কার্নিশে

বৈদ্যুতিক আলো

শতভূজ বৃক্ষের ফাঁকফোকর গলে

বেরিয়ে আসতে দেখলে আমার

হৃৎপি-ের অসংখ্য ফুটো দিয়ে

রক্তপ্রপাত বয়ে যায়।

আলোক জলের শিহরণ
রিপন বর্মন

আলোক দীপে শিহরিত চোখ

গাছের ভাঙল ঘুম

লজ্জায় মায়া, উষ্ণ স্রোতে ডুবেছে ঠোঁট

হৃৎপি-ে ধক ধক

আঙুলের করোটিতে উঠে আসে-

স্ফীত স্তনের হাসি

জল ভেঙে প্রজাপতি উড়ে যায়

কপালে ঘামবিন্দু

লাঙলের ফলাতে মৃত্তিকার স্বপ্ন-

বিদীর্ণ কোলাহল ছেড়ে জন্মাবে নতুন পৃথিবী...

সমুদ্র আয়না
ওমর ফারুক জীবন

সংকীর্ণ এই আমি

বিস্তীর্ণ সমুদ্রে ফেলে আসি নিজেকে

দশদিক বিদীর্ণ করে বিলাপে ফেটে পড়ে জল

দূরে কাছে চিৎকারে ভারী করে তোলে

ঢেউয়ের ঐরাবত,

ঢেউয়ের ভিতর থেকে গর্জন করতে করতে

একপাল অশ্বকে তাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে

একঝাঁক সিংহ,

অথচ চূর্ণ বিচূর্ণ ঢেউ থেকে যেনবা

উপচে পড়া জলের অরণ্য থেকে

ঝাঁক বেঁধে পালিয়ে যাচ্ছে হরিণের দল

সমুদ্র আর আমি নির্লিপ্ত চেয়ে থাকি

আমাদের বিপুল নিঃসঙ্গ একাকীত্বের ভিতর

ভেসে বেড়াচ্ছে কস্তুরির ঘ্রাণ।

শীতের গীত
আমির হামজা

শীত এলেই গীত হয় কুয়াশার ভোর

অভিসারে ফুটে ওঠে

সরিষা দানার অণুগল্প

হলুদ গালিচায় সম্ভাষণ জানায়

মাঘের ঝিরিঝিরি বাতাস।

রৌদ্রময় দিনগুলো ঝাপসা হয়

বুকের পাঁজর ভাঙ্গে,

শীতের বাড়াবাড়িতে

আস্ফালনের কুসুম জাগে না!

নুয়ে থাকা ঘাসফুল জেগে উঠে

ধূসর প্রান্তরে

বসন্ত ছন্দের আগমনী উচ্ছ্বাসে।

back to top