রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে সায়মা হোসাইনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচারসহ চার দফা দাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনের প্যারিস রোড অবরোধ করে অবস্থান নেন এবং বিক্ষোভ শুরু করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে আমি কে, সায়মা সায়মা’, ‘আমার বোন মরল কেন, প্রশাসন জবাব দে’, ‘কে মেরেছে কে মেরেছে, প্রশাসন প্রশাসন’ এই মুহুর্তে দরকার, রাবি মেডিক্যালের সংস্কার’, ‘অবহেলায় শিক্ষার্থী মরে, প্রশাসন কী করে’, বিচার ‘যদি না পারিস, দেখবো তোরা কত পারিস’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, সুইমিং পুলসহ বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের দায়িত্বরতদের ‘অবহেলার’ কারণেই সায়মার মৃত্যু হয়েছে। এর দায় প্রশাসনকেই নিতে হবে। ঘটনার ‘সুষ্ঠু তদন্তে’ আমরা ৭২ ঘন্টার যে সময়সীমা দেয়া হয়েছে, তার মধ্যেই জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবী তাদের। নাহলে আরও কঠোর থেকে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
বিভাগের শিক্ষার্থী ঈশিতা পারভীন তিথি বলেন, ‘আমি মনে করি এটা একটা হত্যাকাণ্ড। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিস্টেমের কারণে এবং সঠিক চিকিৎসার অভাবেই সায়মার মৃত্যু হয়েছে। আমাদের দাবি, এই হত্যার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং যারা এই অবহেলা করেছে, তাদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। সায়মার পরিবারকে এমনভাবে আর্থিক সাপোর্ট দিতে হবে যেন তাদের অভাব না হয়।’
বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল আজিজ বলেন, ‘প্রশাসনকে তিন দিনের সময় দিয়েছি। এর মধ্যে তারা যদি কোনো সুষ্ঠু তদন্ত প্রতিবেদন দিতে না পারে, তাহলে আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। এখন শুধু সমাজবিজ্ঞান বিভাগ আন্দোলন করছে, তিন দিন পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ষাটটি বিভাগ আমাদের সাথে নেমে আসবে।’
আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসান বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডকে কোনোভাবেই যেন দুর্ঘটনা নাম দিয়ে ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা না করা হয়। এটা স্পষ্ট অবহেলা, যার জন্য কমপক্ষে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হওয়া উচিত। প্রশাসন যদি এখনো ঘুমিয়ে থাকে, তাহলে আজ সায়মা মারা গেছে, কাল আমরা মারা যাব। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অবশ্যই তদন্ত রিপোর্ট পেশ করতে হবে এবং কোনো যেনতেন তদন্ত রিপোর্ট আমরা মানব না।’
গত রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে নামলে পানিতে ডুবে যান সায়মা হোসাইন। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সায়মা হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ও মন্নুজান হলের আবাসিক ছাত্রী ছিলেন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ায়।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও ১০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে সায়মা হোসাইনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচারসহ চার দফা দাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনের প্যারিস রোড অবরোধ করে অবস্থান নেন এবং বিক্ষোভ শুরু করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে আমি কে, সায়মা সায়মা’, ‘আমার বোন মরল কেন, প্রশাসন জবাব দে’, ‘কে মেরেছে কে মেরেছে, প্রশাসন প্রশাসন’ এই মুহুর্তে দরকার, রাবি মেডিক্যালের সংস্কার’, ‘অবহেলায় শিক্ষার্থী মরে, প্রশাসন কী করে’, বিচার ‘যদি না পারিস, দেখবো তোরা কত পারিস’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, সুইমিং পুলসহ বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের দায়িত্বরতদের ‘অবহেলার’ কারণেই সায়মার মৃত্যু হয়েছে। এর দায় প্রশাসনকেই নিতে হবে। ঘটনার ‘সুষ্ঠু তদন্তে’ আমরা ৭২ ঘন্টার যে সময়সীমা দেয়া হয়েছে, তার মধ্যেই জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবী তাদের। নাহলে আরও কঠোর থেকে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
বিভাগের শিক্ষার্থী ঈশিতা পারভীন তিথি বলেন, ‘আমি মনে করি এটা একটা হত্যাকাণ্ড। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিস্টেমের কারণে এবং সঠিক চিকিৎসার অভাবেই সায়মার মৃত্যু হয়েছে। আমাদের দাবি, এই হত্যার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং যারা এই অবহেলা করেছে, তাদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। সায়মার পরিবারকে এমনভাবে আর্থিক সাপোর্ট দিতে হবে যেন তাদের অভাব না হয়।’
বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল আজিজ বলেন, ‘প্রশাসনকে তিন দিনের সময় দিয়েছি। এর মধ্যে তারা যদি কোনো সুষ্ঠু তদন্ত প্রতিবেদন দিতে না পারে, তাহলে আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। এখন শুধু সমাজবিজ্ঞান বিভাগ আন্দোলন করছে, তিন দিন পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ষাটটি বিভাগ আমাদের সাথে নেমে আসবে।’
আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসান বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডকে কোনোভাবেই যেন দুর্ঘটনা নাম দিয়ে ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা না করা হয়। এটা স্পষ্ট অবহেলা, যার জন্য কমপক্ষে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হওয়া উচিত। প্রশাসন যদি এখনো ঘুমিয়ে থাকে, তাহলে আজ সায়মা মারা গেছে, কাল আমরা মারা যাব। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অবশ্যই তদন্ত রিপোর্ট পেশ করতে হবে এবং কোনো যেনতেন তদন্ত রিপোর্ট আমরা মানব না।’
গত রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে নামলে পানিতে ডুবে যান সায়মা হোসাইন। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সায়মা হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ও মন্নুজান হলের আবাসিক ছাত্রী ছিলেন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ায়।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও ১০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।