alt

সাময়িকী

সাময়িকী কবিতা

: রোববার, ২১ নভেম্বর ২০২১

ক্রান্তিকালের হাওয়া
জাহিদ মুস্তাফা
দুঃখ পাবার কি আছে আর
দুঃখ-কালের চাওয়া
ওম শান্তির সরোবরে
সাঁতার কাটে অনিরুদ্ধ-
ক্রান্তিকালে বিপন্নতার হাওয়া!

কষ্ট মনে থাক গোপনেই
কষ্ট-আঁধার অষ্ট-প্রহরকাল!
দুঃখচাদর বিছিয়ে দিলাম
অভিসম্পাত হোক না আমার
নৈবেদ্যের ঢাল!

প্রেমিক ছিলাম
খালেদ হোসাইন
ভেবেছিলাম, সেই ছবিটা
থাকবে আমার ব্যক্তিগত
নিবিড় গোপন সুখের মতো
দুখের মতো।

থাকলো না তা। করলে তাকে
সর্বজনীন
স্বীকৃতিও মিললো তাতে।
এখন আমার ইচ্ছেও নেই,
স্বপ্ন কিংবা কল্পনাও।
দিন গুজরান পেটে-ভাতে।

প্রেমিক ছিলাম, শ্রমিক হলাম।
বইছে জীবন একই খাতে।

বাগ্ময় নীরবতা
অশোক কর
বাগ্ময় নীরবতা
তার-ও বুঝি ভাষা আছে
মুগ্ধ মাধুরিমা...

সুগন্ধী বনফুল
মৌ-পরাগের তৃপ্তি গর্ভে মাখে
মুগ্ধ-সহবাসে...
পূর্ণিমার রাতে
পথহারা সে বালক চন্দ্রাহত
জ্যোৎস্নাভিসারে...

নিঃসঙ্গ নির্বাসনে
পরিযায়ী কল্পডানায় ওড়ে
স্বপ্ন-পরবাসে...

শরৎ আকাশে
ভালবাসা জড়িয়ে থাকে মেঘে
মেঘসিঁদুরে রঙে...

নীরবে নিভৃতে নিঃশব্দে
আব্দুল্লাহ জামিল
আজ বহুদিন পরে তোমার স্মৃতির
সিন্দুকটির হারানো চাবিটি পেলাম
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা পাল্লাটা খুললো
ক্যাঁচক্যাঁচ করে তার অভিমান নিয়ে
জমে থাকা কষ্টগুলো হৃদয় কাঁপিয়ে
দীর্ঘশ্বাস হয়ে চলে গেলো বহু দূরে।

বয়োবৃদ্ধি ও কর্মের চাপে বহু কিছু
বিস্মৃত মনকে শুধু দোলা দিয়ে যায়
সেই ঘণ্টাব্যাপি ফোনালাপ, ছোট বার্তা
অনধিকার অভিমানের ছোট ছোট
একাঙ্কিকা, গান শোনানোর আবদার
কিংবা আমার নতুন লেখা কবিতার
ব্যবচ্ছেদ করতে করতে কথা বন্ধ,
সব এসে চোখে ভর করে অশ্রু হয়ে।

ইরান-ইরাক যুদ্ধ থেমেছে আগেই
সাদ্দাম, গাদ্দাফি, মরে গেছে কবে
প্যালেস্টাইন বেহাত, কার কী বা তাতে
সর্বত্র যুদ্ধের খেলা, ধরণী বিপাকে
কতকিছু ঘটে গেছে, ঘটছে নিয়ত
হৃদপুকুরে তোমার শ্বেতপাথরের
সেই ঘাট ঠিক আছে আজও তেমনি।

শুনেছি সেদিন কোনো এক লোকমুখে
মরণব্যাধির কষ্টে আছো ঢের দিন
অভিমানে অভিমানে আসে অভিযোগ
একটু জানালে ক্ষতি কী এমন হতো?
ক্ষমা চেয়ে নিতে তাই যোগাযোগ করে
না বলা কথাকে বলে দিয়ে চলে গেলে
গৌরী, নীরবে নিভৃতে নিঃশব্দে এমন?

পাতাসমগ্র থেকে
শিউল মনজুর
শীতের আগ্রাসী হাওয়ায় কেঁপে উঠছে বুক, বুকের পাজর। দরোজায় আবারো তালা ঝুলে যাচ্ছে, দেন মোহরের নতুন নতুন গল্পে ও আভায়। যদিও মৌসুমী ঝড়ে বৃক্ষ ভূগোল থেকে উড়ে যাচ্ছে বাহারী রঙেরপাতা কিংবা পাতাসমগ্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে নদী ও নদীর সম্ভাবনাময় ঢেউ। হয়তো এ কারণেই শপিংমলে কসমেটিক্স বিক্রির গ্রাফরেখা ঊর্ধ্বমুখী এবং প্রতিবেশি পাখিরাও দিনশেষে ভুলতে শুরু করেছে কোভিড যন্ত্রণা। ওদিকে, আমি ওন্টারিও লেকের তীরে একটি বিরহী সীগালের সাথে গল্প করতে করতে হারিয়ে ফেলেছি প্রিয় জ্যাকেটের সাথে তোমার শেষ অটোগ্রাফ। তুমি হয়তো জানবে না, শীতের আগ্রাসী হাওয়ায় প্রতিদিন কেঁপে উঠছে বেদনা জর্জরিত যাযাবর বুক, বুকের পাজর! অবশ্য ভিডিও সাক্ষাতকারে মনোবিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে গেলে, তিনি স্মরণ করিয়ে দিলেন, কোভিড ভ্যাকসিনের বুস্টার সটটা নিতে যেনো ভুলে না যাই। শীত শেষে, তেজী ঘোড়ার মতো বসন্ত আবারো আসবে, বাড়ির উঠোনেই, এ কথাটিও তিনি মনে করিয়ে দিলেন।

হঠাৎ কখনো
চঞ্চল শাহরিয়ার
বিষাদ নেবে না কেউ। বিষাদের সাথে তবু পথচলা।
এই প্রহরের কথা কোনদিন আয়োজন করে বলার
ইচ্ছা জাগে না তাই। কে কার বিষাদ নেবে?
কে বাড়াবে হাত নির্ভেজাল সহানুভূতির?

স্মৃতির সাম্পানে চড়া দিন তবু ঝলমলে হয়
ফরেস্ট ঘাটের আঙিনায়।

আজ বুঝি কেউ মনে করছে নির্বাসিত যুবকের নাম?

সাময়িকী কবিতা

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

কানাগলি

ছবি

পার্ল এস বাক-এর কবিতা

ছবি

হোসে এচেগারাই স্প্যানিশ আলোকবর্তিকা

ছবি

নববীণায় বাজে নতুনের জয়গান

ছবি

রবীন্দ্রনাথের ‘করুণা’ ঘিরে কিছু কথা

ছবি

গীতাঞ্জলির ইতিবৃত্ত ও বেদনাহত রবীন্দ্রনাথ

ছবি

রবীন্দ্রনাথ, শিলাইদহ ও ‘ছিন্নপত্র’

ছবি

নিউ নেদারল্যান্ডস: জার্র্সি এবং লেনাপি জনগোষ্ঠী

সাময়িকী কবিতা

ছবি

বকুলীর সেইরাত

ছবি

আকাশের প্রান্ত

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

মুখ

ছবি

বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি

ছবি

অগ্রজ দাউদ হায়দারের মহাপ্রয়াণ

ছবি

নারী যখন পাঠক নারী যখন লেখক

সাময়িকী কবিতা

মিত্র

ছবি

মৃত্যুর মৃদু উত্তাপ : পথের শেষ কোথায়

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

বেলাল চৌধুরীর কবিতা

ছবি

পাঠের আগ্রহ থাকলে বইয়ের অভাব হয় না

ছবি

রবীন্দ্রগানে শঙ্খ ঘোষের মন

ছবি

ফার্স্ট টিউসডে’স : আমার প্রথম মঙ্গলবার সন্ধ্যার গন্তব্য

ছবি

আজ লাবণ্যর বিয়ে

ছবি

সংস্কৃতির পরম্পরা, অভিঘাত-অভিজ্ঞান ইতিহাস বিচার-বিশ্লেষণ

ছবি

তুষার গায়েন-এর কবিতা

ছবি

লোরকার দেশে

ফিলিস্তিনের তিনটি কবিতা

ছবি

এক বিস্ময় প্রতিভা

ছবি

দিওয়ান-ই-মাখফি : জেব-উন-নিশা

ছবি

বৈচিত্র্যে ভরা ‘যদিও উত্তরমেঘ’

ছবি

রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাইয়ের কথা

ছবি

মোহ কাঠের নৌকা : জীবন-সংগ্রামের এক বাস্তব প্রতিচ্ছবি

tab

সাময়িকী

সাময়িকী কবিতা

রোববার, ২১ নভেম্বর ২০২১

ক্রান্তিকালের হাওয়া
জাহিদ মুস্তাফা
দুঃখ পাবার কি আছে আর
দুঃখ-কালের চাওয়া
ওম শান্তির সরোবরে
সাঁতার কাটে অনিরুদ্ধ-
ক্রান্তিকালে বিপন্নতার হাওয়া!

কষ্ট মনে থাক গোপনেই
কষ্ট-আঁধার অষ্ট-প্রহরকাল!
দুঃখচাদর বিছিয়ে দিলাম
অভিসম্পাত হোক না আমার
নৈবেদ্যের ঢাল!

প্রেমিক ছিলাম
খালেদ হোসাইন
ভেবেছিলাম, সেই ছবিটা
থাকবে আমার ব্যক্তিগত
নিবিড় গোপন সুখের মতো
দুখের মতো।

থাকলো না তা। করলে তাকে
সর্বজনীন
স্বীকৃতিও মিললো তাতে।
এখন আমার ইচ্ছেও নেই,
স্বপ্ন কিংবা কল্পনাও।
দিন গুজরান পেটে-ভাতে।

প্রেমিক ছিলাম, শ্রমিক হলাম।
বইছে জীবন একই খাতে।

বাগ্ময় নীরবতা
অশোক কর
বাগ্ময় নীরবতা
তার-ও বুঝি ভাষা আছে
মুগ্ধ মাধুরিমা...

সুগন্ধী বনফুল
মৌ-পরাগের তৃপ্তি গর্ভে মাখে
মুগ্ধ-সহবাসে...
পূর্ণিমার রাতে
পথহারা সে বালক চন্দ্রাহত
জ্যোৎস্নাভিসারে...

নিঃসঙ্গ নির্বাসনে
পরিযায়ী কল্পডানায় ওড়ে
স্বপ্ন-পরবাসে...

শরৎ আকাশে
ভালবাসা জড়িয়ে থাকে মেঘে
মেঘসিঁদুরে রঙে...

নীরবে নিভৃতে নিঃশব্দে
আব্দুল্লাহ জামিল
আজ বহুদিন পরে তোমার স্মৃতির
সিন্দুকটির হারানো চাবিটি পেলাম
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা পাল্লাটা খুললো
ক্যাঁচক্যাঁচ করে তার অভিমান নিয়ে
জমে থাকা কষ্টগুলো হৃদয় কাঁপিয়ে
দীর্ঘশ্বাস হয়ে চলে গেলো বহু দূরে।

বয়োবৃদ্ধি ও কর্মের চাপে বহু কিছু
বিস্মৃত মনকে শুধু দোলা দিয়ে যায়
সেই ঘণ্টাব্যাপি ফোনালাপ, ছোট বার্তা
অনধিকার অভিমানের ছোট ছোট
একাঙ্কিকা, গান শোনানোর আবদার
কিংবা আমার নতুন লেখা কবিতার
ব্যবচ্ছেদ করতে করতে কথা বন্ধ,
সব এসে চোখে ভর করে অশ্রু হয়ে।

ইরান-ইরাক যুদ্ধ থেমেছে আগেই
সাদ্দাম, গাদ্দাফি, মরে গেছে কবে
প্যালেস্টাইন বেহাত, কার কী বা তাতে
সর্বত্র যুদ্ধের খেলা, ধরণী বিপাকে
কতকিছু ঘটে গেছে, ঘটছে নিয়ত
হৃদপুকুরে তোমার শ্বেতপাথরের
সেই ঘাট ঠিক আছে আজও তেমনি।

শুনেছি সেদিন কোনো এক লোকমুখে
মরণব্যাধির কষ্টে আছো ঢের দিন
অভিমানে অভিমানে আসে অভিযোগ
একটু জানালে ক্ষতি কী এমন হতো?
ক্ষমা চেয়ে নিতে তাই যোগাযোগ করে
না বলা কথাকে বলে দিয়ে চলে গেলে
গৌরী, নীরবে নিভৃতে নিঃশব্দে এমন?

পাতাসমগ্র থেকে
শিউল মনজুর
শীতের আগ্রাসী হাওয়ায় কেঁপে উঠছে বুক, বুকের পাজর। দরোজায় আবারো তালা ঝুলে যাচ্ছে, দেন মোহরের নতুন নতুন গল্পে ও আভায়। যদিও মৌসুমী ঝড়ে বৃক্ষ ভূগোল থেকে উড়ে যাচ্ছে বাহারী রঙেরপাতা কিংবা পাতাসমগ্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে নদী ও নদীর সম্ভাবনাময় ঢেউ। হয়তো এ কারণেই শপিংমলে কসমেটিক্স বিক্রির গ্রাফরেখা ঊর্ধ্বমুখী এবং প্রতিবেশি পাখিরাও দিনশেষে ভুলতে শুরু করেছে কোভিড যন্ত্রণা। ওদিকে, আমি ওন্টারিও লেকের তীরে একটি বিরহী সীগালের সাথে গল্প করতে করতে হারিয়ে ফেলেছি প্রিয় জ্যাকেটের সাথে তোমার শেষ অটোগ্রাফ। তুমি হয়তো জানবে না, শীতের আগ্রাসী হাওয়ায় প্রতিদিন কেঁপে উঠছে বেদনা জর্জরিত যাযাবর বুক, বুকের পাজর! অবশ্য ভিডিও সাক্ষাতকারে মনোবিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে গেলে, তিনি স্মরণ করিয়ে দিলেন, কোভিড ভ্যাকসিনের বুস্টার সটটা নিতে যেনো ভুলে না যাই। শীত শেষে, তেজী ঘোড়ার মতো বসন্ত আবারো আসবে, বাড়ির উঠোনেই, এ কথাটিও তিনি মনে করিয়ে দিলেন।

হঠাৎ কখনো
চঞ্চল শাহরিয়ার
বিষাদ নেবে না কেউ। বিষাদের সাথে তবু পথচলা।
এই প্রহরের কথা কোনদিন আয়োজন করে বলার
ইচ্ছা জাগে না তাই। কে কার বিষাদ নেবে?
কে বাড়াবে হাত নির্ভেজাল সহানুভূতির?

স্মৃতির সাম্পানে চড়া দিন তবু ঝলমলে হয়
ফরেস্ট ঘাটের আঙিনায়।

আজ বুঝি কেউ মনে করছে নির্বাসিত যুবকের নাম?

back to top