alt

শেরপুরের গারো পাহাড়ে তিন দশক ধরে চলছে হাতি-মানুষের সংঘাত

প্রতিনিধি, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) : মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

ঝিনাইগাতী (শেরপুর) : লোকালয়ে বুনো হাতি -সংবাদ

শেরপুর সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়জুড়ে আবারও দেখা দিয়েছে বন্য হাতির তাণ্ডব। ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষা ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় প্রতিনিয়ত নেমে আসছে বন্য হাতির দল। পাকা ও কাঁচা আমন ধানসহ বিভিন্ন ফসল খেয়ে ও পায়ে পিষে ধ্বংস করছে হাতির দল। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন সীমান্তের কৃষকরা। কৃষকরা মশাল জ্বালিয়ে, ঢাক-ঢোল পিটিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করলেও কোনোভাবেই ফসল রক্ষা করতে পারছেন না। প্রতিদিনই কোনো না কোনো এলাকায় হাতির তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শতাধিক কৃষকের ক্ষেত। অনেকেই চাষাবাদ ছেড়ে দিয়েছে।

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৫ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত গত ৩০ বছরে শেরপুরের গারো পাহাড় এলাকায় বন্য হাতির আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৫৮ জন মানুষ, আহত হয়েছেন পাঁচ শতাধিক। পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন শতাধিক গ্রামীণ মানুষ। এ সময়ের মধ্যে মারা গেছে ৩২টি হাতিও।

বন্য হাতির আক্রমণে কেউ নিহত হলে বন বিভাগ ৩ লাখ, আহত হলে ১ লাখ এবং ফসল নষ্ট হলে ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়। তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বলছে, এই ক্ষতিপূরণ বাস্তব ক্ষতির তুলনায় নগণ্য। প্রতি বছরই কোটি কোটি টাকার ফসল নষ্ট হচ্ছে হাতির তাণ্ডবে। স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, একটি পূর্ণবয়স্ক হাতির দৈনিক প্রায় ২০০ কেজি খাবার প্রয়োজন। পাহাড়ে এখন আগের মতো ফলমূল, কলাগাছ, বাঁশঝাড় বা লতাগুল্ম নেই। ফলে খাদ্যের সন্ধানে হাতির দল লোকালয়ে নেমে আসছে, খাচ্ছে ধান, কাঁঠাল, কলা- যা পায়।

আশির দশক থেকে নির্বিচারে বৃক্ষনিধন, পাহাড় কাটা ও বসতি স্থাপনের কারণে হাতির প্রাকৃতিক আবাসস্থল ধ্বংস হয়েছে। একসময় ঘন জঙ্গলে পরিপূর্ণ পাহাড় এখন কৃষিজমি ও বসতিতে পরিণত হয়েছে। ফলে হাতিদের চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে গেছে, এবং তাদের লোকালয়ে প্রবেশ এখন নিয়মিত ঘটনা।

হাতির তাণ্ডব ঠেকাতে বন বিভাগ ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ঝিনাইগাতীর তাওয়াকুচা থেকে ছোট গজনী পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সোলার ফেন্সিং স্থাপন করেছিল। এছাড়া হাতির খাদ্যের বাগান তৈরির উদ্যোগও নেওয়া হয়। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই সোলার ফেন্সিং অকার্যকর হয়ে পড়ে এবং খাদ্যের বাগানও বিলুপ্ত হয়। ফলে উদ্যোগগুলো কোনো ফল দেয়নি।

ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, “সরকার গারো পাহাড় এলাকায় হাতি চলাচলের জন্য অভয়াশ্রম স্থাপনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এতে হাতির উপদ্রব কিছুটা কমবে বলে আশা করছি। তবে মানুষ ও হাতি দুই পক্ষেরই জীবন রক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

ছবি

গোবিন্দগঞ্জে শীতের সবজি কমতে শুরু করেছে দাম

ছবি

দশমিনায় বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য কাচারি ঘর

ছবি

টেকনাফে পাচারের উদ্দেশ্যে অপহৃত ২২ জনকে উদ্ধার

ছবি

কক্সবাজার শহর থেকে সেন্টমার্টিন যাবে পর্যটকবাহী জাহাজ

ছবি

দুদকের মামলায় খালাস পেলেন এলডিপি মহাসচিব ড. রেদোয়ান

ছবি

পদ্মায় ধরা পরলো ৩১ কেজির দুই বাঘাআইড়, ৩৮ হাজারে বিক্রি

ছবি

আবারও নৌকাসহ ৪ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

ছবি

কুষ্টিয়ায় নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম তদন্তে দুদক ও স্বাস্থ্য বিভাগ

ছবি

হবিগঞ্জে বাবার দায়ের কোপে মেয়ে নিহত

ছবি

বাগেরহাটে যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে র‌্যালি

ছবি

সায়মা মৃত্যুর বিচার দাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ

ছবি

চুয়াডাঙ্গা দর্শনা রেল বন্দরে হাহাকার শ্রমিকদের চোখে অনিশ্চয়তার ছায়া

ছবি

মোল্লাহাটে চায়না দুয়ারী জাল জব্দ, পুড়িয়ে ধ্বংস

ছবি

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য সেবার বেহাল অবস্থা চিকিৎসা বঞ্চিত ৮ লাখাধিক মানুষ

ছবি

সাপাহারে পুনর্ভবা নদী থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার

ছবি

মধুপুরে কোমলমতি শিশুদের জন্য পানীয় জলের ব্যবস্থা

ছবি

রাজশাহীতে ভারতীয় মদ ও পাতার বিড়ি জব্দ

ছবি

যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর যাবজ্জীবন

ছবি

বেগমগঞ্জে পলাতক আসামী কসাই জাহাঙ্গীর গ্রেপ্তার

ছবি

মাছ পরিবহন করা পিক-আপের পানিতে সড়কের বেহাল অবস্থা

ছবি

ভালুকায় আমন খেত বাঁচাতে কীটনাশক দোকানে কৃষকের ভীড়

ছবি

সুন্দরগঞ্জে কাঠের ব্রীজ ভেঙে ২০ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ

ছবি

কাঠালিয়ায় বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

ছবি

দুবলারচরে প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য অপসারণে অভিযান

ছবি

নোয়াখালীতে মাদ্রারাসার ছাত্রকে হত্যা

ছবি

সুন্দরগঞ্জে কৃষক পেল বীজ ও সার

ছবি

লৌহজংয়ে লোকালয়ে কুমির আতঙ্ক

ছবি

বেনাপোলে মানসিক ভারসম্যহীন ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

ছবি

যশোর হাসপাতালে ফিজিওথেরাপি বাণিজ্য, ধরা পড়লো চারকর্মী

ছবি

দিনাজপুরে শীতের আমেজ

ছবি

সুন্দরবনে শিকারির ফাঁদে আটক চিত্রা হরিণ উদ্ধার

ছবি

ডিমলায় ভিডাব্লিউবির চাল দুর্গন্ধযুক্ত ও নিম্নমানের, তদন্ত টিম গঠন

ছবি

চান্দিনায় ৪ কোটি টাকার স্বর্ণ নিয়ে উধাও ব্যবসায়ী

ছবি

চলাচলে অনুপযোগী সমেতপুর গ্রামের রাস্তা, ভোগান্তি চরমে

ছবি

গাজীপুরে খতিব মহিবুল্লাহ মিয়াজি অপহরণ: ভিন্ন তথ্য পেয়েছে পুলিশ

ছবি

সাটুরিয়ায় নিখোঁজের একদিন পর নদী থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার

tab

শেরপুরের গারো পাহাড়ে তিন দশক ধরে চলছে হাতি-মানুষের সংঘাত

প্রতিনিধি, ঝিনাইগাতী (শেরপুর)

ঝিনাইগাতী (শেরপুর) : লোকালয়ে বুনো হাতি -সংবাদ

মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

শেরপুর সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়জুড়ে আবারও দেখা দিয়েছে বন্য হাতির তাণ্ডব। ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষা ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় প্রতিনিয়ত নেমে আসছে বন্য হাতির দল। পাকা ও কাঁচা আমন ধানসহ বিভিন্ন ফসল খেয়ে ও পায়ে পিষে ধ্বংস করছে হাতির দল। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন সীমান্তের কৃষকরা। কৃষকরা মশাল জ্বালিয়ে, ঢাক-ঢোল পিটিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করলেও কোনোভাবেই ফসল রক্ষা করতে পারছেন না। প্রতিদিনই কোনো না কোনো এলাকায় হাতির তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শতাধিক কৃষকের ক্ষেত। অনেকেই চাষাবাদ ছেড়ে দিয়েছে।

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৫ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত গত ৩০ বছরে শেরপুরের গারো পাহাড় এলাকায় বন্য হাতির আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৫৮ জন মানুষ, আহত হয়েছেন পাঁচ শতাধিক। পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন শতাধিক গ্রামীণ মানুষ। এ সময়ের মধ্যে মারা গেছে ৩২টি হাতিও।

বন্য হাতির আক্রমণে কেউ নিহত হলে বন বিভাগ ৩ লাখ, আহত হলে ১ লাখ এবং ফসল নষ্ট হলে ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়। তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বলছে, এই ক্ষতিপূরণ বাস্তব ক্ষতির তুলনায় নগণ্য। প্রতি বছরই কোটি কোটি টাকার ফসল নষ্ট হচ্ছে হাতির তাণ্ডবে। স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, একটি পূর্ণবয়স্ক হাতির দৈনিক প্রায় ২০০ কেজি খাবার প্রয়োজন। পাহাড়ে এখন আগের মতো ফলমূল, কলাগাছ, বাঁশঝাড় বা লতাগুল্ম নেই। ফলে খাদ্যের সন্ধানে হাতির দল লোকালয়ে নেমে আসছে, খাচ্ছে ধান, কাঁঠাল, কলা- যা পায়।

আশির দশক থেকে নির্বিচারে বৃক্ষনিধন, পাহাড় কাটা ও বসতি স্থাপনের কারণে হাতির প্রাকৃতিক আবাসস্থল ধ্বংস হয়েছে। একসময় ঘন জঙ্গলে পরিপূর্ণ পাহাড় এখন কৃষিজমি ও বসতিতে পরিণত হয়েছে। ফলে হাতিদের চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে গেছে, এবং তাদের লোকালয়ে প্রবেশ এখন নিয়মিত ঘটনা।

হাতির তাণ্ডব ঠেকাতে বন বিভাগ ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ঝিনাইগাতীর তাওয়াকুচা থেকে ছোট গজনী পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সোলার ফেন্সিং স্থাপন করেছিল। এছাড়া হাতির খাদ্যের বাগান তৈরির উদ্যোগও নেওয়া হয়। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই সোলার ফেন্সিং অকার্যকর হয়ে পড়ে এবং খাদ্যের বাগানও বিলুপ্ত হয়। ফলে উদ্যোগগুলো কোনো ফল দেয়নি।

ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, “সরকার গারো পাহাড় এলাকায় হাতি চলাচলের জন্য অভয়াশ্রম স্থাপনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এতে হাতির উপদ্রব কিছুটা কমবে বলে আশা করছি। তবে মানুষ ও হাতি দুই পক্ষেরই জীবন রক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

back to top