‘অবৈধ সম্পদ অর্জন, ক্ষমতার অপব্যবহার ও মানি লন্ডারিংয়ের’ অভিযোগে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ও তার স্ত্রী রেহানা চৌধুরীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি করে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এসব মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ৩৯ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচার এবং ২৮১ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ বৃহস্পতিবার, (১৬ অক্টোবর ২০২৫) সংস্থার উপপরিচালক মো. সাইদুজ্জামান বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়েরের তথ্য দেন সংস্থার উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম। এর আগে এদিন বিকেলে বিফ্রিংয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত কমিশনের সভায় অনুমোদনের কথা বলেছিলেন সংস্থার মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
আওয়ামী লীগ নেতা সাবেরের বিরুদ্ধে মামলার এজাহারে বলা হয়, ঢাকা ৯ এর সাবেক সংসদ সদস্য, উপমন্ত্রী, মন্ত্রী ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় তিনি ‘অপরাধমূলক অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের’ মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের বাইরে ১২ কোটি ২৫ লাখ ৪৮ হাজার ১৬৯ টাকার সম্পদ অর্জন করেন। এছাড়া তার নামে থাকা ২১টি ব্যাংক হিসাবে ১৩০ কোটি ১৮ লাখ ২৬ হাজার ২ টাকার ‘অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের’ তথ্য পাওয়ার কথা এজাহারে বলেছে দুদক।
দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানের বরাতে মামলায় বলা হয়, সাবের হোসেন নিজ নামে ও পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত জমিতে বাড়ি নির্মাণ, হেবামূলে দান এবং ফ্ল্যাট ক্রয়সহ ৮ কোটি ২৪ লাখ ১২ হাজার ৮৪৭ টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। একইসঙ্গে শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ফিক্সড ডিপোজিট, লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বৈদেশিক বিনিয়োগ, মোটরযান, গহনা, আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ব্যাংকে জমা ও হাতে নগদ অর্থসহ তার ৪৪ কোটি ৪৩ লাখ ২৫ হাজার ১০ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মোট মূল্য দাঁড়ায় ৫২ কোটি ৬৭ লাখ ৩৭ হাজার ৮৫৭ টাকা।
অন্যদিকে, আয়কর নথিতে পারিবারিক ব্যয় ও স্ত্রীকে উপহার বাবদ ব্যয় দেখানো হয়েছে ২৯ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৬৪৫ টাকা। ফলে ব্যয়সহ মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৮১ কোটি ৮১ লাখ ৮৮ হাজার ৫০২ টাকা। এজাহারে বলা হয়, এর বিপরীতে গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া গেছে ৪৫ কোটি ৫৭ লাখ ৬২ হাজার ৯৭৫ টাকা এবং দায় বা ঋণ ২৩ কোটি ৯৮ লাখ ৭৭ হাজার ৩৫৮ টাকা। অর্থাৎ মোট আয় ৬৯ কোটি ৫৬ লাখ ৪০ হাজার ৩৩৩ টাকা, ফলে উৎসবিহীন বা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১২ কোটি ২৫ লাখ ৪৮ হাজার ১৬৯ টাকা।
দুদকের অভিযোগ, এসব সম্পদের বৈধ উৎস সম্পর্কে তিনি কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। তার এসব সম্পদ ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, যা দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা, এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এছাড়া ১৯৮৯ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত তার নামে থাকা ব্যাংক হিসাবে ১৩০ কোটি টাকারও বেশি লেনদেনকে ‘সন্দেহজনক ও অস্বাভাবিক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে দুদক। এসব অর্থ দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত হয়ে পরে রূপান্তর, স্থানান্তর ও উৎস গোপনের উদ্দেশে ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে। দুদক বলছে, তদন্ত চলাকালে তার বা তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের নামে আরও সম্পদের তথ্য পাওয়া গেলে তা আমলে নেয়া হবে।
একই দিন দুদক সাবেরের স্ত্রী রেহানা চৌধুরীর বিরুদ্ধেও পৃথক মামলা করে। রেহানার বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, তিনি স্বামীর সঙ্গে যোগসাজশে ২৬ কোটি ৯৭ লাখ ১৫ হাজার ৩৮৯ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং ৩টি ব্যাংক হিসাবে ১৫০ কোটি ৮৮ লাখ ৯২ হাজার ৪৫০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেন।
দুদকের অনুসন্ধানের বরাতে এজাহারে বলা হয়, তার নামে জমি ও স্থাপনা ক্রয়সহ ১ কোটি ৫৬ লাখ ৫৩ হাজার ৮০৫ টাকার স্থাবর সম্পদ, এবং শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ঋণ প্রদান, ফিক্সড ডিপোজিট, লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গহনা, আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক পণ্য, ব্যাংক জমা ও হাতে নগদ অর্থসহ ৫২ কোটি ২৯ লাখ ৬৮ হাজার ৮২১ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মোট মূল্য দাঁড়ায় ৫৩ কোটি ৮৬ লাখ ২২ হাজার ৬২৬ টাকা।
তার আয়কর নথিতে পারিবারিক ব্যয় দেখানো হয়েছে ২০ কোটি ৭৬ লাখ ৩৯ হাজার ৬২৬ টাকা, ফলে ব্যয়সহ মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭৪ কোটি ৬২ লাখ ৬২ হাজার ২৫২ টাকা। অপরদিকে, তার গ্রহণযোগ্য আয় ৪৫ কোটি ৪১ লাখ ৪৬ হাজার ৮৬৩ টাকা, এবং দায় বা ঋণ ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা, অর্থাৎ মোট আয় ৪৭ কোটি ৬৫ লাখ ৪৬ হাজার ৮৬৩ টাকা। ফলে উৎসবিহীন সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৬ কোটি ৯৭ লাখ ১৫ হাজার ৩৮৯ টাকা বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে।
দুদকের অভিযোগ, রেহানা চৌধুরী তার স্বামী সাবেরের অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ নিজের নামে লেনদেন ও সম্পদ হিসেবে দখলে রেখে উৎস গোপন করেছেন। এতে তিনি দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা, এবং দ-বিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এই মামলাতে সাবেরকে সহ-আসামি করা হয়েছে।
সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের অক্টোবরে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় সাবের হোসেনকে। এ মামলায় রিমান্ডে পাঠানোর পরদিনই ছয় মামলায় জামিন পেয়ে এক ঘণ্টার মধ্যেই মুক্তি পান তিনি। ঢাকা ৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবের আওয়ামী লীগ সরকারের সর্বশেষ মন্ত্রিসভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন। এর আগে ১৯৯৯ সালে তিনি প্রথমে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হন। পরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। সাবের হোসেন ২০২৩ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ পান। একাদশ সংসদে তিনি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন।
বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
‘অবৈধ সম্পদ অর্জন, ক্ষমতার অপব্যবহার ও মানি লন্ডারিংয়ের’ অভিযোগে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ও তার স্ত্রী রেহানা চৌধুরীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি করে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এসব মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ৩৯ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচার এবং ২৮১ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ বৃহস্পতিবার, (১৬ অক্টোবর ২০২৫) সংস্থার উপপরিচালক মো. সাইদুজ্জামান বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়েরের তথ্য দেন সংস্থার উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম। এর আগে এদিন বিকেলে বিফ্রিংয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত কমিশনের সভায় অনুমোদনের কথা বলেছিলেন সংস্থার মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
আওয়ামী লীগ নেতা সাবেরের বিরুদ্ধে মামলার এজাহারে বলা হয়, ঢাকা ৯ এর সাবেক সংসদ সদস্য, উপমন্ত্রী, মন্ত্রী ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় তিনি ‘অপরাধমূলক অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের’ মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের বাইরে ১২ কোটি ২৫ লাখ ৪৮ হাজার ১৬৯ টাকার সম্পদ অর্জন করেন। এছাড়া তার নামে থাকা ২১টি ব্যাংক হিসাবে ১৩০ কোটি ১৮ লাখ ২৬ হাজার ২ টাকার ‘অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের’ তথ্য পাওয়ার কথা এজাহারে বলেছে দুদক।
দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানের বরাতে মামলায় বলা হয়, সাবের হোসেন নিজ নামে ও পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত জমিতে বাড়ি নির্মাণ, হেবামূলে দান এবং ফ্ল্যাট ক্রয়সহ ৮ কোটি ২৪ লাখ ১২ হাজার ৮৪৭ টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। একইসঙ্গে শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ফিক্সড ডিপোজিট, লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বৈদেশিক বিনিয়োগ, মোটরযান, গহনা, আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ব্যাংকে জমা ও হাতে নগদ অর্থসহ তার ৪৪ কোটি ৪৩ লাখ ২৫ হাজার ১০ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মোট মূল্য দাঁড়ায় ৫২ কোটি ৬৭ লাখ ৩৭ হাজার ৮৫৭ টাকা।
অন্যদিকে, আয়কর নথিতে পারিবারিক ব্যয় ও স্ত্রীকে উপহার বাবদ ব্যয় দেখানো হয়েছে ২৯ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৬৪৫ টাকা। ফলে ব্যয়সহ মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৮১ কোটি ৮১ লাখ ৮৮ হাজার ৫০২ টাকা। এজাহারে বলা হয়, এর বিপরীতে গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া গেছে ৪৫ কোটি ৫৭ লাখ ৬২ হাজার ৯৭৫ টাকা এবং দায় বা ঋণ ২৩ কোটি ৯৮ লাখ ৭৭ হাজার ৩৫৮ টাকা। অর্থাৎ মোট আয় ৬৯ কোটি ৫৬ লাখ ৪০ হাজার ৩৩৩ টাকা, ফলে উৎসবিহীন বা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১২ কোটি ২৫ লাখ ৪৮ হাজার ১৬৯ টাকা।
দুদকের অভিযোগ, এসব সম্পদের বৈধ উৎস সম্পর্কে তিনি কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। তার এসব সম্পদ ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, যা দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা, এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এছাড়া ১৯৮৯ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত তার নামে থাকা ব্যাংক হিসাবে ১৩০ কোটি টাকারও বেশি লেনদেনকে ‘সন্দেহজনক ও অস্বাভাবিক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে দুদক। এসব অর্থ দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত হয়ে পরে রূপান্তর, স্থানান্তর ও উৎস গোপনের উদ্দেশে ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে। দুদক বলছে, তদন্ত চলাকালে তার বা তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের নামে আরও সম্পদের তথ্য পাওয়া গেলে তা আমলে নেয়া হবে।
একই দিন দুদক সাবেরের স্ত্রী রেহানা চৌধুরীর বিরুদ্ধেও পৃথক মামলা করে। রেহানার বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, তিনি স্বামীর সঙ্গে যোগসাজশে ২৬ কোটি ৯৭ লাখ ১৫ হাজার ৩৮৯ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং ৩টি ব্যাংক হিসাবে ১৫০ কোটি ৮৮ লাখ ৯২ হাজার ৪৫০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেন।
দুদকের অনুসন্ধানের বরাতে এজাহারে বলা হয়, তার নামে জমি ও স্থাপনা ক্রয়সহ ১ কোটি ৫৬ লাখ ৫৩ হাজার ৮০৫ টাকার স্থাবর সম্পদ, এবং শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ঋণ প্রদান, ফিক্সড ডিপোজিট, লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গহনা, আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক পণ্য, ব্যাংক জমা ও হাতে নগদ অর্থসহ ৫২ কোটি ২৯ লাখ ৬৮ হাজার ৮২১ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মোট মূল্য দাঁড়ায় ৫৩ কোটি ৮৬ লাখ ২২ হাজার ৬২৬ টাকা।
তার আয়কর নথিতে পারিবারিক ব্যয় দেখানো হয়েছে ২০ কোটি ৭৬ লাখ ৩৯ হাজার ৬২৬ টাকা, ফলে ব্যয়সহ মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭৪ কোটি ৬২ লাখ ৬২ হাজার ২৫২ টাকা। অপরদিকে, তার গ্রহণযোগ্য আয় ৪৫ কোটি ৪১ লাখ ৪৬ হাজার ৮৬৩ টাকা, এবং দায় বা ঋণ ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা, অর্থাৎ মোট আয় ৪৭ কোটি ৬৫ লাখ ৪৬ হাজার ৮৬৩ টাকা। ফলে উৎসবিহীন সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৬ কোটি ৯৭ লাখ ১৫ হাজার ৩৮৯ টাকা বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে।
দুদকের অভিযোগ, রেহানা চৌধুরী তার স্বামী সাবেরের অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ নিজের নামে লেনদেন ও সম্পদ হিসেবে দখলে রেখে উৎস গোপন করেছেন। এতে তিনি দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা, এবং দ-বিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এই মামলাতে সাবেরকে সহ-আসামি করা হয়েছে।
সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের অক্টোবরে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় সাবের হোসেনকে। এ মামলায় রিমান্ডে পাঠানোর পরদিনই ছয় মামলায় জামিন পেয়ে এক ঘণ্টার মধ্যেই মুক্তি পান তিনি। ঢাকা ৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবের আওয়ামী লীগ সরকারের সর্বশেষ মন্ত্রিসভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন। এর আগে ১৯৯৯ সালে তিনি প্রথমে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হন। পরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। সাবের হোসেন ২০২৩ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ পান। একাদশ সংসদে তিনি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন।