গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) : কচুরিপানা ভর্তি খালের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে অব্যবহৃত কালভার্ট -সংবাদ
গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ও বাউশিয়া ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ সহজতর করার জন্য নির্মিত দুটি বক্সকালভার্ট (সেতু) কোন কাজে আসছে না, কালভার্টের উভয় পাশের সড়ক নির্মাণ কাজ ঝুঁলে যাওয়ার কারণে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র ও ভুক্তভোগী কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ও বাউশিয়া ইউনিয়নের মধ্যে অভ্যন্তরীণ গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগের উন্নয়ন পাশাপাশি অবস্হিত দুটি ইউনিয়নের মধ্য সংযোগ স্হাপন ও যোগাযোগ সহজতর করতে, আনুমানিক ৩ কিলোমিটার মাটির সড়ক ও দুটি বক্সকালভার্ট নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহন করেছিল সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
সড়কটি নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার ৩ বছর অতিবাহিত হলেও শুধুমাত্র কালভার্ট নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে দায়িত্ব প্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠাণের খামখেয়ালীপনার কারণে শুরু করা যায়নি ৩ কিলোমিটার সড়ক ও বক্স কালভার্টের সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ।
ফলে কচুরিপানা ভর্তি খালের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে অব্যবহৃত কালভার্ট দুটি।
যার প্রেক্ষিতে আড়াই কোটি টাকার প্রকল্পটি থেকে নূন্যতম সুফল পাচ্ছেন না স্থানীয়রা।
গজারিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা যায়,দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের তত্বাবধানে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে বাউশিয়া ইউনিয়নের বিসিকের(এপিআই) ঔষধ শিল্প পল্লী হতে লক্ষ্মীপুর গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের ও তদসংলগ্ন দুইটি বক্স কালভার্ট নির্মাণের কার্যাদেশ পেয়েছিল মেসার্স আমান ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারিত ছিল ২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। দুটি কালভার্ট নির্মানসহ অনুসাঙ্গিক কিছু কাজ মিলিয়ে আনুমানিক ৪০ শতাংশ কাজ করার পর বাকি কাজ ফেলে চলে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। তবে প্রকল্পটির বাস্তবায়য়নের সময়সীমা শেষ হওয়ার প্রায় তিন বছর অতিবাহিত হলেও সম্পন্ন করা হয়নি প্রকল্পের সম্পূর্ণ কাজ।
গতকাল সোমবার সরেজমিন প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাটির ভাঙ্গা গর্ত যুক্ত এবরো থেবরো সড়কের দুটি স্হানে কচুরিপানা ভর্তি খালের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে বক্স কালভার্ট।
স্থানীয়রা জানান, গত আমন মৌসুমে ধান শুকানোর কাজে কালভার্টটি ব্যবহার করেছেন তারা।
দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় দুটি কালভার্টই ব্যবহার করতে পারেন না স্থানীয়রা। কালভার্টের নির্মাণের দীর্ঘ সময় পার হলেও সেটি ব্যবহার করতে না পারায় সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছে বলে মনে করেন এলাকার ভুক্তভোগীরা ।
এ সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা জানান, উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নের সঙ্গে ভবেরচর ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগে সংযুক্ত করার জন্য রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্ত অর্ধেক কাজ না করে ঠিকাদার উধাও হয়ে যাওয়ায় নির্মাণাধীন সড়ক ও কালভার্টটি মানুষের উপকারে না এসে বরং তাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা মজিবুর রহমান বলেন, ‘নির্মিতব্য রাস্তাটির দু’পাশে রয়েছে দুই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের কয়েক’শো কৃষকের কয়েকে’শো একর ফসলি জমি। রাস্তা নির্মাণের আগেই ভালো ছিল। তারা তাদের জমিতে উৎপাদিত ফসল সময় মত বিভিন্ন হাট বাজারে নিয়ে ন্যয্য দামে বিক্রি করতে পারতো। জমিতে হালচাষ করার জন্য ট্রাক্টর নিয়ে যেতে পারতো। এখন রাস্তা নির্মাণ ও কালভার্টের কাজ অসমাপ্ত থাকায় তাদের অনেক অসুবিধা হচ্ছে।
এবিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ফজলুল করিম বলেন, ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এন্ড এনহেন্সমেন্ট প্রকল্পের অধীনে বাউশিয়া এপিআই শিল্প পার্ক হতে লক্ষ্মীপুর গ্রাম পর্যন্ত মাটির রাস্তা নির্মাণ, দুইটি বক্স কালভার্ট এর দুই লিফট পর্যন্ত এবোটমেন্ট ওয়াল ঢালাই এবং প্ল্যাসাইডিং নির্মাণ কাজ চলমান অবস্থায়, কাজ বন্ধ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চলে গেছে।
তিনি আরো জানান, গত সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প প্রতিষ্ঠাণের একটি পরামর্শক দল (কনসালটেন্সি ইউনিট) প্রকল্প এলাকা সরজমিন পরিদর্শন করেছেন, প্রকল্পের মেয়াদবৃদ্ধি সাপেক্ষা বাকী কাজ সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সার্বিক বিষয়ে মন্তব্য জানতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী কর্তৃপক্ষের কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) : কচুরিপানা ভর্তি খালের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে অব্যবহৃত কালভার্ট -সংবাদ
মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ও বাউশিয়া ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ সহজতর করার জন্য নির্মিত দুটি বক্সকালভার্ট (সেতু) কোন কাজে আসছে না, কালভার্টের উভয় পাশের সড়ক নির্মাণ কাজ ঝুঁলে যাওয়ার কারণে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র ও ভুক্তভোগী কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ও বাউশিয়া ইউনিয়নের মধ্যে অভ্যন্তরীণ গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগের উন্নয়ন পাশাপাশি অবস্হিত দুটি ইউনিয়নের মধ্য সংযোগ স্হাপন ও যোগাযোগ সহজতর করতে, আনুমানিক ৩ কিলোমিটার মাটির সড়ক ও দুটি বক্সকালভার্ট নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহন করেছিল সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
সড়কটি নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার ৩ বছর অতিবাহিত হলেও শুধুমাত্র কালভার্ট নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে দায়িত্ব প্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠাণের খামখেয়ালীপনার কারণে শুরু করা যায়নি ৩ কিলোমিটার সড়ক ও বক্স কালভার্টের সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ।
ফলে কচুরিপানা ভর্তি খালের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে অব্যবহৃত কালভার্ট দুটি।
যার প্রেক্ষিতে আড়াই কোটি টাকার প্রকল্পটি থেকে নূন্যতম সুফল পাচ্ছেন না স্থানীয়রা।
গজারিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা যায়,দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের তত্বাবধানে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে বাউশিয়া ইউনিয়নের বিসিকের(এপিআই) ঔষধ শিল্প পল্লী হতে লক্ষ্মীপুর গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের ও তদসংলগ্ন দুইটি বক্স কালভার্ট নির্মাণের কার্যাদেশ পেয়েছিল মেসার্স আমান ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারিত ছিল ২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। দুটি কালভার্ট নির্মানসহ অনুসাঙ্গিক কিছু কাজ মিলিয়ে আনুমানিক ৪০ শতাংশ কাজ করার পর বাকি কাজ ফেলে চলে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। তবে প্রকল্পটির বাস্তবায়য়নের সময়সীমা শেষ হওয়ার প্রায় তিন বছর অতিবাহিত হলেও সম্পন্ন করা হয়নি প্রকল্পের সম্পূর্ণ কাজ।
গতকাল সোমবার সরেজমিন প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাটির ভাঙ্গা গর্ত যুক্ত এবরো থেবরো সড়কের দুটি স্হানে কচুরিপানা ভর্তি খালের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে বক্স কালভার্ট।
স্থানীয়রা জানান, গত আমন মৌসুমে ধান শুকানোর কাজে কালভার্টটি ব্যবহার করেছেন তারা।
দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় দুটি কালভার্টই ব্যবহার করতে পারেন না স্থানীয়রা। কালভার্টের নির্মাণের দীর্ঘ সময় পার হলেও সেটি ব্যবহার করতে না পারায় সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছে বলে মনে করেন এলাকার ভুক্তভোগীরা ।
এ সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা জানান, উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নের সঙ্গে ভবেরচর ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগে সংযুক্ত করার জন্য রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্ত অর্ধেক কাজ না করে ঠিকাদার উধাও হয়ে যাওয়ায় নির্মাণাধীন সড়ক ও কালভার্টটি মানুষের উপকারে না এসে বরং তাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা মজিবুর রহমান বলেন, ‘নির্মিতব্য রাস্তাটির দু’পাশে রয়েছে দুই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের কয়েক’শো কৃষকের কয়েকে’শো একর ফসলি জমি। রাস্তা নির্মাণের আগেই ভালো ছিল। তারা তাদের জমিতে উৎপাদিত ফসল সময় মত বিভিন্ন হাট বাজারে নিয়ে ন্যয্য দামে বিক্রি করতে পারতো। জমিতে হালচাষ করার জন্য ট্রাক্টর নিয়ে যেতে পারতো। এখন রাস্তা নির্মাণ ও কালভার্টের কাজ অসমাপ্ত থাকায় তাদের অনেক অসুবিধা হচ্ছে।
এবিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ফজলুল করিম বলেন, ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এন্ড এনহেন্সমেন্ট প্রকল্পের অধীনে বাউশিয়া এপিআই শিল্প পার্ক হতে লক্ষ্মীপুর গ্রাম পর্যন্ত মাটির রাস্তা নির্মাণ, দুইটি বক্স কালভার্ট এর দুই লিফট পর্যন্ত এবোটমেন্ট ওয়াল ঢালাই এবং প্ল্যাসাইডিং নির্মাণ কাজ চলমান অবস্থায়, কাজ বন্ধ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চলে গেছে।
তিনি আরো জানান, গত সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প প্রতিষ্ঠাণের একটি পরামর্শক দল (কনসালটেন্সি ইউনিট) প্রকল্প এলাকা সরজমিন পরিদর্শন করেছেন, প্রকল্পের মেয়াদবৃদ্ধি সাপেক্ষা বাকী কাজ সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সার্বিক বিষয়ে মন্তব্য জানতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী কর্তৃপক্ষের কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।