সংঘবদ্ধ চোর চক্র গত ৬ মাসে নাটোরের লালপুরে সেচ প্রকল্পে ব্যবহৃত গভীর নলকূপের ৩০টি ট্রান্সফরমার চুরি করেছে, আর সেচের মাধ্যমে চাষাবাদের প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে ক্ষতি পূরণের অর্থ জমা দিয়ে কৃষকদের পুনরায় নিতে হচ্ছে নতুন ট্রান্সফরমার। বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি, পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির ঘটনায় গ্রাহকদের মধ্যে এখন বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ), বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি), লালপুর থানা ও পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ছয় মাসে কৃষকের সেচ কাজে ব্যবহৃত প্রায় ৩০টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে যার বাজার মূল্য প্রায় ২১ লাখ টাকা। এতে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা। চুরি ঠেকানো না গেলে আগামী মৌসুমের ফসল উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
উপজেলার কেশববাড়িয়া গ্রামের সাইদুর রহমান (৫৫) বলেন, বিএমডিএ সেচ প্রকল্পের আওতায় আমি একটি গভীর নলকূপ চালায়। চারদিকে ট্রান্সফরমার চুরির খবরে পাহারা বসিয়েছিলাম। তবুও শেষ রক্ষা হয় নি। গত শনিবার রাতে বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে ৩টি ট্রান্সফরমার খুলে নিয়ে গেছে চোরচক্র। এর আগে গত ২৪শে অক্টোবর রামকৃষ্ণপুর থেকে গোলাম আযম (৫২), ১০ই অক্টোবর ঢুষপাড়া থেকে আবু বকর সিদ্দিক পলাশ (৫৫), ৭ই সেপ্টেম্বর রামানন্দপুর থেকে শফিউল্লাহ (৬২) ও ছোট বিলশলিয়া গ্রামের রাকিব উদ্দিনের (৪৫) গভীর নলকূপে ব্যবহৃত ট্রান্সফরমার চুরি করা হয়েছে। এছাড়া গত জুলাই থেকে আগস্ট মাসে ৯টি ট্রান্সফরমার চুরির তথ্য পাওয়া গেছে। চুরির এসব ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে উধনপাড়া গ্রামের আনিসুর রহমান (৪৪) বলেন, আমি বিএডিসি’র একটি গভীর নলকূপ পরিচালনা করি। কিন্তু চারদিকে ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেছে।
গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন, পল্লী বিদ্যুতের নিজস্ব ট্রান্সফরমারগুলো সাধারণত চুরি হয় না। অথচ সেচ প্রকল্পে ব্যবহৃত ব্যক্তি মালিকানাধীন ট্রান্সফরমারগুলো চুরি করা হচ্ছে। এক্সপার্ট ছাড়া এ সকল ট্রান্সফরমার চুরি করা সম্ভব নয়। চোর সিন্ডিকেটের সঙ্গে পল্লী বিদ্যুৎ ও প্রশাসনের যোগসাজশ থাকতে পারে।
অভিযোগ অস্বীকার করে নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ লালপুর জোনাল অফিসের উপ মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. রেজাউল করিম বলেন, একটি সংঘবদ্ধ চক্র এ কাজগুলো করছে। বিষয়টি র্ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএমডিএ বড়াইগ্রাম জোনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আবুল বাশার বলেন, আমরা সবসময় কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করার চেষ্টা করি। তবে নিয়ম অনুযায়ী ট্রান্সফরমারগুলো গ্রাহকদের নিজ দায়িত্বে সংরক্ষণ করতে হবে।
লালপুর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় কয়েকটি সাধারণ ডায়েরি পাওয়া গেছে। চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধার ও চোর চক্রকে গ্রেপ্তারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫
সংঘবদ্ধ চোর চক্র গত ৬ মাসে নাটোরের লালপুরে সেচ প্রকল্পে ব্যবহৃত গভীর নলকূপের ৩০টি ট্রান্সফরমার চুরি করেছে, আর সেচের মাধ্যমে চাষাবাদের প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে ক্ষতি পূরণের অর্থ জমা দিয়ে কৃষকদের পুনরায় নিতে হচ্ছে নতুন ট্রান্সফরমার। বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি, পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির ঘটনায় গ্রাহকদের মধ্যে এখন বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ), বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি), লালপুর থানা ও পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ছয় মাসে কৃষকের সেচ কাজে ব্যবহৃত প্রায় ৩০টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে যার বাজার মূল্য প্রায় ২১ লাখ টাকা। এতে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা। চুরি ঠেকানো না গেলে আগামী মৌসুমের ফসল উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
উপজেলার কেশববাড়িয়া গ্রামের সাইদুর রহমান (৫৫) বলেন, বিএমডিএ সেচ প্রকল্পের আওতায় আমি একটি গভীর নলকূপ চালায়। চারদিকে ট্রান্সফরমার চুরির খবরে পাহারা বসিয়েছিলাম। তবুও শেষ রক্ষা হয় নি। গত শনিবার রাতে বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে ৩টি ট্রান্সফরমার খুলে নিয়ে গেছে চোরচক্র। এর আগে গত ২৪শে অক্টোবর রামকৃষ্ণপুর থেকে গোলাম আযম (৫২), ১০ই অক্টোবর ঢুষপাড়া থেকে আবু বকর সিদ্দিক পলাশ (৫৫), ৭ই সেপ্টেম্বর রামানন্দপুর থেকে শফিউল্লাহ (৬২) ও ছোট বিলশলিয়া গ্রামের রাকিব উদ্দিনের (৪৫) গভীর নলকূপে ব্যবহৃত ট্রান্সফরমার চুরি করা হয়েছে। এছাড়া গত জুলাই থেকে আগস্ট মাসে ৯টি ট্রান্সফরমার চুরির তথ্য পাওয়া গেছে। চুরির এসব ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে উধনপাড়া গ্রামের আনিসুর রহমান (৪৪) বলেন, আমি বিএডিসি’র একটি গভীর নলকূপ পরিচালনা করি। কিন্তু চারদিকে ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা ঘটেছে।
গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন, পল্লী বিদ্যুতের নিজস্ব ট্রান্সফরমারগুলো সাধারণত চুরি হয় না। অথচ সেচ প্রকল্পে ব্যবহৃত ব্যক্তি মালিকানাধীন ট্রান্সফরমারগুলো চুরি করা হচ্ছে। এক্সপার্ট ছাড়া এ সকল ট্রান্সফরমার চুরি করা সম্ভব নয়। চোর সিন্ডিকেটের সঙ্গে পল্লী বিদ্যুৎ ও প্রশাসনের যোগসাজশ থাকতে পারে।
অভিযোগ অস্বীকার করে নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ লালপুর জোনাল অফিসের উপ মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. রেজাউল করিম বলেন, একটি সংঘবদ্ধ চক্র এ কাজগুলো করছে। বিষয়টি র্ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএমডিএ বড়াইগ্রাম জোনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আবুল বাশার বলেন, আমরা সবসময় কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করার চেষ্টা করি। তবে নিয়ম অনুযায়ী ট্রান্সফরমারগুলো গ্রাহকদের নিজ দায়িত্বে সংরক্ষণ করতে হবে।
লালপুর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় কয়েকটি সাধারণ ডায়েরি পাওয়া গেছে। চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধার ও চোর চক্রকে গ্রেপ্তারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।