alt

বেক্সিমকো টেক্সটাইল সচল করছে রিভাইভাল

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : রোববার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

অর্থ সংকটে বন্ধ হয়ে যাওয়া বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানি ‘বেক্সিমকো টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল ডিভিশন’ (বেক্সটেক্স) লিজ নিয়ে পুনরায় চালু করতে যাচ্ছে জাপান-বাংলাদেশি ইথিক্যাল ফ্যাশন ও সাসটেইনেবিলিটি ভেঞ্চার রিভাইভাল গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড এবং রিভাইভাল প্রজেক্টস লিমিটেড।

এর ফলে ২৫ হাজারের বেশি শ্রমিক আবার কাজে ফেরার সুযোগ পাবেন জানিয়ে বেক্সিমকো গ্রুপের জনসংযোগের দায়িত্বে থাকা বেঞ্চমার্ক পিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, এ বিষয়টিককে “সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় কর্মসংস্থান পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।”

সেখানে বলা হয়, প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতিষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি ইকোমিলিও এ প্রকল্পে অর্থায়নে থাকছে। প্রথম ধাপে রিভাইভাল ও ইকোমিলি ২ কোটি ডলার ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি সহায়তা দেবে এবং প্রয়োজনে তা ১০ কোটি ডলার পর্যন্ত বাড়ানো হবে।

লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, আসছে ডিসেম্বর থেকে উৎপাদন শুরু হলে ২০২৭ সালের মধ্যে বছরে ৫০০ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন সম্ভব হবে বলে আশা করছে রিভাইভাল। এ বিষয়ে বেক্সিমকো টেক্সটাইলের পাওনাদার জনতা ব্যাংক, বেক্সটেক্স ও রিভাইভাল প্রজেক্টের মধ্যে চলতি মাসেই ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সই হওয়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এই চুক্তির প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতা করছে।

বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস-চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন। গত ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থ্যানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি গ্রেপ্তার হন।

এর পর থেকে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানিগুলোতে অস্থিরতা শুরু হয়। শ্রমিক অসন্তোষের মধ্যে বন্ধ রাখা হয় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৬ কারখানা। বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ৩২টি কারখানার নাম ঘোষণা থাকলেও বাস্তবে ১৬টির অস্তিত্ব পায় সরকারের তদন্ত কমিটি।

সরকারের তরফে বলা হয়, আওয়ামী লীগের আমলে অস্তিত্ব না থাকা ওই ১৬টি কোম্পানির নামে ১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছিল। আর সব মিলিয়ে ৩২ কোম্পানির নামে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া হয় ২৯ হাজার ৯২৫ কোটি টাকার ঋণ।

এসব ঋণ খেলাপী হয়ে ৩৫ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়ায়। এর মধ্যে জনতা ব্যাংকেরই ২৩ হাজার কোটি টাকা। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ‘অস্তিত্ব থাকা’ ১৬টির মধ্যে ১১টি বস্ত্র ও পোশাক খাতের কোম্পানি, যেগুলো লে-অফ ছিল গত জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপর সেগুলো আর খোলা হয়নি। এর মধ্যে সরকারের উদ্যোগে জাপানি কোম্পানি রিভাইভাল গত অগাস্টে বেক্সিমকো টেক্সটাইল লিজ নিয়ে সচল করতে রাজি হয়। বেক্সিমকো গ্রুপও সম্মতি জানিয়ে চিঠি দেয়।

সরকারের পক্ষে বিষয়টি সমন্বয় করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ ব্যাংক, পাওনাদার জনতা ব্যাংক এবং সরকার কয়েকটি সভা করে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা দেওয়ার পথ তৈরি করে।

রোববার বেঞ্চমার্ক পিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘একসময় দেশের টেক্সটাইল শিল্পের অন্যতম চালিকাশক্তি ছিল বেক্সিমকো টেক্সটাইল। তিন দশক সফলভাবে চলার পর ঋণসঙ্কটে পড়ে কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়। হঠাৎ বন্ধের কারণে হাজারো শ্রমিক চাকরি হারায়, কারখানা-নির্ভর ছোট ব্যবসা ধসে পড়ে এবং আশেপাশের এলাকার অর্থনীতি অস্থির হয়ে পড়ে। রিভাইভালের এই উদ্যোগ সেই বিপর্যয় থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর নতুন পথ তৈরি করছে; কারখানা আবার চালু হবে এবং কর্মীরা ফিরে পাবেন তাদের জীবিকার নিরাপত্তা।’

রিভাইভালের বরাত দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘তারা কারখানাটি পূর্ণাঙ্গভাবে পুনরায় চালু করবে, পুরোনো ব্যবস্থাপনা দলকে ফিরিয়ে আনবে এবং আগের সব কর্মীকে পুনর্বহাল করবে। কারখানার কার্যক্রমের শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে জাপান থেকে ‘অভিজ্ঞ’ শীর্ষ কর্মকর্তাদের আনা হবে। পাশাপাশি স্বচ্ছতা ও আন্তর্জাতিকমানের জবাবদিহির জন্য একটি আন্তর্জাতিক অডিট ফার্ম নিয়োগ করা হবে। কারখানা চালুর পাশাপাশি রিভাইভাল বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও ফ্যাশন খাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তন আনতে চায়। তারা বেক্সিমকোর আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সঙ্গে আবার সংযোগ স্থাপন করবে এবং নতুন বৈশ্বিক অংশীদারও যুক্ত করবে। শুধু কম খরচে পোশাক উৎপাদন নয়, বরং বাংলাদেশকে সৃজনশীলতা ও ব্র্যান্ড উদ্ভাবনের কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই তাদের লক্ষ্য।’

একসময়কার লাভজনক কোম্পানি বেক্সটেক্সের বড় ক্রেতাগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে জারা, মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার, টারগেট, আমেরিকান ঈগল, পুল অ্যান্ড বিয়ার ও বেস্ট সেলারের মত প্রতিষ্ঠান। কারখানা খুলে দেওয়ার পর পরিচালন খরচ বাদ দিলে প্রতি বছরে সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব বলে সে সময় তিনি হিসাব দিয়েছিলেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পুনরায় চালুর কাজ ইতোমধ্যে এগিয়ে গেছে। রিভাইভাল প্রজেক্টস লিমিটেড, বেক্সিমকো ও জনতা ব্যাংকের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির খসড়া গত ৮ অক্টোবর জমা দেওয়া হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার জনতা ব্যাংকের বোর্ড সভায় এটি পর্যালোচনা হবে এবং চলতি মাসেই চুক্তি সইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।’

রিভাইভাল ও ইকোমিলির শীর্ষ কর্মকর্তারা নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে ঢাকায় এসে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে জানানো হয়েছে সেখানে।

ছবি

ব্যাংক কোম্পানি অধ্যাদেশ সংশোধনের খসড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ে, ‘পরিবারতন্ত্রে’র লাগাম টানার উদ্যোগ

ছবি

শেয়ারবাজারে লেনদেন কমে দাঁড়ালো ২০০ কোটি টাকার ঘরে

ছবি

বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগসহ ৮ দাবিতে বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ

ছবি

পণ্য পরিবহন নীতিমালা দ্রুত বাস্তবায়ন চায় বিসিভিওএ-কোয়াব

ছবি

মিডল্যান্ড ব্যাংক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী হিসেবে সামির উদ্দিনের যোগদান

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের সেমিকন্ডাক্টর রোড শো অনুষ্ঠিত

ছবি

টানা পতনে ১৭ হাজার কোটি টাকা মূলধন হারালো শেয়ারবাজার

ছবি

এ বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম কমেছে ১৪ শতাংশ

ছবি

৫ হাজার কোটি টাকা চেয়ে ১ হাজার কোটি পাচ্ছে আইসিবি

ছবি

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান হলেন কায়সার আলম

ছবি

ক্লাইমেট রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সিটি ব্যাংক

ছবি

দুই মাস বন্ধ থাকার পর টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

ছবি

রিয়েলমি সি৮৫ প্রো’র সেল শুরু

ছবি

বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ, সরবরাহ বাড়ায় সবজির দাম কমেছে

ছবি

আইএমএফ থেকে পরের কিস্তি পাওয়ার আলোচনা হবে নতুন সরকারের সঙ্গে

ছবি

পাঁচ ব্যাংক নয়, সরকারের টাকা পাবে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’

ছবি

খেলাপি হার ২০ শতাংশ হলেও তহবিল পরিচালনায় যোগ্য হবে ব্যাংক

ছবি

এবার স্বর্ণের দাম ভরিতে বাড়লো ৫ হাজার টাকা

ছবি

সার ডিলার নিয়োগ ও বিতরণ নীতিমালা অনুমোদন

ছবি

ঠিকায় কাজ করা পোশাক কারখানাও প্রণোদনা পাবে

ছবি

রমজান-নির্বাচন উপলক্ষে পণ্যের সরবরাহ বাড়ানোর তাগিদ

ছবি

বাকিতে আমদানি করা যাবে রোজার পণ্য

ছবি

সুমিটোমো থার্ড টার্মিনালের অপারেশনস-মেইটেনেন্স কাজ করতে আগ্রহী জাপান

ছবি

চলমান গ্যাস সংকট কমাতে দীর্ঘ পরিকল্পনা পেট্রোবাংলার

ছবি

প্রথম প্রান্তিকে ওয়ালটনের মুনাফায় ৪৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি

ছবি

সয়াবিন তেল ও চিনি কিনছে সরকার

ছবি

১৬৪ টাকায় সয়াবিন তেল, ৯৪ টাকায় চিনি কিনবে সরকার

ছবি

ভারতে মূল্যস্ফীতি শূন্যের কাছাকাছি

ছবি

সিএমএসএমইর তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ল

ছবি

সরকারের জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ, অর্থবিভাগ-এর সাথে সর্বজনীন পেনশন স্কিমসমুহে রেজিস্ট্রেশন

ছবি

মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালা নিয়ে গেজেট, থাকছে না মেয়াদি ফান্ড

ছবি

মেট্রোরেল প্রকল্প বাতিল হয়নি, ব্যয় কমানোর চেষ্টা চলছে: ডিএমটিসিএল এমডি

ছবি

পাঁচ ব্যাংকের অব্যবস্থাপনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়ে চিঠি

ছবি

নতুন পে-স্কেলের ফ্রেমওয়ার্ক দিয়ে যাবে বর্তমান সরকার: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

চট্টগ্রামে লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল: ৩০ বছর চালাবে ডেনমার্কের কোম্পানি

ছবি

পাঁচ ব্যাংকের গ্রাহকদের আমানত নিয়ে উদ্বিগ্ন না হওয়ার অনুরোধ প্রশাসকদের

tab

বেক্সিমকো টেক্সটাইল সচল করছে রিভাইভাল

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

রোববার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

অর্থ সংকটে বন্ধ হয়ে যাওয়া বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানি ‘বেক্সিমকো টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল ডিভিশন’ (বেক্সটেক্স) লিজ নিয়ে পুনরায় চালু করতে যাচ্ছে জাপান-বাংলাদেশি ইথিক্যাল ফ্যাশন ও সাসটেইনেবিলিটি ভেঞ্চার রিভাইভাল গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড এবং রিভাইভাল প্রজেক্টস লিমিটেড।

এর ফলে ২৫ হাজারের বেশি শ্রমিক আবার কাজে ফেরার সুযোগ পাবেন জানিয়ে বেক্সিমকো গ্রুপের জনসংযোগের দায়িত্বে থাকা বেঞ্চমার্ক পিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, এ বিষয়টিককে “সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় কর্মসংস্থান পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।”

সেখানে বলা হয়, প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতিষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি ইকোমিলিও এ প্রকল্পে অর্থায়নে থাকছে। প্রথম ধাপে রিভাইভাল ও ইকোমিলি ২ কোটি ডলার ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি সহায়তা দেবে এবং প্রয়োজনে তা ১০ কোটি ডলার পর্যন্ত বাড়ানো হবে।

লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, আসছে ডিসেম্বর থেকে উৎপাদন শুরু হলে ২০২৭ সালের মধ্যে বছরে ৫০০ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন সম্ভব হবে বলে আশা করছে রিভাইভাল। এ বিষয়ে বেক্সিমকো টেক্সটাইলের পাওনাদার জনতা ব্যাংক, বেক্সটেক্স ও রিভাইভাল প্রজেক্টের মধ্যে চলতি মাসেই ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সই হওয়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এই চুক্তির প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতা করছে।

বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস-চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন। গত ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থ্যানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি গ্রেপ্তার হন।

এর পর থেকে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানিগুলোতে অস্থিরতা শুরু হয়। শ্রমিক অসন্তোষের মধ্যে বন্ধ রাখা হয় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৬ কারখানা। বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ৩২টি কারখানার নাম ঘোষণা থাকলেও বাস্তবে ১৬টির অস্তিত্ব পায় সরকারের তদন্ত কমিটি।

সরকারের তরফে বলা হয়, আওয়ামী লীগের আমলে অস্তিত্ব না থাকা ওই ১৬টি কোম্পানির নামে ১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছিল। আর সব মিলিয়ে ৩২ কোম্পানির নামে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া হয় ২৯ হাজার ৯২৫ কোটি টাকার ঋণ।

এসব ঋণ খেলাপী হয়ে ৩৫ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়ায়। এর মধ্যে জনতা ব্যাংকেরই ২৩ হাজার কোটি টাকা। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ‘অস্তিত্ব থাকা’ ১৬টির মধ্যে ১১টি বস্ত্র ও পোশাক খাতের কোম্পানি, যেগুলো লে-অফ ছিল গত জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপর সেগুলো আর খোলা হয়নি। এর মধ্যে সরকারের উদ্যোগে জাপানি কোম্পানি রিভাইভাল গত অগাস্টে বেক্সিমকো টেক্সটাইল লিজ নিয়ে সচল করতে রাজি হয়। বেক্সিমকো গ্রুপও সম্মতি জানিয়ে চিঠি দেয়।

সরকারের পক্ষে বিষয়টি সমন্বয় করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ ব্যাংক, পাওনাদার জনতা ব্যাংক এবং সরকার কয়েকটি সভা করে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা দেওয়ার পথ তৈরি করে।

রোববার বেঞ্চমার্ক পিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘একসময় দেশের টেক্সটাইল শিল্পের অন্যতম চালিকাশক্তি ছিল বেক্সিমকো টেক্সটাইল। তিন দশক সফলভাবে চলার পর ঋণসঙ্কটে পড়ে কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়। হঠাৎ বন্ধের কারণে হাজারো শ্রমিক চাকরি হারায়, কারখানা-নির্ভর ছোট ব্যবসা ধসে পড়ে এবং আশেপাশের এলাকার অর্থনীতি অস্থির হয়ে পড়ে। রিভাইভালের এই উদ্যোগ সেই বিপর্যয় থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর নতুন পথ তৈরি করছে; কারখানা আবার চালু হবে এবং কর্মীরা ফিরে পাবেন তাদের জীবিকার নিরাপত্তা।’

রিভাইভালের বরাত দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘তারা কারখানাটি পূর্ণাঙ্গভাবে পুনরায় চালু করবে, পুরোনো ব্যবস্থাপনা দলকে ফিরিয়ে আনবে এবং আগের সব কর্মীকে পুনর্বহাল করবে। কারখানার কার্যক্রমের শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে জাপান থেকে ‘অভিজ্ঞ’ শীর্ষ কর্মকর্তাদের আনা হবে। পাশাপাশি স্বচ্ছতা ও আন্তর্জাতিকমানের জবাবদিহির জন্য একটি আন্তর্জাতিক অডিট ফার্ম নিয়োগ করা হবে। কারখানা চালুর পাশাপাশি রিভাইভাল বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও ফ্যাশন খাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তন আনতে চায়। তারা বেক্সিমকোর আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সঙ্গে আবার সংযোগ স্থাপন করবে এবং নতুন বৈশ্বিক অংশীদারও যুক্ত করবে। শুধু কম খরচে পোশাক উৎপাদন নয়, বরং বাংলাদেশকে সৃজনশীলতা ও ব্র্যান্ড উদ্ভাবনের কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই তাদের লক্ষ্য।’

একসময়কার লাভজনক কোম্পানি বেক্সটেক্সের বড় ক্রেতাগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে জারা, মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার, টারগেট, আমেরিকান ঈগল, পুল অ্যান্ড বিয়ার ও বেস্ট সেলারের মত প্রতিষ্ঠান। কারখানা খুলে দেওয়ার পর পরিচালন খরচ বাদ দিলে প্রতি বছরে সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব বলে সে সময় তিনি হিসাব দিয়েছিলেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পুনরায় চালুর কাজ ইতোমধ্যে এগিয়ে গেছে। রিভাইভাল প্রজেক্টস লিমিটেড, বেক্সিমকো ও জনতা ব্যাংকের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির খসড়া গত ৮ অক্টোবর জমা দেওয়া হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার জনতা ব্যাংকের বোর্ড সভায় এটি পর্যালোচনা হবে এবং চলতি মাসেই চুক্তি সইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।’

রিভাইভাল ও ইকোমিলির শীর্ষ কর্মকর্তারা নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে ঢাকায় এসে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে জানানো হয়েছে সেখানে।

back to top