খুলনার দাকোপ উপজেলার লাউডোব খালের ওপর সেতু নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ২০২১ সালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্স লিমিটেড সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুর দুটি পিলার নির্মাণ হয়েছে। বাকি কাজ রেখেই চলে গেছেন ঠিকাদার। এছাড়া একই বছর কয়রা উপজেলার মদিনাবাদ মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মোড় থেকে কয়রা লঞ্চঘাট সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হয়। তবে সড়ক খোঁড়ার পর ইটের খোয়া ফেলে তিন বছরের বেশি সময় ধরে লাপাত্তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে প্রায় চার বছর ধরে বন্ধ রয়েছে উন্নয়ন প্রকল্প দুটির কাজ।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে দাকোপ উপজেলার বানিশান্তা ও লাউডোব ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী লাউডোব খালের ওপর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বানিশান্তা ইউনিয়ন পরিষদ ও বাজার সড়কে ৩০ মিটার দৈর্ঘ্য আরসিসি গার্ডার সেতুটির নির্মাণ কাজ পায় মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্স লিমিটেড। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজ শুরু করে ২০২১ সালের ২০ এপ্রিল। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তবে নির্মাণ কাজ শেষ না করেই চলে গেছেন ঠিকাদার।
লাউডোব ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিহার ম-ল বলেন, ‘সেতু নির্মাণ কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। দ্রুত কাজটি সম্পন্ন করতে উপজেলা প্রকৌশলীকে অনুরোধ করেছি। কিন্তু কাজ হয়নি।’
এ ব্যাপারে দাকোপ উপজেলা প্রকৌশলী এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘নির্মাণ কাজ শেষ না করায় আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের ব্যবস্থা নিয়েছি।’
অন্যদিকে কয়রা সদরের মদিনাবাদ মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মোড় থেকে কয়রা লঞ্চঘাট অভিমুখে সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে। তবে সড়ক খোঁড়ার পর ইটের খোয়া ফেলে তিন বছরের বেশি সময় ধরে লাপাত্তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় আড়াই কিলোমিটার। ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে সড়কটিতে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। এ পরিস্থিতিতে সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। খানাখন্দ সংস্কার করে সড়কটি নতুন করে কার্পেটিং করার জন্য বরাদ্দ হয় ১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। কাজটি পায় মেসার্স রাকা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালের ডিসেম্বরের প্রথমদিকে তারা কাজ শুরু করে। কয়েকমাস ধরে সড়ক খুঁড়ে ইটের খোয়া ফেলার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন কাজ ফেলে চলে যান। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। অথচ সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার পর আরও তিন বছর পেরিয়ে গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় সড়কের খোঁয়া সরে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যানবাহন চলছে ঝুঁকি নিয়ে। কাজ ফেলে রাখায় বর্ষার সময় চলতে যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হয়, তেমনি শুকনো মৌসুমেও ধুলায় চলাচল বেশ কষ্টকর।
এ প্রসঙ্গে কয়রা উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবুল ফজেল বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে সড়কের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদারের কোনো খোঁজ নেই। মোবাইল ফোনেও যোগাযোগের চেষ্টা করে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এ পরিস্থিতিতে গত অর্থবছরে সড়কটি নির্মাণে পুনরায় দরপত্র আহ্বানের জন্য পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু অনুমোদন না হওয়ায় এই অর্থবছরে আবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
খুলনার দাকোপ উপজেলার লাউডোব খালের ওপর সেতু নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ২০২১ সালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্স লিমিটেড সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুর দুটি পিলার নির্মাণ হয়েছে। বাকি কাজ রেখেই চলে গেছেন ঠিকাদার। এছাড়া একই বছর কয়রা উপজেলার মদিনাবাদ মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মোড় থেকে কয়রা লঞ্চঘাট সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হয়। তবে সড়ক খোঁড়ার পর ইটের খোয়া ফেলে তিন বছরের বেশি সময় ধরে লাপাত্তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে প্রায় চার বছর ধরে বন্ধ রয়েছে উন্নয়ন প্রকল্প দুটির কাজ।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে দাকোপ উপজেলার বানিশান্তা ও লাউডোব ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী লাউডোব খালের ওপর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বানিশান্তা ইউনিয়ন পরিষদ ও বাজার সড়কে ৩০ মিটার দৈর্ঘ্য আরসিসি গার্ডার সেতুটির নির্মাণ কাজ পায় মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্স লিমিটেড। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজ শুরু করে ২০২১ সালের ২০ এপ্রিল। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তবে নির্মাণ কাজ শেষ না করেই চলে গেছেন ঠিকাদার।
লাউডোব ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিহার ম-ল বলেন, ‘সেতু নির্মাণ কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। দ্রুত কাজটি সম্পন্ন করতে উপজেলা প্রকৌশলীকে অনুরোধ করেছি। কিন্তু কাজ হয়নি।’
এ ব্যাপারে দাকোপ উপজেলা প্রকৌশলী এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘নির্মাণ কাজ শেষ না করায় আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের ব্যবস্থা নিয়েছি।’
অন্যদিকে কয়রা সদরের মদিনাবাদ মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মোড় থেকে কয়রা লঞ্চঘাট অভিমুখে সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে। তবে সড়ক খোঁড়ার পর ইটের খোয়া ফেলে তিন বছরের বেশি সময় ধরে লাপাত্তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় আড়াই কিলোমিটার। ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে সড়কটিতে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। এ পরিস্থিতিতে সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। খানাখন্দ সংস্কার করে সড়কটি নতুন করে কার্পেটিং করার জন্য বরাদ্দ হয় ১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। কাজটি পায় মেসার্স রাকা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালের ডিসেম্বরের প্রথমদিকে তারা কাজ শুরু করে। কয়েকমাস ধরে সড়ক খুঁড়ে ইটের খোয়া ফেলার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন কাজ ফেলে চলে যান। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। অথচ সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার পর আরও তিন বছর পেরিয়ে গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় সড়কের খোঁয়া সরে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যানবাহন চলছে ঝুঁকি নিয়ে। কাজ ফেলে রাখায় বর্ষার সময় চলতে যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হয়, তেমনি শুকনো মৌসুমেও ধুলায় চলাচল বেশ কষ্টকর।
এ প্রসঙ্গে কয়রা উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবুল ফজেল বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে সড়কের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদারের কোনো খোঁজ নেই। মোবাইল ফোনেও যোগাযোগের চেষ্টা করে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এ পরিস্থিতিতে গত অর্থবছরে সড়কটি নির্মাণে পুনরায় দরপত্র আহ্বানের জন্য পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু অনুমোদন না হওয়ায় এই অর্থবছরে আবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’