ভালুকার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে মাঠে আমন ক্ষেতে নানা রোগ বালাই ও পোকা মাকড়ের আক্রমন দেখা দেওয়ায় দিশেহারা কৃষক ছুটছেন কীটনাশক বিক্রেতাদের দোকানে। কৃষকরা ধানক্ষেতের রোগের বিবরণ বলে বিক্রেতাদের পরামর্শে দোকান থেকে ঔষধ নিয়ে আক্রান্ত ক্ষেতে প্রয়োগ করছেন। যারা সময়মত বালাই নাশক কিংবা কীটনাশক প্রয়োগ করেছেন তাদের ফসল রক্ষা পেলেও অনেকের ধান নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানাগেছে। অধিকাংশ কৃষকরা অভিযেগ করেন কৃষি বিভাগের লোকজন এলাকায় না আসায় তারা অপারগ হয়ে ফসল বাঁচাতে স্থানীয় সার ডিলার ও কীটনাশক ডিলারদের স্বরনাপন্য হয়ে থাকেন বলে জানান।
ভালুকার মল্লিকবাড়ী ইউনিয়নের নয়নপুর গ্রামের কৃষক মাসুদ মিয়ার ২৭ শতাংশ জমির আমন ধান ব্লাষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে বেশিরভাগ ক্ষেতের ধান মরে চিটা হয়ে গেছে। একই এলাকার কৃষক সোহেল মিয়ার ৪০ শতাংশ জমিতে ব্লাষ্ট রোগে আমন ধান মরে চিটা হয়ে গেছে বলে জানাগেছে। অপরদিকে মল্লিকবাড়ী এলাকার রাকীব হাসানের আমন ক্ষেতে পাতা লাল ও হলুদ হয়ে ধান নষ্ট সহ অনেকের আমন ক্ষেতে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে বলে কৃষকরা জানিয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে সরজমিন ওই গ্রামে গেলে মল্লিকবাড়ী বাজারে একটি সার কীটনাশক দোকানে চিটা ধানের গোছা হাতে বালাইনাশক কিনতে ব্যস্ত কৃষক মাসুদ মিয়া। তিনি জানান তার ২৭ শতক জমিতে ব্রি-ধান ৮৭ জাতের আমন আবাদ করেছেন। ক্ষেতে ধানের ছড়া বের হওয়ার কিছুদিন পর লক্ষ করেন ধান মরে চাল বিহিন চিটা হয়ে যাচ্ছে সমস্ত ক্ষেত জুরে। তিনি দিশেহারা হয়ে ক্ষেত থেকে মরা ধানের শিষ নিয়ে মল্লিকবাড়ী বাজারে কীটনাশক দোকানে এসে দেখালে দোকানী তাকে টুপার পাউডার ও এসাটাপ দেন আক্রান্ত ক্ষেতে ব্যবহারের জন্য। ২৭ শতক জমিতে ব্রিধান-৮৭ জাতের আবাদ করতে ক্ষেত চাষ,বীজ ও চারা রোপন, সেচ,সার, কীটনাশক সহ তার প্রায় ১০ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে। প্রথম দিকে ভাল থাকলেও ধানের থোরবের হওয়ার পর ক্ষেতে ধানের শিষ মরে চিটা হতে শুরু করে। যে পরিমান ধান গাছ নষ্ট হয়েছে তাতে তিনি তিন ভাগের এক ভাগ ফসলও পাবেননা। তবে অন্য আর একটি ক্ষেতে ১৭ শতাংশ জমিতে সময়মত এই দোকান থেকে টুপার পাউডার ও এসাটাপ নিয়ে স্প্রে করে দেয়ায় ওই ধান ভাল হয়েছে। কীটনাশক ডিলার রফিক মিয়া জানান চলতি আমন মৌসুমে আমন ক্ষেতে ব্লাষ্ট,বি এল বি ও কারেন্ট পোকার প্রাদুর্ভাব কোন কোন এলাকায় দেখা দিয়েছে। খোজ নিয়ে জানাগেছে উপজেলার বাটাজোর, কাচিনা, মল্লিকবাড়ী, নয়নপুর, পাঁচগাঁও, উথুরা, আঙ্গারগাড়া সহ কোন কোন এলাকায় আমন ক্ষেতে বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে চলতি মৌসুমে আমনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ৯০০ হেক্টর জমি। কৃষকদের অধিক ফলনশীল আগামজাত স্বল্প জীবনকাল সমৃদ্ধ যেমন ব্রী-ধান ৭১, ব্রী-ধান ৮৭, বীনা ধান ৭ চাষে উদ্বুদ্ধ করন ও লাইন লগু পার্চিং (এল এল পি) পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপনের প্রযুক্তিগত বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হয়। স্বল্প জীবনকাল সমৃদ্ধ আমন ধান চাষ করলে ওই জমিতে ধান কাটার পর সরিষার আবাদ করা যায়। সরিষা উঠিয়ে ওই জমিতে আবার বোরো ধানের আবাদ করা যায়। এতে অধিক ফসল উৎপাদন সম্ভব হয়।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
ভালুকার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে মাঠে আমন ক্ষেতে নানা রোগ বালাই ও পোকা মাকড়ের আক্রমন দেখা দেওয়ায় দিশেহারা কৃষক ছুটছেন কীটনাশক বিক্রেতাদের দোকানে। কৃষকরা ধানক্ষেতের রোগের বিবরণ বলে বিক্রেতাদের পরামর্শে দোকান থেকে ঔষধ নিয়ে আক্রান্ত ক্ষেতে প্রয়োগ করছেন। যারা সময়মত বালাই নাশক কিংবা কীটনাশক প্রয়োগ করেছেন তাদের ফসল রক্ষা পেলেও অনেকের ধান নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানাগেছে। অধিকাংশ কৃষকরা অভিযেগ করেন কৃষি বিভাগের লোকজন এলাকায় না আসায় তারা অপারগ হয়ে ফসল বাঁচাতে স্থানীয় সার ডিলার ও কীটনাশক ডিলারদের স্বরনাপন্য হয়ে থাকেন বলে জানান।
ভালুকার মল্লিকবাড়ী ইউনিয়নের নয়নপুর গ্রামের কৃষক মাসুদ মিয়ার ২৭ শতাংশ জমির আমন ধান ব্লাষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে বেশিরভাগ ক্ষেতের ধান মরে চিটা হয়ে গেছে। একই এলাকার কৃষক সোহেল মিয়ার ৪০ শতাংশ জমিতে ব্লাষ্ট রোগে আমন ধান মরে চিটা হয়ে গেছে বলে জানাগেছে। অপরদিকে মল্লিকবাড়ী এলাকার রাকীব হাসানের আমন ক্ষেতে পাতা লাল ও হলুদ হয়ে ধান নষ্ট সহ অনেকের আমন ক্ষেতে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে বলে কৃষকরা জানিয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে সরজমিন ওই গ্রামে গেলে মল্লিকবাড়ী বাজারে একটি সার কীটনাশক দোকানে চিটা ধানের গোছা হাতে বালাইনাশক কিনতে ব্যস্ত কৃষক মাসুদ মিয়া। তিনি জানান তার ২৭ শতক জমিতে ব্রি-ধান ৮৭ জাতের আমন আবাদ করেছেন। ক্ষেতে ধানের ছড়া বের হওয়ার কিছুদিন পর লক্ষ করেন ধান মরে চাল বিহিন চিটা হয়ে যাচ্ছে সমস্ত ক্ষেত জুরে। তিনি দিশেহারা হয়ে ক্ষেত থেকে মরা ধানের শিষ নিয়ে মল্লিকবাড়ী বাজারে কীটনাশক দোকানে এসে দেখালে দোকানী তাকে টুপার পাউডার ও এসাটাপ দেন আক্রান্ত ক্ষেতে ব্যবহারের জন্য। ২৭ শতক জমিতে ব্রিধান-৮৭ জাতের আবাদ করতে ক্ষেত চাষ,বীজ ও চারা রোপন, সেচ,সার, কীটনাশক সহ তার প্রায় ১০ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে। প্রথম দিকে ভাল থাকলেও ধানের থোরবের হওয়ার পর ক্ষেতে ধানের শিষ মরে চিটা হতে শুরু করে। যে পরিমান ধান গাছ নষ্ট হয়েছে তাতে তিনি তিন ভাগের এক ভাগ ফসলও পাবেননা। তবে অন্য আর একটি ক্ষেতে ১৭ শতাংশ জমিতে সময়মত এই দোকান থেকে টুপার পাউডার ও এসাটাপ নিয়ে স্প্রে করে দেয়ায় ওই ধান ভাল হয়েছে। কীটনাশক ডিলার রফিক মিয়া জানান চলতি আমন মৌসুমে আমন ক্ষেতে ব্লাষ্ট,বি এল বি ও কারেন্ট পোকার প্রাদুর্ভাব কোন কোন এলাকায় দেখা দিয়েছে। খোজ নিয়ে জানাগেছে উপজেলার বাটাজোর, কাচিনা, মল্লিকবাড়ী, নয়নপুর, পাঁচগাঁও, উথুরা, আঙ্গারগাড়া সহ কোন কোন এলাকায় আমন ক্ষেতে বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে চলতি মৌসুমে আমনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ৯০০ হেক্টর জমি। কৃষকদের অধিক ফলনশীল আগামজাত স্বল্প জীবনকাল সমৃদ্ধ যেমন ব্রী-ধান ৭১, ব্রী-ধান ৮৭, বীনা ধান ৭ চাষে উদ্বুদ্ধ করন ও লাইন লগু পার্চিং (এল এল পি) পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপনের প্রযুক্তিগত বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হয়। স্বল্প জীবনকাল সমৃদ্ধ আমন ধান চাষ করলে ওই জমিতে ধান কাটার পর সরিষার আবাদ করা যায়। সরিষা উঠিয়ে ওই জমিতে আবার বোরো ধানের আবাদ করা যায়। এতে অধিক ফসল উৎপাদন সম্ভব হয়।