alt

ক্যাম্পাস

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপকের গবেষণা জালিয়াতির অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠিত

জাবি প্রতিনিধি : শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মো. তারেক চৌধুরীর বিরুদ্ধে গবেষণা জালিয়াতি ও অশোভন আচরণের অভিযোগে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অভিযোগ আমলে নিয়ে গত ১ এপ্রিলের সিন্ডিকেট সভায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সিন্ডিকেট সভায় উপস্থিত থাকা একাধিক সদস্যসূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে ২০২৩ সালের ২৩ জুলাই সিন্ডিকেটের আহ্বানে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ।

২০১১ সালে দর্শন বিভাগের কপুলা জার্নালে প্রকাশিত হওয়া ‘ঈশ্বরের স্বরূপ প্রসঙ্গে ধর্মীয় ও দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি: একটি তুলনামূলক পর্যালোচনা’ শীর্ষক প্রবন্ধে তিনি ব্যাপক হারে জালিয়াতি করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এই গবেষণা প্রবন্ধ ব্যবহার করে তিনি অধ্যাপক পদে পদোন্নিত লাভ করেন।এতে তিনি অধ্যাপক ড. আমিনুল ইসলামের ‘পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস: থেলিস থেকে হিউম’ গ্রন্থ থেকে ব্যাপক হারে চুরি করেছেন বলে অভিযোগ তোলেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ।

অধ্যাপক মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী বিভাগের গবেষণা সেমিনারে এমফিল পিএইচডি গবেষকদের ‘চোর’ বলে রায় দেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনুমোদিত গবেষণা চুরি রোধ নীতিমালা অনুসারে ২০ শতাংশের উপরে অন্য কোনো উৎস থেকে কপি করা হলে সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ জানান, অধ্যাপক মুহাম্মদ তারেক চৌধুরীর ‘ঈশ্বরের স্বরূপ প্রসঙ্গে ধর্মীয় ও দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি : একটি তুলনামূলক পর্যালোচনা’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ দর্শন বিভাগের কপুলা (Copula) জার্নাল এ ২০১১ সালে XXVIII ভলিউমে ১৪৭-১৭১ পৃষ্ঠায় ছাপা হয়। প্রবন্ধের তিনি অধ্যাপক ড. আমিনুল ইসলামের ‘পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস: থেলিস থেকে হিউম’ গ্রন্থ থেকে ব্যাপক হারে চুরি করেছেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, অধ্যাপক তারেক যথাক্রমে ৩৩, ৩৪, ৬৩, ৬৪, ১০৪, ১০৫, ১৩০, ১৩১, ১৪২, ১৪৩, ২৫১, ২৬৯, ২৯৬, ৪৩৮, ৪৫০, ৪৫১, পৃষ্ঠা থেকে প্রায় ৭০০০ শব্দের প্রবন্ধে ১৩৪৩ শব্দ চুরি করেছেন যা তার মূল প্রবন্ধের প্রায় ১৯ শতাংশ। যেখানে একটি গ্রন্থ থেকে ২ শতাংশ মাত্র নেওয়া যায়।

যেকোনো গবেষণায় একজন গবেষক একটি উৎস থেকে ২ শতাংশ তথ্য নিতে পারেন এবং সেগুলো যথাযথভাবে লেখকের নাম, প্রকাশকাল, গ্রন্থ বা প্রবন্ধের শিরোনাম, পৃষ্ঠা প্রকাশক ও প্রকাশনার স্থান উল্লেখ করতে হয়। কিন্তু অধ্যাপক মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী অধ্যাপক ড. আমিনুল ইসলামের নাম প্রবন্ধের কোথাও উল্লেখ করেননি।

এছাড়াও ওই প্রবন্ধে অধ্যাপক অর্জুন বিকাশ চৌধুরী রচিত মডার্ন বুক এজেন্সী প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ২০০৩-২০০৪ সালে প্রকাশিত ভারতীয় দর্শন গ্রন্থের ১১৬-১১৭ পৃষ্ঠা থেকে ৭২ শব্দ চুরি করেছেন। প্রমোদবন্ধু সেনগুপ্ত রচিত ব্যানার্জি পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত ২০০৭ সালে প্রকাশিত ‘পাশ্চাত্য দর্শনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস আধুনিক যুগ’ গ্রন্থের ৯৮-১০২ পৃষ্ঠা থেকে নিয়েছেন ৩৭৯ শব্দ। সব মিলিয়ে ২ হাজার ২ শব্দ তিনি অন্য প্রবন্ধ থেকে কপি করে করেছেন। যা শতকরা হিসাবে ২৯ শতাংশ। এছাড়া তিন ১৮৫ শব্দ করেছেন।

অধ্যাপক মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী হিন্দু ধর্মে বর্ণিত ঈশ্বরের গুণাবলী সম্পর্কে লিখছেন ১৫৪ পৃষ্ঠায়। এই সব তথ্য তিনি নিয়েছেন রাধাগোবিন্দ নাথ থেকে যা E.C. Dimock রচিত The Place of the Hidden Moon গ্রন্থের ফুট নোটের ১৩২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে।

পুরো প্রবন্ধে অধ্যাপক জনাব মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী আরও যেসব বিষয় লিখেছেন তার উৎস নির্দেশে ব্যর্থ হয়েছেন। তার মতে, অধ্যাপক জনাব মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী সেগুলোও চুরি করে থাকতে পারেন।

এছাড়া অধ্যাপক জনাব মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী ২০২১ সালে এক সভায় দর্শন বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহকে ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’ বলে ব্যঙ্গ করেন। এ সময় মুহাম্মদ তারেক চৌধুরীকে অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ সতর্ক করে বলেন যে, মিটিং রেকর্ড হচ্ছে। তখন তিনি দম্ভের সঙ্গে বলেন, সেটা তিনি জানেন।

ওই মিটিং এর ধারণকৃত অডিও-ভিডিও বিভাগের তৎকালীন সভাপতি অধ্যাপক মোস্তফা নাজমুল মানসুরের নিকট সংরক্ষিত আছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ।

এছাড়াও বিভিন্ন সভায় মোহাম্মদ উল্লাহকে আক্রমণ করে কথা বলেন অধ্যাপক মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী। সবশেষে ২০২২ সালের ৩ নভেম্বর দর্শন বিভাগের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় কমিটি অফ কোর্সেস এর সভায় মোহাম্মদ উল্লাহকে নির্দেশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমন্ত্রিত বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক কাওসার মুস্তাফাকে বলেন, আপনারা এই সব বেয়াদপ পয়দা করেছেন। এছাড়াও গত বছরের ২০ মার্চ দর্শন বিভাগের সেমিনার কক্ষে অধ্যাপক ফরিদ আহমেদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন তিনি।

অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘অধ্যাপক মুহাম্মদ তারেক চৌধুরীর এমন আচরণ বিভাগের পরিবেশ নষ্ট করছে বিধায় একান্ত নিরুপায় হয়ে নিরাপত্তাহীনতা থেকে তিনি এই অভিযোগ দাখিল করেছি।’

অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ জানান, তার অভিযোগ আমলে নিয়ে গেল বছরের ১৮ এপ্রিল তারিখে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে প্রমাণাদি উপস্থাপন করতে বলা হলে তিনি গতবছরের জুলাই মাসে পূর্ণাঙ্গ অভিযোগ জমা দেন।

ছবি

রাবির সাংবাদিকতা বিভাগের নতুন সভাপতি অধ্যাপক সাজ্জাদ বকুল

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানিয়ে ঢাবিতে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ

ছবি

রাবির ক্যান্টিন পরিচালকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ

ছবি

গণমাধ্যমের উচিত গুচ্ছের সীমবদ্ধতাগুলো তুলে ধরা: জবি উপাচার্য

ছবি

প্রতিবন্ধকতা ভেঙে জবি কেন্দ্রে ৭ পরিক্ষার্থী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতার কক্ষ দখল ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেই

ছবি

শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মানববন্ধন

উপাচার্য-শিক্ষক দ্বন্দ্বে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান, সেশনজটের মুখে শিক্ষার্থীরা

ছবি

ফেসবুকে অপপ্রচারের অভিযোগ, উপাচার্যের কাছে বিচার চাইলেন জবির ডিন

ছবি

তীব্র দাবদাহে জবিতে সপ্তাহে চারদিন সশরীরে ক্লাস, একদিন অনলাইনে

ছবি

তাপপ্রবাহে জবির ফার্মেসী বিভাগের বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ

ছবি

বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অতিষ্ঠ জাবির হাজারো শিক্ষার্থী

ছবি

কুবির শিক্ষক সমিতির দেওয়া তিন দপ্তরের তালা ভাঙল প্রক্টরিয়াল বডি

ছবি

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতির অবস্থান কর্মসূচী

ছবি

জাবিতে ইতিহাস পরিবহনের বাস দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ আদায়

ছবি

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল ভার্সিটির নতুন প্রো-ভিসিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানালো কর্মকর্তারা

ছবি

গাড়িসহ কুবি কোষাধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ, শিক্ষকদের মধ্যে বাকবিতন্ডা

ছবি

গুচ্ছ ভর্তি, জবি কেন্দ্রে সাংবাদিক প্রবেশ ‘সংরক্ষিত’

ছবি

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ চুয়েট, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ

ছবি

তীব্র গরমে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনলাইন ক্লাসে জবি

ছবি

ঢাবিতে ‘গেস্টরুমে’ ছাত্রলীগের ‘আদব-কায়দা’, অচেতন শিক্ষার্থী, তদন্তে কমিটি

জাবির সিনেট-সিন্ডিকেট নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নিরঙ্কুশ জয়

আট বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন নির্বাচন

ছবি

জাবি উপাচার্যের সঙ্গে ইন্ডিয়া মাইক্রোবায়োলজিস্ট সোসাইটির প্রেসিডেন্টের সৌজন্য সাক্ষাৎ

তীব্র গরমে ঢাবির শতভাগ ক্লাস অনলাইনে

ছবি

জবিতে চলতি সপ্তাহ অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্ত

ছবি

তীব্র গরমে অনলাইন ক্লাস চায় জবি শিক্ষার্থীরা

ছবি

বুয়েট শিক্ষার্থীরা ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে অনড়

‘তোকে সিটে উঠতে না দিলে প্রক্টর-প্রাধ্যক্ষ আসবে’- আবাসিক ছাত্রকে ছাত্রলীগ নেতার হুমকি

ছবি

‘যৌন কেলেংকারিতে’ অভিযুক্ত শিক্ষককে রেজিস্ট্রার নিয়োগ, শিক্ষক সমিতির পাল্টাপাল্টি বিবৃতি

ছবি

জাবিতে বাংলা বর্ষবরণ ও মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত

ছবি

জবিতে বৈশাখ রাঙায় চারুকলার শিক্ষার্থীদের শৈল্পিক কাজ, বাজেট বৃদ্ধির দাবি

ছবি

ইমতিয়াজ রাব্বিকে হলে সিট ফেরত দেওয়ার নির্দেশ

মতিঝিল আইডিয়ালে গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত ছাড়াই ফি ধার্য, অভিভাবকদের ‘অসন্তোষ’

ছবি

ডিমেনশিয়া রোগ নির্ণয়ে জাবি-এনটিইউর যৌথ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

ছবি

রিকশাচিত্রে জবিতে বৈশাখের প্রস্তুতি, উদযাপন হবে ১৮ এপ্রিল

tab

ক্যাম্পাস

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপকের গবেষণা জালিয়াতির অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠিত

জাবি প্রতিনিধি

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মো. তারেক চৌধুরীর বিরুদ্ধে গবেষণা জালিয়াতি ও অশোভন আচরণের অভিযোগে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অভিযোগ আমলে নিয়ে গত ১ এপ্রিলের সিন্ডিকেট সভায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সিন্ডিকেট সভায় উপস্থিত থাকা একাধিক সদস্যসূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে ২০২৩ সালের ২৩ জুলাই সিন্ডিকেটের আহ্বানে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ।

২০১১ সালে দর্শন বিভাগের কপুলা জার্নালে প্রকাশিত হওয়া ‘ঈশ্বরের স্বরূপ প্রসঙ্গে ধর্মীয় ও দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি: একটি তুলনামূলক পর্যালোচনা’ শীর্ষক প্রবন্ধে তিনি ব্যাপক হারে জালিয়াতি করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এই গবেষণা প্রবন্ধ ব্যবহার করে তিনি অধ্যাপক পদে পদোন্নিত লাভ করেন।এতে তিনি অধ্যাপক ড. আমিনুল ইসলামের ‘পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস: থেলিস থেকে হিউম’ গ্রন্থ থেকে ব্যাপক হারে চুরি করেছেন বলে অভিযোগ তোলেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ।

অধ্যাপক মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী বিভাগের গবেষণা সেমিনারে এমফিল পিএইচডি গবেষকদের ‘চোর’ বলে রায় দেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনুমোদিত গবেষণা চুরি রোধ নীতিমালা অনুসারে ২০ শতাংশের উপরে অন্য কোনো উৎস থেকে কপি করা হলে সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ জানান, অধ্যাপক মুহাম্মদ তারেক চৌধুরীর ‘ঈশ্বরের স্বরূপ প্রসঙ্গে ধর্মীয় ও দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি : একটি তুলনামূলক পর্যালোচনা’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ দর্শন বিভাগের কপুলা (Copula) জার্নাল এ ২০১১ সালে XXVIII ভলিউমে ১৪৭-১৭১ পৃষ্ঠায় ছাপা হয়। প্রবন্ধের তিনি অধ্যাপক ড. আমিনুল ইসলামের ‘পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস: থেলিস থেকে হিউম’ গ্রন্থ থেকে ব্যাপক হারে চুরি করেছেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, অধ্যাপক তারেক যথাক্রমে ৩৩, ৩৪, ৬৩, ৬৪, ১০৪, ১০৫, ১৩০, ১৩১, ১৪২, ১৪৩, ২৫১, ২৬৯, ২৯৬, ৪৩৮, ৪৫০, ৪৫১, পৃষ্ঠা থেকে প্রায় ৭০০০ শব্দের প্রবন্ধে ১৩৪৩ শব্দ চুরি করেছেন যা তার মূল প্রবন্ধের প্রায় ১৯ শতাংশ। যেখানে একটি গ্রন্থ থেকে ২ শতাংশ মাত্র নেওয়া যায়।

যেকোনো গবেষণায় একজন গবেষক একটি উৎস থেকে ২ শতাংশ তথ্য নিতে পারেন এবং সেগুলো যথাযথভাবে লেখকের নাম, প্রকাশকাল, গ্রন্থ বা প্রবন্ধের শিরোনাম, পৃষ্ঠা প্রকাশক ও প্রকাশনার স্থান উল্লেখ করতে হয়। কিন্তু অধ্যাপক মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী অধ্যাপক ড. আমিনুল ইসলামের নাম প্রবন্ধের কোথাও উল্লেখ করেননি।

এছাড়াও ওই প্রবন্ধে অধ্যাপক অর্জুন বিকাশ চৌধুরী রচিত মডার্ন বুক এজেন্সী প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ২০০৩-২০০৪ সালে প্রকাশিত ভারতীয় দর্শন গ্রন্থের ১১৬-১১৭ পৃষ্ঠা থেকে ৭২ শব্দ চুরি করেছেন। প্রমোদবন্ধু সেনগুপ্ত রচিত ব্যানার্জি পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত ২০০৭ সালে প্রকাশিত ‘পাশ্চাত্য দর্শনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস আধুনিক যুগ’ গ্রন্থের ৯৮-১০২ পৃষ্ঠা থেকে নিয়েছেন ৩৭৯ শব্দ। সব মিলিয়ে ২ হাজার ২ শব্দ তিনি অন্য প্রবন্ধ থেকে কপি করে করেছেন। যা শতকরা হিসাবে ২৯ শতাংশ। এছাড়া তিন ১৮৫ শব্দ করেছেন।

অধ্যাপক মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী হিন্দু ধর্মে বর্ণিত ঈশ্বরের গুণাবলী সম্পর্কে লিখছেন ১৫৪ পৃষ্ঠায়। এই সব তথ্য তিনি নিয়েছেন রাধাগোবিন্দ নাথ থেকে যা E.C. Dimock রচিত The Place of the Hidden Moon গ্রন্থের ফুট নোটের ১৩২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে।

পুরো প্রবন্ধে অধ্যাপক জনাব মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী আরও যেসব বিষয় লিখেছেন তার উৎস নির্দেশে ব্যর্থ হয়েছেন। তার মতে, অধ্যাপক জনাব মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী সেগুলোও চুরি করে থাকতে পারেন।

এছাড়া অধ্যাপক জনাব মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী ২০২১ সালে এক সভায় দর্শন বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহকে ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’ বলে ব্যঙ্গ করেন। এ সময় মুহাম্মদ তারেক চৌধুরীকে অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ সতর্ক করে বলেন যে, মিটিং রেকর্ড হচ্ছে। তখন তিনি দম্ভের সঙ্গে বলেন, সেটা তিনি জানেন।

ওই মিটিং এর ধারণকৃত অডিও-ভিডিও বিভাগের তৎকালীন সভাপতি অধ্যাপক মোস্তফা নাজমুল মানসুরের নিকট সংরক্ষিত আছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ।

এছাড়াও বিভিন্ন সভায় মোহাম্মদ উল্লাহকে আক্রমণ করে কথা বলেন অধ্যাপক মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী। সবশেষে ২০২২ সালের ৩ নভেম্বর দর্শন বিভাগের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় কমিটি অফ কোর্সেস এর সভায় মোহাম্মদ উল্লাহকে নির্দেশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমন্ত্রিত বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক কাওসার মুস্তাফাকে বলেন, আপনারা এই সব বেয়াদপ পয়দা করেছেন। এছাড়াও গত বছরের ২০ মার্চ দর্শন বিভাগের সেমিনার কক্ষে অধ্যাপক ফরিদ আহমেদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন তিনি।

অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘অধ্যাপক মুহাম্মদ তারেক চৌধুরীর এমন আচরণ বিভাগের পরিবেশ নষ্ট করছে বিধায় একান্ত নিরুপায় হয়ে নিরাপত্তাহীনতা থেকে তিনি এই অভিযোগ দাখিল করেছি।’

অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ জানান, তার অভিযোগ আমলে নিয়ে গেল বছরের ১৮ এপ্রিল তারিখে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে প্রমাণাদি উপস্থাপন করতে বলা হলে তিনি গতবছরের জুলাই মাসে পূর্ণাঙ্গ অভিযোগ জমা দেন।

back to top