alt

সংকটকে শক্তিতে রূপান্তর

নবাবগঞ্জের আদিবা জেরিন এখন সফল নারী উদ্যোক্তা

প্রতিনিধি, নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) : শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫

কেউ যখন সংকটকে পরাজয় হিসেবে দেখে, কেউ তখন সেই সংকটকেই রূপ দেয় সম্ভাবনায়। তেমনই একজন সাহসী তরুণীর নাম আদিবা জেরিন।দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলা সদরের বাসিন্দা আদিবা জেরিন বাবার টানপড়নের সংসারকে গতিশীল করার জন্য ঘরে বসেই শুরু করে অনলাইন কেক ব্যবসা,যা এখন তার স্বাবলম্বিতার বড় মাধ্যম। মাসে তিনি কেক বিক্রি করে আয় করছেন প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা, আর এই আয় দিয়েই সামলাচ্ছেন নিজের পড়াশোনা,ছোট ভাই বোনের সংসার ও ভবিষ্যতের স্বপ্ন।

করোনার মধ্যেই শুরু আত্মনির্ভরতার যাত্রা ২০২০ সালে। দেশজুড়ে করোনা মহামারির প্রভাবে থমকে গিয়েছিলো স্বাভাবিক জীবন। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছিল কর্মসংস্থান। ঠিক এমন সময়েই আদিবা নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেন। ঘরে বসে রান্নার প্রতি আগ্রহ থেকে তিনি কেক বানানো শুরু করেন, এবং এরপরই ফেসবুকে একটি পেজ খুলে কেক বিক্রি শুরু করেন। প্রথম দিকে আশপাশের পরিচিত মানুষদের কাছ থেকেই অর্ডার পেতে শুরু করেন।ধীরে ধীরে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে তার হাতের তৈরি কেকের সুখ্যাতি। তার বানানো কেকের মান, স্বাদ ও নকশা ক্রেতাদের মন জয় করে নেয়।

এখন নবাবগঞ্জ ছাড়াও আশপাশের উপজেলা থেকে তিনি নিয়মিত অর্ডার পাচ্ছেন।শিক্ষার্থী, সংসার সামলানো আর ব্যবসা—সব একসাথে বর্তমানে আদিবা রংপুর সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষে অধ্যয়নরত। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি বড়, তাই পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারের দায়িত্বও নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। পরিবারের সাপোর্ট ও নিজের আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করেই এগিয়ে চলেছেন তিনি।

আদিবা জেরিন বলেন, শুরুতে ভয় লাগত—অর্ডার পাবো কি না, লোকজন কেমন রিভিউ দেবে। কিন্তু একের পর এক অর্ডার আসতে থাকল, মানুষ কেকের ছবি দিয়ে প্রশংসা করে। তখন বুঝলাম,আমি পারবো।

তিনি আরও বলেন,এই আয় দিয়েই নিজের পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছি। পাশাপাশি সংসারে কিছুটা সহযোগিতাও করতে পারছি। নিজে কিছু করতে পারার আনন্দই আলাদা। নারীদের জন্য অনুপ্রেরণা

আদিবার মতে, মেয়েরা চাইলে ঘরে বসেও নিজেদের অর্থনৈতিকভাবে গড়ে তুলতে পারে। সমাজে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও তা জয় করার শক্তি নারীদের মাঝেই রয়েছে। তার কেক ব্যবসার এই সফলতা অনেক তরুণীর জন্য একটি উদাহরণ হতে পারে। আদিবার স্বপ্ন, ভবিষ্যতে নিজস্ব একটি বেকারি খুলতে চান—যেখানে তিনি আরও নারীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবেন। তিনি চান, অন্য মেয়েরাও যেন স্বাবলম্বী হতে পারে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে।

স্থানীয় এলাকাবাসী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা আদিবা জেরিনকে ছোটবেলা থেকেই চিনি। সংসারের টানাপোড়েনের মধ্যেও সে হাল ছাড়েনি। নিজের পরিশ্রমে আজ সে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে। তার তৈরি কেকগুলো শুধু সুস্বাদুই নয়, স্বাস্থ্যসম্মতও। আমরা চাই এলাকার অন্য মেয়েরাও তার মতো অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেদের স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যাক।

আদিবার ছোট বোন মারিয়া জেরিন বলেন, আমার আপু শুধু আমাদের সংসারই চালাচ্ছেন না, আমাদের পড়াশোনার খরচও দেখছেন। তার জন্যই আমি নিয়মিত স্কুলে যেতে পারছি।আপু আমাদের জন্য অনেক কষ্ট করে কাজ করেন। আমি চাই একদিন আমিও আপুর মতো নিজেকে গড়ে তুলতে পারি।

নবাবগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মুশাররত জাহান বলেন, আদিবা জেরিনের মতো নারীরা আমাদের সমাজের জন্য গর্বের বিষয়। তিনি নিজের মেধা, পরিশ্রম ও দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি দিয়ে প্রমাণ করেছেন যে নারীরা চাইলে ঘরে বসেই স্বাবলম্বী হতে পারে। সরকার নারীদের উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দিচ্ছে। আদিবা জেরিন তার সুন্দর উদ্যোগের মাধ্যমে অন্য মেয়েদেরও উৎসাহিত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর সবসময় তার পাশে থাকবে

ছবি

দূষণের করাল গ্রাসে বারনই নদ, চর্মরোগে আক্রান্ত ৩ লাখ মানুষ

ছবি

রাণীনগরে যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ছবি

জেলের জালে ধরা পড়া কুমিরের বাচ্চা সুন্দরবনের নদীতে অবমুক্ত

ছবি

পদ্মা নদীর চ্যানেলে গোলাগুলির প্রতিবাদে মানববন্ধন

ছবি

বোয়ালখালীতে আগুনে পুড়লো বসতঘর

ছবি

রাজশাহীতে বিকাশ-ইমো প্রতারক চক্রের চার হ্যাকার গ্রেপ্তার

ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিজিবির অভিযানে ৮ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ

ছবি

বাগাতিপাড়ায় অভিযানে অবৈধ চায়না দুয়ারি জাল জব্দ ও বিনষ্ট

ছবি

গজারিয়ায় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বালু উত্তোলন

ছবি

বোয়ালখালীতে ৭২ হাজার ৬৪৩ শিশু পাবে টাইফয়েডের টিকা

ছবি

তারেক রহমান যোগ্য প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেবেন : কর্নেল আজাদ

ছবি

উলিপুরে ভেঙ্গে পড়া সেতু ৮ বছরেও হয়নি সংস্কার, ভোগান্তিতে ২০ গ্রামের মানুষ

ছবি

জয়পুরহাটের নয়নাভিরাম পাখি কলোনি

ছবি

ফটিকছড়িতে কৃষকদের মাঝে সবজির বীজ ও সার বিতরণ

ছবি

নন্দীগ্রামে ঘন কুয়াশায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে গাড়ি, নেমেছে শীতের আমেজ

ছবি

বাগেরহাটে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালনে র‌্যালী ও আলোচনা সভা

ছবি

ভোট কেন্দ্র পৃথককরণ করে স্থানান্তরের দাবি

ছবি

২০ অক্টোবরের মধ্যে সড়ক সংস্কারের নির্দেশ হাসনাত আব্দুল্লাহ

ছবি

মুকসুদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত বৃদ্ধার মৃত্যু

ছবি

কমরেড মোহাম্মদ ফরহাদের ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

ছবি

মাথাভাঙ্গা নদীর বুকে বাধের দৌরাত্ম্য কারেন্ট জালে মাছ নিধনের মহোৎসব

ছবি

উচ্চ পর্যায়ে যেতে হলে আত্ম অধিকারের জন্য লড়তে হবে : জেলা প্রশাসক

ছবি

নিষেধাজ্ঞা মানছেনা জেলেরা রায়পুরে মেঘনা নদীতে ইলিশ ধরার উৎসব

ছবি

গলাচিপার চর বাংলায় ভূমিহীনদের জমি দখলের চেষ্টা

ছবি

বাগেরহাটে ব্র্যাকের আয়োজনে বিশ্ব দৃষ্টি দিবস-২০২৫ পালন

ছবি

মিয়ানমারে আবারও সংঘাত, সীমান্তে ফের আতঙ্ক

ছবি

বিশ্বনাথে বিএনপির দুই গ্রুপে ব্যাপক সংঘর্ষ

ছবি

ধোপাজান নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন

ছবি

যশোর যুবক হত্যা, আসামির বাড়িতে আগুন দিয়েছে ক্ষুব্ধ জনতা

ছবি

নবাবগঞ্জ চড়ারহাট গনহত্যা দিবস পালিত

ছবি

ফরিদপুরে অবশেষে এনআইডি পেলেন দুই হাতহীন জসিম

ছবি

মানিকগঞ্জে বেঙ্গল মিশ্রিত সার সরবরাহ না থাকায় কৃষকেরা হতাশ

ছবি

নিষিদ্ধের পরও সৈয়দপুরে বাজারে পলিথিনের ছড়াছড়ি

ছবি

ধানখেত থেকে কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার

ছবি

নাটোরে ইমো হ্যাকিং চক্রের ৯ সদস্য গ্রেপ্তার

ছবি

বাগেরহাটে শিশু ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ

tab

সংকটকে শক্তিতে রূপান্তর

নবাবগঞ্জের আদিবা জেরিন এখন সফল নারী উদ্যোক্তা

প্রতিনিধি, নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর)

শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫

কেউ যখন সংকটকে পরাজয় হিসেবে দেখে, কেউ তখন সেই সংকটকেই রূপ দেয় সম্ভাবনায়। তেমনই একজন সাহসী তরুণীর নাম আদিবা জেরিন।দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলা সদরের বাসিন্দা আদিবা জেরিন বাবার টানপড়নের সংসারকে গতিশীল করার জন্য ঘরে বসেই শুরু করে অনলাইন কেক ব্যবসা,যা এখন তার স্বাবলম্বিতার বড় মাধ্যম। মাসে তিনি কেক বিক্রি করে আয় করছেন প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা, আর এই আয় দিয়েই সামলাচ্ছেন নিজের পড়াশোনা,ছোট ভাই বোনের সংসার ও ভবিষ্যতের স্বপ্ন।

করোনার মধ্যেই শুরু আত্মনির্ভরতার যাত্রা ২০২০ সালে। দেশজুড়ে করোনা মহামারির প্রভাবে থমকে গিয়েছিলো স্বাভাবিক জীবন। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছিল কর্মসংস্থান। ঠিক এমন সময়েই আদিবা নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেন। ঘরে বসে রান্নার প্রতি আগ্রহ থেকে তিনি কেক বানানো শুরু করেন, এবং এরপরই ফেসবুকে একটি পেজ খুলে কেক বিক্রি শুরু করেন। প্রথম দিকে আশপাশের পরিচিত মানুষদের কাছ থেকেই অর্ডার পেতে শুরু করেন।ধীরে ধীরে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে তার হাতের তৈরি কেকের সুখ্যাতি। তার বানানো কেকের মান, স্বাদ ও নকশা ক্রেতাদের মন জয় করে নেয়।

এখন নবাবগঞ্জ ছাড়াও আশপাশের উপজেলা থেকে তিনি নিয়মিত অর্ডার পাচ্ছেন।শিক্ষার্থী, সংসার সামলানো আর ব্যবসা—সব একসাথে বর্তমানে আদিবা রংপুর সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষে অধ্যয়নরত। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি বড়, তাই পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারের দায়িত্বও নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। পরিবারের সাপোর্ট ও নিজের আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করেই এগিয়ে চলেছেন তিনি।

আদিবা জেরিন বলেন, শুরুতে ভয় লাগত—অর্ডার পাবো কি না, লোকজন কেমন রিভিউ দেবে। কিন্তু একের পর এক অর্ডার আসতে থাকল, মানুষ কেকের ছবি দিয়ে প্রশংসা করে। তখন বুঝলাম,আমি পারবো।

তিনি আরও বলেন,এই আয় দিয়েই নিজের পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছি। পাশাপাশি সংসারে কিছুটা সহযোগিতাও করতে পারছি। নিজে কিছু করতে পারার আনন্দই আলাদা। নারীদের জন্য অনুপ্রেরণা

আদিবার মতে, মেয়েরা চাইলে ঘরে বসেও নিজেদের অর্থনৈতিকভাবে গড়ে তুলতে পারে। সমাজে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও তা জয় করার শক্তি নারীদের মাঝেই রয়েছে। তার কেক ব্যবসার এই সফলতা অনেক তরুণীর জন্য একটি উদাহরণ হতে পারে। আদিবার স্বপ্ন, ভবিষ্যতে নিজস্ব একটি বেকারি খুলতে চান—যেখানে তিনি আরও নারীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবেন। তিনি চান, অন্য মেয়েরাও যেন স্বাবলম্বী হতে পারে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে।

স্থানীয় এলাকাবাসী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা আদিবা জেরিনকে ছোটবেলা থেকেই চিনি। সংসারের টানাপোড়েনের মধ্যেও সে হাল ছাড়েনি। নিজের পরিশ্রমে আজ সে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে। তার তৈরি কেকগুলো শুধু সুস্বাদুই নয়, স্বাস্থ্যসম্মতও। আমরা চাই এলাকার অন্য মেয়েরাও তার মতো অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেদের স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যাক।

আদিবার ছোট বোন মারিয়া জেরিন বলেন, আমার আপু শুধু আমাদের সংসারই চালাচ্ছেন না, আমাদের পড়াশোনার খরচও দেখছেন। তার জন্যই আমি নিয়মিত স্কুলে যেতে পারছি।আপু আমাদের জন্য অনেক কষ্ট করে কাজ করেন। আমি চাই একদিন আমিও আপুর মতো নিজেকে গড়ে তুলতে পারি।

নবাবগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মুশাররত জাহান বলেন, আদিবা জেরিনের মতো নারীরা আমাদের সমাজের জন্য গর্বের বিষয়। তিনি নিজের মেধা, পরিশ্রম ও দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি দিয়ে প্রমাণ করেছেন যে নারীরা চাইলে ঘরে বসেই স্বাবলম্বী হতে পারে। সরকার নারীদের উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দিচ্ছে। আদিবা জেরিন তার সুন্দর উদ্যোগের মাধ্যমে অন্য মেয়েদেরও উৎসাহিত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর সবসময় তার পাশে থাকবে

back to top